নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির সভাপতি\n\'সমকালীন যুক্তিবাদ\' ও \'নব্য সমাজতন্ত্র\'-র প্রতিষ্ঠাতা

যুক্তিবাদী প্রবীর ঘোষ

সভাপতি, ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি

যুক্তিবাদী প্রবীর ঘোষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোরআন কি আল্লাহর বাণী?

৩০ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:২৩

কোরআন কি আল্লাহর বাণী? অনেক ভক্ত মুসলিমরা বলেন, অলৌকিকতার সবচেয়ে বড় প্রমাণ 'কোরআন'। কারণ কোরআন আল্লাহর বাণী।
একটু খোলা মনে বিষয়টাকে নিয়ে আলোচনা করি। কোরআন-এ বলা হয়েছে, "আল্লাহ-ই আসমান ও জমিনের আদি স্রষ্টা। যখন তিনি কোনও কিছু করতে ইচ্ছা করেন তখন শুধু বলেন- 'হও', অমনি তা হয়ে যায়।" সূরা ও আয়াতের ক্রমিক সংখ্যা ২:১১৭, ৩:৪৭, ১৯:৩৫।

পৃথিবী সৃষ্টির বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার সঙ্গে কোরআন-এর দেওয়া ব্যাখ্যার কোনও মিল নেই। বরং বলতে পারি- কোরান-এর ব্যাখ্যা বিজ্ঞান বিরোধী।
আবার কোরআন-এর সূরা ও আয়াত ৫০:৩৮-এ বলা হয়েছে, "আমি আসমান ও জমিন এবং মধ্যবর্তী সবকিছু ছয় দিনে সৃষ্টি করেছি।" এখানে 'আমি' মানে আল্লাহ।
কোরআনে একবার আল্লাহর বক্তব্য হিসাবে বলা হচ্ছে, 'হও' বললেই সৃষ্টি হয়ে যায়। তবে আসমান, জমিন ও মধ্যবর্তী সবকিছু সৃষ্টি করতে ছয় দিন কেন লাগল? এ তো কোরআন-এর স্ববিরোধীতা, আল্লাহর স্ববিরোধীতা।

কোরআনের ৪১ নম্বর সূরার ৯ থেকে ১২ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, আল্লাহ দু-দিনে পৃথিবী সৃষ্টি করলেন। তারপর চারদিনে খাদ্যের ব্যবস্থা করলেন। তারপরের দু-দিনে আকাশকে গ্রহ-নক্ষত্রে সাজালেন।
কোরআন-এর এই বক্তব্য অনুসারে আগে পৃথিবীর সৃষ্টি হয়েছিল। তারপর নক্ষত্রর সৃষ্টি।

এমন বিজ্ঞানবিরোধী উদ্ভট তত্ত্ব কোনও সুস্থমস্তিষ্কের শিক্ষিতের পক্ষে মানা অসম্ভব।

কোরআন কি আল্লাহর বাণী? ---এ প্রসঙ্গে বলি, কোরআনের বাণীতে অনেক জায়গায় সূর্য, চন্দ্র, দিন, রাত্রি, নক্ষত্র, পর্বত ইত্যাদির নামে শপথ করে আল্লাহ নিজের বাণীকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে চেয়েছেন। সূরা ও আয়াতের ক্রমিক সংখ্যা ৩৭:১, ৪৩:২, ৫১:১, ৮৯:১, ৯২:১, ১০০:১।

যিনি সমস্ত বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টিকর্তা, প্রাণীকুলের স্রষ্টা ও নিয়ন্তা, তাঁকে কেন নিজের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রমাণের জন্য শপথ নিতে হবে? তাও শপথ নিতে হচ্ছে তারই সৃষ্ট-বস্তুর নামে? শপথ করা হয় শ্রেষ্ঠতর কিছুর নামে। এমন উল্টাপুরাণ প্রমাণ করে কোরআন কখনই আল্লাহর বাণী নয়। কোনও মানুষই নিজের সৃষ্ট ধর্ম প্রচারের জন্য এমনটা প্রচার করেছিলেন।


পৃথিবীতে ৫৫টি মুসলিম শাসিত রাষ্ট্র আছে। এদের কোনওটাই ধর্মনিরপেক্ষ নয়। গোটা চারেক রাষ্ট্র ছাড়া আর কোনও মুসলিম শাসিত রাষ্ট্রে অমুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়া হয় না।
কোরআন অনুসারে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মধ্যে প্রেম কখনওই সম্ভব নয়। কোরানের সূরা ও আয়াতের ক্রমিক সংখ্যা ২:১৯৩, ৯:৫, ২৯:৭৩ অনুসারে পৃথিবীর সব মানুষকে দু-ভাগে ভাগ করা হয়েছে 'মুসলমান' এবং 'অমুসলমান'। এবং আরও বলা হয়েছে, অমুসলমানরা যতদিন না ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে ততদিন তাদের বিরুদ্ধে নিরন্তর যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে। তাদের সম্পদ লুঠ করতে হবে, হত্যা করতে হবে।
আরও বলা হয়েছে, এই যুদ্ধে কোনও মুসলিম শহিদ হলে সে শহিদ হওয়ার পরই বেহেশ্‌ত অর্থাৎ স্বর্গে যাবে। কেয়ামতের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। সেখানে সর্বোত্তম খাবার, মদ ও অসাধারণ সুন্দরী কুমারী যুবতী ও সমকামিতার জন্য সুন্দর কিশোর থাকবে।
সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, লোভ দেখিয়ে অমুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে কোরআন।



লুঠের মালকে ভোগ করার অধিকার কোরআন দিয়েছে জিহাদি লুটেরাদের। (কোরান ৮:৬৯) কোরাআন-এর ২৩:৫, ৬-তে বলা হয়েছে বন্দি রমণীদের সঙ্গে অবাধে যখন ইচ্ছে সঙ্গম করা যাবে।
এমন একটা হিংসার গ্রন্থকে ধর্মগ্রন্থ বলা যায় কি? মানুষের পক্ষে কল্যাণকর বলা যায় কি?

কেউ মুক্তমনে কোরআন পড়লে নিজের যুক্তিতেই কোরআনের স্ববিরোধীতা, হিংসার রাজনীতি, বিজ্ঞান বিরোধিতা- সবই বুঝতে পারবে। তবে সত্যকে জানতে হলে বিজ্ঞানকেও অবশ্যই জানতে হবে। কারণ বিজ্ঞান ও যুক্তিই সত্যের কাছে পৌঁছে দিতে পারে।

হিন্দু ধর্মে যা 'আত্মা', তার আরবি প্রতিশব্দ 'রুহ'। হিন্দুধর্মে পরমাত্মা বা ব্রহ্মের সঙ্গে আত্মার মিলনের মধ্য দিয়ে মুক্তির কথা বলা হয়েছে। খ্রিস্ট ধর্মে গভীর বিশ্বাসীরা 'Salvation of soul'-এ বিশ্বাস করে। তারা মনে করে এভাবে মুক্তি লাভের পর God-এর সঙ্গে অনাবিল সুখের অবস্থায় থাকবে। ইসলাম ধর্মে আল্লাহর সঙ্গে রুহের মিলনের কোনও চিহ্ন কোরআনে নেই। এখানেই কোরানের সীমাবদ্ধতা।

কোরআন লিখে ১:২ বা ৯:৬ লিখলে বুঝতে হবে 'কোলন' ( : ) চিহ্নের আগের সংখ্যাটি হল সূরার সংখ্যা এবং কোলন ( : ) চিহ্নিত পরের সংখ্যাটি হল সূরার আয়াতের ক্রমিক সংখ্যা)।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৯:২৮

গায়েন রইসউদ্দিন বলেছেন: এখানে এসে অবাক হলাম এজন্য যে ২০১৫'র ৩০শে জুলাই রাত ন'টা তেইশ মিনিটে পোস্ট করা বিষয়টি যা' একজন বিখ্যাত মানবতাবাদী লেখকের প্রকাশ, দু' বছরের বেশি সময় ধ'রে কেউ একজনও মন্তব্য করল না! অথচ এই লেখাটি এখনও পর্যন্ত ১৪২ বার পঠিত হয়েছে। লেখক-উচ্চারিত প্রশ্ন'র উত্তর কে দেবে? আমি কোরানের উক্ত সুরাগুলির আয়াত সম্পর্কে অবহিত। আর এসব থেকে উপরিউক্ত প্রশ্নগুলি উঠে আসাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই প্রশ্নগুলির উত্তর কে দেবে? আলেম, মুফতি, মৌলানা-মৌলভীদের একটা বৃহত্তর সমাজ এই উপমহাদেশে আছেন। কিন্তু, এবিষয়ে তাঁরা নীরব কেন? তাঁরা কি যুক্তিসহ উত্তর দিতে অক্ষম নাকি বিজ্ঞান শিক্ষালাভ করেননি?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.