নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিতান্তই শখের বশে দু\'এক চরণ লিখি।লিখাটা আমার নেশা বা পেশাও না।তবে মাঝে মাঝে মনের কোণে প্রস্ফুটিত হওয়া কথাগুলো প্রকাশ করি।এই প্রকাশ ই আমার কবিতা কিংবা গল্প।

হাসান_রাকিব

হাসান রাকিব

হাসান_রাকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটু হাসির জন্যে

২৩ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৭:২১

অনুগল্প :

১)
১০ম রমজান,ঝিরঝির বৃষ্টি হচ্ছে সাথে বজ্রপাতের আওয়াজ।আকাশটা সকাল থেকেই মেঘাচ্ছন্ন। ফরিদ সাহেব বারান্দায় আকাশের দিকে তাকিয়ে আনমনে কি যেনো ভাবছেন।এমনিতেই সন্ধ্যা ঘুটঘুটে অন্ধকার।বৃষ্টির বর্ষন ধীরেধীরে বাড়ছে।সামনের গোলাপের গাছটা যেনো বৃষ্টিতে নাচছে।আজ তার মন খারাপ।অফিসে বসের বকুনি খেয়েছেন।প্রোডাক্টের সেল বাড়াতে না পাড়লে সামনে চাকুরী নিয়েই শংকা হবে।এসব ভাবছেন আনমনে।চাকুরীটাতেই তার ছোট্ট সংসার চলছে।চাকুরী থেকে বরখাস্ত হলে কিভাবেই কি হবে এ সব ভাবতেই এশার আজান পড়ে গেলো।তারপর আবার বা পাটাতে একটু ব্যাথা অনুভূত হচ্ছে।অফিস থেকে তার বাড়িতে আসতে সামান্য কাঁচা রাস্তা।বৃষ্টিতে তার বেহাল দশা।সাইকেল থেকে স্লিপ খেয়ে পড়ে বা পা টাতে হালকা ব্যাথা পেয়েছেন।ব্যাথার জায়গাটাতে মলম মালিশ করেছেন। তার কন্যা আয়েশা অনেকক্ষণ ধরে কাঁদতেছে। কিসের যেনো বায়না ধরে আছে মেয়েটা।আয়েশার বয়স ৬ কি ৭ হবে।মেয়ে বায়না ধরেছে একটি খেলনা উড়োজাহাজ তাকে এনে দিতে হবে। সে পাশের বাসার পিচ্ছির খেলনা দেখে বায়না ধরেছে।তাকে কোনোভাবেই বুঝানো যাচ্ছে না যে এখন বাইরে বৃষ্টি খেলনা আনতে হাটে যেতে হবে।হাটে যাওয়ার রাস্তাটা মোটেই ভালো না।কে শুনে কার কথা।মেয়েটা কেঁদেই চলছে। খোঁড়া পা নিয়েই হাটা শুরু করলো পাশের হাটের দিকে।কাঁদা রাস্তায় টর্সের আলোয় পথ চলছেন।এ দিকে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে।আবার পায়ের ব্যাথা একটু বেশীই অনুভূত হচ্ছে।হাটে গিয়েই তিনি জলিলের দোকানে খেলনাটা খুঁজে পেলেন।রাস্তার পাশের জলিলের দোকান।খুব বেশী তাকে খুঁজতে হলো না।খেলনাটার দাম ৪৪০ টাকা।প্যান্টের পকেটে হাত দিয়েই দেখলেন মাত্র ৩০০ টাকা আছে।১৪০ টাকা বাকী রেখেই খেলনাটা নিয়ে নিলেন।একমাত্র আদুরে কন্যার কান্না থামানোর জন্য এর চেয়ে ভালো কিছু এই মুহূর্তে আর হতে পারে না।মেয়ের মুখের হাসিটা যে মুহূর্তে বড্ড দামি।

২)
২২ রমজান, মাসের শেষের দিক।তার হাতে খুব একটা টাকা-পয়সা নেই।সামনে রমজানের ঈদ।রমজানে এমনিতেই দ্রব্যমূল্য অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেড়ে গেছে। সংসার চালাতেই তার হিমসিম খেতে হচ্ছে।বেতন তার কম। কোনো মতে সংসার চালিয়ে যাচ্ছেন।গত ১ বছরেও নিজের জন্য নতুন কোনো জামা কিনতে পারেন নি।চাকুরীটাও এখন নড়বড়ে। কিন্তু এসব তো আর কন্যা আর স্ত্রীর আবদারের কাছে খুব বড় কারণ না।বাবা-মাকেও অনেক দিন কিছু কিনে দেওয়া হয়নি।এবার ভাবছেন বাবার জন্য একটা লুঙ্গি আর পাঞ্জাবী আর মায়ের জন্য শাড়ী কিনে দিবেন।কন্যার জন্য নতুন জামা, স্ত্রীর জন্য শাড়ী কেনা তো আছেই।

৩)
১লা শাওয়াল,আজ পবিত্র রমজানের ঈদ। ফরিদ সাহেব চলছেন ঈদ গাহের দিকে সঙ্গে তার ফুটফুটে মেয়ে আয়েশা।ফরিদ সাহেবের গায়ে পাঞ্জাবী আর পরনে পায়জামা আর মাথায় টুপি।গত তিন বছর ধরে একই পোষাকে ঈদ করে যাচ্ছেন।সবার আবদার মিটিয়ে ফরিদ সাহেবের আর কিছু কেনা হয় না।তার ম্লান পোষাকের মাঝে ঝকঝকে সাদা টুপিটাই উজ্বল ভাবে ধরা পড়ছে।এটাই তার ঈদের একমাত্র কেনা।মেয়ের হাসির দিকে তাকিয়েই তিনি হাসি মুখে চলেছেন ঈদগাহে।পরিবারের প্রতিটা মুখের হাসিই যে তার হাসি।

৪)প্রত্যেকটা মুখেই ফুটে উঠুক প্রশান্তির হাসি।শত সংকটের মাঝে এটাই সুখ।এটাই তো প্রাপ্তি ছোট ফুটফুটে কন্যার মুখের হাসি।এ হাসি থাকুক অমলিন।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৭

জিসান অাহমেদ বলেছেন: ভাল বলেছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.