নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
প্রিয় কন্যা আমার-
একটা গল্প শোনাই তোমাকে। সময় তখন সকাল সাড়ে বারোটা। ছোট এক বাচ্চা গেছে গোছল করতে। বাচ্চাটা গোছল করতে খুব পছন্দ করে। কারন পানি দিয়ে খেলতে তার খুব ভালো লাগে। ভরা বালতি বাচ্চাটা গলা ডুবিয়ে বসে থাকে। এটাই তার সবচেয়ে পছন্দের কাজ। প্রতিদিনই বাচ্চাটা গলা ডুবিয়ে বালতিতে বসে থাকে। বাচ্চার মা শেষমেশ কোলে করে বাচ্চাকে টেনে ঘরে আনে। তখন বাচ্চাটা তার মায়ের উপর রাগ। আজও বাচ্চাটা বালতিতে বসে আছে। তার মা রান্না ঘরে। রান্না করছে। মা বলেছে, দুই মিনিট সময় দিলাম তোমাকে। এরপর আর বালতিতে বসে থাকা যাবে না।
বাচ্চা বাথরুমের দরজা লাগিয়ে দিলো।
যেন তার মা এসে তাকে না নিয়ে যেতে পারে। বাথরুমের দরজার লকটায় সমস্যা ছিলো। লক হয়ে গেলে কিছুতেই খোলা যেতো না। এর আগেও দুই তিনবার লক হয়ে গিয়েছিলো। ভাগ্যিস তখন কেউ বাথরুমে ছিলো না। বাচ্চার ছোট চাচা সেই তালা কিভাবে যেন খুলে দিয়েছিলো। আজ বাথরুমের দরজা লক হয়ে যায়। বাচ্চার মা কিছুতেই দরজা খুলতে পারছিলো না। এদিকে বাথরুমে থাকা বাচ্চা একাএকা ভয় পেতে শুরু করেছে। কান্না করছে। বারবার বলছে, মা দরজা খোলো। মা দরজা খোলো। এদিকে মায়ের দিশেহারা অবস্থা। বাচ্চার ছোট চাচা বাসায় নেই। সে অফিসে।
বাচ্চার মা ফোন দিলো বাচ্চার বাবাকে।
বাচ্চার বাবা বাসার কাছেই ছিলো, সে মুহুর্তের মধ্যে চলে এলো। অনেক গুলো চাবি। একটা পর একটা চাবি দিয়ে বাচ্চার বাবা বাথরুমের দরজার তালা খুলতে চেষ্টা করে যাচ্ছিলো। কিন্তু কিছুতেই দরজার লোক খোলা যাচ্ছিলো না। এদিকে বাচ্চা প্রচণ্ড ভয়ে ভীত। খুব কান্না করছে। বারবার বলছে, বাবা আমাকে বের করো। বাবা আমাকে বের করো। বাচ্চার বাবা মা বন্ধ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে বলছে, তুমি ভয় পেও না। এখানে আমি আছি, তোমার মা আছে। কিন্তু কিছুতেই বাচ্চার কান্না থামছে না। কান্নার শব্দ শুনে বুঝা যাচ্ছে বাচ্চাটি খুবই পেয়েছে। বাচ্চার এমন কষ্টের কান্না কি কোনো বাবা মা সহ্য করতে পারে?
কিছুতেই তালা খোলা যাচ্ছিলো না।
তখন বাচ্চার বাবা একটা হাতুড়ি দিয়ে বাথরুমের তালাটা ভেঙ্গে ফেলে। হাতুড়ির ধুম ধুম শব্দে বাচ্চাটা আরো বেশি ভয় পেয়ে যায়। দরজার লক খোলার পর দেখা গেলো- বাচ্চা বালতির পাশে গুটিসুটি মেরে বসে কাঁদছে। তালা ভেঙ্গেছে। তবু দরজা খুলছে না। কারন লকটা ভাঙ্গেনি। সেটা আটকে আছে। বাথরুমের দরজাটা ছিলো প্লাস্টিকের। অর্থ্যাত পিভিস ডোর। প্লাস দিয়ে টেনেও দরজার লক খুলে ফেলা যাচ্ছিলো না। এদিকে বাচ্চা সমানে কান্না করছে। বাচ্চার মা অস্থির হয়ে গেছে। শেষে বাচ্চার বাবা হাতুড়ি দিয়ে দরজাটা ভেঙ্গে ফেলে। বাচ্চাকে উদ্ধার করে। বেশ ভয় পেয়েছে বাচ্চাটা। বাচ্চার বাবা মা বাচ্চাটাকে জড়িয়ে ধরে।
প্রিয় কন্যা আমার- জানো এই বাচ্চা মেয়েটা কে?
এই বাচ্চা মেয়েটা হচ্ছো তুমি। এতক্ষন আমি তোমার গল্প বললাম। যা আজ ঘটেছে। দরজাটা যদি কাঠের হতো তাহলে কি এত সহজে ভাঙতে পারতাম? যাইহোক, অনেক সাবধান থাকতে হবে। আজ সন্ধ্যায় তোমাকে নিয়ে গেলাম বিএফসি'তে। বিএফসি'র চিকেন খুব ঝাল হয়। আমি দুটা চিকেন ফ্রাইয়ের অর্ডার দিলাম। একটা তোমার, একটা আমার। প্রচন্ড ঝাল চিকেন তুমি সস দিয়ে খেলে। আমি তোমাকে খেতে মানা করেছি, কিন্তু তুমি খেলে। তোমাকে বুঝিয়ে বললাম, বাসায় গিয়ে তোমার মাকে বলো না। তুমি বাইরের খাবার খাও সেটা তোমার মা একেবারেই পছন্দ করে না। তুমি বাসায় এসেই মাকে বলে দিলে ঝাল চিকেন ফ্রাই খেয়েছি সস ঝাল দিয়ে। অনেক ঝাল ছিলো। আমি বললাম, ফারাজা তোমার মাকে বলতে মানা করেছিলাম আমি। তুমি বললে, মাকে সব বলতে হয় বাবা।
০৫ ই মে, ২০২৩ দুপুর ১:০৬
রাজীব নুর বলেছেন: প্রচন্ড ভয় পেয়েছে।
কারন আমি যখন হাতুড়ি দিয়ে দরজা ভাংছিলাম। টয়লেটে ধুম ধুম শব্দ হয়েছে। সেই শব্দে সে প্রচুর ভয় পেয়েছে।
২| ০৮ ই আগস্ট, ২০২৩ ভোর ৪:২৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখাটা পড়তে পড়তে আমিও ভীষণ ভয় পাচ্ছিলাম। দরজাটা খুলে বাচ্চাটার মাথায়ও পড়তে পারতো। যাক, শেষ পর্যন্ত শেষ রক্ষা হয়েছে!
ফারাজা বড় হয়ে এ লেখা পড়ে অবাক হবে।
০৮ ই আগস্ট, ২০২৩ দুপুর ২:৪৩
রাজীব নুর বলেছেন: আসলে যাদের ঘরে ছোট ছোট ছেলে মেয়ে আছে, তাদের সব সময় সবধান থাকা দরকার।
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই মে, ২০২৩ সকাল ৮:২২
কামাল১৮ বলেছেন: অনেক বড় মর্মান্তিক ঘটনা।এই সময়ে বাচ্চাদের দেখে রাখতে হয়।বাচ্চাটির দুঃখে ব্যথিত হলাম।