নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রাজু আহমেদ
সরকারী বি এম কলেজ, বরিশাল ।
বাংলাদেশের সাবেক স্বৈর-শাসক ও সেনাপ্রধান এইচ এম এরশাদ সাহেব ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধে করার কারনে ক্ষমতা থেকে বিচ্যুত হয়েছিলেন এমনটা এদেশের অনেক নামকরা বিশিষ্টজন এবং বুদ্ধিজীবীদের ধারণা । তাদের ধারনা যে একেবারেই অমূলক নয় তা পরবর্তী সরকারগুলোকে ক্ষমতায় আরোহন করাতে ছাত্রদের ভূমিকা প্রমান করেছে । কিন্তু আজ আমি এরশাদ সাহেবের সিদ্ধান্ত অথবা বুদ্ধিজীবীদের যুক্তির তারিফ করার জন্য বসিনি । বর্তমান দেশের অবস্থা অনুযায়ী আমার চিন্তাশক্তির ধারায় ছাত্র রাজনীতির পক্ষে বিপক্ষে কিছু কথা বলব । পৃথিবীতে যতগুলো নীতি আছে তাদের প্রভূ হিসেবে ধরা হয় রাজনীতিকে । আর রাজনীতিকদের বিবেচনা করা হয় এ গ্রহের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ও একই সাথে জনপ্রিয় ও আলোচিত ব্যক্তি হিসেবে । গোটা বিশ্ব তাকিয়ে থাকে রাজনীতিক দের পাণে কেননা তারাইতো জাতির ভাগ্য গড়ার কারিকর । তারা তাদের নিজেদের ভাগ্য গড়ার আগেই সাধারণ মানুষের ভাগ্য গড়ে দেন । সমাজের সবচেয়ে মূল্যবান হিসেবে যাদেরকে বিবেচনা করা হয় তারা ছাত্র পরিচয়েই পরিচিতি । রাজনীতির মত একটা মহৎ কাজ যদি ছাত্রদের দিয়ে সামনে না আগায় তবে তো জাতির সামনে আমবস্যার অমানিশার মত গাঢ় অন্ধকার । ছাত্রদেরকই তো সকল আধাঁর দূর করে জাতিকে আলোর পথে পরিচালিত করতে হবে । সব বাধা বন্ধন ছিন্নকরে প্রগতির পথে জাতিকে পরিচালিত করার দায়িত্বতো কেবল মাত্র ছাত্রদেরকেই বহন করতে হবে । তাদের ব্যর্থতায় যদি জাতি বিপথগামী হয় তবে তার সকল দায়ভার অবশ্যই ছাত্রদেরকেই নিতে হবে । কেবল মাত্র ছাত্ররাই সমাজকে সুন্দর ভাবে সাজানোর জন্য বদ্ধপরিকর । ছাত্ররা তাদের দীর্ঘ পরিসরের ছাত্র জীবনের প্রত্যেক পরতে পরতে এই নৈতিক দায়িত্ব পালনের শিক্ষা অর্জন করে । কিন্তু এই ছাত্রদের এ পথ থেকে বিপথগামী করার উদ্দেশ্য একদল সার্থলোভী মানুষ এই ছাত্রদেরকে তাদের হীন উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করার জন্য ব্যবহার করে । আমার আজকের এ লেখার দ্বারা এদেশের তথাকথিত রাজনৈতির দলের স্বার্থে আঘাত লাগতে পারে, তাতে আমার মোটেই দুঃখ লাগবে না যদি বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলো আমার এ কথাকেকে ভূলভাবে ব্যাখ্যা না করেন । আবার এক শ্রেনীর ছাত্ররা তো আমার বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে আরম্ভ করবে কারণ আমি তাদের স্বার্থেই বোধ হয় আঘাত দিয়ে ফেললাম । কারণ এ শ্রেনীর ছাত্ররাতো আর ছাত্র না । এরা ছাত্রত্বের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে টু-পাইস কামাইয়ের ধান্ধায় থাকে । সমাজের যাবতীয় অপরাধের গোড়াপত্তনে যে এ যাতীয় মূর্খদের ব্যবহার করা হয় তাদের সেটা বোধগম্য হতেই চায় না । কোন এক কবি বলেছিলেন “কাগজ কলম হওয়ার কথা যাদের হাতিয়ার,অস্ত্র নিয়েই এখন তারা করে যে কারবার”। ছাত্রদের রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহন থাকুক এর বিপক্ষে অবস্থান করার কোন সৎ হিম্মত আমার নেই । কেননা ছাত্র বয়সেই যদি নেতৃত্বের গুন অর্জিত হয় তবে তার দ্বারা দেশ ও জাতির জন্য অনেক কিছুই আশা করা যায় । আমাদের বাংলাদেশে প্রধান তিনটি রাজনৈতিক দলের (আওয়ামীলীগ, বি এন পি, জামাআত এর বাইরে আরও কিছু বামপন্থী এবং ডানপন্থী রাজনৈতিক দল) ক্ষমতার অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে তাদের ছাত্র সংঘঠনগুলোকে প্রধান্যদেয় । ছাত্রদেরকে তাদের ভবিষ্যতের কর্মপদ্ধতি এবং পন্থা বাতলে দেয়ার জন্য এ তিন দলকেই আমার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ । আমার জানা মতে এমন এক শ্রেণীর ছাত্র আছে তাদেরকে স্ব-পেশা জিজ্ঞাসা করলে তারা রাজনীতিক হিসেবে পরিচয় দিতে সাচ্ছ্যন্দ বোধ করে । আমি কোন মতেই ভেবে পাইনা এরা তাদের মূখ্য পরিচয় রেখে গৌণ পরিচয় দেয়ার জন্য এতটা আগ্রহী কেন ? তবুও যখন দেখি পেশার তালিকায় নতুন পেশা হিসেবে আরেকটি পেশা যোগ হয়েছে তখন ভালোই লাগে । দেশে যে পরিমাণ বেকার তাতে নতুন নতুন আরও অনেক পেশার আগমণ চাই । কিন্তু যখনই দেখি এ পেশাজীবীরা টেন্ডারের জন্য গোলাগুলি করে বাইরের মানুষ মেরে ফেলে তখন তো এ পেশাকে কিলিংয়ের পেশার সাথে তুলনা করতে মোটেই বাধার কথা নয় । ছাত্রদেরকে যদি টেন্ডার দখল করার জন্য গোলাগুলি করতে হয় সে সকল ছাত্রদের বেচে থাকতেই হবে সেটা অন্তত আমি বাঞ্চনীয় মনে করি না । কিন্তু তাদের গুলিতে শিশুরা মারা যাবে কেন ? এর কৈফিয়ত আর কাছে চাইব আর কেইবা দিবে ! বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো তাদের ছাত্র সংগঠনগুলোকে কে কোন স্বার্থে ব্যবহার করে তার একটি সংক্ষিপ্ত সীমারেখা দেখব :
বাংলাদেশের বর্তমান ক্ষমতাশীল দল হিসেবে আওয়ামীলীগকে সবার আগে বিচার করা দেখব । অনেকে একথা বলতে মোটেও দিধাবোধ করেন না আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনৈতিক দল হলেও বর্তমান আওয়ামীলীগ তাদের ছাত্রসংগঠনকে যাবতীয় সন্ত্রাস মূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করার জন্য ব্যবহার করে নাকি ছাত্ররা নিজেরা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড স্বপ্রণোদিত হয়ে সংগঠিত করে তার হিসাব দলের হাই কমান্ডের কাছে নেই । যেহেতু তারা একাজকে কন্ট্রোল করতে পারতেছে না তাই সুধীজনরা মনে করেন এটা উপরের নির্দেশেই পালিত হয় । তাই ব্যক্তিগত মত ব্যবহার না করে যদি জাতীয় মতকে প্রধান্য দেই তবে বাংলাদেশের ছাত্রলীগ জাতীর উপকারের চাইতে অপকারের দিকে কয়েক ধাপ বেশি অগ্রগণ্য । অতএব ছাত্ররাজনীতর দিকটা বাংলাদেশের ছাত্রলীগের দিক থেকে বিচার করলে জনাব এরশাদ সাহেবের সাথে একমত অবশ্যই না হয়ে পারা যাবে না । অতএব ছাত্ররাজনীতেকে অবিলম্বে নিষিদ্ধ করা হোক ।
বর্তমান বাংলাদেশের বিরোধীদল বি এন পির ছাএসংগঠন ছাত্রদলের দিক থেকে ছাত্ররাজনীতিকে বিচার করলে মনে হয় যেন রাজনীতি বাবার ক্রয়কৃত আর্থিক সম্পত্তি । যিনি আর্থিক ভাবে যতটা ওজনধার দলের নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে সে ততোটা অগ্রগন্য । আদর্শের অনেকটা ঘাটতি ছাত্রদলের কর্মকান্ডের ভেতরে । তবুও তারা ততোটা উগ্রগামী নয় তাই মাঝে তাদের ঘটনাপঞ্জি দেখে মনে হয় এ সংগঠন থাকলে খারাপ হয় না আবার কিছু কিছু সিন্ধান্তে মনে হয় ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়াই বা করাই উচিত ।
বাংলাদেশ জামাআতে ইসলামী এর ছাএ সংগঠন বাংলাদেশ শিবির এর দিক থেকে বিচার করলে জ্ঞানীজন বলেন সকল ছাত্ররাজনৈতিক সংগঠন গুলো যদি এমন আদর্শিক হতো তাহলে এ দেশের আশুভবিষ্যত কতইনা উজ্জ্বল হতো । এ সংগঠন তাদের সাংগঠনিক কাজকে যতটা না গুরুত্ব দেয় তার চেয়ে তাদের আসল দায়িত্ব লেখাপড়ার প্রতি তাদের গুরুত্ব অপরীসিম । শিবিরের দিক থেকে বিচার করলে ছাত্র রাজনীতি এদেশের মঙ্গলের জন্য রাখতে হবে ।
এতসব আসার বানীর পরেও আমি ব্যক্তিগত ভাবে ছাত্র রাজনীতির পক্ষে না । গুটি কয়েক ছাত্র সংগঠন জাতির উন্নতির জন্য কাজ করলেও বৃহৎ অনেক ছাত্র সংগঠন যেহেতু জাতীয় উন্নতির পথে অন্তরায় তাই এ পরাশক্তিকে নিষিদ্ধ না হয় কঠোর আইনের আওতায় এনে একটা নিদির্ষ্ট রূপ-রেখা প্রনয়ন করা দরকার । দলের স্বার্থে না হোক অন্তত জাতীয় স্বার্থে এটা অবশ্যই করা দরকার
©somewhere in net ltd.