নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
শাহেদ জামাল গতকাল রাতে ভয় পেয়েছে।
খুব ভয় পেয়েছে। কিন্তু শাহেদ জামাল ভীতু নয়। জ্বীন ভূত তো সে বিশ্বাসই করে না। তার আছে লজিক। যার কাছে লজিক আছে সে এইসব জ্বীন-টিন, ভূত-টুত বিশ্বাস করে না। ধার্মিকদের কথা অবশ্য আলাদা। যাইহোক, গতকাল শাহেদ জামাল মারাত্মক ভয় পেয়েছে। আর একটু হলে হয়তো স্ট্রোক করে ফেলতো। ঘটনাটা খুলে বলি। শাহেদ জামাল বসার ঘরে বসে একটা সিনেমা দেখছিলো। সিনেমার নাম- 'The Drunken Master'। বেশ ভালো মুভি। বাসায় কেউ ছিলো না। খালি বাসা। রাতে দোতলার ভাবী খাবার দিয়েছেন। ভারীর হাতের রান্না ভালো। মটরশুঁটি দিয়ে ঝোল করে ভাবী দেশী কৈ মাছ রান্না করেছেন। শিম আলু ভাজি। ঘন ডাল। যাইহোক, কোনো এক অজানা কারনে ভাবী শাহেদ জামালকে খুব স্নেহ করেন।
মন দিয়ে শাহেদ জামাল মুভি দেখছিলো।
শাহেদ জামালের পিপাসা পায়। সে রান্না ঘরে গিয়ে ফ্রিজ থেকে এক বোতল ঠান্ডা পানি বের করে। তার হাত থেকে পানির বোতল পড়ে যায়। কারন রান্না ঘরে একটা মেয়ে। খালি বাসায় একটা মেয়ে কোথা থেকে এলো? শাহেদ জামাল মেয়েটার দিকে ভালো করে তাকালো। মেয়েটাকে তার অনেক পরচিতি মনে হচ্ছে। কলেজে পড়ার সময় এরকম একটা মেয়ের সাথে তার বেশ সুন্দর সম্পর্ক ছিলো। মেয়েটার নাম ছিলো বিশাখা। সহজ সরল সুন্দর একটা মেয়ে। বিশাখার হাতের লেখা অনেক সুন্দর ছিলো। তার গানের গলাও অনেক সুন্দর ছিলো। রবীন্দ্রনাথের একটা গান আছে- 'কি জানি কিসের লাগি প্রাণ করে হায় হায়' এই গান দারুন গাইতো। কিন্তু বিশাখা তো অনেইক বছর আগেই মারা গেছে। মৃত মানুষ কি ফিরে আসতে পারে?
শাহেদ এক আকাশ বিস্ময় নিয়ে বিশাখার দিকে তাকিয়ে আছে।
এটা কি করে সম্ভব? নাকি ইলিউশন, ডিলিউশন ও হ্যালুসিনেশন? হায় কপাল! বিষয়টা সহজ হতো যদি শাহেদ জামাল মদ্যপান করতো। মদ খেলে কিছু মানুষের হ্যালুসিনেশন হয়। না চোখের ভুল নয়। শাহেদ জামাল স্পষ্ট দেখছে। বিশাখা কি যেন রান্না করছে। সাদা একটা শাড়ি পরা। মাথা ভরতি চুল কোমর ছাড়িয়ে গেছে। শাড়ির আঁচল পেটের কাছে গুজে রেখেছে। তাতে কিছুটা বউ বউ ভাব চলে এসেছে। শাহেদ জামাল এখন কি করবে? তার মাথা কাজ করছে না। সে সারা জীবন যা অবিশ্বাস করেছে, তার চোখের সামনে তা-ই ঘটে যাচ্ছে। বিশাখা কি চায়? তার কাছে কেন? মৃত মানুষ কি করে ফিরে আসে! শাহেদ জামালের মনে আছে- সাত বছর আগে বিশাখার কবরে প্রথম মাটি দেয় সে নিজে। শেক্সপিয়ার বলেছেন, দুনিয়াতে অনেক অস্বাভাবিক ব্যাপার ঘটে। এরকম কিছু হচ্ছে নাকি?
শাহেদ জামাল এখন কি করবে?
সে কি মাগো, বাবাগো বলে দৌড়ে পালিয়ে যাবে কোথাও? নাকি বাতি নিভিয়ে ঘুমিয়ে পড়বে? না 'The Drunken Master' মুভিটা দেখবে? বিশাখা মিষ্টি করে হেসে বলল, পুরুষ মানুষ রান্নাঘরে ঘুরঘুর করলে আমার ভালো লাগে না। তুমি যাও সিনেমা দেখো। আমি তোমার জন্য চা বানাচ্ছি। বিশাখার কন্ঠ শুনে শাহেদ জামালের ভয় একদম চলে গেলো। সে লক্ষ্মী ছেলের মতো মুভি দেখতে বসলো। কিছুক্ষন পর বিশাখা এলো। তার হাতে দুটা চায়ের মগ। বিশাখা বলল, শাহেদ তুমি এত বেরসিক কেন? বাইরে কি সুন্দর বৃষ্টি হচ্ছে। মুভি দেখা বাদ দাও। ব্যল্কনিতে গিয়ে বসো। আমরা গল্প করবো, আর চায়ে চুমুক দিবো। শাহেদ বাধ্য ছেলের মতো মুভি দেখা বাদ দিয়ে ব্যলকনিতে গিয়ে বসলো। নাকি তার নিয়তি তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে নিয়ে গেলো।
রাত তিনটা কুড়ি মিনিট। বাইরে তুমুল বৃষ্টি।
বিজলি চমকাচ্ছে। বইছে শীতল বাতাস। বিশাখা আর শাহেদ জামাল মুখোমুখি। তাদের হাতে চায়ের মগ। শাহেদ বেশ ভয় পাচ্ছে। তার কপালে ঘাম। নীলা বলল, আমাকে ভয় পাচ্ছো কেন? আমার সব কিছুই তো তোমার পছন্দ ছিলো। আমার ঠোঁট, আমার বুক! শাহেদ বলল, বিশাখা আমি তোমাকে খুন করিনি। বিশ্বাস করো। বিশাখা হেসে হেসে বলল, না তুমি আমাকে খুন করোনি। আমি পা পিছলে পড়ে গিয়েছিলাম মাঝ নদীতে। মুহুর্তের মধ্যে বিশাখার মুখের হাসি মুছে গেলো। সে বলল, শাহেদ চা শেষ করো। তারপর দুনিয়াতে তোমার সময় শেষ। শাহেদ বোকা নয়। শাহেদের বাম হাতে একটা ধারালো ছুরি সে এতক্ষন লুকিয়ে রেখেছিলো। সে এত সহজে হার স্বীকার করবে না। তবে শাহেদ জামালের মাথায় একটাই চিন্তা, মৃত মানুষ কি করে ফিরে আসে! নাকি বিশাখা সেদিন মরেনি!
দুজনের চায়ের মগ শূণ্য।
দুজনের চোখেই ঘৃণা। সীমাহীন রাগ। কিছুক্ষনের মধ্যে ভোরের আকাশ ফর্সা হতে শুরু করবে। মসজিদ থেকে সুমধুর আযানের সুর ভেসে আসবে। ধার্মিকেরা মসজিদে আসবে। তবে ধার্মিকদের সংখ্যা অতি নগন্য। কারন, মানুষ ইন্টারনেটে বিভোর হয়ে থাকে সারারাত। তারা ঘুমাতে যায় ফজরের আযানের কিছু আগে। সে যাগগে, আর কিছুক্ষন পরেই পাখিরা একসাথে আকাশে উড়তে শুরু করবে। গ্রাম দেশ হলে এতক্ষনে- মোরগ ডাকতে শুরু করতো। কৃষকেরা পানি ভাত খেয়ে জমিতে নামতো। রাখাল গরু ছেড়ে দিয়ে আসতো খোলা মাঠে। নে এবার কত ঘাস খাবি, খা। ইচ্ছে মতো খা। যাইহোক, ব্যলকনির শেষ দৃশ্যটা এই রকমঃ দুজন মানুষ ব্যলকনিতে পড়ে আছে। রক্তে ভেসে যাচ্ছে চারপাশ। দুজনের একজন বোধহয় বেচে আছে।
১১ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:৫২
রাজীব নুর বলেছেন: !!!!
২| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৪০
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: কয়েকদিন আগে ফজলুর রহমান বাবুর 'ভয়' নামে এক নাটক দেখলাম। তাকে ভয় দেখাতে বন্ধুরা নাটক সাজায়। ওই নাটকেও একটা খুনের ঘটনা আছে। তার এক কাজিন বাবুকে না পেয়ে আত্মহত্যা করেছিল।
১১ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:০৭
রাজীব নুর বলেছেন: অনেকদিন টিভিতে নাটক সিনেমা দেখা হয় না।
৩| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৪৮
কামাল১৮ বলেছেন: স্বপ্ন ও বাস্তবতা মিলে একাকার।
১১ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: হ্যা তাই।
৪| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:০৮
প্রামানিক বলেছেন: লেখা অনেক ভালো হয়েছে।
১১ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন।
৫| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:৪৪
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আপনার লেখা পড়ে ভয়ে ভয়ে অস্থির হয়ে গেলামরে।
১১ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:১১
রাজীব নুর বলেছেন: বড় ভাই, ভয় পাবেন না। ভয় পাওয়ার কিচ্ছু নেই।
৬| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:২৯
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আফসোস!
১১ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:১২
রাজীব নুর বলেছেন: বড়ই আচানক ঘটনা।
৭| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:০৭
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: ভ্রমকে বাস্তবতার আদলে দেখতে বড়ই বেমানান লাগে। গল্প বলে কথা! সেটিং আর কথন চমৎকার লাগল।
১১ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:১৪
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।
৮| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৩৭
বাকপ্রবাস বলেছেন: বিশাখাকে দেখতে পারলে ভাল হতো, ছবি দেননাই কেন?
১১ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:১৮
রাজীব নুর বলেছেন: আচ্ছা আপনাকে গোপনে ছবি দেখাবো।
৯| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:২২
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
হরর পোস্ট দিয়েই পোস্টদাতা উধাও!
আফসোস!
১১ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:২০
রাজীব নুর বলেছেন: উধাও হইনি।
আছি আছি।
©somewhere in net ltd.
১| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:০৬
বিজন রয় বলেছেন: ??????!!!!!!!!