নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুক্তিযুদ্ধের সেই উত্তাল দিনুলোতে, অজস্র তরুণ কি অসম সাহসিকতা নিয়ে দেশমাতৃকাকে রক্ষা করেছিল! ব্যাটা নিয়াজী বলেছিলো, “বাঙালী মার্শাল রেস না”। ২৫শে মার্চের পরপরই যখন লক্ষ লক্ষ তরুণ লুঙ্গি পরে হাটু কাদায় দাঁড়িয়ে অস্র হাতে প্রশিক্ষন নিতে শুরু করল, বাঙালীর এই রাতারাতি মার্শাল রেস হয়ে যাওয়া দেখে পাকিস্তানি শাসক চক্র রিতিমত আহাম্মক বনে যায়। সেই অসম সাহস সেই পর্বত প্রমাণ মনোবল আবার ফিরে আসুক বাংলাদেশের তরুণদের মাঝে। দূর হোক দুর্নীতি, হতাশা, গ্লানি, অমঙ্গল। আর একবার জয় হোক বাংলার অপরাজেয় তারুণ্যের।
আমাদের ঘর বাংলাদেশ - ১
----------------------------- ডঃ রমিত আজাদ
যতদূর মনে পড়ে ১৯৮৬ সালের কথা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হঠাৎ করে চালু করলো ওভারসীজ প্রোগ্রাম ওয়ান সংক্ষেপে ওপি ওয়ান। যারা যারা যুক্তরাষ্ট্র যেতে ইচ্ছুক তাদের শুধু এ্যাপ্লাই করলেই হবে, শিক্ষাগত যোগ্যতা-টোগ্যতা কোন ব্যাপার না, লটারি করে নির্ধারণ করা হবে কাকে ভিসা দেয়া হবে। সাথে সাথে সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়লো। স্বপ্নের দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, এতকাল শুধু স্বপ্নই দেখে এসেছে, সেই স্বপ্ন বাস্তব হওয়ার কোন সুযোগই ছিলনা, এখন যদি লটারির কল্যানে ভাগ্যের জোরে সেই সুযোগ পাওয়া যায়, তাহলে তো কপাল খুলেই গেলো! এই ছিলো মনোভাব। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ এর আগষ্ট পর্যন্ত বাংলাদেশ ছিলো মার্কিন শিবিরের বাইরে (বা বিপরীতে)। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপন করে বাংলাদেশকে মার্কিন শিবিরে স্থান করে দিলে, রাজনীতিবিদদের একাংশ সমালোচনার ঝড় তোলে (এদের অনেকেই বামপন্থী ছিলো, অনেকে বাম না ডান নিজেরাই সন্দিহান ছিলো)। কিছুকাল পরে আবার তারাই (তারা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পারি জমায়। অনেকে এখন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকও। ধীরে ধীরে ইমিগ্রেশন দেয়া শুরু করে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড সহ অনেকগুলো দেশ। বাংলাদেশীদের একটা বিরাট অংশ ছুটতে থাকে ইমিগ্রেশন নামক এই সোনার হরিণের পিছনে। আজ একটি বড় অংশ এই ইমিগ্রান্ট। তাদের মধ্যে বিভিন্ন বয়স, বিভিন্ন পেশা ও বিভিন্ন সামাজিক স্তরের মানুষ রয়েছে। দেশের অনেক খ্যাতিমান রাজনীতিবিদদের সন্তান এমনকি স্ত্রীরাও রয়েছেন ঐ তালিকায়। পাঠকরা আবার মনে করবেন না যে, আমি ঢালাওভাবে সকল ইমিগ্রান্টদের কঠোর সমালোচনা করছি। আমি জানি বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতিতে অনেকেই বাধ্য হয়ে কেবলমাত্র ভাগ্যের অন্বেষণে বিদেশের ইমিগ্রান্ট হয়েছেন। এবং ইমিগ্রান্টদের অনেকেই আবার তার কষ্টার্জিত অর্থ দেশের স্বজনদের পাঠাচ্ছে। অনেকেই ওখানে থেকেই নানা ভাবে বাংলাদেশকে সাহায্য করছে। যারা অন্য দেশের ইমিগ্রান্ট হওয়া সত্বেও নানাভাবে বাংলাদেশকে সাহায্য করছে, তাদেরকে আমার সশ্রদ্ধ সালাম।
উপরের এই এতোগুলো কথা কেন বললাম? আমি আসলে যেটা বলতে চাই সেটা হলো, নিজের ঘর বলে একটা কথা আছে। আমার নিজের ঘরটি খড়ের হতে পারে, বেড়ার হতে পারে, টিনের হতে পারে, আবার সুরম্য অট্টালিকাও হতে পারে। এতকিছুর পরও নিজের ঘর, নিজেরই ঘর। ছোটবেলায় একটা কবিতা পড়েছিলাম,
"বাবুই পাখীরে ডাকি বলিছে চড়াই,
কুঁড়ে ঘরে থেকে করো শিল্পের বড়াই
আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকা পরে,
তুমি কতো কষ্ট পাও রোদ বৃষ্টি ঝড়ে!
বাবুই হাসিয়া কয় সন্দেহ কি তায়,
কষ্ট পাই, তবু থাকি নিজের বাসায়।
পাকা হোক তবু ভাই পরেরও বাসা,
নিজ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর খাঁসা!
একইভাবে বাংলাদেশটাও আমার ঘর। খড়ের হোক, বেড়ার হোক, টিনের হোক, যেমনই হোক না কেন - এটা নিজেদেরই ঘর। যারা দেশকে ভালোবাসেনা উপরন্তু বাইরের কোন দেশে নিজেদের ঠিকানা করে রেখেছে, দেশের প্রতি তাদের সম্পর্ক হবে যেন-তেন। আসলে দেশ বাণের পানিতে ভেসে গেলেই বা তাদের কি? তাদের তো ভিন্ন ঠিকানা রয়েছেই। তাই তাদের কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করা যায়না। তাদের অনেকেই এই দেশটাকে ব্যবহার করবে কেবলমাত্র উপার্জনের ক্ষেত্র হিসাবে। সেই টাকা পাঠিয়ে দেবে সেখানে, যেখানে তার আরেকটি ঘর রয়েছে।
মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় একদল মানুষ এই দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলো। পুরো সময়টাই বাইরের কোন দেশে কাটিয়েছে। আবার একদল সেই দুঃসময়ে এই দেশেই থেকে গিয়ে সেই ভয়াবহতার মোকাবেলা করেছে। আসলে এই দেশের মঙ্গলের জন্য তারাই ঝাঁপিয়ে পড়বে যারা এই দেশকে ভালোবাসে, অথবা যাদের যাওয়ার আর কোন দেশ নেই। অর্থাৎ এই দেশের জন্য তারাই ভাববে ও কিছু করবে যারা মনে-প্রাণে মনে করে, 'আমাদের ঘর বাংলাদেশ'।
(চলবে)
৩০ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:০৭
রমিত বলেছেন: ধন্যবাদ।
২| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২৮
শেরজা তপন বলেছেন: পড়ছি- মন্তব্য করার সময় হয়নি এখনো। পরের পর্বটা পড়ে নিই...
০৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ ভোর ৪:০৮
রমিত বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:০২
ভিটামিন সি বলেছেন: আমার ঘর, আমার বাংলাদেশ।