![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কত দূর এগোল সভ্যতা? মানুষ চাঁদ পেরিয়ে মঙ্গলে যাচ্ছে, বাংলাদেশও একবিংশ শতাব্দীর আধুনিকতার রথে ছুটছে, অথচ এখনো এ দেশে এমন এলাকা আছে, যেখানে দুই জাতির মানুষ এক পাত্রে আহার করেন না, এক আসনে বসেন না। দেখেশুনে মনে হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথাই সত্য: এখনো গেল না আঁধার!
রাজশাহীর তানোর আদিবাসী সাঁওতাল, ওরাঁও জাতির বাসভূমি। অথচ সেখানে এখনো হাটবাজারে, হোটেল-রেস্তোরাঁয় তারা অচ্ছুত। যে বাসনে কোনো আদিবাসী খাবার খাবে, সেই বাসনে কোনো বাঙালি মুসলমান খাবে না। যে ছাত্রাবাসে আদিবাসী ছাত্ররা বাস করবে, সেখানে বাঙালিরা থাকতে চাইবে না। ওই এলাকায় বাঙালিরা হলো ‘এক নম্বর’ আর আদিবাসীরা হলো ‘দুই নম্বর’। সংবিধানের গোড়াতেই লেখা রয়েছে সব নাগরিকের সমান অধিকারের কথা। সব মানুষ সমান—এই বাণী সব ধর্মই প্রচার করছে। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশের আদিবাসীদের এমন বঞ্চনা সইতে হয়।
কেবল রাজশাহীর কিছু এলাকায়ই নয়, উত্তরবঙ্গের দিনাজপুরের আদিবাসী এলাকায়ও এই চিত্র দেখা যায়। এর গোড়া রয়েছে বর্ণবাদী সংস্কৃতিতে, জাতিভেদ প্রথার মধ্যে। এবং আশ্চর্যের বিষয়, এই প্রথা সাম্যের ধর্ম বলে গরীয়ান ইসলাম বিশ্বাসীদের মধ্যেও জেঁকে বসে আছে। আমাদের পাঠ্যপুস্তকগুলোয় আদিবাসীদের হেয় করে এমন শিক্ষা অবলীলায় দেওয়া হচ্ছে। সেখানে তাদের ‘অসভ্য’ ও ‘মানবেতর’ বলে পরিচিত করানো হচ্ছে। অথচ যারা মানুষ হয়ে মানুষকে ছোট করে, জাতিভেদ প্রথা মান্য করে, ‘অসভ্য’ কথাটি তাদের বেলাতেই প্রযোজ্য। সভ্যতা মানে ক্রমেই বৈষম্য ও ভেদাভেদ থেকে মানুষের সমান মর্যাদার দিকে যাত্রা। অথচ আমরা যেন এখনো উল্টো পথে অসভ্যতার দিকেই যাত্রা করছি!
সংবিধান মেনে আইন প্রয়োগ করে এই বঞ্চনা দূর করা দরকার। প্রশাসনের দিক থেকেও সচেষ্টতা, প্রচার-প্রচারণা লাগবে। তবে সবার আগে দরকার ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতা। বিশ্বাস করতে হবে, অন্যকে ছোট করে কেউ বড় হতে পারে না
Click This Link
©somewhere in net ltd.