![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
লজ্জা পাওয়ার মতো ঘটনা আমার জীবনে অনেক।
এক জীবনে কতবার যে দুখ কষ্ট অপমান আর লজ্জা পেয়েছি তার হিসাব নেই। সেসব ঘটনা এখনো মনে পড়লে লজ্জা পাই। আয়নায় নিজের মুখের দিকে নিজেই তাকাতে পারি না। আমি আপনাকে দশটা ঘটনা বলব।
১। তখন ঢাকায় নতুন এসেছি। মেসে থাকি।
জগন্নাথে ভরতি হয়েছি মাত্র। আমি দরিদ্র পরিবারের সন্তান। মেসের ডাল ডিম খেতে খেতে আর ভালো লাগে না। ইচ্ছে করে ভালো কিছু খাই। কিন্তু পকেটে টাকা নেই। একদিন দুপুরবেলা ক্লাশ শেষ করে মেসে ফিরছি হেটে হেটে। তখন দেখি এক কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ের অনুষ্ঠান হচ্ছে। পেট ভরতি ক্ষুধা। আমি বিয়ে বাড়িতে ঢুকে গেলাম। ইচ্ছে মতো খেলাম। প্রচুর খেলাম। একজন এসে বলল, আপনাকে চিনতে পারছি না। তারপর....
২। কলেজ থেকে বাসায় ফিরছি।
পকেট ফাকা। কড়া রোদ। ইচ্ছে হচ্ছে আজ বাসে করে মেসে ফিরি। অথচ টাকা নেই। বাস ভাড়া ১৫ টাকা। এদিকে পেট ভরতি ক্ষুধা। হাটতে ইচ্ছে করছে না। কি মনে করে এক বাসে উঠে গেলাম। কন্টাকটর ভাড়া নিতে এলো। আমি হালকা তেজ দেখিয়ে বললাম, ভাড়া কয়বার দিবো? মাত্র ১৫ টাকার জন্য মিথ্যা বললাম। আত্মগ্লানি হয় আজও। এই কাজ পরে অনেকবার করেছি।
৩। শবে বরাতের রাত। ইদের পর পরীক্ষা শুরু হবে।
আমি রাতে খেয়ে মসজিদে যাচ্ছি। ইচ্ছা সারারাত ইবাদত বন্দেগি করব। সিড়ি দিয়ে নামার সময় চার তলার আন্টি আমাকে পাচ শ টাকা দিয়ে বললেন, টাকা টা মদজিদের দান বক্সে দিয়ে দিও। সেই টাকা আমি দান বাক্সে দেইনি। মন ভরে খরচ করেছি। কতটা বদ আমি। আসলে অভাব আমাকে অনেক নিচে নামিয়ে দিয়েছে। আমি নিশ্চয়ই জাহান্নামে যাবো।
৪। একটা বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম।
ভুলে মেয়েদের ওয়াশ রুমে চলে গিয়েছিলাম। বেশ কয়েকটি মেয়ে শাড়িতে সেফটিপিন লাগাচ্ছিলো আর সাজগোছ করছিল। একটা মেয়ে শুধু ব্রা পরা। ব্লাউজ তার হাতে। সুন্দর ভরাট বক্ষ! মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে ছিলাম! কয়েক সেকেন্ড মাত্র। মেয়ে গুলো চিৎকার দিয়ে উঠেছিল। আমি তখনও বুঝিনি মেয়ে গুলো চিৎকার দিচ্ছে কেন! আমি কি হিংস্র কোনো জন্তু?
৫। একটা মসজিদে মিলাদ হচ্ছিলো। জিলাপি দেবে নিশ্চয়ই।
আমি মিলাদে অংশ গ্রহণ করলাম। হুজুর অনেক সময় ধরে মিলাদ পড়ালেন। তার চেয়েও বেশি সময় নিয়ে দোয়া করলেন। হুজুরের উপর আমি যথ বিরক্ত। আমার ভাগ্য খারাপ। আমার পোড়া কপাল। মিলাদ শেষে তবারক দিলো না। মিলাদ পড়াবে অথচ জিলাপি দেবে না, এটা আমি মেনে নিতে পারি না। এই ঘটনায় মনটা খুব খারাপ হয়েছিল। বেশ লজ্জা পেয়ে ছিলাম। খুব রাগও হয়েছিল।
৬। এক কোম্পানিতে চাকরির জন্য গিয়েছি।
আমাকে জিজ্ঞেস করলো তুমি কি পারো? আমি চিন্তায় পড়ে গেলাম। আমি কি পারি? আমি কি পারি অনেক চিন্তা ভাবনা করে মনে করতে পারলাম না। শেষে বললাম, আমি দুটা কাজ পারি। এক, মাথা নিচে পা উপরে দিয়ে পাচ মিনিট পর্যন্ত থাকতে পারি। আর দুই হচ্ছে, আমি সুপারম্যান হতে পারি। স্যার বললেন, সুপারম্যান মানে? আমি দুই হাত সামনে দিয়ে সুপারম্যানের মতো করে দেখালাম। অফিস থেকে আমাকে বের করে দিলো।
৭। এক মেয়ের সাথে ঘুরতে বেড়িয়েছি।
হয়তো মেয়েটার সাথে আমার প্রেম ভালোবাসা হয়ে যেতে পারে। সিএনজি করে আমরা লালমাটিয়া যাচ্ছি। আমার পাশে বসা মেয়েটা সুন্দর। অনেক সুন্দর। খুব মায়া মায়া চেহারা। আমি বুঝতে পারছি না, কি করলে মেয়েটা খুশি হবে! আমার মনে হলো আমি যদি মেয়েটার বুকে হাত রাখি, তাহলে মেয়েটা খুশি হবে। হাত রাখলাম। মেয়েটা রেগে গেলো। আমাকে ইতর বদমাশ বলে গালি দিলো। তারপর সিএনজি থেকে আমাকে নামিয়ে দিলো।
৮। একবার বাসে করে গাজীপুর যাচ্ছি।
বনানী সিগনালে একদল হিজড়া উঠলো। সবার কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে। আমার কাছে এলো। বললাম, আমার কাছে টাকা নেই। হিজড়া বলল, স্বামী। তুমি আমার স্বামী। তুমি অনেক সুন্দর স্বামী। তুমি আমার সাথেই থাকো। তোমাকে বসিয়ে বসিয়ে খাওয়াবো। এই বলেই হিজড়াটা আমার নুনুতে হাত দিলো। বলল, জিনিস ঠিক আছে তো? সুখ দিতে পারবা? বাসের সবাই আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। ভীষণ লজ্জা পেলাম আমি।
৯। সব বন্ধুরা মিলে ঢাকার বাইরে যাচ্ছি।
সিলেট যাবো। একটা মাইক্রো বাস ভাড়া করা হয়েছে। আমি ভোরবেলা গোছল টোছল করে রেডি। সংসদে ভবনের সামনে থেকে গাড়ি ছাড়বে। আমিই সবার আগে গিয়ে পৌছালাম। তারপর একে একে সব বন্ধুরা এলো। শেষমেশ বন্ধুরা আমাকে সাথে নিলো না। গাড়িতে জায়গা নেই। মূলত আমি দরিদ্র, গ্রামের ছেলে, চালাক চতুর নই। সেদিন আমার ভীষণ মন খারাপ হয়েছিল। চোখে পানি চলে এসেছিল।
১০। তখন আমি মিরপুর ১০ নম্বর এক মেসে থাকি।
কলেজ বন্ধ। সারাদিন শাহ আলী মার্কেটের পেছনে এক চায়ের দোকানে বসে থাকি। আড্ডা দেই। চায়ের দোকানের মালিকের মেয়ে জোছনা গার্মেন্টসে চাকরি করে। দেখতে শুনতে ভালো। জোছনা একদিন জানালো সে আমায় ভালোবাসে। চোখের ইশারায় আরো কি কি যেন বলে। সেসব আমি বুঝি না। একদিন সন্ধ্যায় চায়ের দোকানে বসে আছি। জোছনা ইশারা দিলো। পাশের চিপা অন্ধকার গলিতে আমাকে আমন্ত্রণ জানালো। আমি গেলাম। জোছনা সামান্য রাগ দেখিয়ে বলল, তুমি এত ভীতু কেন? ডেমনা কোথাকার! যে সুযোগ তোমাকে দিয়েছি, অন্য কেউ হলে এতদিনে আমাকে প্রেগন্যান্ট বানিয়ে দিতো।
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৪
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
উপভোগ্য পোস্ট।
নির্মল আনন্দ পেলাম।
১০ নম্বরটা যে কারো জীবনে এলে সবাই কি যে করবে তা জানতে ইচ্ছে করছে।