নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সময়ের বিপরীতে না, সময়ের সাথে...

মোহাম্মেদ মুহসীন

বানিয়ে বানিয়ে আমি গল্প লিখতে পারিনা, আমি গল্পকার নই!!!

মোহাম্মেদ মুহসীন › বিস্তারিত পোস্টঃ

পারুমতী

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩৪


পারুমতী,
আমি বলতে পারিনি,
আজো অনেক না বলা কথা।
আমি তো গাছ,
না আছে বোধ, না বুদ্ধি;
আমি জানি, নিজেকে শুদ্ধ রাখিনি -
তোমার পথ চেয়ে থাকিনি।
তাই বলে, তোমায় ভালবাসিনি?

সেই শৈশব থেকেই, তুমি আমার ভালো লাগা।
ঊষালগ্নে পানকৌড়ির ডুবোডুবি দেখতে খুব ভালো লাগতো,
তোমার হাসিও তেমনি।
গোধূলিতে সোনালী আলো, আর আকাশের রক্তবর্ণ;
অবাক হয়ে দেখতাম।
তেমনি তোমার গোলাপী গালের আভা।
ফাগুনের শেষ দিকে,
ঝিঁঝি পোকা ধরতে সন্ধ্যা পার করে দিতাম।
কতো মায়ের বকুনি খেয়েছি,
তবুও ভালো লাগতো।
তেমনি তোমার সাথে কথা বলা।
কোকিলের কুহু কুহু, বৌ কথা কও পাখির আর্তনাদ
শুনে বুঝতাম না এর অর্থ কি
কিন্তু, তোমার ডাক আমার কানে বাজতো সারা দিন।

ছোট্টবেলায় খুব কাছ থেকে হরিণ দেখা হয়নি,
তাহলে তখনি বুঝতে পেতাম তুমি মৃগনয়না।
রেশমের পরশ খুব কোমল লাগতো,
তেমনি তোমার ছোট ছোট ববকাট চুল।
তোমাকে সাথে নিয়ে ফড়িং ধরা, নদীতে গোসল করা;
ছোট্ট ঘর বানানো,
হাত ধরে রেললাইনের ওপর দিয়ে হাঁটা,
নৌকায় করে বেড়ানো,
আজ কেমন যেন স্বপ্নের মতো লাগে।

অনেক বৃষ্টির পর
আকাশে রামধনু আসতো খানিক কালের জন্য,
চোখ ফেরাতাম না সেদিক থেকে।
তেমনি, তুমিও আসতে বারো মাসে একবার।
আমি গাঁয়ের ছেলে,
তখনো পড়া হয়নি রবিঠাকুরের কাব্য, শরৎবাবুর শ্রীকান্ত,
সুনীলের প্রথম আলো।
জানা ছিল না ভালোবাসা কি।
ভালো লাগতো তোমার সাথে কথা বলতে,
তোমার চলন - বলন।
যখনি একটু একটু করে বুঝতে শিখেছি
তোমার প্রতি ভালোবাসা,
দূরে সরে গেছি নিজেকে অযোগ্য ভেবে।
ভেবেছি, ভালোবাসবো তোমাকে
আকাশের চাঁদের মতো করে।

এরপর, কত্তোবড় একটা ব্যবধান!
মাঝে কতোজন আসলো
আমার হৃদয়ের রক্তক্ষরণে সাহায্য করতে,
কেউ কেউ করেও গেল।
কতো বোকা আমি!
তবুও বুঝিনি
তুমি আমার কতোখানি জুড়ে ছিলে, ও আছো।

তোমাকে বাদ দিয়ে, নিজেকে ভাবতে গিয়ে
হোঁচট খেয়েছি বার বার।
অনেক দৌড়ে, ক্লান্ত হয়ে
নিজেকে সেই একই স্থানে পেয়েছি আবার।
অনেক ধাক্কা খেয়ে আজ আমি বুঝতে শিখেছি,
তোমাকে ছাড়া নিজেকে ভাবা কত্তো বোকামি!

ততোদিনে, তুমি অনেক উপরে উঠে গেছ।
আমি আজো সেই সাধারণ,
অতি সাধারণ এক যুবক।
সাধ্য নেই অতো উচ্চতায় গিয়ে
ছুঁয়ে দিতে তোমায়।
তোমার মনে দাগ কেটে দিতে
আমার অবুঝ ভালোবাসার,

আমি যে ভীরু,
তাই বলে কাপুরুষ নই।
ভয় হয়, হয়তোবা কভু
অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে যাবো,
ছুঁয়েও দেবো হয়তো তোমায়
তুমিতো নারী, লাজুক লতা,
যদি গুটিয়ে নাও নিজেকে!
পদস্থলন হতে বাঁচাতে
হাত বাড়িয়ে না দাও যদি!
যদি প্রশ্ন করো,
আরো আগে কেন আসোনি?
নেই কোন জবাব, জানা নেই কোন ভাষা;
নেই আমার কোন ওকালতি জ্ঞান।
কি করে করবো,
নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ তোমার আদালতে।
তাই সংস্কার করছি আপন হৃদয়ের।
সব আগাছা সমূলে উপড়ে ফেলে
সবুজ প্রান্তরে পরিণত করবো।
প্রশস্থ পথ করে দিতে তোমায়,
গড়তে তোমার বিচরণভূমি আমার প্রাণের মাঝে।

আজ আমি নির্বাক।
বসে আছি পথপানে চেয়ে তোমার,
হয়তো কোনদিন আসবে,
ফিরে চাইবে আমার পানে,
হাত বাড়িয়ে দেবে ধরতে তোমায়।
আমাকে পূর্ণাঙ্গ করতে,
আসবে সব বাঁধা পেরিয়ে॥

নোটঃ ২০১০ এর দিকে লেখা এই কবিতাটা, লিখেই আবৃত্তি করে মুল লেখাটা ছিঁড়ে ফেলে দিছিলাম, অনেক দিন পরে পুরনো মেমোরি কার্ডে রেকোডিংটা পেয়ে, সেখান থেকে লিখা। ছবিটা আমার পারুমতীর।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৯

নূর-ই-হাফসা বলেছেন: যে ভালোবাসা সার্থকতা পায়না সেটা ভালোবাসা না । মিথ্যে মরিচিকার পিছনে কেবলি ছুটা ।ভালো থাকুক আপনার পারুমতি ।
আর আপনিও ভালো থাকুন।

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৬

মোহাম্মেদ মুহসীন বলেছেন: ভালোবাসার সার্থকতার মাপকাঠি কি একটু জানাবেন ?

২| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৪

ওমেরা বলেছেন: কি ভাবে আসবে আপনি বল্লেই না এত ভীরু হলে কি হয় !

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৮:৫৪

মোহাম্মেদ মুহসীন বলেছেন: সেজন্যেই বাকি জীবন নিজেকে দোষ দিয়ে কাটাবো।

৩| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৪

নূর-ই-হাফসা বলেছেন: ভালোবাসা পূর্ণতার রূপ পায় তখনি যখন সে টা আজীবন টিকে থাকে । ছেড়ে থাকা কিংবা চলে যাওয়ার জন্য সময় নষ্ট না করাই উচিত ।

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৮:৫৫

মোহাম্মেদ মুহসীন বলেছেন: এটা ঠিক বলেছেন, সময় নষ্ট করছিনা, থেমেও নাই আমি, তবে মানুষতো তাই মনে পরে যায়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.