নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

http://www.somewhereinblog.net/blog/kauser_pranjal/category/17287

এগিয়ে যেতে চাই নিজের চেস্টায় এবং যিনি সৃষ্টি করেছেন কারও করুনায় নয়

আথাকরা

আমার জীবন বৈচিত্রময় ! জীবনের প্রতিটা পদে পদে বাধা পেয়েছি কিন্তু এসব বাধা গুলো খুব সফল ভাবেই উত্তিণ্ণ হয়েছি আলহামদুলিল্লাহ ।

আথাকরা › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিসিএস লিখিত পরীক্ষাঃ ব্যক্তিগত ভাবনা

২২ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:২৫

বিসিএস লিখিত পরীক্ষাঃ ব্যক্তিগত ভাবনা

কয়েক বছর ধরেই বিসিএস নিয়ে পরীক্ষার্থীদের সাথে আমার ব্যাপক(!) সলাপরামর্শ হয় আর আমি তা উপভোগই করতাম। কিন্তু এখন অনেকদিন বিদেশে থাকায়, সামনা-সামনি বা ফোনে যোগাযোগ বন্ধ; সেজন্যেই মনে হয় ফেইসবুকের ইনবক্স ভরে উঠেছে বিসিএস সংক্রান্ত আলাপে। অধিকাংশেরই উত্তর করতে পারিনি। এর ফলে এক সময় যারা আমাকে প্রিয় ভাবত, তাদের অনেকেই ভাবিস্ট ভাবতে শুরু করেছে, কেউ কেউ অভিযোগও করেছে। ৩৪-তম বিসিএস-এর লিখিত পরীক্ষার দিনক্ষণ ঘোষণার পরে ইনবক্সের সাথে আর পেরে উঠছি না। সেই দায়টা মেটাতে এই লেখাটা কয়েকটা গ্রুপে দিয়ে দিচ্ছি; একটা বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক ক্যারিয়ার ম্যাগাজিনেরন্টার ইত্যাদি থেকে বিসিএস এর বিভিন্ন কৌশল সহযেই পাওয়া যায়। তাই আমি সেসবে যাচ্ছি না। এখানে শুধু লিখিত পরীক্ষা নিয়ে আমার নিজস্ব কিছু ভাবনার কথা বলব।



লিখিত পরীক্ষায় প্রতিটি বিষয়ের খাতা মূল্যায়ন করেন সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষকগণ। তাই উত্তর এমন হওয়া চাই যেন, খাতা দেখে বাংলার শিক্ষক ভাববে - আরে, এ খাতা তো কোন বাংলার ছাত্রের, আবার বিজ্ঞানের শিক্ষকও ভাববে, এ খাতা বিজ্ঞানের ছাত্রের না হয়ে পারেই না। এটুকু মনে রেখে প্ল্যান করে ফেলুন যে, কোন বিষয়ের শিক্ষককে আপনি কি দিয়ে বশ করবেন। ভাবুন, খাতায় কি পেলে কম্পিউটারের শিক্ষক ভাববে, এ ছাত্র তো বিল গেটসের ডানহাত, একে ভাল নম্বর দিতেই হবে। আর এরকম প্ল্যান করে সেটা উপস্থাপন করতে পারলে প্রতিটি বিষয়েই অন্যদের সাথে পার্থক্য সৃষ্টি করা সম্ভব। মনে হতে পারে যে, এরকম প্ল্যান করা আর সেভাবে লিখে আসা তো আর মুখের কথা না! আমিও সেটা মানি, আর মেনে নিয়েই বলছি যে, চেষ্টা করলে সম্ভব। সেজন্যে আমার কিছু চালাকির কথা বিষয়ভিত্তিকভাবে বলছি।





বাংলাঃ একজন সাহিত্যের শিক্ষককে সন্তুষ্ট করার জন্য একটু কাব্যিক ভাষা আর সাহিত্যিক রেফারেন্স – এই দুইটা খুব কাজের জিনিষ। এ জন্য আমার টেকনিক ছিল কোন একটা গদ্য লেখা দিয়ে পরীক্ষা শুরু করা আর শুরুতেই চমকে দেয়া। এজন্য আমি আশ্রয় নিলাম ‘চর্যাপদের’। যে বিষয়ই আমি শুরুতে লিখব, সেটা চর্যাপদের কোন লাইন (বাজারের গাইডে যেসব লাইন নাই এমন) দিয়ে শুরু করব, এমনটা ছিল প্ল্যান। এজন্য চর্যাপদ ঘেঁটে বেশ কিছু লাইন কবির নামসহ মনে রাখার চেষ্টা করলাম এবং বাংলা দুই পত্রেই আমি এভাবেই শুরু করলাম। যেমন, দ্বিতীয়পত্রে আমি শুরুতে লিখেছিলাম একটা সাহিত্য বিষয়ক প্রবন্ধ রচনা আর সেটা শুরু করেছিলাম সম্ভবত ভুসূকু পা রচিত, ‘যা সুই সুনন্তে তুট্টই ইন্দিয়াল’ (পুরুপুরি সঠিকটা এখন আর মনে নেই) দিয়ে। এর মানে হল – যা শুনলে ইন্দ্রজাল বা মোহ কেটে যায়।কটু কাব্যিক আবহ আনার চেষ্টা করেছি, আর লেখার মাঝে একটু ডেটা, সংখ্যা ইত্যাদি মিশিয়ে যতটুকু সময়ে ধরে টেনে গিয়েছি। এইছিল আমার আমার প্ল্যান। আপনিও নিশ্চয়ই এমন কোন প্ল্যান করতে পারেন যাতে ৩+৩=৬ ঘন্টার জন্য বাংলার ছাত্র হয়ে পরীক্ষককে জয় করতে পারেন। এছাড়া প্রথম পত্রে ৩০ নম্বরের সাহিত্য বিষয়ক যে ছোট প্রশ্নগুলো আছে, সেগুলোতে নিজের মুন্সিয়ানা দেখানো সম্ভব। এই ছোট প্রশ্নগুলো এক-দু লাইনে উত্তর না করে, সংশ্লিষ্ট বই, চরিত্র, সংলাপ দিয়ে উত্তর করতে পারলে পার্থক্য চোখে পড়বে। এজন্য সিলেবাসে যেসব বিষয় (সাহিত্যের যুগবিভাগ,সাহিত্য পত্রিকা ইত্যাদি) এবং কবির নাম সরাসরি উল্লেখ আছে, সেগুলো বিশদভাবে জানা থাকতে হবে।



ইংরেজীঃ অনেকটা বাংলার মতই, তবে বাংলায় সাহিত্যিক ভাষা আনার চেয়ে ইংরেজিতে সাহিত্যিক ভাষা আনা ইংরেজী সাহিত্যের ছাত্র ছাড়া অন্যদের পক্ষে সত্যিই দূরহ। এজন্য সবচেয়ে সহজ উপায় হল কিছু নতুন Vocabulary শুরুতে আর শেষে ব্যবহার করা। প্রত্যেকের কিছু শব্দসেট আছে, ওগুলোই সে ঘুরে ফিরে ব্যবহার করে। নিজের এই শব্দসেটটাকে উন্নত করা যায় মাত্র ৫০ তা নতুন শব্দ ব্যবহার করে। যেমন, আমার লিখার সময় help শব্দটা অনেকবার আসে, স্বাভাবিকভাবেই আসে। তো help শব্দটা না লিখে enable, assist ইত্যাদি ব্যবহার করলে বাক্যের ওজন একটু বাড়ে। এরকম মাত্র ৫০ টা শব্দ পরিবর্তন করলেই শুরুর আর শেষের বাক্যগুলি একটু আকর্ষনীয় করা যায়। এছাড়া বেকন, বায়রণ, শেলী ইত্যাদি কবি-সাহিত্যিকদের কিছু কোটেশন শুরুতে ব্যবহার করতে পারলেও মন্দ হয় না। আর Sentence structure এ একটু variety আনতে পারলে ভাল, অন্তর শুরুতে আর শেষে একটু। কোন proverb, কোন প্রশ্ন দিয়েও শেষ করা যায় লেখা। আর তথ্য, ডেটা, সংখ্যা বিশ্লেষণ দিয়ে ভরিয়ে তোলা যায় মধ্যাংশ।



বিজ্ঞানঃ পরীক্ষককে যদি বুঝাতে হয় যে, খাতাটি বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীর, তাহলে দুটা জিনিস যত বেশী সম্ভব ব্যবহার করতে হবে – ১). টেকনিক্যাল শন্দ, ২). চিত্র। সাধারণ বিজ্ঞান আর কম্পিউটার দুই পার্টের জন্যই এই টেকনিক। চিত্রের বিষয়ে আগের বছরসমূহের প্রশ্ন এবং সিলেবাস অনুযায়ী কিছু চিত্র শিখে ফেলা যায়। আর এটা করা যায় নবম-দশম শ্রেণীর বিজ্ঞান বই, আর একাদশ শ্রেণীর কম্পিউটার বই থেকে। চিত্রের বিষয়ে বাজারের গাইড বা কোচিং কোন তেমন কোন কাজে আসবে না, এট নিজেকেই করতে হবে। আর টেকনিক্যাল শব্দের মধ্যে রসায়নের সংকেত, সমীকরণ (যেমন, জলবায়ুর প্রশ্নে ওজোনের সমীকরণ), পদার্থ বিজ্ঞানের একক ইত্যাদি। এই টেকনিক্যাল শব্দের ব্যাপারটা কম্পিউটার অংশের জন্য আরো কার্যকর। ইন্টারনেটের ভূমিকা, সফটওয়্যারের ভূমিকা ইত্যাদি অতি সাধারণ কিছু প্রশ্ন সবসময়ই আসে। এসব ক্ষেত্রে যত বেশি সফটওয়্যারের নাম, প্রযুক্তির (টেলিমেডিসিন, রিমোট সেন্সিং, আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স ইত্যাদি) নাম দেয়া যাবে, তত খাতার মর্যাদা বাড়বে, আর চিত্রতো সাথে আছেই। কোন চিত্র বা টেকনিক্যাল শব্দ বইয়ে না পেলে গুগুল-এ সবই পাওয়া যাবে।





বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীঃ সিলেবাস আর আগের বছরগুলোর প্রশ্নের আলোকে বেশী নম্বর তোলার প্ল্যান করুন। এই বিষয়গুলোর মূল্যায়ন করেন সাধারণত রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইতিহাস ইত্যাদি বিষয়ের শিক্ষকগণ। তাই প্রতিটা প্রশ্নের সাথে সংশ্লিষ্ট ডেফিনিশান (বাংলা বা ইংরেজী) একটা ভালো উপায়। এর সাথে ডাটা (যেমন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা, পরিসখ্যান ব্যুরো, বাজেট বক্তৃতা ইত্যাদি), রিপোর্ট (জাতিসঙ্ঘ, বিশ্বব্যাংক, সিপিডি, টিআইবি), বিখ্যাত মানুষের বানী ইত্যাদি ব্যবহার করা যায়। সংবিধানের অনুচ্ছেদগুলোও যেকোন জায়গায় ব্যবহার করা যায়। যারা ইংরেজীতে উত্তর করতে চান, তাদের জন্য বিখ্যাত স্থান, মানুষ, প্রতিষ্ঠান ইত্যাদির নামের ইংরেজী বানান মনে রাখা জরুরী।





গণিত ও মানসিক দক্ষতাঃ অংকের কথা আসলে বলার কিচ্ছু নাই, বিসিএস-এ খুব সহজ অংক আসে, প্রস্তুতি নিলে ভাল না করার কিছু নেই।



এই লেখায় বেশি উপদেশমূলক কথাবার্তা না বলে নিজের কিছু জিনিস শেয়ার করতে চেয়েছিলাম, যাতে পরীক্ষার্থীরা নিজেরাই নিজেদের সৃজনশীলতার প্রয়োগ করতে পার। তবে শেষ পর্যন্ত দেখলাম, কথাগুলো উপদেশের মতই হয়ে গেছে। উপদেশ হিসেবে না নিয়ে উদাহরণ হিসেবে নেলেই ভাল হবে। সবার জন্য শুভকামনা।

*******//সুজন দেবনাথ//*******

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.