নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাজু আহমেদ । এক গ্রাম্য বালক । অনেকটা বোকা প্রকৃতির । দুঃখ ছুঁয়ে দেখতে পারি নি ,তবে জীবনের সকল ক্ষেত্রে অনুভব করেছি । সবাইকে প্রচন্ড ভালবাসি কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে প্রকাশ করতে পারি না । বাবা এবং মাকে নিয়েই আমার ছোট্ট একটা পৃথিবী ।

সত্যকা

সত্যকা › বিস্তারিত পোস্টঃ

চাচা এরশাদ কি খেলা দেখালেন

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৪৬

বর্তমান সময়ে ‘টক অফ দ্যা কান্ট্রি’ ‘পারসন অফ দ্যা কান্ট্রি’ চাচা এরশাদ সাহেব । তার প্রতিটি কথায় রচিত হতে পারে এক একটা মহাকাব্য । রবীন্দ্রনাথ , নজরুলরা যদি বেঁচে থাকতেন তাহলে অবশ্যই এতক্ষনে কালজয়ী অনেকগুলো প্রবন্ধ রচিত হয়ে যেত । তাদের মত প্রতিভাবান কোন লেখক এ দেশে অবশিষ্ট না থাকার কারনে তাকে নিয়ে মহান কিছু সৃষ্টি হচ্ছে না ঠিকই কিন্তু বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক , টুইটার এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে এরশাদ ইস্যু নিয়ে । পক্ষে-বিপক্ষে কথার ফুলজুড়িতে ফুলে ফেঁপে উঠছে রাজনীতির ময়দান । এরশাদ চাচার হঠাৎ করে দেয়া দ্বীতিয় ‘ডিগবাজীতে’ সরকারদলীয় নেত্রী চোখে সরষে ফুল দেখতে শুরু করেছে । অপরদিকে বিরোধীদলীয় নেত্রীর মুখে হাসির বন্যা । রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন , মূলত কাজী জাফর সাহেব বিকেয়ে যাওয়ার কারনে এরশাদ সাহেব তার নাটকীয় সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হঠতে বাধ্য হয়েছেন । এরশাদ সাহেব যদি নির্বাচন অংশ গ্রহন করা থেকে পিছু না হটতেন তাহলে বাংলাদেশের ভূ-খন্ড থেকে জাতীয় পার্টি চিরতরে বিলীন হয়ে যেত । বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি গঠিত হওয়ার পর সল্প সময়ের ব্যবধানে জাতীয় পার্টি ইতোমধ্যে তিন-খন্ডিত হয়েছে ।



প্রথম বার ভোলার নাজির-উর-রহমান মঞ্জু আলাদা হয়ে যান । পরবর্তীতে সুযোগ সন্ধানী পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলার গত আওয়ামীলীগের সময়কার যোগাযোগ মন্ত্রী জনাব আনোয়ার হোসেন মঞ্জু সাহেবের নেতৃত্বে আরও এক খন্ড হয় । তবে এ বিভক্তিতে জাতীয় পার্টির উপর তেমন কোন প্রভাব পড়ে নি । কিন্তু গত কয়েকদিন আগে যখন সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ চাচা তার অনেক পূর্ব উক্তিকে বৃদ্ধাঙ্গুল প্রদর্শন করে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিরোধীদল হিসেবে প্রতিদন্ধিতা করার ঘোষনা দেন ঠিক তখনই এরশাদ রাষ্টপতি থাকা অবস্থায় যিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন সেই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ , চিকিৎসাধীন কাজী জাফর সাহেব বেকে বসেন । তিনি এরশাদ সাহেবের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে এরশাদ সাহেবকে মানসিক রোগী বলে অবহিত করেন । এরশাদ সাহেব তার স্বভাবশুদ্ধ দ্বি-মূখী মূখবন্ধ দিতে আরম্ভ করেন । অবশেষে এরশাদ চাচা কাজী জাফর সাহেবকে দল থেকে বহিষ্কার করার ঘোষণা করেন । ঠিক তার পর-পরেই কাজী জাফর সাহেবও নিজেকে জাতীয় পার্টির সভাপতি দাবী করে এরশাদ চাচাকে বহিষ্কার করেছেন মর্মে সাংবাদিকদের কাছে জানান । পাল্টা পাল্টি এ ঘোষণার পরেই জাতীয় পার্টির অধিকাংশ সিনিয়র নেতারা কাজী জাফরের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে তার পাশে থাকার ঘোষণা দেন । এরশাদ চাচা খুব ভাল ভাবে অনুধাবন করতে পারলেন যে , তার অবস্থান নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে । তিনি মূলত সুযোগ খুজতেছিলেন , যারা তার কারনে হেসে কুটি কুটি হয়েছিল তাদের কখন মড়ন কামড় দিবেন । অবশেষে এল মোক্ষম সুযোগ ।



ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে সদ্য নিয়োগ পাওয়া পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং বাংলাদেশে আগমনের ঠিক আগের দিনই ঘোষনা দিয়ে ফেলেন , তিনি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না । শুরু হয় ব্যাপক গুঞ্জন । সরকারী দল থেকে জানানো হয় এরশাদের একথাই শেষ কথা নয় । অচিরেই তিনি তার কথা থেকে সরে আসবেন । আওয়ামীলীগের সে আশায় যে গুড়েবালি এরশাদ চাচা ২৪ ঘন্টার মধ্যেই তা আবারও প্রমাণ করে দিলেন । আওয়ামীলীগের আশা আকাঙ্খার প্রতীক ভারত সরকারের প্রতিনিধি বাংলাদেশে আগমন করেই এরশাদ চাচার সাথে দীর্ঘ বৈঠক করেন । সুজাতা সিং সেখানে তার নানা ধরনের কুটনীতিক কথা দিয়ে এরশাদ সাহেবকে বুঝাতে চেয়েছেন তার নির্বাচনে যাওয়া উচিত । কোন ঔষধে যখন কাজ করছিল না তখন সুজাতা সিং সরাসরি এরশাদ চাচাকে বললো আপনি যদি নির্বাচনে না যান তাহলে এ দেশে মৌলবাদীদের আবার উত্থান হবে । আপনি কি চান জামাত-শিবিরের মদদপুষ্ট কোন দল ক্ষমতায় আসুক । এরশাদ সাহেব সম্পূর্ন অনড় । তার এক কথা , তিনি নির্বাচনে যাবেন না ...না ......না ....না । অবশেষে এরশাদ চাচার দুয়ারে ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব সুবিধা করতে না পেরে সরাসরি বলেই দিলেন – আমি যা বলতে এসেছি সেটা আমার কথা নয় , এটা ভারত সরকারের বানী । তিনি সরাসরি না বললেও বাঙালি বুঝতে বাকি রাখেন নি যে , ভারত সরকার আওয়ামীলীগকে পুনরায় ক্ষমতায় নিতে চায় । কেনইবা চাইবে না ।



আওয়ামীলীগ পুনরায় ক্ষমতায় গেলে এদেশে সার্বভৌমত্ব বলতে রাষ্ট্রের যে মূল শক্তিটুকু অবশিষ্ট আছে সেটুকু আর অবশিষ্ট থাকবে না । যে এরশাদ চাচা শত প্রতিকূলতার মধ্যেও ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা করতে পিছপা হননি সেই তাকে ধর্মীয় মৌলবাদের ভয় দেখিয়ে কাবু করা অত সহজ কি ? মূলত মিডিয়ার সৃষ্টি ধর্মীয় মৌলবাদীর সংজ্ঞা এর স্রষ্টাদের কাছেই আছে কিনা সন্দেহ ! এত সব যুক্তির পরেও যারা মনে করেছিলেন এরশাদ চাচা তার শেষ কথাটুকুও রাখতে পারবেন না , এরশাদ চাচা তার বর্তমান আদেশ এবং আদেশের সাথে কাজের বাস্তবাতার মিল দিয়ে ইতোমধ্যেই তাদের সে কথাকে ভূল প্রমানিত করে দিতে শুরু করেছেন ।তার দলের সকল মনোনয়ন প্রাথীদেরকে তাদের মনোনয়ন উঠিয়ে নিতে আদেশ করেছেন এবং সর্বদলীয় সরকার ব্যবস্থায় যারা মন্ত্রীত্ব পেয়েছেন তাদের কে পদত্যাগ করার নির্দেশ করেছেন । সে আদেশ বাস্তবায়ন করতে ইতোমধ্যেই মনোনয়ন প্রার্থীরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে শুরু করেছেন । আজ তার দলের ছয়জন মন্ত্রী তাদের পদত্যাগ পত্র দলের প্রেসিডিন্টের কাছে জমা দিয়েছেন । বাকী দুইজন অচিরেই তাদের পদত্যাগ পত্র জমা দিবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন । রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট চিকিৎসার কারনে দেশের বাইরে অবস্থান করায় দলের প্রেসিডেন্ট আপাতত পদত্যাগ পত্রগুলো তার হেফাজতে রেখেছেন । প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদ সাহেব ফিরে এলেই দলের প্রেসিডেন্ট সেগুলো তার কাছে জমা করবেন । আওয়ামীলীগ সরকার এখন দোদুল্যমান অবস্থার মধ্যে দিনাতিপাত করছে । তারা কি করবে সে বিষয়ে দিশা পাচ্ছে না । একদিকে ক্ষমতার লিপ্সা অন্যদিকে তাদের বিরুদ্ধে জনগনের ক্ষোভের বহিপ্রকাশ দেখে তারা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে । তাইতো দলের এক জন নেতার কথার সাথে অন্যজনের কথা সাংঘর্ষিকতায় জড়িয়ে পড়ছে । আওয়ামী সরকার আস্তে আস্তে উপলব্ধি করতে শুরু করেছে যে , কেবলমাত্র বিদেশী প্রভূরাই ক্ষমতার মসনদে আরোহন করাতে পারে না , ক্ষমতার মসনদে আরোহন করতে হলে এদেশের জনগনের ভোট এবং ভালোবাসার দরকার হয় ।



বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন উভয় সংকটে পরে আছে । তারা কি করবে ? কার কথা শুনবে ? একদিকে সংবিধানের কথা আরেকদিকে জনগনের কথা । নির্বাচন কমিশনকে বুঝতে হবে সংবিধানের জন্য জনগন নয় বরং জনগনের জন্য সংবিধান । সুতরাং খেয়ালখুশি মত যারা সংবিধান সংশোধন করে ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে চায় তারা দেশ ও দেশের মানুষের কাছে আপদ হিসেবে পরিগনিত হচ্ছে । সুতরাং নির্বাচন কমিশনকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা কোন কাতারে দাঁড়াবে ? জনতার কাতারে না অপশাসনের কাতারে ? আমরা



যারা ফুটবল খেলা বুঝি তাদের বর্তমান রাজনৈতিক সমীকরণ বুঝা খুব সহজ । কোন দল যদি প্রতিপক্ষ দলের কোন খেলোয়ারের অনুপস্থিতিতে গোল দেয় সে গোলের মূল্য একেবারে শূন্য । অতএব ফুটবল খেলার জন্য যেমন প্রতিপক্ষ দরকার তেমনি নির্বাচনে যাওয়ার জন্য বিরোধীদল দরকার । মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জনাবা শেখ হাসিনার খেলাধূলার প্রতি অনেক টান , যেটা আমরা ইতোমধ্যে লক্ষ্য করেছি । কোন জিনিসের প্রতি ভালোলাগা , ভালোবাসা তৈরি হয় ভালবাসা বা ভালোলাগার বস্তুটিকে বুঝতে পারার ক্ষমতাকে কেন্দ্র করে । সুতরাং আমি ধরে নিচ্ছি প্রধানমন্ত্রী ফুটবল খেলা বোঝেন তাইতো তার বাকশালী সিন্ধান্ত থেকে ফিরে আসা উচিত । সাথে সাথে বিরোধীদলের আসে আলাপ আলোচনা করে সুষ্ঠু সমঝোতার পথ বের করা উচিত । বাংলাদেশর স্থপতি জনাব শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যার কাছে আম-জনতা এটুকু দাবী করতেই পারে ।



লেথক : রাজু আহমেদ , কলামিষ্ট ও বিশ্লেষক ।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৫০

মিশুক৩১ বলেছেন: পুতুলের কি দোষ ? আপনাকে ১০-২০ টৃ মামলা, আর মিড়িয়া লেলিয়ে দিলে বুঝতেন ঠেলা । মামায় মাইনকা চিপায় পড়ছে !!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.