নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুক্তিযুদ্ধের সেই উত্তাল দিনুলোতে, অজস্র তরুণ কি অসম সাহসিকতা নিয়ে দেশমাতৃকাকে রক্ষা করেছিল! ব্যাটা নিয়াজী বলেছিলো, “বাঙালী মার্শাল রেস না”। ২৫শে মার্চের পরপরই যখন লক্ষ লক্ষ তরুণ লুঙ্গি পরে হাটু কাদায় দাঁড়িয়ে অস্র হাতে প্রশিক্ষন নিতে শুরু করল, বাঙালীর এই রাতারাতি মার্শাল রেস হয়ে যাওয়া দেখে পাকিস্তানি শাসক চক্র রিতিমত আহাম্মক বনে যায়। সেই অসম সাহস সেই পর্বত প্রমাণ মনোবল আবার ফিরে আসুক বাংলাদেশের তরুণদের মাঝে। দূর হোক দুর্নীতি, হতাশা, গ্লানি, অমঙ্গল। আর একবার জয় হোক বাংলার অপরাজেয় তারুণ্যের।
অন্ধকার আছে, আলোও আছে
------------- ড. রমিত আজাদ
এক ফেইসবুক ফ্রেন্ড খুব হতাশাজনক একটা পোস্ট দিয়েছেন। তাই দেখে মনটা খারাপ হলো। আসলে মনে কষ্ট পেলে এরকম পোস্ট দেয়াটাই স্বাভাবিক। যারা হঠাৎ হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন তাদের জন্য একটা ক্ষুদ্র ঘটনা শেয়ার করছি।
অনেকগুলি বছর আগের কথা, তখন ইউক্রেইনে পড়ালেখা করছি। নব্বই-এর সেই উত্তাল দিনগুলোতে ওখানকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ ছিলো। শহরে প্রায় প্রতিদিনই কোন না কোন অঘটন ঘটে। জবাবদিহীতার বালাই নেই, তাই দুষ্ট লোকেরা যা খুশী তাই করে। দিনের বেলায়ও অনেক সময় অপরাধ সংঘটিত হতো, আর সূর্যাস্তের পর তো কথাই নেই। এরকম এক সন্ধ্যায়, ডরমিটরীতে আমার রূমের দুই রূম পরে একটি রূমে গেলাম আমার ইয়েমেনী সিনিয়র ফ্রেন্ড আলীকে কিছু বলতে। উনার রূমে দরজা নক করে কোন সাড়া পেলাম না, বুঝলাম রূমে উনি নেই। ফিরে আসবো, এ সময় হুড়মুড়িয়ে ঐ ব্লকে (দুই রূম মিলিয়ে একটি ব্লক) ঢুকলো দুই তরুণী। আলীর পাশের রূমে নক করলো তারা। সেখান থেকেও কোন সাড়া আসলো না। এবার আমি ওদের দিকে তাকালাম, ওদের একজনকে আমি চিনলাম। ঐ রূমে ঝেনিয়া নামে এক ছেলে থাকতো, তার বড় বোন, ঐ তরুণীও আমাদের ইউনিভার্সিটির ছাত্রী। আমি বললাম, "ওরা বোধহয় নেই।" তরুণীটি আমাকে চিনলো, আগে দু'একবার দেখেছে আমাকে, তবে করিডোরে দাঁড়িয়ে 'হ্যালো কেমন আছো?'-র বেশী কথা কখনো হয়নি। সে আমাকে বললো, "আপনার রূমে কি একটু বসতে পারি?" ওদের আচরণে মনে হলো ওরা খুব শংকিত বা কোন একটা ঝড় চলে গিয়েছে এই মাত্র ওদের উপর দিয়ে। আমি বললাম, "চলুন।"
ভাগ্যের কল্যাণে আমি একা এক রূমে থাকতাম। তাই ঝামেলা ছিলো কম। ওদের রূমে এনে বসালাম। কফি দিলাম। টিভি সেট অনই ছিলো। টিভি দেখতে দেখতে, কফি খেতে খেতে ওরা কিছুটা ধাতস্থ হলো। তারপর আমি জিজ্ঞেস করলাম, "আপনাদের কি হয়েছে?" এরপর ওরা হরবর করে বললো যে, ওরা নিজ ডরমিটরী থেকে বেরিয়ে (ওদের ডরমিটরীটা আমাদেরটা থেকে শ'দুয়েক মিটার দূরে হবে, দুজনই আমাদের ইউনিভার্সিটির ছাত্রী) কোথাও যাচ্ছিলো, হঠাৎ দু'জন বজ্জাত ওদের দিকে তেড়ে আসে, আক্রমণ করতে চাইছিলো বা টেনে-হিঁচড়ে কোথাও নিয়ে যেতে চাইছিলো এমন। ওরা তাড়াতাড়ি আশ্রয়ের জন্য আমাদের ডরমিটরীর দিকে পালিয়ে আসে, যেহেতু ছোট ভাই এখানে আছে। তারপরেও ওরা ভিত ছিলো যদি বজ্জাতগুলো এই ডরমিটরীতে চলে আসে বা নীচে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করে! আমি বললাম, "হ্যাঁ, এরকম তো এখন প্রায় প্রতিদিনই হচ্ছে। সাবধান থাকা ছাড়া আর কোন উপায় নাই। যাহোক, এখন তো আপনারা এখানে, আর ভয় নাই।"
একটু পরে ইয়েমেনী আলী এলো আমার রূমে। ওদের দেখতে পেয়ে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালো। আমি সবকিছু বললাম। সেও খুব সিমপ্যাথী দেখালো। আলী খুব মিশুক ছিলো। তরূণীদের কাছে আরো বেশী মিশুক! দ্রুত ওর রূমে চায়ের পাশাপাশি আরো কিছু নাস্তার ব্যবস্থা করলো। তারপর শুরু হলো জমিয়ে আড্ডা। মনে হলো এই সন্ধ্যায় নয়, আমরা অনেক আগে থেকেই পরিচিত। গল্পগুজব হাসি-ঠাট্টা করে সুন্দর একটা সন্ধ্যা কাটলো। পরিশেষে তরূণীরা বললো, "ভেরী ইন্টারেস্টিং! দুই-একটি বজ্জাতের তাড়া দিয়ে প্রবল শংকার মধ্য দিয়ে সন্ধ্যাটা শুরু হয়েছিলো, আর তার পরপরই পরিচয় হলো দুজন সজ্জনের সাথে। এই পৃথিবীতে খারাপ মানুষের পাশাপাশি ভালো মানুষও আছে!"
তাই বলি, কেউ যদি আপনার মনে কোন আঘাত দিয়ে থাকে, এতে একেবারে মুশড়ে পড়বেন না। অনেকেই আছে যারা আপনার বন্ধু, আপনার একান্ত শুভাকাঙ্খী! এরা অনেক সময় চেনাও হয়, অচেনাও হয়। অসুর-হিংসুটে মানুষগুলো আপনার পৃথিবীটাকে যেমন বেসুরো-অসুন্দর করে ফেলে, তেমনি শুভ-সুজন মানুষগুলো আপনার পৃথিবীটাকে সুর-ছন্দে ভরে দিয়ে সুন্দর করে তুলতে পারে।
এই পৃথিবী বৈপিরিত্যে ভরপুর।
এখানে যেমন শত্রু আছে, তেমনি মিত্রও আছে,
ঘৃণা আছে, ভালোবাসাও আছে,
বেসুরো কর্কশতা আছে, সুরের ঝংকারও আছে,
অন্ধকার আছে, আলোও আছে,
দুঃখ আছে, সুখও আছে।
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:১৬
রমিত বলেছেন: চমৎকার বলেছেন ভাই।
আমার দর্শনের শিক্ষক এই কথাটাই বলতেন, "মানুষ প্রাণী হিসাবে নৈতিক।" ভালো মানুষের সংখ্যাই বেশী। আর পরিবেশ তো প্রভাব ফেলেই, যেই সমাজে জবাবদিহীতা নাই, মন্দ কাজের শাস্তির ভয় নাই, সেটা অপরাধীদের অভয়ারণ্য।
২| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:২৯
অগ্নি সারথি বলেছেন: এই পৃথিবীতে খারাপ মানুষের পাশাপাশি ভালো মানুষও আছে! - সহমত।
আপনার কবিতার ভাষা গুলো আমার বেশ লাগে রমিত ভাই। ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:১৭
রমিত বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। আপনিও খুব ভালো লেখেন।
৩| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৫৬
শামছুল ইসলাম বলেছেন: তরুণীদের মত আমিও বলবঃ
"ভেরী ইন্টারেস্টিং! দুই-একটি বজ্জাতের তাড়া দিয়ে প্রবল শংকার মধ্য দিয়ে সন্ধ্যাটা শুরু হয়েছিলো, আর তার পরপরই পরিচয় হলো দুজন সজ্জনের সাথে। এই পৃথিবীতে খারাপ মানুষের পাশাপাশি ভালো মানুষও আছে!"
সুন্দর, মানবীয় একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
ভাল থাকুন। সবসময়।
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:১৭
রমিত বলেছেন: সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ।
৪| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:১৯
রমিত বলেছেন: লেখাটিকে নির্বাচিত পাতায় স্থান দেয়ার সামু কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।
৫| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৪৬
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: অসুর-হিংসুটে মানুষগুলো আপনার পৃথিবীটাকে যেমন বেসুরো-অসুন্দর করে ফেলে, তেমনি শুভ-সুজন মানুষগুলো আপনার পৃথিবীটাকে সুর-ছন্দে ভরে দিয়ে সুন্দর করে তুলতে পারে।
ভাল লাগলো !!!
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৫২
রমিত বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
৬| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:০৯
আমিরহোসাইন বলেছেন: এমন গল্প বাসত্বতার অনেক কিছু শিখার আছে।ধন্যবাদ
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:০৪
রমিত বলেছেন: জ্বী ভাই, জীবনের ছোট ছোট ঘটনা থেকেও অনেক কিছু শেখা যায়।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
৭| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৬
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
ভাল কিছু কথা বলেছেন রমিত ভাই।
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:০৫
রমিত বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে কান্ডারি ভাই। ভালো থাকবেন।
৮| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:০৩
ডার্ক ম্যান বলেছেন: ভালো জিনিস শেয়ার করেছেন
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:১৭
রমিত বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
৯| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৫
অন্ধবিন্দু বলেছেন:
অসুর-হিংসুটেদের কাছ থেকে দূরে থাকতে পারলেই ভালো। কিন্তু সবসময় সম্ভব হয় না ...
ভালো বলেছেন, রমিত।
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:১৮
রমিত বলেছেন: জ্বী, সবসময় অসুরদের কাছ থেকে দূরে থাকা সম্ভব হয়না।
মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
১০| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৭
শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: সবকিছুর মধ্যে থেকে পজিটিভ কিছু বের করে নিতে পারা ভালো। তবে সমস্যটা কোথায় জানেন? পৃথিবীতে ভালোমন্দ সহাবস্থান করে। ভালোই বেশি, মন্দ্র পরিমান কম। কিন্তু ভালোর চেয়ে মন্দের প্রভাব অনেক বেশি। পৃথিবীতে খারাপ মানুষের সংখ্যা কম, কিন্তু তাদের প্রভাব বেশি। যেমন ওই দুই তরুনী যদি রেপড হইতো, ধরে নেই ১ ঘন্টার একটা দুঃস্বপ্নের ভেতর দিয়ে যাইতো। এরপর আপনাদের দুইজনের মত ভালো ব্যবহার, সঙ্গ, ভালোলাগা আজীবন পেয়ে গেলেও সেই দুঃসহ স্মৃতিকে মুছে দিতে সক্ষম হইতোনা। মানুষের জীবনটা বেশিরকম ঠুনকো, জন্ম নেবার পর থেকেই অনিশ্চিত পথে যাত্রা শুরু হয়।
পোস্টে ভালোলাগা রিলো।
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:২০
রমিত বলেছেন: যথাযথ বলেছেন, ভালোর সংখ্যা বেশী, কিন্তু মন্দের প্রভাব বেশী। সেটাই সবসময় দেখি।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
১১| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৪২
প্রামানিক বলেছেন: পরিশেষে তরূণীরা বললো, "ভেরী ইন্টারেস্টিং! দুই-একটি বজ্জাতের তাড়া দিয়ে প্রবল শংকার মধ্য দিয়ে সন্ধ্যাটা শুরু হয়েছিলো, আর তার পরপরই পরিচয় হলো দুজন সজ্জনের সাথে। এই পৃথিবীতে খারাপ মানুষের পাশাপাশি ভালো মানুষও আছে!"
কাহিনীটি পড়ে উপরের কথাগুলো জেনে ভাল একটা ধারনা এলো । ধন্যবাদ
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:২১
রমিত বলেছেন: সুন্দর বলেছেন প্রামানিক ভাই।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
১২| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:১০
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: সুন্দর পোস্ট| ভালখারাপ মিলেই আমরা| কখনোও খারাপ দিকটা প্রকট হয়ে দেখা দেৎ, তখন আলো খুঁজে পাওয়াটাই বড় ব্যাপার হয়ে পড়ে|
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৫২
রমিত বলেছেন: জ্বী, খুব সুন্দর বলেছেন, "তখন আলো খুঁজে পাওয়াটাই বড় ব্যাপার হয়ে পড়ে"।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
১৩| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:২৯
দৃষ্টিসীমানা বলেছেন: ভাল লেখা পড়লে ,ভাল কথা শুনলে মানুষের মনে ভাল স্বপ্ন জাগে । কথাটা আমার আম্মা সব সময় বলতেন । বাস্তব জীবনে
আমরা সবাই তার প্রতিফলন দেখচ্ছি । আপনার লেখাটি অনেক ভাল লাগল । ধন্যবাদ ।
১০ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:২৫
রমিত বলেছেন: মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৩:৪২
দূর-পরবাসী বলেছেন: এবং খারাপ মানুষের চাইতে ভালো মানুষের সংখ্যাই বেশী !! এখানে পরিবেশ সবচাইতে বড় প্রভাবক। ভালো পরিবেশে খারাপরা সুবিধা করতে পারে না আবার খারাপ পরিবেশে ভালোরা বেড়ে উঠতে পারে না !!!
শুভ কামনা, ভালো থাকবেন !!!