![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বজ্রপাতের শব্দ শুনে রাত ২ টা ৪৫ এর দিকে ঘুম ভাঙ্গলো, অতিরিক্ত মাত্রার বজ্রপাত। ছোট বেলা থেকেই বজ্রপাত কে ভয় পেতাম। তাই না ঘুমিয়ে উঠে বসলাম। খানিকক্ষণ এইভাবে বজ্রপাত হওয়ার পর থামল। ঘুমিয়ে পড়লাম। সকাল ৭ টায় ঘুম ভাঙ্গলো। ভাবলাম বাড়িতে একটু ফোন দিয়ে খোজ নেয়। ফোন দিতেই ছোট বোন ফোন টা ধরল জিজ্ঞেস করলাম কিরে গ্রামে কি ঝড় বৃষ্টি হচ্ছে? ও বলল, হ ভাই কালকে থেকেই প্রচন্ড ঝড় বৃষ্টি হচ্ছে। আমার আবার বরাবরি গ্রামের ফসলাধির খোজ খবর নেওয়ার অভ্যাস বলতে পারেন পেরেশানি থেকেই অভ্যাস হয়েছে। বিভিন্ন বিষয় পড়াশোনা করতে গিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব টা আমাকে মারাত্মক ভাবেই প্রভাবিত করেছে। এই কারন টা আমায় প্রচণ্ড ভোগায়। ছোট বোন টা বলল ভাই জানো, আমাদের টমেটো ক্ষেত টা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কয়েক দিনের ঝড়ে পচনধরা শুরু হয়ে গেছে। মন খারাপ করে ওকে জিজ্ঞেস করলাম হাওরের কি খবর প্রতিবছরের মত এবার ও কি সর্বনাশা পানি এসে দুখি গরীব মানুষের ফসল গুলা নিয়ে যাবে। ও তো তাৎক্ষণিক ভাবে বলল জানো ভাই অষ্টগ্রামের (কিশোরগঞ্জ হাওরঞ্চলে একটি বন) বন ( হাওর) নাকি ডুবে গেছে। শুনে মন টা খুব খারাপ হলো। অষ্টগ্রামের পাশেই তো আমাদের হাওর, তাহলে তো গত কয়েক বারের মতন এইবার ও সব তলিয়ে যাওরার সমুখ সম্ভবনা রয়েছে। একটা কথা বলি, আপনাদের অবশ্যই জানার কথা এই সমুখ বিপদের কারনের পিছনে কারা দায়ী। আমি এক কথায় বলল তথাকথিত উন্নত বিশ্বের রাক্ষসী মনোভাব পরোক্ষ ভাবে পুঁজিবাদ। ইনারা নিজেদের উদর কে ঠেসে ভরার জন্য পরিবেশ টা অতিরিক্ত কার্বন ইমিশনের দ্বারা জলবায়ু টা একেবারে নষ্য করে দিচ্ছে। আর তার ফলাফল ভুগ করতে হচ্ছে আমাদের মত অনুন্নত দেশ গুলা কে। একটা পরিসংখ্যানে দেখেছি সম্ভবত জার্মান ওয়াচ নামেত একটা সংঘটন এই হিসেব টা করেছে, বাংলাদেশ ই হবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ এই জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য। এর পরে আছে মিয়ানমার, হন্ডুরাস, ভিয়েতনাম। মালদ্বীপ এর কথা বলে লাভ নাই উনারা অলরেডি ডুবে গেছেনই।
তাছাড়া
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশে প্রতি সাত জনের একজন স্থানচ্যুত হবে বলে জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
তিনি জানান, বিগত ১০০ বছরে সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় উচ্চতা প্রায় ১৭ থেকে ২১ সেন্টিমিটার বেড়েছে। ২০৮১-২১০০ সময়ে সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় উচ্চতা ২৬-৯৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেতে পারে।
অ্যাসেসমেন্ট অফ সি লেভেল রাইজ অন বাংলাদেশ কোস্ট থ্রু ট্রেন্ড অ্যানালাইসিস অনুযায়ী বাংলাদেশের সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা প্রতিবছর ২১ মিলিমিটার বৃদ্ধি পাচ্ছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা আর এক মিটার বৃদ্ধি পেলে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ উপকূল এবং নিম্নাঞ্চলসহ প্রায় এক পঞ্চমাংশ এলাকা সমুদ্রে তলিয়ে যেতে পারে। এতে উপকূলীয় অঞ্চলের ১৯ জেলার ৭০ উপজেলার প্রায় চার কোটি লোক প্রত্যক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই জনগোষ্ঠীর বড় একটি অংশ বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
অধিকন্তু বাংলাদেশে একাধারে সমুদ্রস্তরের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা সমস্যা, হিমালয়ের বরফ গলার কারণে নদীর দিক পরিবর্তন, বন্যা ইত্যাদি সবগুলো দিক দিয়েই ক্ষতিগ্রস্থ হবে এবং হচ্ছে।
এই যদি হয় অবস্থা, আমাদের ভবিষ্যৎ কেমন হবে তা সহজেই অনুমেয়। আমি উন্নত বিশ্বের সাথে আমাদের দেশের সরকার কেই বলি, এত উন্নত হয়ে কি করবেন ভাই? যদি শান্তিতে দুইবেলা দুমুঠো ভাত ই খেতে না পারি? শান্তিতে একটু ঘুমোতে না পারি? আমার আপনার পেট তো একটায়। যতই বেশি খায় সর্বোচ্চ কত টুকু খেতে পারব আমরা?। উন্নয়নের নামে পৃথিবী ব্যাপী যে জোড় জাপ লাভ টা কি দিন শেষে। একটা কাপড়, দুবেলা ভাত আর আরমচে ঘুম এত টুকু হলে হয় না? দিন শেষে স্বস্তির নিশ্বাস ই কি কাম্য নয়?
©somewhere in net ltd.