নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
চেম্বার সাধারণত ডাক্তার এবং উকিলদের থাকে।
আমি ডাক্তার নই, উকিলও নই। আমি অতি সাধারণ এবং তুচ্ছ মানুষ। নাম আমার শাহেদ। শাহেদ জামাল। তবু আমার চেম্বার আছে। ঢাকায় আমার বেশ কয়েকটা চেম্বার আছে। প্রথম চেম্বার হচ্ছে রমনা পার্কে। রমনা পার্কে একটা বড় অশ্বত্থ গাছ আছে। অশ্বত্থ গাছের নিচে একটা বেঞ্চ আছে। এই বেঞ্চে আমি ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকি। শুয়ে থাকি। রমনা পার্কের ভিক্ষুক, হকার এবং সিকিউরিটি গার্ড এরা সবাই আমাকে ভালো করেই চিনেন। এদের সাথে আমার বেশ সুসম্পর্ক। এক সপ্তাহ চেম্বারে না গেলেই তারা আমাকে ফোন করেন। খোজ খবর নেন। মানুষের ভালোবাসার কাছে আমার মাথা নত হয়ে আসে।
আমার দ্বিতীয় চেম্বার হচ্ছে বাড্ডা লিংক রোড। বাড্ডা থেকে গুলশান ১ যাওয়ার পথে একটা ফ্লাইওভার ব্রীজ আছে মানুষ পারাপারের জন্য। ঠিক ফ্লাইওভারের নিচে একটা চায়ের দোকান আছে। এই দোকানে আমি বসি। অর্থাৎ এটাই আমার দ্বিতীয় চেম্বার। সপ্তাহে তিন দিন সন্ধ্যার পর এই চেম্বারে বসি। চায়ের দোকানের মালিকের নাম শামসু। বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালমারী। গ্রাম হচ্ছে বানা। শামসু খুবই দিল দরিয়া টাইপ মানুষ। শামসু আমার কাছ থেকে চা সিগারেট বাবদ ১৭ শ টাকা পায়। কিন্তু কখনও টাকা চায় না। সাত মাস হয়ে গেছে শামসুর টাকা শোধ করতে পারিনি। কবে পারবো জানি না।
আমার তৃতীয় চেম্বার হচ্ছে মগবাজার। রেলক্রসিং এর ডান পাশে। মোতালেব ভাইয়ের চায়ের দোকান। মোতালেব চা টা ভালো বানায়। এক কাপ চা খেলে মন ভরে না। এখানে আমি লম্বা সময় বসি। আমার এই চেম্বারটা বেশ জমজমাট। এখানে যারা নিয়মিত আসে তারা আমাকে খুব ভালো করেই চিনে। তারা চা খেতে খেতে আমার সাথে বিশ্ব সংসার নিয়ে আলাপ আলোচনা করে। ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ, ইজরায়েল ফিলিস্তিন যুদ্ধ। হাসিনা খালেদা। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি। ধর্মীয় ইতিহাস সহ দেশের নানান সমস্যা নিয়ে আমি আলাপ করি। রিকশা চালক, সবজি বিক্রেতা, সিএনজি চালক আমার কথা গুলো মন দিয়ে শুনে। মাথা নাড়ে। লোকজন আগ্রহ নিয়ে আমার বক বক শুনে, বিষয়টা আমার ভালো লাগে। এদের জন্য আমার অনেক মায়া হয়। অথচ ওদের জন্য কখনো কিছু করতে পারিনি।
আমার চতুর্থ চেম্বার হচ্ছে যাত্রাবাড়ী। বিবির বাগিচা গলিতে। উজ্জ্বল ভাই এবং তার স্ত্রী কোহিনূর একটা চায়ের দোকান চালান। কোহিনূর আপা আমাকে খুবই পছন্দ করেন। তার দোকানে গেলে আমার সব সময় দেরী হয়ে যায়। তিনি আমাকে না খাইয়ে ছাড়েন না। তিনি অনুরোধ করেছেন তার ছেলেটাকে যেন আমি পড়াই। আমি ব্যস্ত মানুষ। সময়ের বড় অভাব। আমার অনেক গুলো চেম্বার। সব গুলো চেম্বারেই আমার বসতে হয়। সবাইকে সময় দিতে হত। লোকজন আমার অপেক্ষায় থাকে। চেম্বারে না গেলেই তারা আমাকে ফোন দেন। মানুষের ভালোবাসা আমি উপেক্ষা করতে পারি না। এজন্য ঘুরে ফিরে প্রতিটি চেম্বারেই আমাকে যেতে হয়। যারা আমাকে ভালোবাসে, আমি তাদের কাছাকাছি থাকতে চাই। তারাই আমার আত্মার আত্মীয়। আপন মানুষ।
আমি বেকার মানুষ। হাতে অনেক সময়। বেকার বলে তো আর সারাদিন বাসায় বসে থাকতে পারি না। এজন্য শূন্য পকেটে এক চেম্বার থেকে আরেক চেম্বারে ছুটে যাই। চা খাই। সিগারেট খাই। পত্রিকা পড়ি। বিশ্ব সংসার নিয়ে জটিল সব আলাপ আলোচনা করি। আমি অসহায় ও দরিদ্র বলে, আমার ধনী আত্মীয় স্বজন আমাকে ত্যাগ করেছে। এমনকি আমার আপন ভাই বোনরাও আমাকে ত্যাগ করেছে। এজন্য আমি দুখী নই। আমার অভ্যাস হয়ে গেছে। চেম্বারে চেম্বারে ঘুরে আমার সময় বেশ ভালো যাচ্ছে। আমার সবচেয়ে প্রিয় চেম্বার হচ্ছে রমনা পার্ক। কারণ এখানে প্রচুর গাছপালা আছে। আমি মানুষ এবং গাছপালা অনেক ভালোবাসি। আমার ইচ্ছে আছে কোথাও এক একর জনি কিনে মন ভরে গাছপালা লাগাবো। গাছের যত্ন নিবো।
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৪১
রাজীব নুর বলেছেন: সে এক মজার ইতিহাস।
২| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:৩৬
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: বড়ই আচানক ঘটনা।
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৪২
রাজীব নুর বলেছেন: হে হেহে---
৩| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:০৬
কামাল১৮ বলেছেন: মতিঝিলে আছে রহমান চেম্বার।ওটার সাত তালায় আমার অফিস ছিলো।
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:১৭
রাজীব নুর বলেছেন: ও আচ্ছা তাই নাকি!!!
৪| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:০১
মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: শাহেদ জামাল সিরিজ আর কতোদিন চলবে?
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:২৮
রাজীব নুর বলেছেন: যতদিন আমি বেচে আছি।
৫| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ৭:২৭
নাইমুল ইসলাম বলেছেন: চারটি চেম্বার যেন মনে হল শাহেদ জামালের চার স্ত্রী। সবাই সুখী।
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:২৮
রাজীব নুর বলেছেন: হে হে--
৬| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:৫৪
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
শুভ বিজয় দিবস -২০২৩!
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:৫৭
রাজীব নুর বলেছেন: শুকরিয়া বড় ভাই।
©somewhere in net ltd.
১| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:২৫
বিজন রয় বলেছেন: শাহেদ জামাল নামটি নিলেন কেন?