নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাজু আহমেদ । এক গ্রাম্য বালক । অনেকটা বোকা প্রকৃতির । দুঃখ ছুঁয়ে দেখতে পারি নি ,তবে জীবনের সকল ক্ষেত্রে অনুভব করেছি । সবাইকে প্রচন্ড ভালবাসি কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে প্রকাশ করতে পারি না । বাবা এবং মাকে নিয়েই আমার ছোট্ট একটা পৃথিবী ।

সত্যকা

সত্যকা › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশে আভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কি দরকার

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২২

ছোট বেলায় বাংলা সিনেমা দেখার প্রচন্ড ঝোঁক ছিল । তখনকার দিনে এখনকার মত এত সিডি ভিসিডির প্রচলন ছিল না । উচ্চবিত্ত ফ্যামিলির মধ্যে কিছু বিনোদন প্রিয় ব্যক্তিদের বাসায় ভিসিআর দেখা যেত । তবে থানা বা উপজেলা সদরের কিছু ব্যবসায়ী ভিসিআর ভাড়া দিত । এলাকার যুবকরা সম্মিলিত হয়ে দু’এক রাতের জন্য ভাড়া আনলেও বয়সে ছোট এবং পরিবারের কর্তার বাধ্য বাধকতায় আমি সেগুলো দেখার মত সৌভাগ্য অর্জন করতে পারিনি । তবে বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার আসলে কোন অবস্থায় নিজেকে বেধে রাখতে পারতাম না । সাপ্তাহিক ছুটির কারনে শুক্রবার এবং অর্ধদিবস অফিসের কারনে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ টেলিভিশন তার দর্শকদের আনন্দ দেয়ার জন্য পূর্ণদের্ঘ্য বাংলাছবি সম্প্রচার করত । ছোট বয়সে ছবি দেখে কিছু শিখতে পারি আর না পারি , সাধারণ জনগনের আইন হাতে তোলার অধিকার নাই সেটা বেশ ভালো ভাবেই শিখেছিলাম । ছবির নায়ক গুন্ডাদের যখন উত্তম-মাধ্যম দিত তখন পুলিশ চরিত্রে অভিনয় করা কিছু ব্যক্তি এসে নায়ককে আইন হাতে তুলে না নেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করত । বাংলাদেশের সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী পর্যন্ত বাংলাদেশের কোন সাধারণ নাগরিককে আইন হাতে তুলে নেয়ার অধিকার দেয়া হয়েছে বলে জানা নাই । তবে বাংলাদেশ সংবিধানের অনেক নিয়ম কানুন এ দেশে বাস্তবায়ন হয় না । গত ২৯ এবং ৩০ শে ডিসেম্বর বিরোধীদল নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আহুত “মার্চ ফর ডেমোক্রেসি” সরকার দলীয় সমর্থক এবং সরকার নিয়োজিত বাহীনি দ্বারা পন্ড করে দেয় । পুলিশের ভূমিকা রোবটদের মত হলেও আওয়ামী কর্মীদের ভূমিকা সুপারম্যানদের চরিত্রকে হার মানিয়েছে । বাংলাদেশের ইতিহাসের জগন্যতম কয়েকটি ঘটনার স্বাক্ষী হয়েছে বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ । এ সকল ঘটনার মধ্যে বাংলাদেশের সুপ্রিমকোর্টে জামাআত এবং বি এন পি সমর্থিত আইনজীবীদের প্রহার ছিল অন্যতম । ২৯ তারিখ রবিবার ছাত্রলীগ এবং যুবলীগ , ৩০ তারিখ ছাত্রীলীগ এবং মহিলালীগের কর্মীদের দিয়ে আইনজীবীদের উপর হামলা বিশ্ব মিডিয়া ন্যাক্কার জনক ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেছে । ঘটনাস্থলের নিকট দূরত্বে পুলিশ অবস্থান করলেও তারা দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে । এছাড়া একই দিনে প্রেসক্লাবে সাংবাদিক নেতাদের গায়ে হাত আবারও প্রমাণ করেছে আমরা সভ্যতার মাত্রা ছাড়িয়ে হাজার ক্রোশ দূরে অবস্থান করছি । সরকারী দল এবং বিরোধীদলের দলীয় কোন্দলের কারনে প্রতিনিয়ত পঙ্গুত্ব বরন করতে হচ্ছে অসংখ্য মানুষকে । এসব মানুষের অধিকাংশই রাজনীতির ধারে কাছে অবস্থান করে না । স্বাধীনতা পরবর্তী সকল সরকারের সমর্থকরাই তাদের কমবেশি সাম্রাজ্য বিস্তার করার প্রয়াস চালিয়েছে তবে এবারের মত অতীতের মাত্রা এত তীব্র ছিল না । উল্লেখ্য যে সর্বদলীয় সরকার গঠন করার পর জনতা যখন তাদের দাবী আদায়ে আন্দোলন করতে মাঠে নামে তখন থেকেই আওয়ামী সমর্থকরা শান্তি শৃঙ্খলা বাহিনীর চেয়ে অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করছে । বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে বিভিন্ন বাহীনির পোশাক পড়ে কিছু দলীয় ক্যাডাররা তাদের বিরুদ্ধমতাবলম্বীদের সাময়িক দমনে এমনকি স্থায়ীভাবে দমন করার মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছে ।



তৃতীয় বিশ্বের ৫৬ হাজার বর্গমাইলের ছোট্ট একটা উন্নয়নশীল দেশ আমাদের সবুজ শ্যামল বাংলাদেশ । আমাদের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের জন্য বিদেশী দাতা সংস্থা সমূহের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হয় । এ ঋন যেমন দিনের পর দিন বাড়ছে তেমনি জনগনের উপর ধার্য কৃত করের বোঝা দিন আর দিন আকাশচুম্বী হচ্ছে । জনগনের উপর আরোপকৃত করের প্রায় পুরোটাই ব্যয় করা হয় সরকারী কর্মকতা কর্মচারীদের বেতন বাতা বাবদ । বাংলাদেশ পুলিশ সহ অন্যান্য আভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহীনির পিছনে করের একটি বড় অংশ ব্যয় করা হয় । যে পুলিশের ব্রতই ছিল জনগনের জানমালের নিরাপত্তা দেয়ার সেই তাদের সামনে বসে জনগনের জীবন কেড়ে নেয়া হলেও তারা থাকে নির্বিকার । গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের বিভিন্ন নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রদের বিভিন্ন দলের মধ্যে সংঘর্ষের সময় পুলিশের সামনে দেশীয় অস্ত্রের সাথে মরনাস্ত্রের মহড়া মিডিয়ার কল্যানে কম দেখিনি । দলের নেতা কর্মীরা যদি এত সক্ষম হয় তবে কোটি কোটি টাকা দিয়ে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীর নামে এত বড় বাহীনি পালনের দরকারটা কি ! বাংলাদেশে যে হারে বেকার সমস্যা বেড়ে চলছে তাতে একজন শান্তি-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর বেতনের টাকা দিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের বেকার ভাতা প্রচলন করলে সরকারের ভাবমূর্তি যেমন উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হবে তেমনি দেশের প্রকট সমস্যারও একটা অস্থায়ী সমাধান হবে । একজন বেকার হিসেবে সরকারের উর্ধ্বমহলের কর্মকর্তাদের আরেকবার ভেবে দেখার অনুরোধ করছি । মাত্র ৪৩ বছরের স্বাধীন বাংলাদেশে যেভাবে ১৫ বার সংবিধানের উপর স্বার্থবাদী হস্তক্ষেপ করা হয়েছে সেটা সাধারণ জনতা বুঝে খুব বেশি উপকৃত হবে না অপকৃত ছাড়া । যে যার স্বার্থ অনুযায়ী সংবিধান পরিবর্তন করার কারনে সংবিধানও আজ ডুকরে কাঁদে । যারা যে সময় ক্ষমতায় থাকবে তাদের নেতাকর্মীরা সে সময় দেশের শান্তি শৃঙ্খলার ব্যাপার দেখাশুনা করলে দেশের আম জনতা যেভাবে উপকৃত হবে তেমনি বেকার সমস্যারও সমাধান হবে ! পুলিশের প্রতিষ্ঠাতা ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা বাংলাদেশের পুলিশদের কর্মকান্ড দেখলে হয়ত শান্তি-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপারে আবারও ভেবে দেখতেন ।



লেখক : রাজু আহমেদ । শিক্ষার্থী ও কলামিষ্ট ।

সরকারী বি এম কলেজ , বরিশাল ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.