![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সোনারগাঁও—এক সময়ের প্রাচীন বাংলার রাজধানী, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও শিল্প-সংস্কৃতিতে ভরপুর এক জায়গা। ঢাকার কাছাকাছি হওয়ায় এটি একদিনের জন্য পারফেক্ট ডে ট্রিপ। চলুন দেখে নিই কিভাবে নিজে থেকেই ঘুরে আসা যায় এই চমৎকার জায়গাটি, আর কি কি দর্শনীয় স্থান আপনি দেখতে পারবেন।
কোথায় কোথায় ঘুরবেন?
১. সোনারগাঁও লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর
মোগরাপাড়া চৌরাস্তা থেকে রিকশা বা অটোতে ১০-১৫ মিনিটেই পৌঁছে যাবেন জাদুঘরে।
শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন প্রতিষ্ঠিত এই জাদুঘরে পাবেন বাংলার গ্রামীণ জীবন, লোকশিল্প, ঐতিহ্যবাহী কারুশিল্পের চমৎকার সংগ্রহ।
টিকিট মূল্য: প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৫০ টাকা, শিক্ষার্থীদের জন্য ১০ টাকা।
সময়: সকাল ১০টা – বিকাল ৫টা (বৃহস্পতিবার বন্ধ)
২. পানাম নগর (Panam City)
জাদুঘরের পাশেই অবস্থিত এই ঔপনিবেশিক আমলের শহরটি যেন এক জীবন্ত ইতিহাস।
১৮শ-১৯শ শতাব্দীর বাংলার ধনীদের তৈরি ইউরোপীয় ঘরবাড়িগুলো এখনো দাঁড়িয়ে আছে, কালের সাক্ষী হয়ে।
দর্শনীয়: একই রাস্তার উপর অবস্থিত ৫২ টি ধ্বংসপ্রায় দোতালা বাড়ি।
ছবি তোলার জন্য আদর্শ স্থান
সময়: সকাল ১০টা – বিকাল ৫টা (রবিবার বন্ধ)
৩. গোয়ালদি মসজিদ
১৫১৯ সালে নির্মিত এই সুলতানি আমলের মসজিদটি পানাম নগর থেকে ১৫-২০ মিনিট দূরে।
ছোট কিন্তু স্থাপত্যশৈলীতে অনন্য। ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলি পছন্দ করেন? তবে এটি মিস করবেন না।
৪. গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের সমাধি
বাংলার সুলতান গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের সমাধিস্থলটি একটু দূরে হলেও ইতিহাসপ্রেমীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
শান্ত পরিবেশ ও পুরনো স্থাপত্য দেখতে চাইলে আপনি এটি লিস্টে রাখতে পারেন।
৫. বাংলার তাজমহল
সোনারগাঁও থেকে কিছুটাই দূরে, তবে সময় থাকলে দেখতে পারেন। এটি এক ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৈরি তাজমহলের অনুকরণ।
ছবি তুলতে চাইলে জায়গাটি দারুণ।
প্রবেশ মূল্য: প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ১৫০ টাকা
কিভাবে যাবেন?
ঢাকা থেকে সোনারগাঁও যেতে হলে কয়েকটি সহজ উপায় আছে:
বাসে:
গুলিস্তান বা যাত্রাবাড়ী থেকে মেঘনা, আনন্দ, বসুন্ধরা বা লোকাল কোনো বাসে উঠতে পারেন যা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ধরে চলে। বাসের গন্তব্য হবে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা। এখান থেকেই সোনারগাঁও যাত্রা শুরু অটোরিকশায়।
প্রাইভেট গাড়ি/সিএনজি:
ঢাকা থেকে গাড়ি নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ধরে মাত্র ১.৫ ঘণ্টায় পৌঁছানো যায়।
রাইডশেয়ারিং অ্যাপ (উবার/পাঠাও):
একটু খরচ বেশি হলেও এই অপশন আরামদায়ক ও সময় সাশ্রয়ী।
কোথায় খাবেন?
সোনারগাঁওয়ের আশপাশে লোকাল খাবারের দোকান আছে, তবে বেশি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন খাবার চাইলে সঙ্গে হালকা খাবার নিয়ে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। আর ঢাকায় ফেরার পথে কাচপুর, রূপগঞ্জ বা যাত্রাবাড়ী অঞ্চলে অনেক ভালো মানের রেস্টুরেন্ট আছে।
টিপস
সকালে যত তাড়াতাড়ি বেরোবেন, তত বেশি জায়গা ঘোরা সম্ভব হবে।
পানীয় জল ও স্যানিটাইজার সঙ্গে রাখুন।
ক্যামেরা আনতে ভুলবেন না – সোনারগাঁওয়ের প্রতিটি কোণ ছবি তোলার মতো সুন্দর।
সোনারগাঁও শুধু ঘোরার জায়গা নয়, এটি আমাদের ইতিহাসের, ঐতিহ্যের, সংস্কৃতির এক জীবন্ত দলিল। একদিনে নিজের মত করে ঘুরে দেখে ফেরা যায় এই সোনারগাঁও। ব্যস্ত শহরের কোলাহল থেকে একটুখানি মুক্তি, আর পুরনো বাংলার সৌন্দর্যে হারিয়ে যাওয়ার জন্য সোনারগাঁও-ই যথেষ্ট।