![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মরা নদী কিছু কিছু জায়গায় পানি আছে। ঐই যে একটা প্রবাদ আছেনা নদী মরলেও নদীর রেখ মরে না। একসময় এই নদীতে বড় বড় পাল তোলা নৌকা ভাসত। গঞ্জে গঞ্জে ছুটত নৌকাভর্তি জিনিষপত্র নিয়ে। মাঝি মাল্লারা ভাটিয়ালি গান গাই গাইতে দূরে মিরিয়ে যেত। নদীর কূলে গুনটানতে পিঠ বেঁকিয়ে সামনে ঝুকে চলত। গুন টানার সাথে সাথে দরাজ কন্টে গান গাইতেন আপন মনে। বাতাস লেগে তালি দেওয়া পালগুলি ফুলে উঠত, তর তর করে বয়ে চলত নৌকা। এপার ওপার লোকজনকে পারা পারা করত খেয়ার মাঝি। খেয়ার ঘাটে ছোট্ট ছনের ঘরে বাঁশের মাচার উপর ক্যাশবাক্স নিয়ে বসে থাকত ঘাটের ইজারাদার। যারা তোলা দিত না তারা নগদ টাকায় নদী পাড় হত। গ্রামের দু’পাড়ের বাসিন্দারা বাৎসারিক ফসল ধান,গম, সরিষা ইত্যাদি দিত ইজারাদারকে। বিনিময়ে সারা বৎসরসহ যখন তখন নদী পাড় হতে কোন পয়সা লাগতনা। খেয়া ঘাটকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠত বাজার। যানবাহন বলতে গরু মহিষের গাড়ী ও ভ্যানই একমাত্র ভরসা। সেই নদী এখন স্মৃতি হয়ে আছে গ্রামবাসীদের অন্তরে। তারা এখন নাতি নাতনিদের কাছে অলস সময়ে গল্পচ্চারণ করেন। নদীটা বর্ষা আসলে আবার ভরে উঠে। সারা বছর গ্রামের যোতদারা দখল করে চাষাবাদ করেন। খাস জমিগুলি গ্রামের গরীব অসহায় ভূমিহীনদের অগ্রাধিকার থাকলেও তারা বঞ্চিত হয়।
সবুজ গাছ ঘেরা দুই তিন হাজার বাসিন্দা নিয়ে চরলক্ষিয়া। ময়মনসিংহ জেলা সদরের কাছাকাছি এই গ্রাম। গ্রামে মলম শাহ (র নামে একজন পীরের মাজার আছে। পীরের মাজারকে কেন্দ্র করে প্রত্যেক বছর উরস হয়। তখন মেলা জমে উঠে দূর দূরান্ত থেকে দোকানীরা দোকান পাড়ে। জামাই-ঝিদেরকে দাওয়াত দেয় এই সময় গ্রামবাসীরা। উৎসবের আমেজে মেতে উঠে এই গ্রামসহ আশে পাশের গ্রাম। অনেক কাহিনী প্রচলিত আছে মলম শাহকে কেন্দ্র করে। বলা হয়ে থাকে বাঘের পিঠে সওয়ার হয়ে এসেছিলেন। ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যেই তার আগম ঘটে। তারপরে এইখানে আস্তানা গাড়েন এবং এই গ্রামেই ইন্তেকাল করেন। তারপরে ভক্তবৃন্দ মাজারটি ঘিরে দিয়েছে তাও কয়েক শতক আগের ঘটনা। দিনকে দিন অসহায় মানুষের ভক্তি ও ভালোবাসার আধার হয়ে উঠেছে মলম শাহ (র
এর মাজারটি। গ্রামবাসীর কোন বিপদ আপদ হলে তারা মানত করে সিন্নি বিলায়। উনার অছিলায় আল্লাহতালা তাদের মনেরবাসনাপূর্ণ করেন।
©somewhere in net ltd.