নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুক্তিযুদ্ধের সেই উত্তাল দিনুলোতে, অজস্র তরুণ কি অসম সাহসিকতা নিয়ে দেশমাতৃকাকে রক্ষা করেছিল! ব্যাটা নিয়াজী বলেছিলো, “বাঙালী মার্শাল রেস না”। ২৫শে মার্চের পরপরই যখন লক্ষ লক্ষ তরুণ লুঙ্গি পরে হাটু কাদায় দাঁড়িয়ে অস্র হাতে প্রশিক্ষন নিতে শুরু করল, বাঙালীর এই রাতারাতি মার্শাল রেস হয়ে যাওয়া দেখে পাকিস্তানি শাসক চক্র রিতিমত আহাম্মক বনে যায়। সেই অসম সাহস সেই পর্বত প্রমাণ মনোবল আবার ফিরে আসুক বাংলাদেশের তরুণদের মাঝে। দূর হোক দুর্নীতি, হতাশা, গ্লানি, অমঙ্গল। আর একবার জয় হোক বাংলার অপরাজেয় তারুণ্যের।
আমার দেশের মাটিতে কেন ভীনদেশী পতাকা উড়েছিলো?
-------------------------------------------- ডঃ রমিত আজাদ
প্রাচীন কালের গোত্রগুলোর মধ্যে ছিলো গোত্রচেতনা। এই গোত্রচেতনার একটি মূর্ত রূপ ছিলো টোটেম। গোত্রগুলোই কলেবরে বড় হয়ে ইতিহাসের নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আজ জাতিতে রূপ নিয়েছে। আর আধুনিক যুগের টোটেম হলো জাতীয় পতাকা। আমার দেশের মাটিতে আমার পতাকা উড়ছে মানে, এখানে সবকিছু আমাদের মত করেই হচ্ছে। শাসন ক্ষমতায় রয়েছি আমরাই। আমাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, ভাবধারা ও জীবনযাত্রাই প্রাধান্য পাচ্ছে। রাজা আমাদের রাজ্য আমাদের।
যখনই একটি দেশের মাটিতে ভীনদেশী পতাকা উড়তে থাকবে, এই প্রতীক দ্বারা এটাই স্পষ্ট যে, কোন কিছুই আর ঐ দেশের জনগণের নয়। ঐ দেশের জনগণের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, ভাবধারা ও জীবনযাত্রাই কোন কিছুই প্রাধান্য পাচ্ছে না, কারণ রাজা তাদের নয়, রাজ্য তাদের নয়। তবে কার রাজ্য? যেই দেশের পতাকা উড়ছে সেই দেশের রাজ্য।
আমাদের এই সোনার দেশেও একবার ভীনদেশী পতাকা উড়েছিলো। ঘটনা আজ থেকে আড়াইশো বছর আগের। এদেশে একজন তরুণ নবাব ছিলেন, নাম তার সিরাজউদ্দৌলা। শৌর্য-বীর্য, অর্থ-বিত্ত, দৈহিক সৌন্দর্য্য সবই ছিলো তার। সবচাইতে বেশী যেটা ছিলো তা হলো দেশপ্রেম। এতো কিছুর পরেও তিনি দেশরক্ষা করতে পারলেন না?
নবাবের ছিলো এক সিপাহ্সালার, মীর জাফর আলী খান তার নাম। শৌর্য-বীর্য তারও ছিলো কিন্তু তার মধ্যে যেটা ছিলোনা তা হলো ঈমান। ঈমান যার না থাকে সে করে বেঈমানী। সেটাই করেছিলো মীর জাফর, বেঈমানী করেছিলো সে নিজ দেশের মানুষের সাথে। যে দেশের মানুষ বিশ্বাস করে তার হাতে দেশরক্ষার যাবতীয় ভার তুলে দিয়েছিলো, সেই বিশ্বাসের কোন মূল্য সে দেয়নি, করেছিলো বিশ্বাসঘাতকতা। শুধু নিজের স্বার্থই দেখেছিলো এই বেঈমানটি। দেশের কথা একটুও ভাবেনি সে। নিজে সিংহাসনে বসতে পারলো কিনা সেটাই বড় কথা। সেই ঘৃণ্য উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত করতে সে সাহায্য নিয়েছিলো বিদেশী শত্রুদের।
তারপর কি হলো? সিংহাসন সে পেলো ঠিকই কিন্তু তার পিছনে লুকিয়ে ছিলো বিদেশী শত্রুদের মুচকি ক্রঢ় হাসি। বেঈমানকে কেউই বিশ্বাস করেনা, সেই বিদেশীরাও মীর জাফরকে বিশ্বাস করেনি। এক বছরের মাথায়ই তাকে সিংহাসন ছাড়তে হলো। ক্ষমতা চলে গেলো বিদেশীদের হাতে। আমাদের দেশের মাটিতে উড়লো ভীনদেশী পতাকা। পরবর্তি দু'শো বছর আমাদের কোন জাহান্নামে থাকতে হয়েছিলো এটা ইতিহাসের পাতা খুললেই পাওয়া যায়।
বেঈমান মীর জাফর! নিজেও মরলি, আমাদেরকেও মারলি!!!
ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়া উচিৎ, আমাদের সজাগ থাকতে হবে আমার দেশের মাটিতে কিছুতেই যেন ভীনদেশী পতাকা না ওড়ে।
©somewhere in net ltd.