নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাতায়ন

রাসেল রাজু

কবিতা মানে কি? কবি কাকে বলে? এই প্রশ্নগুলো মনে জাগার আগে থেকে আমার কাব্যচর্চার শুরু। আজ আমি স্বঘোষিত বিশিষ্ট একজন কবি। প্রতিনিয়ত কাব্যের জগতে আমার বসবাস। উঠতে, বসতে, শুতে, খেতে এমনকি বাথরুমে বসে বসে আমি কাব্যচর্চা করি। আসলে আমার মতো কাব্যপ্রেমি এজগতে কিংবা এই মহাবিশ্বে দ্বিতীয়টি নেই। এখন আমি কবিতা সম্পর্কে সব জানি। তাই আমার কাব্যচর্চা দেখে দেখে সবার কাব্যচর্চা শেখা উচিৎ। আমার মতো কাব্যপ্রেমিক এ যুগে বিরল। কবিতা মানে মনের ভাব। আর মনের ভাব মানে গভীর চিন্তায় ডুবে থাকা। আমি চিন্তায় এত মশগুল থাকি যে আমার পারিপার্শ্বিক অবস্থার কথা বেমালুম ভুলে যাই। একবারের ঘটনা; আমি সিলেটের জিন্দাবাজার পয়েন্ট থেকে হেঁটে হেঁটে চৌহাট্টা যাচ্ছি, এমন সময় আমার মাথায় একটি কবিতার চিন্তা এলো। এত্ত সুন্দর থিম রবিঠাকুরের মাথায়ও নিশ্চয় আসেনি। খুশিতে আমার বুক ফেটে যেতে চাইলো। ফিক করে হেসে উঠলাম আমি। আমার পাশে থাকা রিকশাচালক আমাকে উদ্দেশ্য করে বলল, “ফুরানা ফাগল হখলে যাগা ফাইরানা, নতুন ফাগল আইয়া আজির অইছে!“ আমি শুনেও যেন শুনলাম না। ঐ বেটা অশিক্ষিত মূর্খ পাড়াগেঁয়ো ভূত আমার মত কবিকে কীভাবে চিনবে? আমি আমার কবিতার লাইনগুলো মনে মনে দাঁড় করাতে লাগলাম। “রাস্তা দিয়ে হেঁটে হেঁটে মানুষগুলো যায় মানুষ দেখে আমার পেটে খিধা লেগে যায় আইসক্রিম নইলে সিঙ্গারা একটু খেতে মন চায়... কিন্তু একী হল! আমি এ কীসের সাথে ধাক্কা খেলাম। আমি বোধ হয় ট্রাকের নীচে চাপা পড়ে গেছি। সম্বিৎ ফিরে পেয়ে বুঝতে পারলাম এযাত্রা ট্রাকের তলে চাপা পড়া থেকে বেঁচে গেছি। কিন্তু যে বস্তুর নীচে চাপা পড়ে আছি সেটা একটা ছোটখাটো ট্রাকের চেয়ে কম ভারী নয়। একটু পরে দেখলাম ঐ ভারী বস্তুটি কচ্ছপের ন্যায় নড়ে উঠলো। ভয়ে আমার দম আটকে যাওয়ার অবস্থা; ঐ বস্তু নড়ে কেমনে! চোখে সর্ষে ফুল দেখতে শুরু করেছি এমন সময় এক বাজখাই গলা শুনলাম-“এই মিয়াঁ দেকিয়া ফত ছলতায় ফার নানি? ধাক্কা মারি আমার খমর খসখাই লাইস।“ যাই হোক হাত-পা ধরে ঐ যাত্রা বেঁচে ঘরে ফিরেছিলাম বিধায় আজকে এই কথাগুলো লিখতে পারছি। কিন্তু আজ যে ঘটনা ঘটছে এর সাথে অতীতের কোন ঘটনার মিল নেই। দুপুরের খাবার খেতে বসেছি এমন সময় বিদ্যুৎ চলে গেলো। এমনিতেই আমি মনোযোগের প্রয়োজনে দরোজা জানলা বন্ধ করে রাখি, কিন্তু আজ বিদ্যুৎ চলে যাওয়াতে আর ভ্যাঁপসা গরমে জানলাগুলো খুলতে বাধ্য হলাম আমি। কিন্তু জানলা খুলতেই বড়সড় একটি টিকটিকি তরকারীর গরম বাটিতে পড়ে ঝলসে গেল। ক্ষোভে আমি খাওয়া বন্ধ করে একটি নতুন কবিতা লিখার চিন্তায় বিভোর হয়ে গেলাম। এভাবে কতক্ষণ অতিবাহিত হয়েছে নিজেই বলতে পারবনা। হঠাৎ মনে পড়লো আমিতো ভাত খেতে বসেছি অথচ ভাত খাচ্ছিনা। দ্রুত বাটি থেকে তরকারি ঢেলে খাওয়া শুরু করলাম। কিন্তু একই ভাত মুখে পুরে কামড় বসাতেই এমন ঘ্যাচাং করে উঠলো কেন। বুঝতে না পেরে আবার কামড় বসালাম। এবারে পূর্বের চেয়ে চার-পাঁচগুণ জোরে ঘ্যাচাং করে শব্দ হল। আর কেমন একটা বিস্বাদ লাগলো মুখে। সেই সাথে উৎকট একটা গন্ধ, মুখের ভাত হাতে নিয়ে এসে যা দেখলাম তা দেখে আমার চক্ষু ছানাবড়া। ভাতের সাথে যে একটি টিকটিকির তিনটি খণ্ড মিশে আছে! অনেক চেষ্টা করেও বমি করতে পারলাম না। প্রচণ্ড রকমের খারাপ লাগতে শুরু করলো। কিন্তু একটু পরে বুঝতে পারলাম, বড় হতে হলেত কিছু দুঃখ-কষ্ট মেনে নিতেই হয়। আর এত সামান্য টিকটিকি চাবানো। গরবে সিনা ফুলে উঠলো আমার! আমি আত্মভুলা হতে পেরেছি! আর আত্মভুলারাই বড় বড় মানুষ হয়। আমি একজন বিখ্যাত মানুষ হয়ে উঠছি। দেখবেন আর মাত্র কয়েকদিন পরেই আমি একজন বিখ্যাত মানুষ হয়ে উঠবো। আমার প্রতিভা অনেক, আমি খুব সুন্দর করে কবিতা লিখি...

রাসেল রাজু › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনিয়মিত প্রেমযাত্রা

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৩৬

যে পথে দুজনের

কথা ছিল

হাতে হাত রেখে

চলবার;

সে পথে আজ

কেউ হাঁটি না

আর!

বদলেছে দিন

বেড়েছে যে ঋণ,

প্রেমের!

যে পথে চলতে

বাধা ছিল পলে পলে

মোদের;

সে পথে চলতে

আজ নেই মানা, তবু

হাঁটি না আর।

বদলায় দিন

বদলায় মন

বারংবার,

এক মন ভুলে

যায় পিছুটান, হয়ে যায়

দুর্বার।

পিছু ফিরবার দিন

হয়ে যায় শেষ,

ফিরেনা পেছনে সে

আর;

অন্য মনে স্মৃতির

ঢালি সাজানো

‘কে ছিল আমার?

কি ছিল আমার?’

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.