নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাজু আহমেদ । এক গ্রাম্য বালক । অনেকটা বোকা প্রকৃতির । দুঃখ ছুঁয়ে দেখতে পারি নি ,তবে জীবনের সকল ক্ষেত্রে অনুভব করেছি । সবাইকে প্রচন্ড ভালবাসি কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে প্রকাশ করতে পারি না । বাবা এবং মাকে নিয়েই আমার ছোট্ট একটা পৃথিবী ।

সত্যকা

সত্যকা › বিস্তারিত পোস্টঃ

মন্ত্রীমহোদয় আসবেন বলে........

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:৪৫

(এ লেখার সকল চরিত্র এবং স্থান কাল্পনিক । তবে লেখার্ প্রতিপাদ্য বিষয় সমাজের জন্য এক বিষফোঁড়া । সচেতনতা এবং উদ্যোগ প্রয়োজনে আইনের মাধ্যমে এ প্রথা বন্ধ করা উচিত)



সরকারী ঝিকাতলা স্কুল । গত পণের দিন ধরে স্কুলজুড়ে সাজ সাজ রব । পঞ্চাশোর্ধ হেডমাষ্টার আবুল মিয়ার ব্যস্ততার সীমা নাই । নিজের ব্যস্ততার সাথে স্কুলের সকল শিক্ষক কর্মচারীকেও ব্যস্ত রেখেছেন । অন্যসময়ের অলস মানুষটির কর্মতৎপরতা দেখে স্কুলের অন্য শিক্ষরা বিশেষ করে বাংলার শিক্ষক মন্টু মিয়া আড়ালে হাসেন । মন্টু মিয়ার হাসার পিছনে অনেক কারন বিদ্যমান । আবুল মিয়ার অনেকগুলো বদ অভ্যাস আছে । আবুল মিয়া মাসে দু’একদিন স্কুলে আসলেও পারেন আবার না আসলেও পারেন । যতক্ষণ স্কুলে থাকেন তার বেশির ভাগ সময় ঘুমিয়ে কাটান । তবে আবুল মিয়ার সবচেয়ে বড় দোষ, তিনি যা দু’একদিন স্কুলে আসেন সে ‍দিনগুলোতে স্কুলে উপস্থিত হয়ে প্রথমে দফতরী ইলিয়াস বিশ্বাসকে তুমুল বকা দেন । তার বকার হাত থেকে স্কুলের কেউ রেহাই পায় না । সবশেষে স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষককে বকাদেন । সহকারী প্রধান শিক্ষক নাসের মোল্লা বয়সে আবুল মিয়ার চেয়ে ছোট হলেও আবুল মিয়া নাসের মোল্লাকে খুব মানেন । স্কুলের যাবতীয় সমস্যার সমাধান করে বেশ সুনামের সাথেই তিনি ঝিকাতলা স্কুলকে সকলের কাছে পরিচিতি করে তুলেছেন । সে কারনে হেডমাষ্টার আবুল মিয়া প্রথমে তার সহকারীকে বকা দিলেও পরবর্তীতে খাতির জমানোর চেষ্টা করেন । নাসের মোল্লাও মাটির মানুষ । তাকে কেউ অযথা দোষারোপ করলে তাতে তার মধ্যে বিশেষ কোন ভাবান্তর হয়না । নাসের মোল্লা বিশ্বাস করেন, যে দোষ তিনি করেন নি সে দোষে তাকে দোষী করা হলে তাতে তার কিছুই যায় আসে না । সেকারনে নাসের মোল্লাকে স্কুলের সকল শিক্ষক-কর্মচারী এবং ছাত্র-ছাত্রীরা পরম শ্রদ্ধা করে । ঝিকাতলা স্কুলে আগামীকাল মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় আগমন করবেন । সাম্রতিক এসএসসির ফলাফলে জেলায় ঝিকাতলা স্কুল প্রথম স্থান অধিকার করেছে । মন্ত্রীমহোদয়ের বাড়িও একই জেলায় । সেকারনে মন্ত্রীমহোদয় স্ব-উদ্যোগে ঝিকাতলা স্কুলে তার মূল্যবান সময় থেকে বিশ মিনিট সময় দিবেন বলে ঘোষণা করছেন । স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ অন্যান্য সদস্যদের সাথে আবুল মিয়ার দফায় দফায় বৈঠক হচ্ছে । বৈঠকের আলোচ্য বিষয়গুলো ঘুরে ফিরে প্রায় এক ।



কার বাড়ীতে মন্ত্রীমহোদয়কে আহার করানো হবে । আহারে কতপ্রকার ফল, সবজি, মাছ, মাংসসহ অন্যান্য সু-খাদ্য রাখা যায় । অনুষ্ঠানে কে শুভেচ্ছা ব্যক্তব্য রাখবে । স্কুলের জন্য কতগুলো দাবি উত্থাপণ করা যায় । লালগালিচা না দিলে মন্ত্রীমহোদয়কে অপমান করা হয় বলেও অনেকে মত দিলেন । তবে পরমার্শ সভায় একটা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে মোটামুটি হট্টোগোল বেধে গেল । ঝিকাতলা স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা সর্বসাকুল্যে সহস্র ছুঁই ছুঁই । এ পরিমান শিক্ষার্থী দিয়ে মন্ত্রীমহোদয়কে মানসম্মত ভাবে শুভেচ্ছা জানিযে বরণ করা সম্ভব কিনা ? নাকি আরও শিক্ষার্থী দরকার ? এ প্রশ্নের সমাধান করতে গিয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক নাসের মো্ল্লা সমাজের সাথে বেমানানসই এক উদ্ভট প্রস্তাব উত্থাপন করে বসলেন । নাসের মোল্লা বললেন, মন্ত্রীমহোদয় শিক্ষিত মানুষ । শিক্ষার্থীদের কষ্ট দিয়ে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখা উচিত হবে কি ? তার একথা মুখ দিয়ে সম্পূর্ণ বের হওয়ার আগেই স্বুলের সভাপতি তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠলেন । তিনি বললেন, আপনি মানুষের ইজ্জতের বোঝেন কি ? সারা জীবন চক-ডাষ্টার নিয়ে নাবালক-নাবালিকার সাথে সময় পার করেছেন । আপনি রাজনৈতিক নেতাদের ইজ্জতের কি বুঝেন ? আমি ওয়ার্ড কমিটির সহ-সভাপতি হয়ে বুঝেছি সম্মান কি জিনিস ! মন্ত্রীমহোদয় তো আমাদের থেকে কোটি-কোটিগুন উচ্চ মর‌্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি । তাকে সম্মানেরসহিত শুভেচ্ছা জানাতে না পারলে আমার এবং প্রধান শিক্ষকের মর‌্যাদার কতটা হানি হবে সেটা আপনি কেমনে বুঝবেন । স্কূল কমিটির অন্যান্য সদস্যরা সভাপতি সাহেবের কথার সাথে তাইতো-তাইতো করে উঠলেন । প্রধান শিক্ষক আবুল মিয়া সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগলেও সভাপতির বিরুদ্ধে যাওয়া তার সাহসে কুলিয়ে ওঠল না । তিনিও আমতা আমতা করে নাসের মোল্লাকে বললেন, আপনি চুপ থাকেন । সভাপতি সাহেব আমাদের সকলের মঙ্গলের কথা চিন্তা করেই সিদ্ধান্ত দিবেন । নাসের মোল্লার আর কিছুই বলার থাকল না ।



মন্ত্রীমহোদয়ের আগমনের আগের দিন দশটার দিকে মন্ত্রীমহোদয়ের ব্যক্তিগত সহকারী কর্তৃক স্কুলের সভাপতি এবং প্রধান শিক্ষকের কাছে ফোন আসল । মন্ত্রীমহোদয়ের ব্যক্তিগত সহকারী আদেশের সুরে সভাপতি এবং প্রধান শিক্ষকের কাছে বলল, জানেনতো আমাদের মন্ত্রীমহোদয়ের সময়ের কতমূল্য । তারপরেও তিনি মূল্যবান সময়কে নষ্ট করে আপনাদের স্কুলে যাওয়ার জন্য কথা দিয়ে ফেলেছেন । এমন আয়োজন করবেন, যাতে মন্ত্রীমহোদয় আপনাদের উপর খুশি হয় । বিশেষ করে রাস্তার দু’পাশে আপনাদের স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের দিয়ে বাঁধ সৃষ্টি করবেন এবং তাদের প্রত্যেকের হাতে ফূল দিয়ে রাখবেন, মন্ত্রীমহোদয় রাস্তায় প্রবেশ করার সাথে সাথে সকলেই যেন উষ্ণ অভিভাষণের মাধ্যমে ফূল দিয়ে বরণ করে নেয় । মন্ত্রীমহোদয়ের আগমনের অন্তত ঘন্টা দু’য়েক আগেই শিক্ষার্থীদের রাস্তার দু’ধারে প্রস্তুত করে রাখবেন । মন্ত্রীমহোদয় আপনাদের স্কুলে পৌঁছার আগেই সেখানে অনেক সাংবাদিক এবং বিশেষ বিশেষ ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত হবেন । আপনাদের আয়োজন দেখে তারা যেন মন্ত্রীমহোদয়ের সম্মানের উচ্চতা আন্দাজ করতে পারে ।



স্কুল কমিটির সদস্যবৃন্দের এবং প্রধান শিক্ষকের এতদিনের পরিকল্পনার সাথে মন্ত্রীমহোদয়ের ব্যক্তিগত সহকারীর ফোনে প্রেরিত নতুন বার্তায় তাদেরকে নতুন করে ভাবিয়ে তুলল । সভাপতি সাহেব প্রস্তাব দিলেন, আমাদের স্কুলে যে সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী আছে তাতে মন্ত্রীমহোদয়ের সম্মান পুরোপুরিভাবে প্রদর্শন করানো সম্ভব নয় । আবুল মিয়া আপনি এক কাজ করেন । আমাদের পার্শ্ববর্তী কল্যানপুর এবং সোনাপুর স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদেরকেও নিয়ে আসেন । তিন স্কুলের শিক্ষার্থীদেরকে একসাথ করে মাইল খানেক রাস্তাব্যাপী ওদেরকে দাঁড় করিয়ে মন্ত্রীমহোদয়কে সম্মান জানানো যাবে । মন্ত্রীমহোদয়ও আমাদের উপর বেজায় খুশি হবেন ।



আজ অনুষ্ঠান । দুপুর বারোটায় মন্ত্রীমহোদয় ঝিকাতলা স্কুলে তার পদ-ধূলি দিবেন বলে কথা আছে । স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সকল সদস্য, স্থানীয় রাজনৈতিক কর্তাব্যক্তিরা এবং স্কুলের শিক্ষক কর্মচারীর যৌথ প্রচেষ্টায় সকাল নয়টার মধ্যেই শিক্ষার্থীদেরকে রাস্তার দু’ধারে ফূল হাতে দাঁড় করানো হল । শিক্ষকদের কড়া আদেশ ; কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা যাবে না, দুষ্টামি করা যাবে না , রোদ-বর্ষা যাই হোক স্থান ত্যাগ করা যাবে না । যদি কারো দ্বারা এ আদেশের বিরুপ কিছু হয় তবে তাদেরকে অবশ্যই কঠিন শাস্তির মুখোমূখি হতে হবে । শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের অনুগত । তারা গুরুজনের আদেশকে যথার্থভাবে পালন করেছে । সময় আস্তে আস্তে গড়িয়ে দুপুর হল । কাটায় কাটায় বেলা বারোটা । বারোটা গড়িয়ে একটা । মন্ত্রীমহোদয়ের দেখা নেই । মন্ত্রীমহোদয়ের ব্যক্তিগত সহকারীকে স্কুলের সভাপতি ভয় মিশ্রিতভাবে ফোন করে জানতে চাইল, আপনারা কতদুর । পৌছতে আর কত সময় লাগবে ? মন্ত্রীমহোদয়ের ব্যক্তিগত সহকারী গর্জন করে বললেন, এই মিয়া ! এত তাড়া কিসের । মন্ত্রীমহোদয় কথা দিয়েছেন আপনাদের ওখানে যাবেন । তার কথার নড়চড় হয় না । তিনি অবশ্যই যাবেন । একটু ধৈরর‌্য্য ধরতে পারেন না । মন্ত্রীমহোদয় একটা সিনেমাহল উদ্ভোধন করছেন । সেটা শেষ হলেই আপনাদের ওখানে যাবেন । আরও ঘন্টা খানেক অপেক্ষা করেন ।



একঘন্টা হতে কয়মিনিট লাগে সভাপতি সাহেব সেটা চিন্তা করতে লাগলেন । ছাত্র-ছাত্রীদের মুখের দিকে তাকানো যায় না । শিক্ষার্থীদের চেহারার দিকে তাকালে বিবেকবানদের চোখে পানি আসে । আর কত সহ্য করা যায় । নাসের মোল্লা ছাত্র-ছাত্রীদের অবস্থা দেখে লাইব্রেরীর নিভৃত কোনে বসে কিছু সময় কাঁদলেন । কাঁদা ছাড়া তার কিইবা করার আছে ? প্রধান শিক্ষক সাহেব মনে মনে কান ধরছেন । কোন মন্ত্রীমহোদয়ের আগমন উপলক্ষ্যে তিনি তার নৈতিক শিক্ষাকে বিসর্জন দিবেন না । অভিভাবকরা চরম বিরক্ত । অবশেষে আসল সে মহেন্দ্রক্ষন । বিকেল তিনটার কিছু পূর্বে বিশাল গাড়ীবহর নিয়ে মন্ত্রীমহোদয় ছাত্রদের বিরক্তি মিশ্রিত অভিবাধন নিয়ে উপবিষ্ট হলেন তার জন্য নির্ধারিত আসনে । উপস্থাপকের ডাকে উঠে আসলেন বক্তৃতার মঞ্চে । শুরু করলেন তার সরকারের উন্নয়নের বিশাল ফর্দ পাঠ । দীর্ঘ চল্লিশ মিনিটব্যাপী চলল তার আলোচনা । অবশেষে সকলকে ধন্যবাদ দিয়ে আজকের মত বিদায় নিলেও সুযোগ পেলে আবারও আসবেন বলে কথা দিয়ে গেলেন ।



মন্ত্রীমহোদযের আগমন উপলক্ষে অনুষ্ঠান কভার করতে আশা এক সাংবাদিক মন্ত্রীমহোদয়ের সময়জ্ঞানের প্রতি বিরক্ত হয়ে বিশেষ করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের করুনদশা এবং তাদের হৃদয়ের ভাবাবেগ উপলব্ধি করে লিখে ফেললেন বিশাল কলাম । সেখানে তুলে ধরলেন দেশের বিভিন্ন স্কুলে মন্ত্রীমহোদয়দের আগমনের হেতুতে কোমলমতিদের বেহালদশা । সংবাদটি ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করল । মন্ত্রীমহোদয়দের সম্মান জানানোর উপায় হিসেবে কোমলমতিদের ব্যবহার করা যাবে না মর্মে বিবৃতি দিল দেশের হাজার হাজার শিক্ষাবিদ । খবরটি সরকারের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টিতে পড়ল । তিনি ঘোষণা করলেন, কোন মন্ত্রী বা বিশেষ ব্যক্তিদের বরণ করার জন্য শিক্ষার্থীদের রাস্তায় দাঁড় করানো যাবে না । শিক্ষামন্ত্রীর উদ্যোগটি ব্যাপক বাহবা পেল সাথে শিক্ষামন্ত্রীও । কয়েকদিন প্রবর্তিত নিয়মটির চর্চাও হল । অবশেষে আসল সে কু’ক্ষন । আবারও মন্ত্রীমহোদয়দের বরণ করার জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের রাস্তার দু’ধারে দাঁড় করিয়ে রাখার সংস্কৃতি চালু হল । এইতো গত দিন তিনেক আগে পত্রিকায় পড়লাম, মন্ত্রীমহোদয়কে বরণ করার জন্য পাঁচঘন্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হল স্কুলের সহস্রাধিক শিক্ষার্থীকে । এরকম সংস্কৃতি থেকে কবে মুক্তি পাবে এ দেশ, এদেশের শিক্ষার্থীরা ? কবে বিবেকের কাছে আবেগকে জবাবদীহি করতে বাধ্য করতে পারব ? সেই শুভক্ষণের প্রতীক্ষায় ।



রাজু আহমেদ । কলাম লেখক ।

[email protected]





মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:৫৮

সিম্ফনি007 বলেছেন: মন্ত্রীমহোদয়কে বরণ করার জন্য পাঁচঘন্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হল স্কুলের সহস্রাধিক শিক্ষার্থীকে । এরকম সংস্কৃতি থেকে কবে মুক্তি পাবে এ দেশ, এদেশের শিক্ষার্থীরা ? কবে বিবেকের কাছে আবেগকে জবাবদীহি করতে বাধ্য করতে পারব ? সেই শুভক্ষণের প্রতীক্ষায় ।

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:১২

সত্যকা বলেছেন: ভাই এ সম্মন্ধ্যে আপনি কিছু বলুন । আমাদের কি করা উচিত বলে আপনি মনে করেন ?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.