নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অচল কথন

কাজী সোহেল রানা

১৯৮৭

কাজী সোহেল রানা › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি অসহায় আত্মসমর্পণ

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:০৫

ঘটনা এক

কিছুদিন আগে দেশের স্বনামধন্য একটি আইটি ফার্মে সিনিয়র এক্সিকিউটিভ পদে যোগদানের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য তাদের অফিসে গিয়েছিলাম। সর্বমোট তিনটি পর্যায়ে বাছাই পর্ব হওয়ার কথা। নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই আমরা চাকুরি প্রার্থিরা হাজির হয়ে পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা করছি। অনেকেই অপেক্ষা করছি। এর মাঝে একটি ছেলে আমি সহ সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করল। ছেলেটির বিশেষত্ত্ব সে সাধারণ। সে বাদে বাকি যারা গিয়েছি তারা প্রত্যেকেই পরিপাটি পোশাকে। ব্যতিক্রম সেই ছেলেটা। প্রায় জীর্ণ এবং অপরিচ্ছন্ন একটি প‌্যান্ট, একেবারে বেমানান এবং নানা জায়গায় দাগওয়ালা একটি সাদা শার্ট এবং পোলিশ বিহীন একজোড়া ছেঁড়া জুতা। সবার মাঝে অনেকটা লাজুক ভঙ্গিতে জড়োসড়ো হয়ে বসে ছিল সে।

এরপর আমরা পরীক্ষা হলে ঢুকলাম এবং পর পর দুটি পরীক্ষা শেষে যখন ভাইভার জন্য ওয়েটিং রুমে সবাই অপেক্ষা করছিলাম, তখন মনের ভুলেই ছেলেটিকে খুঁজতে লাগলাম। কিন্তু তাকে কোথাও দেখতে পেলাম না। অবশেষে জানতে পারলাম ছেলেটির পোশাকের জন্য তাকে পরীক্ষা হলেই ঢুকতে দেয়া হয়নি। সুতরাং চাকুরির তো প্রশ্নই আসে না।

ছেলেটিকে পরীক্ষার জন্য যেহেতু ডাকা হয়েছে, এর অর্থ এটাই তার একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড ভালো। কারণ প্রাথমিক বাছাই করেই ডাকা হয়েছে। কিন্তু তার অযোগ্যতা একটাই, সে দরিদ্র পরিবারের সন্তান। পরীক্ষা হলে সুন্দর পোশাক পরে আসার সঙ্গতি ও তার নাই। সে বেকার। সে অসহায়। সে তার দারিদ্রতার জন্য কর্পোরেট হাউজে কাজ করার অযোগ্য। অথচ এ অযোগ্যতা কি তার, নাকি আমাদের সমাজ ব্যবস্থার।

আমরা জানি ছেলেটি অনেক আশা নিয়ে এসেছিল। এবং আশাহত ই শুধু নয়, সমাজ ব্যবস্থায় প্রহৃত হয়ে অনেক কষ্ট ও পেয়েছে। আর এ জন্যই হয়ত বাড়িতে ফেরার সময় সারা পথ তার দারিদ্রতাকে ঘৃণা করতে করতে গিয়েছে। তার সে ঘৃণায় সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তণ হবেনা জানি, কিন্তু অভিষপ্ত হবে নিশ্চয়।

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:২৮

নতুন বলেছেন: পরীক্ষা হলে সুন্দর পোশাক পরে আসার সঙ্গতি ও তার নাই। সে বেকার। সে অসহায়। সে তার দারিদ্রতার জন্য কর্পোরেট হাউজে কাজ করার অযোগ্য। অথচ এ অযোগ্যতা কি তার, নাকি আমাদের সমাজ ব্যবস্থার।

কপো`রেট হাউজে কাজ করার জন্য পোষাক তো সে ধার করেও নিয়ে আসতে পারতো?

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৩

কাজী সোহেল রানা বলেছেন: হয়ত সেটা সে লজ্জায় ধার করতে পারেনি। কিংবা সেটাও তার জন্য সম্ভব ছিলনা।

২| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: তার সে ঘৃণায় সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তণ হবেনা জানি, কিন্তু অভিষপ্ত হবে নিশ্চয়।
++

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৫

কাজী সোহেল রানা বলেছেন: অসহায়ের অভিষাপ দেয়া ছাড়া কিইবা আছে আর বলুন।

৩| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৮

জা-আলম বলেছেন: বড় হতাশাজনক !

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৯

কাজী সোহেল রানা বলেছেন: হ্যাঁ ভাই।

৪| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৫

নতুন বলেছেন: লেখক বলেছেন: হয়ত সেটা সে লজ্জায় ধার করতে পারেনি। কিংবা সেটাও তার জন্য সম্ভব ছিলনা।

চেস্টায় অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়। সেই চেস্টা তার ছিলো না।

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:০০

কাজী সোহেল রানা বলেছেন: সেটা আমাদের জানা নাই। হয়ত এর মাঝে অন্য কোন সত্য আছে।

৫| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:২৪

জনাব মাহাবুব বলেছেন: খুবই দুঃখজনক ঘটনা। ছেলেটির যে কোনভাবেই হোক একটি ভালো পোষাক জোগার করে আসা উচিত ছিল।

পরীক্ষার হলে যদি এইধরনের পোষাক হয়, তাহলে অফিসের পোষাকের বেলায় কি হবে, এটা ভেবেই হয়তো কর্তৃপক্ষ তাকে বাতিল করেছে।

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:৩৪

কাজী সোহেল রানা বলেছেন: আমি মনে করি তাকে একটু সুযোগ দেয়া উচিত ছিল।

৬| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:২৪

প্রামানিক বলেছেন: আমাদের সমাজের গরীবদের একটি বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ।

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:৩৫

কাজী সোহেল রানা বলেছেন: আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।

৭| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:৪১

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: দরিদ্র হলে কি চাকরী দেওয়া যাবে না তাকে? এটা কেমন যুক্তি?

তাকে চাকরীটা দিলেই তো সে তার অবস্থার পরিবর্তন করতে পারবে। যোগ্যতা থাকলে, সে তো দরিদ্র হলেও চাকরী পাওয়ার যোগ্য।
কী যে আজব রীতি আমাদের!!! বুঝিনা।

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৭

কাজী সোহেল রানা বলেছেন: আমার কথাওতো সেটাই ভাই।

৮| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:০৭

কথাকথিকেথিকথন বলেছেন: ভাল বলেছেন ।

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:৩৩

কাজী সোহেল রানা বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৯| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:৫৬

মানবী বলেছেন: দুঃখজনক, ভীষণ ভীষণ কষ্টের অভিজ্ঞতা।
বিভৎস বাস্তব!

যদি সম্ভব হয়, কোম্পানীর নাম আর ইন্টারভিউয়ের পদ, তারিখ ও সময় [email protected] ঠিকানায় মেইল করলে হয়তো পুরোপুরি আত্মসমর্পণ হবেনা।
এমনটা প্রতিদিন হচ্ছে তা যেমন সত্য, যেকজনকে সম্ভব আমরা যদি সহযোগিতা করতে পারি সেক্ষেত্রে হাত বাড়িয়ে দেয়া উচিৎ- তেমনও সঠিক।

পোস্টের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:০৯

কাজী সোহেল রানা বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ। আমি মেইল করে জানাবো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.