নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুক্তিযুদ্ধের সেই উত্তাল দিনুলোতে, অজস্র তরুণ কি অসম সাহসিকতা নিয়ে দেশমাতৃকাকে রক্ষা করেছিল! ব্যাটা নিয়াজী বলেছিলো, “বাঙালী মার্শাল রেস না”। ২৫শে মার্চের পরপরই যখন লক্ষ লক্ষ তরুণ লুঙ্গি পরে হাটু কাদায় দাঁড়িয়ে অস্র হাতে প্রশিক্ষন নিতে শুরু করল, বাঙালীর এই রাতারাতি মার্শাল রেস হয়ে যাওয়া দেখে পাকিস্তানি শাসক চক্র রিতিমত আহাম্মক বনে যায়। সেই অসম সাহস সেই পর্বত প্রমাণ মনোবল আবার ফিরে আসুক বাংলাদেশের তরুণদের মাঝে। দূর হোক দুর্নীতি, হতাশা, গ্লানি, অমঙ্গল। আর একবার জয় হোক বাংলার অপরাজেয় তারুণ্যের।
শিক্ষক বিষয়ক
------------ ড. রমিত আজাদ
সত্তর বছর বয়সের এক বৃদ্ধ আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে জবানবন্দী দিচ্ছেন। পাঁচশত জন বিচারক তাঁর জবানবন্দী শুনছেন। আরো আছেন দর্শকেরা। তাদের সংখ্যাও কম নয়। সকলের দৃষ্টি নিবদ্ধ ঐ বৃদ্ধের দিকে। বৃদ্ধের প্রতি অভিযোগ - তিনি দেশের যুবসমাজকে বিপথে নিয়ে যাচ্ছেন, আরো গুরুতর অভিযোগ - তিনি প্রচলিত বিশ্বাসের মূলে কুঠারাঘাত করেছেন। ঐ বৃদ্ধ মূলতঃ একজন শিক্ষক। পাঁচশতজন বিচারকদের মধ্যে অনেকে তাঁর ছাত্র, দর্শক সারিতে যারা দাঁড়িয়ে আছে তাদের অনেকেও তাঁর ছাত্র। শাসকদের কেউই সেই বিচারের আদালতে উপস্থিত হননি, তারা পর্দার অন্তরালে অঙ্গুলী হেলন করেন। সেই শাসকদের অনেকেও তাঁর ছাত্র। বার্ধক্যগ্রস্ত কিন্তু দৃপ্ত কন্ঠে বৃদ্ধ তাঁর জবানবন্দী দেয়া শুরু করলেন এইভাবে, "হে এথেন্সবাসীগণ (বিচারের জুরিগণ) আমার অভিযোগকারীদের দ্বারা আপনারা কতটুকু প্ররোচিত হয়েছেন আমি জানিনা। কিন্তু তাদের কথা এতো বেশী প্ররোচনামূলক ছিলো যে, তারা আমাকে প্রায় ভুলে যেতেই বাধ্য করেছে যে, আমি কে। উপরন্তু তারা খুব কমই সত্য বলেছে। কিন্তু তাদের বলা অনেক মিথ্যা কথার মধ্যে একটি আমাকে বেশ বিস্মিত করেছে যা ছিল -- আপনারা বিচারকরা যেন যথেষ্ট শক্ত থাকেন এবং আমার বাগ্মিতার প্রভাবে বিহ্বল হয়ে না পড়েন। এই কথা বলে তারা নিজেদেরকে নির্লজ্জ্বই প্রমান করলো, এবং আরো বোঝালো যে, সক্রেটিস মুখ খুললেই প্রমানিত হয় যে তিনি একজন মহান বক্তা। বাগ্মিতার জোর বলতে তারা যদি সত্যের জোরকেই বুঝিয়ে থাকে, তাহলে আমি বলবো যে, আমি বাগ্মি। তবে তাদের মতো করে নয়। যাহোক, আমি যেমনটি বলেছিলাম যে, তারা একফোটাও সত্য কথা বলেনা। বরং আমার কাছ থেকে আপনারা যা শুনবেন তা সবই সত্য: তবে আমি তাদের মতো নানান শব্দ আর প্রবাদে অলংকৃত করে ভাষণ দিতে পারবো না। আমি শপথ করে বলছি, আমি খুব সহজ ভাষায় এই মুহূর্তে আমার মনে যা আসে তাই ব্যবহার করেই ভাষণ দেব। যেহেতু আমি আমার কার্যের ন্যায়পরায়ণতা সম্পর্কে নিঃসংশয়।" হ্যাঁ, এই অকুতোভয় দৃঢ়চিত্ত বৃদ্ধের নাম 'সক্রেটিস'। যিনি ছিলেন একজন নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক। মানুষকে সুশিক্ষা দেয়ার অপরাধে শেষ পর্যন্ত তাঁর মৃত্যুদন্ড হয়েছিলো।
আমাদের দেশে ইদানিং শিক্ষক প্রসঙ্গে যেসব আলোচনা-সমালোচনা চলছে তার পরিপ্রেক্ষিতে আমাকে এই লেখাটি লিখতে হচ্ছে। আর লেখার ভূমিকায় আমাকে স্মরণ করতে হলো প্রাচীনকালের এক নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক ও তাঁর করুণ পরিনতিকে।
সব সম্প্রদায়, পেশা, শ্রেণী ও রাজনৈতিক দলে ভালো ও মন্দ থাকে। শিক্ষকদের মধ্যেও যে ভালো ও মন্দ থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। এমনকি একক একটি মানুষের ভিতরেও ভালো ও মন্দ থাকে। জগতে চলছেই তো এভিল আর গুড-এর খেলা।
আমাদের দেশে শিক্ষক কথাটিকে বেশীরভাগ সময় জেনারালাইজ করে ফেলা হয়। শিক্ষক নানান ক্যাটাগরির হয় - কিন্ডার গার্টেন স্কুলের শিক্ষক, প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক, সেকেন্ডারী স্কুলের শিক্ষক, কলেজের শিক্ষক, মাদ্রাসার শিক্ষক, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের শিক্ষক, ক্যাডেট কলেজের শিক্ষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আরো অনেক রকম। এদের মধ্যে কিছু কমোন বিষয় অবশ্যই আছে তবে কাজের ধরন, দায়-দায়িত্ব ইত্যাদি বিচারে পার্থক্যও ব্যাপক। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করি, আমি নিশ্চিত জানি যে কিন্ডার-গার্টেন স্কুলে আমি পড়াতে পারবো না। অতটুকু টুকু ছোট শিশুদের পড়ানোর জন্য যত ধৈর্য্য ও যেসব গুনাগুন থাকা প্রয়োজন আমার সেটা নাই। আবার একজন ক্যাডেট কলেজের শিক্ষককে শুধু ক্লাস নিলেই হয়না, ছাত্রদের সকালে ঘুম ভাঙানো থেকে শুরু করে ঘুম পাড়ানো পর্যন্ত অনেক দায়িত্বই পালন করতে হয়।
কোন কোন রাজনৈতিক রথী-মহারথীর বক্তব্য শুনলে তো স্পষ্টই বোঝা যায় যে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের কাজ ও দায়িত্ব সম্পর্কে আদৌ জ্ঞান রাখেন না। রাখবেনই বা কি করে? বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌকাঠওতো মারাতে পারেনি! কেউ কেউ সেই চৌকাঠে পা দিলেও শেষ করার মুরোদ হয়নি। তাই তারা অধ্যাপক বলতে প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক মনে করে।
এই ব্লগেই কয়েক বছর আগে আমি শিক্ষকদের পৃথক বেতন কাঠামোর উপর একটা লেখা দিয়েছিলাম। Click This Link
এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর এরকম একটা আশ্বাস দিয়েছিলো, পরে কি হলো?
আমার একজন প্রিয় শিক্ষক অবসর নেয়ার কয়েকদিন আগে আত্মহত্যা করেছিলেন। এই ব্লগে এই বিষয়ে আমার একটি লেখা আছে
http://www.somewhereinblog.net/blog/ramit/29505388
'অভিমান করে চলে গেলেন দেলোয়ার হোসেন স্যার'।
আমি এই সমাজে বিভিন্ন সময়ে শোনা শিক্ষকদের সম্বন্ধে কয়েকটি মন্তব্যে তুলে ধরছি - 'শিক্ষকরা আবার কঠিন কি কাজ করে? একই পড়া বারবার পড়ায়, তার জন্য তাকে আবার কত টাকা দিতে হবে?" - একজন মাস্টার ডিগ্রী হোল্ডার গৃহিনী।
'শিক্ষকদের এত টাকা-পয়সার দরকার কি? উনাদের লোভ-লালসাই তো সমাজটাকে শেষ করে দিলো' - একজন পদস্থ আমলা।
'কোন ভালো চাকরী না পেয়ে এই স্কুল মাস্টারীর চাকরীটা নিয়েছিলাম। আমি নিজেই বা কি জানি? আর তোদেরই বা কি পড়াবো?' - একজন স্কুল শিক্ষক।
'শিক্ষকরা ব্যাচে ব্যাচে পড়িয়ে কোটি-কোটি টাকা কামাই করে ফেলে!' - একজন উচ্চশিক্ষিত চাকুরীজীবি।
'প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তো পকেট ভরা টাকা। যে পরিমান টিউশন ফী নেয়!' - একজন আমলা (তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিলো, 'আপনি কি জানেন ঐ টিউশন ফী-র কত পারসেন্ট টিচাররা পায়?' 'উত্তরে তিনি বলেছিলেন, 'না জানিনা' ) না জেনে মন্তব্য করাটাও আমাদের স্বভাবজাত।
'ইউনিভার্সিটির টিচারদের কি ক্লাস নেয়া ছাড়া আর কোন কাজ আছে? সেটাও তো ঠিকমতো করেনা' - এস. এস. সি. পাশও নন এমন একজন গৃহিনী। (তাকে বলা হয়েছিলো যে, 'ইউনিভার্সিটির টিচারদের একটা মেজর কাজ রিসার্চ', উত্তরে গৃহিনী বলেছিলো 'সেটা আবার কি? দরকার আছে কোন?' )
(টেলিফোনে) শিক্ষকের স্ত্রী: তোমার তো ক্লাস নেয়া শেষ, এখনো কি করো ইউনিভার্সিটিতে, তাড়াতাড়ি বাসায় চলে আসো।
শিক্ষক: তোমার কি ধারণা, ক্লাস নেয়া ছাড়া আমাদের আর কোন কাজ নেই?
শিক্ষকের স্ত্রী: আর কি কাজ থাকতে পারে? চলে আসো তাড়াতাড়ি।
জন ১: শিক্ষদের প্রাইভেট পড়ানোটা এত চোখে পড়ে! ডাক্তাররা যে একটা প্রেসক্রিপশন লিখে এতগুলো টাকা ভিজিট নেন, প্রতি দশ মিনিট অন্তর অন্তর রুগী দেখে দিনে এতগুলো টাকা কামাচ্ছেন, সেগুলো চোখে পড়ে না?
জন ২: ভাই ঐ একটা প্রেসক্রিপশন লিখতে তাকে অনেকগুলো বছর পড়ালেখা করতে হয়েছে।
জন ১: শিক্ষকদের কি পড়ালেখার পিছনে অনেকগুলো বছর ব্যায় করতে হয়নি?
জন ২: ভাই, প্রেসক্রিপশন লিখতে যোগ্যতা লাগে।
জন ১: অংক কষতে যোগ্যতা লাগেনা?
জন ২: (আমতা আমতা করে) না, মানে, যা এতকাল হয়ে আসছে আরকি। ডাক্তাররা তো অনেক টাকা নেবেই।
জন ১: সরকারী ইউনিভার্সিটিতেও পড়াবে, আবার প্রাইভেটে গিয়েও ক্লাস নেবে। বড়ই মজায় আছে তারা।
জন ২: ভাই, প্রাইভেটে ক্লাস নিয়ে উনি কি কোন খারাপ কাজ করেন?
জন ১: ক্যান, ক্লাস নেবে ক্যান?
জন ২: প্রশ্ন করছি, ক্লাস নেয়াটা কি খারাপ? উনি তো চুরি-ডাকাতি করেন না। একদল মানুষকে জ্ঞানের আলো বিতরণ করছেন। এতে কি কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে? এটা কি খারাপ?
জন ১: এতো এতো টাকা কামিয়ে ফেলছে!
জন ২: কত টাকা কামায় একটা ক্লাস করে?
জন ১: জানিনা , তবে কম না নিশ্চয়ই।
জন ২: তারা কি ক্লাস নিয়ে টাকার পাহাড় করে ফেলছে? চারিদিকে তাকিয়ে দেখেন তো। এই যে এত এত অট্টালিকা-বাগান বাড়ী এইগুলোর মালিক কি শিক্ষকরা?
'সেই সময় সিএসপি অফিসারের চাকরী পেয়েছিলাম। ঘুষের চাকরী করবো না বলে, শিক্ষকের চাকরীটা প্রেফার করলাম। এখন তো মনে হচ্ছে ভুল করলাম।' - একজন ক্যাডেট কলেজের শিক্ষক।
একজন অধ্যাপকের প্রতি একজন অ-অধ্যাপক, 'এত জাহির করলে অসহ্য লাগে!'
'না জেনে কথা বলবেন না তো।' - অধ্যাপকের প্রতি একজন প্রাক্তন সচিব।
'এইসব প্রফেসররা পি.এইচ.ডি. করা ছাড়া আর কি করছে? কি জানে তারা?' - বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মচারী
'না না প্রফেসর বিয়ে করবো না, প্রফেসরের কি টাকা আছে? তার চাইতে আমলা বিয়ে করা ভালো, তাদের অনেক উপরি আয় আছে, ঐটাইতো আমার দরকার।' - একজন বিবাহযোগ্যা তরুণী।
'বাবা তুমি বিজনেসম্যান না হয়ে টিচার হলে কেন? এই জন্যই তো আমরা এতো গরীব' - একজন শিশু
অনেকেই মনে করে শিক্ষকদের কাজ খুবই সহজ, ক্লাসরুমে গিয়ে কিছুক্ষণ বকবক করলেই হলো। আসলেই কি তাই? এই প্রসঙ্গে একটি ঘটনা উল্লেখ করছি ---
আমার এক ইঞ্জিনিয়ার বন্ধু একবার বিশ্ববিদ্যালয়ে পার্ট টাইম ক্লাস নেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। উনার এ্যাকাডেমিক ক্যারিয়ার ভালো। নিয়ে গেলাম ডিপার্টমেন্ট-এর চেয়ারম্যানের কাছে। আমার বন্ধুর ক্যারিয়ার ও স্মার্টনেস দেখে তাকে পছন্দ হলো চেয়ারম্যান স্যারের। বললেন, "আপনাকে সিলেবাস দিচ্ছি, আপনি লেকচার নোট তৈরী করে আমার কাছে নিয়ে আসেন, ক্লাস দিয়ে দেব।" খুশী হলেন আমার বন্ধু, শিক্ষক হিসাবে একটা পরিচয় তৈরী করতে পারবেন তাই। এর দু'দিন পর আমাকে ফোন দিলেন বন্ধু, "শোন, স্যার তো আমাকে লেকচার নোট তৈরী করতে বললেন।"
আমি: তাতো বলবেনই। ক্লাস নিতে হলে লেকচার নোট রেডী থাকতে হবে না?
বন্ধু: ও আচ্ছা।
তার দু'দিন পর আবারো আমাকে ফোন দিলেন বন্ধু -
বন্ধু: শোন, স্যার তো আমাকে লেকচার নোট তৈরী করতে বললেন।
আমি: অবশ্যই, লেকচার নোট ছাড়া পড়াবে কি করে?
বন্ধু: এ তো অনেক কাজ!
আমি: হ্যাঁ, অনেকই তো।
বন্ধু: কাজতো অনেক! হিউজ!
আমি: হ্যাঁ, অবশ্যই। কাজ তো অনেকই। তুমি কি শিক্ষকের কাজ কম ভেবেছিলে?
বন্ধু: না, মানে আমি তো ভেবেছিলাম .................।
আমি: তুমি লেকচার নোট তৈরী করে স্যারকে দাও, উনি তোমাকে ক্লাস দিয়ে দেবেন।
বন্ধু: আচ্ছা, দেখি।
এরপর আমার ঐ বন্ধু আর কোনদিন, ক্লাস নেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেননি।
আমি ক্লাসরুমে কয়েকবার জরীপ করে দেখেছিলাম, একজন অধ্যাপকের কাছ থেকে বত্রিশটা গুনাগুন ছাত্ররা আশা করে থাকে। যেমন - জ্ঞান, মেধা, সততা, কর্তব্যপরায়নতা, ন্যায়নিষ্ঠতা, সময়ানুবর্তিতা, বিনয়, বোঝানোর অদ্ভুত গুন, সুবক্তা, সুবেশ, স্মার্ট, স্নেহশীলতা, বাংলা-ইংরেজী দুটি ভাষায় সমান দক্ষতা পারলে আরো ভাষা জানা, সব বিষয়ে ব্যাপক জ্ঞান রাখা, ভালো রিসার্চার হওয়া, লেখালেখিতে দক্ষ হওয়া, এমন আরো অনেক কিছু। প্রশ্ন করেছিলাম, "আর কোন পেশায় কি এতো গুনাগুন আশা করা হয়?" উত্তরে তারা সমস্বরে বলেছিলো, "না না, কি দরকার?"
বেশীটাকার কথা যদি বলেন, আমি অনেক শিক্ষককেই জানি যারা সরকারী আমলার চাকুরী সহ অনেক বেশীটাকার চাকুরী পেয়েও সেটা না করে, অথবা ছেড়ে শিক্ষকতায় মনোনিবেশ করেছেন। আমি নিজেও বিদেশে কয়েকগুন বেশীটাকা বেতনে চাকুরী করতাম।
শিক্ষকদের কাছ থেকে বরাবরই স্নেহ-ভালোবাসা পেয়ে এসেছি, সে দেশেই হোক আর বিদেশেই হোক। আমার প্রাইমারী স্কুলে এক শিক্ষিকা ছিলেন, রাগী বলে উনার খ্যাতি ছিলো, সবাই উনাকে জমের মত ভয় পেতাম। কয়েক বছর পরের কথা, প্রাইমারী স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে অনেক দূরে চলে এসেছি। হঠাৎ একদিন রাস্তায় শিক্ষিকা আপার সাথে দেখা। মায়ের মত আমাকে বুকে টেনে নিলেন। মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, "এত বড় হয়ে গেছিস তুই!" বিদেশে যখন লেখাপড়া করছি তখনকার একটা ঘটনা বলি, শীতের দেশে সামার খুব সুন্দর হয়, তাই সামার টাইমটায় আমি যানবাহন কম ব্যবহার করে হাটাহাটি বেশী করতাম। একদিন ইউনিভার্সিটি থেকে বেরিয়ে হেটে হেটে ডরমিটরিতে যাচ্ছি। কিলোমিটার দুয়েক হাটার পর, হঠাৎ পিছনে কার যেন ডাক শুনতে পেলাম। আমার নাম ধরে বিশুদ্ধ ডাক। কয়েক সেকেন্ডের জন্য হারিয়ে গেলাম, 'কে ডাকে আমাকে? নজরুল ইসলাম স্যার? নাকি আবুল আশরাফ নূর স্যার? এই বিদেশ বিঁভুয়ে উনারা আসবেন কোত্থেকে?' পিছনে তাকিয়ে দেখি পাপোভ স্যার। আমাদের ডিপার্টমেন্টের প্রফেসর। নামজাদা বিজ্ঞানী। অবাক হলাম স্যার আমার নাম জানেন! আর ডাকটাও অবিকল আমার বাংলাদেশের শিক্ষকদের ডাকের মত! পরে বুঝলাম, দেশ-বিদেশ বলে কথা নয়, পৃথিবীর সব দেশের শিক্ষকদের ডাকটা একই রকম স্নেহার্দ্র। পাপোভ স্যার সেদিন একটি বাস স্ট্যান্ডে আমাকে পাশে বসিয়ে অনেকক্ষণ কথা বলেছিলেন। জ্ঞানী মানুষ তিনি, উনাকে আমি আর কি বলবো! উনার কথা মনযোগ দিয়ে শুনে কিছু শেখার চেষ্টা করলাম।
শিক্ষকদের সম্মান বিষয়ে বলি। আমরা ছাত্রদের কাছ থেকে অনেক ভালোবাসা পাই, সম্মানও পাই। কিন্তু সমাজে সব সময়ই কি তাই? একবার আমাকে একজন মফস্বলের কলেজ শিক্ষক বলেছিলেন, "ভাই, আমরাও তো বিসিএস দিয়ে কলেজের শিক্ষক হয়েছি, কিন্তু আমাদের প্রতি আচরণ ভালো নয়। রাজনৈতিক পান্ডারা আমাদেরকে আঙুল উঁচিয়ে বলে যে, তাদের ছেলেপেলেদের সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে, তা নইলে ফল ভালো হবেনা। ভাই, অনেক সময় ঘুষামুষা দিয়া বয়! আবার প্রশাসনের কাউকে দেখলে কথা কয় না, ডরায়।" আমার প্রথম প্রিন্সিপাল ছিলেন শ্রদ্ধেয় বাকিয়াতুল্লাহ স্যার। এই নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক দেশের অনেক জ্ঞানীগুণী মানুষকে গড়েছেন। অথচ স্বৈরাচারী এরশাদ ব্যক্তিগত আক্রোশে তাঁকে চাকুরীচ্যুত করেছিলেন।
শিক্ষকদের রাজনীতি করা নিয়ে অনেকে অনেক মন্তব্য করে বেশীরভাগই এটার বিপক্ষে। কেন? রাজনীতি কি খারাপ কিছু? রাজনীতি যদি খারাপই হয় তাহলে রাজনীতিবিদরা তো সবাই খারাপ কাজ করছে। শিক্ষকরা রাজনীতি করেছিলেন বলেই বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন হয়েছিলো, ভাষা আন্দোলন হয়েছিলো, মহান মুক্তিযুদ্ধেও শিক্ষক রাজনীতির ভূমিকা রয়েছে। খান আতা পরিচালিত 'আবার তোরা মানুষ হ' নামে একটি সিনেমা রয়েছে, সেখানে তিনি দেখিয়েছিলেন কিভাবে একজন নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক তাঁর ছাত্রদের উদ্ধুদ্ধ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে পাঠিয়েছিলেন। সাহিত্য-চলচ্চিত্র ইত্যাদি জীবনের দর্পন। অনেকে বলেন, স্বাধীন দেশে আর শিক্ষক রাজনীতির প্রয়োজন নাই। তাই কি? স্বাধীন বাংলাদেশেও স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে শিক্ষকদের ভূমিকার কথা উল্লেখযোগ্য। রাজনীতি না করলে দেশ এগুবে কি করে? তবে দাবী হয়তো, সুস্থ রাজনীতির। সে দাবী তো সমাজের সবার কাছেই।
অনেকে বলেন সমাজে আজ আর নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক নাই। সমাজ নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক চাইলেই না সেরকম শিক্ষক হবে। নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক তৈরীর পরিবেশ না থাকলে সেরকম শিক্ষক তৈরী হবে কি করে? প্রসঙ্গত বলি, আমার একজন শিক্ষক আছেন, যিনি আমলার চাকুরী পেয়েছিলেন তবে শেষ পর্যন্ত শিক্ষকই থেকে গেছেন। তিনি এখন খুব কষ্টে আছেন। আপনারা কোচিং-প্রাইভেট পড়া ইত্যাদির কথা বলেন। স্যার বাংলার শিক্ষক, জানেন তো বাংলা-য় কোন কোচিং-প্রাইভেট পড়া হয়না (বেশীরভাগ সাবজেক্ট-এই হয়না)। স্যার তার সন্তানকে একটা প্রমিনেন্ট প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াতে চাইলেন। কিন্তু টিউশন ফী হিসাব করে আর পারলেন না। তারপর আফসোস করে আমাকে বললেন, "আমার ব্যাচমেটরা সবাই এখন বড় আমলা, তারা তাদের সন্তানদের বিলেত-আমেরিকায় পড়ায়, আর আমি আমার সন্তানকে দেশেও ঠিকমতো পড়াতে পারলাম না।" এই হলো আমাদের সমাজে নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক-এর পরিণতি।
অনেকে বলে, 'জাতির মাথা শিক্ষকরা'। তাই তো হওয়া উচিৎ, কিন্তু আমাদের দেশে ব্যবহারিক ক্ষেত্রে এটা কতটুকু সত্যা? আমাদের সমাজে কি থিংক ট্যাংক আছে? দেশে পলিসি মেকার কারা? শিক্ষকরা না আমলারা? না কি রাজনীতিবিদরা?
এই জমানার শিক্ষদের মেধা-মান ইত্যাদি নিয়ে যদি প্রশ্ন ওঠে, তাহলে আমিও প্রশ্ন করবো, "যে সমাজ শিক্ষকদের যথাযথ মান-মর্যাদা (অর্থনৈতিক ও সামাজিক) দিতে জানেনা, সেই সমাজে মেধাবীদের এই পেশা বেছে নেয়ার আগ্রহ কতটুকু হতে পারে?"
কয়েকদিন আগে ঢাকার একটি ভবনে একটি সায়েন্স কনফারেন্স হচ্ছিলো। অনেক নবীন ও প্রবীন বিজ্ঞানীরা সেখানে তাদের পেপার প্রেজেন্ট করেছিলো। কনফারেন্স-এর মাঝখানে ব্রেক টাইমে আমি তিনতলা থেকে নীচে নেমে এলাম। সেখানে দেখি প্রচুর পরিমানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর লোক। ভবনের বাইরে নেমে দেখি সারি সারি টিভি ক্যামেরা দাঁড়িয়ে আছে। জানতে চাইলাম, কি বিষয়? একজন বললেন যে, সামনে ইলেকশন তাই নির্বাচন কমিশন ও আমলাদের একটা মিটিং হচ্ছে। তাই এতো আয়োজন। জাতির গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে ভালো নিউজ কাভারেজ হবে এটাই স্বাভাবিক। আমার প্রশ্ন হলো, একটা সায়েন্স কনফারেন্স কি জাতির জন্য অগুরুত্বপূর্ণ? সেখানে তো একটা টিভি ক্যামেরাও দেখলাম না!
আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি আমার জীবনে আমার অভিভাবকের পরপরই যারা সবচাইতে বেশী অবদান রেখেছেন তারা হলেন আমার শিক্ষকরা। তাদের অনেকে আছেন দেশে, অনেকে আছেন বিদেশে। অনেকে আবার এই পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে গিয়েছেন। যারা আজ আর এই পৃথিবীতে নেই, তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। আর যারা বেঁচে আছেন তাদের প্রতি সশ্রদ্ধ সালাম। তাঁদের দীর্ঘ জীবন কামনা করি, যেন তাঁরা আরো বহুকাল জ্ঞানের আলো বিতরণ করে যেতে পারেন।
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৩
রমিত বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ সুমন ভাই।
২| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৬
অগ্নি সারথি বলেছেন: হুম। ভাললাগা রমিত ভাই।
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৩
রমিত বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ সারথী ভাই।
৩| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৮
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: দারুন সমৃদ্ধ ভাবনায় প্রকাশ করেছেন সমস্যাটার অনেক অনেক দিক।
দারুন বলেছেন। বিষয়টা এইরকমই গুলীযে ফেলে সবাই।
একজন সবচে শিক্ষিত স্মার্ট ছেলেটা জীবনের লক্ষ্য কি জানতে চাইলে শতকার ৯৮ জনই বলবে ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার , কিম্পউটার প্রোগ্রামার সিএ....ইত্যাদি
এই তালিকায় কেন শিক্ষক নেই???
সাধারন সামাজিক চলতি মোটা দাগের প্রথম বিচারের মানদন্ড অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা। শিক্ষক পেশায় তা অনিশ্চিত বলেই কারোই পছন্দের প্রথম তালিকায় শিক্ষক থাকে না।
অথচ বদনাম যা সব তাহারই
আর রাজনীতির কথা যা বলেছেন- না প্রকৃত রাজনীতিতে কারো আপত্তি নেই।
কিন্তু চলমান রাজনীতির নামে নীতিহীনতার যে ছড়াছড়ি শিক্ষকদেরও তাতে গা ভাসানোতেই সবার আপত্তি!
স্বার্থ লোভ, পদ আর প্রমোশন অর্থনৈতিক বিশেষ সুবিধা এই সবের লোভে যারা বিবেক এবং ন্যায়, সত্যকে পাশ কাটিয়ে যারা অন্ধ রংয়ে রঙিন হয়ে, বা হতে মূখিয়ে আছৈ তাদের জন্যই এতকথা।
যাদের কাজ সকলেই ভুল পথে গেলেও তাকে/জাতিকে সঠিক পথের দিশা দেখানো তারাই যদি চলতি রাজণীতির চোরাবালীতে হারিয়ে যান- তখন জাতির সাধার জনতা আতকে উঠেন। ভরসার শেষ জায়গাটো শেষ হতে দেখে।
থিংক ট্যাংকের ভূমিকাইতো শিক্ষকরা রাখবেন। নির্মোহ, নির্ভয়, পক্ষপাতহীন!
আপনি কি দয়া করে এমন ক'জনের নাম দিতে পারবেন।
যদিবা থাকে তারা সমাজের প্রভাবক হিসাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন নি।
যে জন্য সীল সাদার জয়জয়কার! আর জাতির জন্য আতংকের! নয় কি?
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:২৩
রমিত বলেছেন: ভৃগু ভাই, প্রথমেই বলে রাখি যে, আমি বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করিনি। আমি পড়ালেখা করেছি ইউরোপে। বিশ্বের তিনটি আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সূযোগ সৃষ্টিকর্তা আমাকে দিয়েছেন, তার জন্য উনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সে সময়ে পৃথিবীখ্যাত অনেক অধ্যাপকদের সংস্পর্শে আসার সুযোগ আমার হয়েছে। অসাধারণ ঐসব অধ্যাপকরা আমাকে মুগ্ধ করেছিলেন!
যেহেতু দেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি পড়িনি তাই এই বিষয়ে আমার অভিজ্ঞতা শূণ্য (স্বীকার করে নিচ্ছি)। তবে আমার স্কুল জীবনে আমার ফুপা ও আরো কিছু আত্মীয় মুরুব্বীদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসাবে দেখেছি। তাদের প্রতি ছাত্রদের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাই দেখেছি। আমার বড় ভাই-বোনরা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের সম্পর্কে যা কিছু জানি তা উনাদের দেখে ও উনাদের কথা শুনে জানি।
অধ্যাপক রাজনীতি প্রসঙ্গে আসি। আবারো বলছি, রাজনীতি খারাপ কিছু নয়, বরং ভালো। সমস্যা অসুস্থ রাজনীতি নিয়ে। সে তো যেকোন অসুস্থতা নিয়েই সমস্যা। সেটা শিক্ষা হোক আর ব্যবসা হোক আর অন্য যেকোন কিছু হোক। আমার জানামতে, স্বাধীনতার পর একটি বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ হয়েছিলো, সেখানে অধ্যাপকদের অনেক গণতান্ত্রীক সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়েছিলো। আবারো বলছি এটাও ভালো। তবে সেই সময়ে অনেকেই প্রশ্ন করেছিলো, 'এটার মিসইউজ হবে কিনা?' আবারও সেই কথা ইউজ আর মিসইউজ। পানি খুব ভালো জিনিস, তবে মিসইউজ হলে সেটাও খারাপ। অর্থাৎ মিসইউজ যাতে না হতে পারে সেই বিষয়ে পরবর্তি কিছু পদক্ষেপ নেয়া জরুরী ছিলো।
অধ্যাপকদের পদ ও প্রমোশন দুটা ভিন্ন ভিন্ন বিষয় আছে। ডিপার্টমেন্ট চেয়ারম্যান, ডীন, ইত্যাদি হলো পদ। আর লেকচারার থেকে ফুল প্রফেসর এইগুলো হলো প্রমোশনের ব্যপার। বিদেশে দেখেছি - মেধাবী অধ্যাপকরা পদের ব্যাপারে একেবারেই লালায়িত নন। বরং অফার দিলেও তারা সেটা নেননা। কারণ, ওটা এ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কাজ, ঐ করে তারা সময় নষ্ট করতে চাননা। তাদের মূল আগ্রহ গবেষণায়। র্যান্কের প্রমোশনটি কিছু ক্রাইটেরিয়া ফুলফিলমেন্টের সাথে জড়িত। যেমন, ইন্টারন্যাশনাল জার্নালে গবেষণাপত্র প্রকাশ, মৌলিক গবেষণামূলক গ্রন্থ প্রকাশ, কতজন ছাত্রকে পি.এইচ.ডি. ডিগ্রী দিতে পেরেছেন, ইত্যাদি। পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে ফুল প্রফেসর হতে গেলে ডি.এস.সি ডিগ্রী থাকতেই হবে। ক্রাইটেরিয়া ফুলফিল করলে প্রমোশন এম্নিতেই হয়। এতে র্যান্ক ও সামান্য বেতন বৃদ্ধি ছাড়া আর কিছুই পাওয়া হয়না। এমন নয় যে তারা আরো বড় একটি চেম্বার পাবেন বা আরো বড় একটি ভিল্লা পাবেন। তাই এই নিয়ে তেমন সমস্যা হয়না। তবে প্রফেশনাল জেলাসী কিছু পরিমানে সব দেশেই আছে। আফটার অল আমরা মানুষ তো!
আমাদের দেশে পশ্চাদপদ। এখানে গবেষণার পর্যাপ্ত সুযোগ এবং পরিবেশ নাই। তাই আমরা গবেষণায় দুর্বল। দেশকে গবেষণায় এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে গবেষণার গুরুত্বটা প্রথমে বুঝতে হবে। আমাদের দেশে অতীতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে 'রিসার্চ মেথডোলজী' সাবজেক্ট-টিই ছিলোনা। ওটা না থাকলে লোকে গবেষণার গুরুত্ব বুঝবে কি করে? ইদানিং কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হয়েছে। ফলাফল হয়তো কিছুকাল পরে পাওয়া যাবে। বিজ্ঞানের কিছু কিছু গবেষণায় প্রচুর অর্থায়নের প্রয়োজন, এই পরিমান বাজেট নির্ধারণ করতে পারে কেবল সরকার। উদ্যোগটা তাদেরকেই নিতে হবে।
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৭
রমিত বলেছেন: থিংক ট্যাঙ্ক প্রসঙ্গে আসি। থিংক ট্যাঙ্ক তৈরী করার কালচার রাজনৈতিক দলগুলোতে আছে কিনা আমার কাছে এখনো খুব ক্লিয়ার না। দলগুলোর উপদেষ্টাদের মধ্যে আমলাদের পরিমান প্রভাবই বেশী দেখি। 'সিএসপি অফিসার মানে তো অনেক কিছু!' - এই চিন্তা থেকে এখনও খুব বেশী দূরে আসতে পারেনি দেশের বেশীরভাগ মানুষ। জ্ঞানী অধ্যাপকদের নিরপেক্ষ চিন্তাভাবনা বেশীরভাগ রাজনীতিবিদই পছন্দ করেন না, "ভাই পাওয়ার পলিটিক্স করি, এই সব জ্ঞানগর্ভ চিন্তাভাবনা কি কাজে লাগবে বলুন?" এরকম মন্তব্যই শোনা যায় বেশী। বিজ্ঞানমনষ্কতা বিজ্ঞানমনষ্কতা বলে নাভিশ্বাস উঠে যায়, একটু জরীপ করে দেখুন তো সমাজে উপরের লেভেলে বিজ্ঞানের ছাত্রের পারসেন্টেইজ কত?
নির্মোহ, পক্ষপাতহীন জ্ঞানী মানুষ যে এই সমাজে নাই তা নয়। তবে তারা লাইমলাইটে নেই। তাদেরকে লাইমলাইটে আনার দায়িত্ব কাদের? মিডিয়ার প্রথমত। মিডিয়ার প্রতি যথযথ শ্রদ্ধা রেখে বলছি, সবকটি মিডিয়া কি নিরপেক্ষ? "ভাই উনাদেরকে কি প্রোগ্রামে আনবো? উনাদের কথা তো পাবলিকে খাবেনা। উনাদের কথাই লোকে বোঝে না।" এরকমও শুনেছি।
আমরা কেউ সমাজের বাইরে নই। সমাজ আমাদের প্রভাবিত করে। সমাজের সামগ্রিক মান যদি অত উন্নত না হয়, তাহলে সেখানে উন্নত চিন্তাভাবনার লোকের স্থান কি সুদৃঢ় হবে?
নির্ভয়, নিশঙ্ক চিত্ত - এটা একটা ভালো পয়েন্ট ধরেছেন। আমি আমার লেখাটা শুরুই করেছিলাম একজন নির্ভয়, নিশঙ্ক চিত্ত মানুষের উদাহরণ দিয়ে। মানব সমাজেই এরকম লোকের সংখ্যা বরাবরই কম ছিলো। ইতিহাসের পাতা খুললে এদের পরিনতি কি দেখি? হয় দেশ ছাড়া নয়তো মৃত্যুদন্ড!
৪| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৫২
ইফতেখার রাজু বলেছেন: সব শিক্ষক যেমন কম মেধাবী না তেমনি সব আমলাও কম জ্ঞানী না। উভয় শ্রেণিতেই প্রতিভাবানরা রয়েছেন। তবে একজন শিক্ষকের চেয়ে একজন আমলাকে অনেক কাটখড় পুড়িয়ে নিজের অবস্থান তৈরি করতে হয়। তার অবস্থান নির্ধারিত হয় অনেক যোগ্যতার বিচারে। সেক্ষেত্রে অনেক শিক্ষকই নিজের রুটিন ওয়ার্ক শিক্ষা, গবেষণা ও সৃজনশীল কাজে কম মনোযোগী। তারা নিজেরাই নিজেদের দরিদ্রপনার জন্য দায়ি। শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে যোগ্য না হয়ে উঠে তারা বরং অতি সাধারণ জীবন যাপনই বেচে নেন। অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যলয়ের শিক্ষকরা ছাত্রদের সুকুমার বৃত্তি গড়নে ব্যর্থ। নিজে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালিন দেখেছি, ক্লাসরুমে স্যারদের কাছে নতুন কিছু শিখতে পারিনি। কলা ও সমাজবিজ্ঞানের অধিকাংশ শিক্ষকরাই ছাত্রদের নতুন কিছু দিতে পারেন না। এ ক্ষেত্রে কিছুটা ভাল বিজ্ঞান ও বাণিজ্য অনুষদের শিক্ষকরা।
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৩
রমিত বলেছেন: আপনি তো আবার সেই পুরাতন কথাই বললেন, 'একজন শিক্ষকের চেয়ে একজন আমলাকে অনেক কাটখড় পুড়িয়ে নিজের অবস্থান তৈরি করতে হয়'। আমলা বনাম শিক্ষক বিতর্ক করা আমার কোন উদ্দেশ্য না। তবে আপনাকে বলি সকল আমলাই শিক্ষকদের নির্মিত, তবে আমলারা কোন শিক্ষক পয়দা করতে পারেন না।
শিক্ষকদের রুটিন ওয়ার্ক শিক্ষা, গবেষণা ও সৃজনশীল কাজ সম্পর্কে উপরের মন্তব্যে লিখেছি। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও উন্নত দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি তুলনামূলক চিত্রও উপরের মন্তব্যে তুলে ধরেছি।
কষ্ট করে আমার লেখা পড়ার ও মন্তব্য করা জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
৫| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৬
কিবরিয়াবেলাল বলেছেন: আমার জীবন শুরু হয়েছিল শিক্ষকতা দিয়ে । মাঝে ব্যবসা ;অতপর শিক্ষকতায় ।
স্ত্রীর তের কথা শুনলেও আমার ছেলেরা আমার সমর্থক ।মনে ভাবি , জিতেছি ।।আপনার সুন্দর লেখার জন্য ধন্যবাদ
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৭
রমিত বলেছেন: শিক্ষকতার প্রতি আপনার প্যাশন দেখে মুগ্ধ হলাম।
হ্যাঁ, স্ত্রীরা ম্যাটেরিয়ালী ভালো থাকতে এটা শ্বাশত, তাই তারা অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল স্বামী পছন্দ করেনা। তাই আমি অনেক শিক্ষককে দেখেছি, শিক্ষকতার পাশাপাশি ব্যবসাও করেন। এটাও খারাপ না।
মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
৬| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৭
শূণ্য মাত্রিক বলেছেন: 'আমলাতান্ত্রিক জটিলতা' বলে একটা টার্মই তো পড়েছিলাম ছোটবেলায়। ওনারা ঝামেলা করবে সে আর নতুন কি! !
খুব সুন্দর পোষ্ট স্যার। ভালো থাকবেন।
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৭
রমিত বলেছেন: মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
৭| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৮
রমিত বলেছেন: লেখাটিকে নির্বাচিত পাতায় স্থান দেয়ার জন্য সামু কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।
৮| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০৭
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: দারুন বলেছেন।
আমার বলার কিছূ নেই। আপনার মতো অভিজ্ঞ আর জ্ঞানীর কাছ থেকে শুধু নেবারই আছে।
তবু্ আপনার দারুন মতবিনিময়ে প্রীত বোধ করছি।
যে নির্ভয় নিশংক চিত্তের মহান শিক্ষকের বানী দিয়ে পোষ্ট শুরু করেছেন- তেমন একজন শিক্ষক যদি আজ জাতি পেত!
হয়তো জীবন দিতো- যুগে যুগে কালে কালে এমনটিই হয়েছে কিন্তু জাতি দিশা পেত!
যেমন পেয়েছিল সক্রেটিসের আত্মত্যাগে, ইমাম হোসাইনের শাহাদাতে! কিংবা ইমাম আবু হানিফার প্রধান বিচারপতি পদ প্রত্যাখানের কারণে প্রতিদিন সকাল বিকাল চাবুকের ।আঘাত সওয়ায়!
সত্যতো ফাস্টফুড নয়। কিনলাম খেলাম চলে গেলাম! তারজন্য ত্যাগ চাই।
অবশ্যই রাজনীতি মন্দ নয়। যদি তা হয় সুস্থ, ন্যায়নিষ্ঠ, বিবেকবান, প্রকৃত সত্যের জন্য।
কিন্তু যা চলছে দলান্ধতায় দলবাজিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক নামটাকেই যেভাবে কলুষিত করা হচ্ছে তাকে কি আপনি এগিয়ে নিতে চাইবেন? একজন ভিসি যখন স্রেফ দলীয পরিচয়ে নির্বাচিত হয়! একজন ভিসি যখন স্রেফ একটা দলের পক্ষে দলীয় কর্শীর মতো বক্তৃতা করে- তখন কি আপনি লজ্জ্বিত হন না?
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৭
রমিত বলেছেন: আপনিও চমৎকার বলেছেন ভৃগু ভাই।
আমি কোন জ্ঞানী নই, তবে জা জানি তা শেয়ার করতে চাই আপনাদের সাথে।
প্রসঙ্গত বলি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হিসাবে তাকেই নিয়োগ দেয়া হয়, যিনি কথা শুনবেন। অন্যান্য ক্ষেত্রেও অনেকটা ঐরকমই। পর্দার অন্তরালে যারা ছিটকে পড়লো তাদের খোঁজতো আমরা রাখিনা ভৃগু ভাই।
জ্বী, সমাজ পরিবর্তনে যুগে যুগে ভূমিকা রেখেছিলেন এই নির্ভয়, নিশঙ্ক চিত্ত মানুষগুলো। তাদেরকে সালাম।
৯| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৭
রুদ্র জাহেদ বলেছেন: অসাধারন লিখেছেন
+++
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪০
রমিত বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
১০| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৩
ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: আমাদের দেশের শিক্ষকদের যে বেতন দেওয়া হয়, শিক্ষকরা যদি প্রাইভেট আর কোচিং এ ক্লাস করায় তাহলে তাদের না খেয়ে মরতে হবে।
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪১
রমিত বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
১১| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৩৮
অন্ধবিন্দু বলেছেন:
যে সমাজ শিক্ষকদের যথাযথ মান-মর্যাদা (অর্থনৈতিক ও সামাজিক) দিতে জানেনা, সেই সমাজে মেধাবীদের এই পেশা বেছে নেয়ার আগ্রহ কতটুকু হতে পারে?
মেধার প্রশ্ন পরে আসে, রমিত। আগে কথা হলো সততার। খাদ্য, চিকিৎসা ও শিক্ষা এ তিনটিতে অসাধুতা মানে পুরো সমাজ ব্যবস্থাকে অসাধু করে তোলা। আর এমন সমাজ কি করে শিক্ষকদের যথাযথ মান-মর্যাদা দিতে জানবে ??
'সক্রেটিস' দের সমাজ বানিয়েছে না 'সক্রেটিস' রা সমাজ ? রাজনীতির নীতি ঠিক করবেন আগে না শিক্ষকদের মূল্যায়ন করার নীতি। এসব অনেক বড় ক্যানভাসের চিত্র। কেটেকুটে দেখে কোনও সমাধানে আসতে পারবেন না। আমরা কম জানি না। আর কথাও কম বলছি না।
কিন্তু বিড়ালেন গলায় ঘণ্টা বাঁধতে গেলে, কারো দেখা নাই!!!!
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪২
রমিত বলেছেন: খুব সুন্দর মন্তব্য করেছেন ভাই।
ডিম আগে না মুরগী আগের মত অবস্থা।
১২| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৪৬
তার আর পর নেই… বলেছেন: সবগুলো প্রসঙ্গই আসছে শিক্ষকদের যথাযথ সম্মান দেওয়া নিয়ে।
শিক্ষকের কাজটা ছোট, এইজন্য তাদের এতটা চাওয়ার দরকার নেই।
যেখানে আপনি নিয়ে এসছেন সক্রেটিস, বিভিন্ন জনের মতামত।
সবটাই ভাল লেগেছে।
এইটা ও ঠিক যে এখন আর নিবেদিত প্রাণ শিক্ষক বিরল। তবে এও তাদের সময়ের সাথে তাল মিলাতে না পারার কারণ।
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৫১
রমিত বলেছেন: সুন্দর মন্তব্য করেছেন।
সমাজ নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক চাইলেই না সেরকম শিক্ষক হবে। নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক তৈরীর পরিবেশ না থাকলে সেরকম শিক্ষক তৈরী হবে কি করে?
আমার একজন শিক্ষক আছেন, যিনি আমলার চাকুরী পেয়েছিলেন তবে শেষ পর্যন্ত শিক্ষকই থেকে গেছেন। তিনি এখন খুব কষ্টে আছেন। আপনারা কোচিং-প্রাইভেট পড়া ইত্যাদির কথা বলেন। স্যার বাংলার শিক্ষক, জানেন তো বাংলা-য় কোন কোচিং-প্রাইভেট পড়া হয়না। স্যার তার সন্তানকে একটা প্রমিনেন্ট প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াতে চাইলেন। কিন্তু টিউশন ফী হিসাব করে আর পারলেন না। তারপর আফসোস করে আমাকে বললেন, "আমার ব্যাচমেটরা সবাই এখন বড় আমলা, তারা তাদের সন্তানদের বিলেত-আমেরিকায় পড়ায়, আর আমি আমার সন্তানকে দেশেও ঠিকমতো পড়াতে পারলাম না।" এই হলো আমাদের সমাজে নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক-এর পরিণতি।
১৩| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:০৫
বিপ্লবী নিশান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ স্যারকে ...।যদিও জীবনের চলার পথে ডাক্তারী পেশাটাকেই বেছে নিলাম তথাপিও জাতী গঠনের শ্রেষ্ঠ কারিগর সেই শিক্ষক শ্রেনীকেই সর্বশ্রেষ্ঠ বলে অকপটে স্বীকার করি।
যেই সকল নিরহংকার, অভিবাবক তুল্য শিক্ষকদের আশির্বাদ নিয়ে জীবনের এ স্টেপে পৌছাতে পেরেছি তাদের জন্য অন্তরের অন্তস্তল থেকে লাখো স্যালুট চলে...।ভাল থাকুক উনারা...
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৫৫
রমিত বলেছেন: এত চমৎকার ও কৃতজ্ঞতামূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
১৪| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:০৩
মারুফ তারেক বলেছেন: শিক্ষকদেরকে সম্মানের দিক থেকে সচিবদের নিচে রাখা হয়েছে, ইহা সরকারী সিন্ধান্ত।। যদিও তারা ইহার কারন সম্পর্কে যুক্তিসঙ্গত কোন ব্যাখা দিতে পারেননি।
দেশের একজন মন্ত্রী যখন শিক্ষকদের জ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, তখন আর কি বলার থাকে?
শিক্ষকদের প্রতিবাদ ব্যাতিত আর কি করার আছে?
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:০৯
রমিত বলেছেন: জ্বী ভাই। সেটাই কথা।
মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
১৫| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:২০
আজাদ মোল্লা বলেছেন: সুন্দর করে লিখেছেন , পোস্টে ++++ দিয়ে গেলাম ।
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:২৭
রমিত বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে। ভালো থাকবেন।
১৬| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৫১
মহা সমন্বয় বলেছেন: আমলা মানেই ঝামেলা।
শিক্ষকদের মান সাবার উপরে টাকা,গাড়ি,বাড়ি দিয়ে এই মান যাচাই করলে হবে না কারণ টাকা,গাড়ি,বাড়ি থাকলেই সবাই শিক্ষক হতে পারে না।
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৪৬
রমিত বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকবেন।
১৭| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৬:০৮
টরপিড বলেছেন: আমি নিতান্তই সাদা-সিধে আর নিরীহ মানুষ বলে (গতকাল আমার বউ যখন আমাকে খাইয়ে দিতে গিয়ে একটু বাঁকা হয়ে বসতে বলল, আমি বললাম, আমি সোজা মানুষ, বাঁকা হইতে পারব না), আর আমলা, মামলা, হামলা অপছন্দ হওয়ার কারণে শিক্ষকতা পেশাকেই বেছে নিয়েছিলাম পরিবারের চাপ অগ্রাহ্য করে। এখন শিক্ষকদের নিয়ে সবাই যেভাবে মন্তব্য করছে, কী আর বলব!
তবে একটা কাজ করা যায়, শিক্ষকদের বেতন সবচাইতে কমায় দেয়া যায়। সবাই ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার আর আমলা হোক, ক্লাসের সবচাইতে খারাপ ছাত্র, যারা আর কোথাও চান্স পাবেনা, তারা শিক্ষক হবে, বেতন সবার চাইতে কম পাবে। তারপর আর ঠেকায় কে? আমলারা তাঁদের অগাধ যোগ্যতা দিয়ে দৈনিক ডজনকে ডজন নতুন নতুন আমলা পয়দা করবেন, দেশ এগিয়ে যাবে। আহা! ভাবতেই ভালো লাগে।
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৪৯
রমিত বলেছেন: জ্বী ভাই, আমাদের মানসিকতাটা অনেকটা এইরকমই - কম সম্মানী, কম মর্যাদার শিক্ষক দিয়ে ভালো ভালো ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, কেমিস্ট, সাংবাদিক, উকিল, আমলা, রাজনীতিবিদ পয়দা করবো।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকবেন।
১৮| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:০৭
রাশেদ বিন জাফর বলেছেন: ভালো লাগল , ধন্যবাদ..................
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৪৯
রমিত বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকবেন।
১৯| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৩২
ইছামতির তী্রে বলেছেন: "যে সমাজ শিক্ষকদের যথাযথ মান-মর্যাদা (অর্থনৈতিক ও সামাজিক) দিতে জানেনা, সেই সমাজে মেধাবীদের এই পেশা বেছে নেয়ার আগ্রহ কতটুকু হতে পারে?"
অজ্ঞতার দেশে বসবাস আমাদের। আর কিছু বলার নাই।
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৫০
রমিত বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকবেন।
২০| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৫৯
কথাকথিকেথিকথন বলেছেন: অসাধারণ একটা লেখা লিখেছেন । খুব ভাল লাগলো শিক্ষক নিয়ে আপনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ ।
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৪৭
রমিত বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে। ভালো থাকবেন।
২১| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৪১
আমি ইহতিব বলেছেন: আমার স্বামীর প্রথম ও একমাত্র পছন্দ ছিলো শিক্ষকতা। ২০০৮ থেকে সে শুরু করে শিক্ষকতা। ২০১০ এ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের উচুঁমানের বেতনের মোহ ছেড়ে সম্মানের আশায় জয়েন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। আর আজ এতদিন পরে সরকারদলীয় লোকজনের অপমানজনক কথাবার্তা শুনে আফসোস করে আর ভাবে যে এখানে জয়েন না করাই মনে হয় ভালো ছিলো।
আপনার লেখাটা অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া।
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১০
রমিত বলেছেন: আপনার অকপট মতামত প্রদানের জন্য ধন্যবাদ আপা। শিক্ষকদের সম্মান করতে হলে শিক্ষা থাকতে হবে তো!
ভালো থাকবেন।
২২| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৫
ধ্রুব নয়ন চৌধুরী বলেছেন: বাস্তবতার আলোকে চমৎকার প্রকাশ করেছেন স্যার। আপনাকে ধন্যবাদ।
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১০
রমিত বলেছেন: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
২৩| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৪৯
তৌহিদুল ইসলাম রাসেল বলেছেন: সময় উপযোগী একটা লেখা।
আমাদের সমাজে সামাজিক অবক্ষয়তা চরম আকার ধারণ করেছে। এখন গ্রাম - গঞ্জে শিক্ক্ষকদের আর কেউ সন্মান করে না। আসলে এখন সন্মান তো নির্ধারণ হয় কার কত আয় বা পেশী শক্তি দিয়ে। আজকাল গ্রামীন শিক্ষকদের চেয়ে একটা পান ওয়ালা বেশি আয় করে থাকে।
আশা করছি লেখাটি সমাজের সকল স্তরের লোকজন পড়বে। আজকাল তো আমরা সিলেবাসের বাইরে পড়ালেখাও বন্ধ করে দিয়েছি !!
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:১৪
রমিত বলেছেন: খুব সুন্দর মন্তব্য করেছেন। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
২৪| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৪৯
আজমান আন্দালিব বলেছেন: ইছামতির তী্রে বলেছেন: "যে সমাজ শিক্ষকদের যথাযথ মান-মর্যাদা (অর্থনৈতিক ও সামাজিক) দিতে জানেনা, সেই সমাজে মেধাবীদের এই পেশা বেছে নেয়ার আগ্রহ কতটুকু হতে পারে?"
অজ্ঞতার দেশে বসবাস আমাদের। আর কিছু বলার নাই।
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:১৫
রমিত বলেছেন: জ্বী ভাই।
সুন্দর মন্তব্য করেছেন। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
২৫| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৭:৪০
ধৈঞ্চা বলেছেন:
সুন্দর এবং সময়োপযোগী একটি লেখার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
গত কয়েক যাবৎ শিক্ষক আন্দোলনের এই ইস্যু নিয়ে বেশ কিছু আর্টিক্যাল পত্র পত্রিকায় দেখা যাচ্ছে। আমি যেহেতু প্র. আলো বেশী পড়ি তাই আসিফ নজরুল-এর ১৩ তারিখের আর্টিক্যালটার কথা বলছি। লেখাটা চমৎকার কিন্তু লেখায় পজেটিভ মন্তব্যের সাথে সাথে অনেক নেতিবাচক মন্তব্যও দেখলাম। এরমধ্যে বেশ কিছু আপত্তিকর মন্তব্যও ছিল যা সত্যিই দুঃখ ও লজ্জাজনক। সামুর পোষ্টেও এমন আপত্তিকর মন্তব্য দেখা যায়। সবাই আমাদের সমর্থণ করবে এমন আশা করি না কিন্তু ভাবতে কষ্ট হয় মানুষ আমাদের সম্পর্কে কত কম জানে। যারা বিশ্ববিদ্যারয়ের চৌকাঠে যাওয়ার যোগ্যতাও রাখে না তারাই আজ সাজেশন দিচ্ছে এখণ আমাদের কি করা উচিৎ কি করতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। দেশের বাইরে পোষ্টডক করছি, থেকে যাওয়ার অফুরন্ত সুযোগ কিন্তু আমি অবশ্যই বেক করব।
আপনার লেখায় হয়ত সমালোচকরা একটা ক্লিয়ার ধারণা পাবে যদি তারা বিষয়টাকে পজিটিভলি নেয়। আবারো ধন্যবাদ।
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:২০
রমিত বলেছেন: আপনার গবেষণার সুযোগ যদি বাইরে বেশী থাকে তাহলে তাই করুন। গবেষণাটাই বড় কথা কোন দেশে বসে করছেন সেটা বড় কথা নয়, মানবজাতি উপকৃত হলেই সেটা ভালো।
দেশে ফিরে আসার ইচ্ছা আছে শুনে খুশী হলাম। দেশকে জ্ঞান-সমৃদ্ধ করতে হলে, উচ্চমান-মেধা সম্পন্ন মানুষ প্রয়োজন।
কোন একটি বিষয়কে পজেটিভলি-নেগেটিভলি নেয়া তো যার-যার ব্যপার। নেশাগ্রস্ত-মোহগ্রস্ত একটা লোককে বোঝানো তো আর সহজ নয়। আমরা চেষ্টা করে যাবো।
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
২৬| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:২৮
বাহারুল004 বলেছেন: অসাধারন স্যার। সময়পুযুগী পোষ্ট। মানুষ মনে করে শিক্ষক মানেই খালি টাকা ইনকামের ধান্ধা !!! সবাই (ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ) কষ্ট করে পড়ালেখা করে, টাকা ইনকাম করবেনা কেন !!! আর শিক্ষকরা এমনেই হয় সো তাদের টাকার দরকার নাই । কিন্তু একবার ও মনে করে না এই যে গরু ছাগল (পড়ালেখা শুরুর আগে সবাই ই গরু ছাগল থাকে) গুলিকে শিখাতে যে শিক্ষকদের কত কষ্ট করা লাগে
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:২১
রমিত বলেছেন: ভালো মন্তব্য করেছেন।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৪১
সুমন কর বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন। +++।