নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাজু আহমেদ । এক গ্রাম্য বালক । অনেকটা বোকা প্রকৃতির । দুঃখ ছুঁয়ে দেখতে পারি নি ,তবে জীবনের সকল ক্ষেত্রে অনুভব করেছি । সবাইকে প্রচন্ড ভালবাসি কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে প্রকাশ করতে পারি না । বাবা এবং মাকে নিয়েই আমার ছোট্ট একটা পৃথিবী ।

সত্যকা

সত্যকা › বিস্তারিত পোস্টঃ

আত্মমর্যাদাবোধ জাগ্রত হলেই ভিক্ষাবৃত্তি বিলুপ্ত করার সম্ভব

২৩ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ৯:১২

বিশ্বের সকল দেশেই সাধরণভাবে ভিক্ষাবৃত্তি চলে । বিশ্বের ধনী রাষ্ট্রগুলো থেকে শুরু করে সবচেয়ে গরীব রাষ্ট্রটিতেও চলে ভিক্ষুকের কার্যক্রম । তবে একেক দেশের ভিক্ষা গ্রহন বা দানের পদ্ধতি ভিন্ন । মৌলিক কিছু পার্থক্য থাকলেও ভিক্ষাবৃত্তিতে আত্মসম্মান বা মর্যাদার হানি হয় তা ধনী-দরিদ্র সকলেই স্বীকার করে । মানুষের মৌলিক অধিকার বিশেষ করে খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা ও বাসস্থানের চাহিদা পূরণ না হলেই মানুষ সমাজের বিত্তশালীদের পানে হাত বাড়ায় । তবে দেশের ভিক্ষুকদের সকলেই যে তাদের জীবিকার চাহিদা পূরণের জন্য ভিক্ষা করে তা কিন্তু নয় । বাংলাদেশে যে পরিমান মানুষ তাদের অসহায়ত্বের জন্য ভিক্ষা তার চেয়ে ঢের বেশি মানুষ ভিক্ষা করে নিজেকে কষ্টকর জীবিকা নির্বাহের ঝামেলা থেকে বাঁচার জন্য । ভিক্ষা অনেকের কাছে ব্যবসা হয়ে দাঁড়িয়েছে । ভিক্ষা করতে যেমন পুঁজি লাগে না তেমনি অনিশ্চয়তাও নাই । ভিক্ষা একটি লাভ জনক পেশা-যে পেশায় নূন্যতম বিনিয়োগ নাই, পরশ্রিম নাই । শুধু নাটক বা ড্রামাটা ঠিকঠাক করতে পারলেই মিশন সাকসেস । আয়করবিহীন উপার্জনের উপায় হিসাবে ভিক্ষাবৃত্তির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় ভাবে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া উচিত বলে অনেকেই মনে করেন । কেবল বিকলাঙ্গ এবং শারীরীক অক্ষমতায় পরিশ্রমের অনুপুযুক্তদের চিহ্নিত করে তাদের যথাযথ পূনর্বাসন করে ভিক্ষাবৃত্তির বিপরীতে কঠোর আইন প্রয়োগ করাও সময়ের দাবী । বিভিন্ন ধর্মে ভিক্ষা করা নিষেধ করা হয়েছে । বিশেষ করে পৃথিবীর বুকে সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম এবং জীবন ব্যবস্থা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত সুমহান ইসলাম ধর্মের প্রচারক মানবতার মুক্তির দিশারী মানবকূলের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ভিক্ষাবৃত্তি প্রচন্ডভাবে অপছন্দ করতেন । সামুরা ইবনে জুনবদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, মানবতার মহান শিক্ষক ইরশাদ করেছেন, “ভিক্ষাবৃত্তি হচ্ছে ক্ষতস্বরুপ, এর দ্বারা মানুষ তার মূখমন্ডলকে ক্ষতবিক্ষত করে” ( আবু দাউদ, হাদীস নং ১৬৩৫)



বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় ভিক্ষা চাওয়া হয় । তবে ভিক্ষাগ্রহনে সবচেয়ে ব্যতিক্রমী ইন্দোনেশিয়ার একটি অঞ্চলের মানুষ । এখানের ভিক্ষুকরা ঘোড়ার পিঠে সওয়ারী হয়ে ভিক্ষা করে । বাংলাদেশে সাধারণত ভিক্ষুকরা দ্বারে দ্বারে, জনে জনের কাছে গিয়ে হাত বাড়িয়ে ভিক্ষা প্রার্থনা করে । ভিক্ষাবৃত্তির প্রচলন কবে হয়েছিল তা নিয়ে ব্যাপক মত-পার্থক্য থাকলেও নির্ভর যোগ্য কোন সূত্র পাওয়া যায় ন । তবে মানব সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকেই শারীরীকভাবে বিকলাঙ্গ মানুষেরা সবলদের গলগ্রহ হয়ে তাদের জীবন নির্বাহ করত । শুধু মুসলিমরাই ভিক্ষাবৃত্তিকে তাদের পেশা হিসেবে গ্রহন করে না বরং বিশ্বের প্রায় প্রতিটি ধর্মের লোকদের একটি বিশাল অংশ ভিক্ষাবৃত্তির সাথে জড়িত । বৈদিক যুগে বা তার পরবর্তী সময়ে সমগ্র ব্রাহ্মনগণ “ভিক্ষাং দেহি” বলে গৃহস্থের বাড়ীর সামনে বাজখাঁই গলায় চিৎকার করত । এরপর পান থেকে চুন খসলেই অভিশাপ-অভিসম্পাত। বর্তমানে বাংলাদেশের ভিক্ষুকরা প্রতিমাসে সর্বনি¤œ ৮ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করে । বাংলাদেশে অনেক ভিক্ষুক আছে যাদের লক্ষাধিক টাকার ব্যাংক-ব্যালেন্স আছে । ভিক্ষাবৃত্তিকে নিয়ে সমাজের এক শ্রেণীর মানুষ বিশাল ব্যবসার স¤্রাজ্য সৃষ্টি করেছে অথচ তারা সরাসরি ভিক্ষা কার্যের সাথে জড়িত নয় । রাজধানী শহর ছাড়াও বাংলাদেশের কয়েকটি বড় শহরে এদের বিচরণ লক্ষণীয় । শহরের কিছু নির্দিষ্ট স্থান আছে যেখানে প্রতিদিন অনেক টাকা ভিক্ষা পাওয়া যায় । এসকল স্থানগুলো ভিক্ষুক সিন্ডিকেটের নেতাদের দখলে । ভিক্ষুকরা এ সকল ব্যক্তিদের কাছ থেকে এসব স্থান ভাড়া নিয়ে ভিক্ষা করে এবং দিনশেষে বা মাসশেষে একটি নির্দিষ্ট পরিমান টাকা সিন্ডিকেট নেতাদের দিতে হয় । এ শ্রেণীর লোকেরা বিভিন্ন স্থান থেকে শিশু অপহরণ করে তাদেরকে বিকলাঙ্গ করে ভিক্ষাবৃত্তিতে বাধ্য করে । এছাড়াও সমাজের অসহায়দের ইচ্ছাকৃতভাবে অন্ধ বা অঙ্গহীন করে ভিক্ষা কাজে বাধ্য করে । বাংলাদেশের গ্রামীন পর্যায় থেকে শুরু করে শহরের আভিজাত স্তর পর্যন্ত খেয়াল করলে মোটামুটি চার শ্রেনীর ভিক্ষুক দেখা যায় ।



প্রথমতঃ বাংলাদেশে যারা সত্যিকারার্থের ভিক্ষুক তাদের সংখ্যা খুবই কম । ২ কোটি জনসংখ্যার ঢাকা শহরে এ শ্রেণীর সংখ্যা সর্বোচ্চ ১০ হাজার । গোটা দেশে প্রকতার্থের ভিক্ষুকের সংখ্যা ৫০ হাজারও হবে না । ২০১১ সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর সকাল থেকে শুরু হয়েছিল ভিখারী জরিপের কাজ । সমাজকল্যান মন্ত্রনালয়ের উদ্যোগে এ জরিপ কাজ পরিচালনা করেছিল ১০টি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান । প্রাথমিকভাবে জরিপের লক্ষ্য ছিল ১০ হাজার ভিক্ষুকের ছবিসহ নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে তাদের মধ্য থেকে একেবারে অসহায় ২ হাজার ভিক্ষুককে পূনর্বাসন করা হবে । কিন্তু কিছু এনজিও তাদের স্বার্থহানীর শংকায় সরকারের এ উদ্যোগকে প্রতিহত করার জন্য আদালতের শরণাপন্ন হয় । কেননা এসকল এনজিও ভিক্ষুকদের ছবি দেখিয়ে প্রতিবছর বিদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা এনে বিলাসবহুল গাড়ীতে ঘুরে বেড়ানোর রসদ পায় । হাইকোর্টও এ এনজিওগুলোর পক্ষে রায় দেয় । পরবর্তীতে তারা রায় দেখিয়ে সরকারের উদ্যোগকে স্থগিত করে দেয় । ভিক্ষাবৃত্তির জন্য নির্দিষ্ট কাঠামো না থাকার কারনে যে কেউ এ পেশায় অবলীলায় প্রবেশ করতে পারছে । এ জন্য দেশের মধ্যে যারা প্রকৃত ভিক্ষুক তারা ঠিকমত ভিক্ষা না পেয়ে অর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করে ।



দ্বীতিয় শ্রেণীর ভিক্ষুরা ব্যবসায়ী মনোবৃত্তির । অলস্যতা এবং হীনমন্নতা তাদেরকে এ পেশায় টেনে এনেছে । সল্প পরিশ্রমে অধিক আয়ের সুযোগ ভিক্ষাবৃত্তির ছাড়া অন্য কোন পেশায় নাই । এই শ্রেণীর ভিখারীরা সামাজিক অভিশাপ । গ্রামে-গঞ্জে, হাট-বাজারে, রাস্তাঘাটে, স্কুল-কলেজে, যানবাহনে এ শ্রেণীর ভিখারীদের উপদ্রপ ক্রমে বাড়ছে । অনেকসময় তার প্রায় পথরোধ করে ভিক্ষা দাবী করে পথচারীদেরকে বিব্রত করে । দেশের সবগুলো বাস স্টপেজ, লঞ্চ ও স্টীমারঘাট, রেল স্টেশনে এদের উপদ্রব সহনীয় মাত্রা অতিক্রম করেছে । শহরের দোকানগুলোতে এদের জ্বালাতনে ব্যবসায়ীরা ঠিকমত বেচা-কেনা করতে পারে না । বাসার কলিংবেলে কিংবা দরজায় বিরামহীন নকের কারনে নগর এবং শহরের মানুষের জীবন একেবারে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে । কিছু ভিখারী আছে যারা নিশ্চিত ভিক্ষা লাভের কৌশল হিসাবে নিজেদের বিকলাঙ্গ ও বিকৃত চেহার দেখিয়ে রাস্তাঘাটে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করে ভিক্ষা তথা মুদ্রা সংগ্রহ করে । অনেকেই ভিক্ষাবৃত্তিতে শিশুদেরকে নিয়োজিত করে । করুন পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে দুগ্ধপোষ্য শিশুদেরকে ভাড়ায় নিয়ে পথে ঘুরে ঘুরে ভিক্ষা করতেও দেখা যায় ।



তৃতীয়তঃ বাংলাদেশ গরীব রাষ্ট্র হিসেবে ধনী রাষ্ট্রের কাছে হাত বাড়িয়ে থাকে । দেশের সম্পদের উপর নির্ভর না করে বিদেশী প্রভূদের গলগ্রহ হয়ে বেঁচে থাকা অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে । স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশের তৎকালীন অর্থমন্ত্রী স্যুট-বুট পরিধান করে দেশে দেশে ভিক্ষা করে বেড়াত । এখন সময় বদলেছে । বিদেশ থেকে চাইলেই আর ভিক্ষা পাওয়া যায় না । তারা ভিক্ষা দেয়ার কথা বলে ঠিকই বাংলাদেশকে টাকা দেয় তবে তার সাথে জুড়ে দেয় সহজ কিছু শর্ত । শতকরা ২.৫০ ভাগ সুদ দিতে হবে, আভ্যন্তরীণ ট্রানজিট দিতে হবে, উৎপাদিত পণ্যদ্রব্য কমদামে তাদের কাছে বিক্রি করতে হবে । তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসেবে বাংলাদেশ তাদের আরোপিত শর্তগুলো মেনে নিতে বাধ্য হয় । অথচ দেশের আভ্যন্তরীণ দুুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, আইনের অপব্যবহার এবং প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলে বাংলাদেশকে বিদেশী প্রভূদের করুণার পাত্র হয়ে দিন কাটাতে হত না । স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরেও বাংলাদেশের এমন করুণ পরিণতি থাকত না । জন্মসূত্রে অপার সম্ভাবনার বাংলাদেশ একটি ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্ত দেশ হিসাবে বিশ্বের কাছে পরিচিতি পেত ।



চতুর্থ শ্রেণীর ভিক্ষুক হল ধর্মব্যবসায়ীরা । এরা ধর্মকে পুঁজি করে টাকা আত্মসাৎ করে । ইসলাম ধর্মের কিছু লোক যেমন এ ধরনের ভিক্ষাবৃত্তির সাথে জড়িত তেমনি হিন্দুসহ প্রায় সকল ধর্মের অল্প সংখ্যক লোক এ ধরনের পেশার নিজেদেরকে জড়িয়ে নিয়েছে । বাংলাদেশে হাজার হাজার মাযার, দরগাহ, খানকা গড়ে উঠেছে । অথচ হাতে গোনা কয়েকটি দরবার ইসলামের সঠিক ধারার উপর আছে । বাকীরা দেশে বিদায়াত ও শিরকের সয়লাব এনেছে । চলার পথে প্রায়ই শোনা যায় ওরসের কথা । রাস্তার পাশের লাইট পোষ্টগুলোর দিক তাকালেই দেখা যায় ওরস সম্বন্ধীয় বা পীর বাবাকে গোসল করানোর দিনের আয়োজন নিয়ে পোষ্টা আর ব্যানার । অমুক বাবা তমুক বাবাা, অমুক শরীফ তমুক শরীফ । ধর্মের সকল কাজগুলো স্পর্শকাতর হওয়ার কারনে এটাকে মানুষ খুব ভয় পায় এবং যার কথাই ভালো লাগে তাকে ইসলামের ধারক বাহক বলে মনে করে । এখানে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের সুযোগ খুব কম । কিছু কিছু মাদ্রাসার নাবালক ছাত্রদেরকে বছরের কিছু নির্দিষ্ট সময়ে দেখা যায় বস্তা হাতে গ্রামের বাড়ীতে বাড়ীতে ঘুরতে, উদ্দেশ্য মাদ্রাসার জন্য আল্লাহর ওয়াস্তে কিছু পাওয়া । এ কথা সত্য যে, স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের কোন সরকার মাদ্রাসা শিক্ষাকে উন্নয়ন করার জন্য তেমনভাবে আর্থিক সহায়তা করেনি । সে কারনে মাদ্রাসাকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য দেশের সর্বস্তরের মানুষের কাছে হাত পাততে হয়। কিন্তু এ কাজে শিশুদেরকে ব্যবহার করে শিশুদের মনে ভিক্ষাবৃত্তির মানসিকতা জাগ্রত কিংবা জীবনের শুরুতে আত্মমর্যাদাবোধ বিলীন করে দিতে সাহায্য করা হচ্ছে কিনা সেটা ভেবে দেখতে হবে ? রমজান মাস আসলে শহরের দোকানগুলোতে কিছু মানুষের খুব উপদ্রব হয় । অমুক মাদ্রাসা , অমুক স্থানের মসজিদ, তমুক খানকার জন্য সাহায্য চাই । এতে ব্যবসায়ীরা চরমভাবে বিরক্ত হয় । এমনকি সুন্নতী পোষাক পরিহিত কোন ক্রেতাও যদি তাদের দোকানে ঢোকে তবে কোনরুপ প্রশ্ন জিজ্ঞাসা ছাড়াই বলে, ভাই ! পড়ে আসেন । এখন কিছু দিতে পারব না । বাস বা নৌপথে মুরুব্বী শ্রেণীর কিছু মানুষকে দেখা যায় হাতে একখানা রশিদবই নিয়ে দান করার ফযিলত ব্যাখ্যা করে বিশাল বক্তৃতা দিয়ে বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা, মাহফিল, খানকার জন্য টাকা উত্তোলণ করেন । অথচ এ শ্রেণীর লোকেরা আদায়কৃত টাকা থেকে কত শতাংশ আসল উদ্দেশ্যে ব্যয় করে বাকী টাকা নিজেরা রাখেন তার কোন নির্দিষ্ট হিসাব নাই । এছাড়াও বাংলাদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের ধর্মীয় পালা-পার্বণ আসলে যত্রতত্র টাকা উত্তোলন করে । সব মিলিয়ে আসল উদ্দেশ্যে এর কম অংশই খরচ হয় ।





ভিক্ষাবৃত্তি একটি সামাজিক সমস্যা । দরিদ্রতার কষাঘাতে পিষ্ট হয়ে বেঁচে থাকার তাগিদে অনেকে ভিক্ষা করতে বাধ্য হয় । এ পথেই দরিদ্র ভিখারীরা স্বচ্ছল ভিখারী হয়ে ওঠে । অর্থ-উপার্জনের সহজ পথ হিসেবে ভিক্ষাবৃত্তিকে পেশা হিসেবে বেছে নেয় । অথচ ভিক্ষাবৃত্তি মানবতার চরম অবমাননা । এটা স্বীকৃত বা সম্মানজনক কোন পেশা নয় । ভিক্ষাবৃত্তি থেকে অবসান হতে গেলে কতগুলো নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হবে । প্রথমেই মানসিকতা এবং উদ্যোগের পরিবর্তন ঘটাতে হবে । এজন্য দরকার আত্মসম্মানবোধ ও আত্মচেতনাবোধ জাগ্রত করা । তবে মানুষের এ আত্মসম্মানবোধ জাগ্রহ হওয়ার পিছনে দুই শ্রেণীর মানুষ বিশেষ অন্তরায় সৃষ্টি করে । এদের মধ্যে একদল মানুষ অন্যদলকে করুণা করে নিজেদের আত্মতৃপ্তি হারাতে রাজি নন । আর একদল পূণ্যলোভী, এরা মনে করে ভিখারীকে ভিক্ষা দিয়ে সারা জীবনের পাপ-কেøদ মুছে ফেলতে পারবে । হিন্দু ধর্মে ভিক্ষাবৃত্তি নিষিদ্ধ না হলেও মুসলিম ধর্মে ভিক্ষাবৃত্তি একেবারেই নিষিদ্ধ । ইসলাম ধর্মে ভিক্ষা সম্পর্কে কি বলা হয়েছে ভিক্ষুকদের কাছে সেটা বড় কথা নয় তাদের উদ্দেশ্য ব্যাংক ব্যালেন্স করা ।



ভিক্ষাবৃত্তি রোধে বাংলাদেশ সরকার একটি আইন পাশ করলেও সে আইনের প্রয়োগের দেখা নাই । সাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশকে কল্যাণরাষ্ট্র হিসেবে গণ্য করা হলেও আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারনে দেশের সকল মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা যায় নি । তবে দেশের বিত্তবানরা যদি আন্তরিকতা নিয়ে এগিয়ে আসে তাহলে দেেেশর কয়েকহাজার ভিক্ষুকের খাদ্য, বস্ত্র এবং বাসস্থানের নিশ্চয়তা দেয়া দুরুহ কোন কাজ হবে না । এজন্য ভিক্ষুকদেরকেও আত্মিক উন্নতির জন্য যেমন সচেতন দৃষ্টিভঙ্গি আনতে হবে তেমনি সরকার এবং বিত্তশালীদেরকেও উদ্যোগী হতে হবে । কোন সমাজে ভিক্ষুক থাকলে সে সমাজের ধনীরা তার দায় এড়াতে পারে না । কোন রাজনীতিবিদ যদি ভিক্ষুকের ভোটে নির্বাচিত হন তাহলে সে আত্মতৃপ্তিতে ভূগতে পারে না । একটি সুখী সমৃদ্ধ দেশ গড়ার লক্ষ্যে ভিক্ষাবৃত্তি মারাত্মক অন্তরায় । এতে দেশের ভাবমূর্তি বহির্বিশ্বের কাছে যেমন ক্ষুন্ন হয় তেমনি দেশের আভ্যন্তরীণ সম্প্রীতি-ভ্রাতৃত্ববোধ বিনষ্ট হয় । সুতরাং সবার পারস্পরি সহযোগিতায় ভিক্ষাবৃত্তি রোধ করতে হবে ।



রাজু আহমেদ । কলাম লেখক ।

[email protected]

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ৯:৫৫

কসমিক- ট্রাভেলার বলেছেন:






দান এবং ভিক্ষা এক নয়, এ বিষয়ে একটি লেখা দিব ভাবছি।

আসলে, যে হাত নিতে অভ্যাস্থ সে হাত কখোনো দিতে পারে না


আজ পর্যন্ত কোনো ভিক্ষুক দাতা হয়েছে তা আমার জানা নেই।




২৩ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:১৯

সত্যকা বলেছেন: দান এবং ভিক্ষা এক নয় ঠিক তবে বড়লোকে যেটা দেয সেটা দান কিন্তু যাকে দান করা হয় সে ভিক্ষুক ।

২| ২৩ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:০০

পরের তরে বলেছেন: বেশ তথ্য নির্ভর লেখা.......

২৩ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:২০

সত্যকা বলেছেন: ধন্যবাদ ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.