নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কথা বলি..... বর্তমানের- কথা বলি ভবিষ্যতের.......

মাই নেম ইজ রেজাউল ইসলাম। এন্ড আই অ্যাম নট এ রাজাকার !!!

মোঃ রেজাউল ইসলাম

আমি নতুন সর্বদা----

মোঃ রেজাউল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুজিব বাহিনী:

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৮

মুক্তিযুদ্ধকালে বাংলাদেশ বাহিনীর ডেপুটি চিফ অব স্টাফ এয়ার ভাইস মার্শাল এ কে খন্দকার বীর উত্তম তার সদ্য প্রকাশিত ‘১৯৭১: ভেতরে বাইরে’ গ্রন্থে এ কথা লিখেছেন-



'মুজিব বাহিনীর প্রধান নেতারা শুরু থেকেই অস্থায়ী সরকারের মন্ত্রিসভা গঠনের বিরোধী ছিলেন এবং তাদের কার্যকলাপ যথেষ্ট বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছিল। মুজিব বাহিনী বলত, অস্থায়ী সরকার অবৈধ, বঙ্গবন্ধুর অনুমোদন না নিয়েই এটা গঠন করা হয়েছে এবং অবিলম্বে তা ভেঙে দেওয়া উচিত। এই মর্মে তারা রাজনৈতিক প্রচারণাও শুরু করে। এতে মুক্তিবাহিনীর যোদ্ধারা সন্তুষ্ট ছিল না। মুজিব বাহিনীর এসব কর্মকাণ্ড আমার কানেও আসত। যুদ্ধের সময় যেখানে আমরা দেশকে স্বাধীন করতে এসেছি, সেখানে আমাদের নিজেদের মধ্যে এই রকম সম্পর্ক মোটেই কাম্য ছিল না। জেনারেল উবান জানতেন যে মুজিব বাহিনীর মূল নেতারা অস্থায়ী সরকারকে স্বীকার করে না এবং তাদের সঙ্গে চোখে চোখ রেখে কথাও বলে না। মুজিব বাহিনীর নেতারা তাজউদ্দীন সাহেবকে কমিউনিস্টদের প্রতিনিধি মনে করতেন। তারা জেনারেল উবানকে বলতেন যে ডি পি ধরের ইন্ধনে তাজউদ্দীন সাহেব আওয়ামী লীগ ছাড়াও কমিউনিস্টদেরও মুক্তিবাহিনীতে গ্রহণ করেছেন। মেজর জেনারেল উবান নিজেও তার বইয়ে উল্লেখ করেছেন যে অস্থায়ী সরকারের নেতৃবৃন্দ, কর্নেল ওসমানী এবং মাঠপর্যায়ের সেনা কর্মকর্তারা মুজিব বাহিনীর গঠনকে মেনে নেয়নি।

বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার মানেই মূলত প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীনকেই বোঝাত, যিনি মুজিব বাহিনীর নেতাদের সাথে চোখে চোখ রেখে কথা বলতেন না এবং তাদের সকল অভিযোগ তুচ্ছভাবে দেখতেন।

আমার সঙ্গে প্রথম যে দুজন মুজিব বাহিনী সদস্যের সাক্ষাৎ হয়, তারা নিজেদের পরিচয় দেন খসরু ও মন্টু নামে। এদের কাউকে আমি চিনতাম না, তারা নিজেরাই নিজেদের মুজিব বাহিনীর সদস্য বলে পরিচয় দেন। তারা বলেন যে তাদের কাছে অস্ত্র আছে, তারা তা বাংলাদেশের ভেতরে নিয়ে যেতে চান। তারা জানতে চান যে ভারতীয় সীমান্ত বাহিনীকে বিষয়টি জানাবেন কি না। এক পর্যায়ে আমি তারা কোথা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন জানতে চাই। তারা দুজন বেশ অন্যরকম একটা হাসি দিয়ে আমাকে জানান যে তারা ভারতের ভেতর থেকে ট্রেনিং নিয়ে এসেছেন। আমি আবারও জিজ্ঞেস করি, কোন স্থানে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন? উত্তর প্রদানে অপারগতা প্রকাশ করে তারা বলেন যে সেটা জানাতে অসুবিধা আছে। আমি তাদের জিজ্ঞেস করি যে তারা আমাদের সেক্টরের অধীনে থাকবেন কি না। তারা হেসে এর কোনো জবাব দেননি। তাদের সঙ্গে কথা বলে আমার একটু খারাপ লাগল এই ভেবে যে আমি মুক্তিযুদ্ধের অভিযানগুলো সমন্বয়ের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি আর মুজিব বাহিনীকে কোথায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় আর কোথায় কীভাবে তারা অভিযান পরিচালনা করবে, সেটা আমার কাছেও গোপন রাখা হয়েছে। পরে বিষয়টি আমি কর্নেল ওসমানীকেও বলেছি।

এর কিছুদিন পর বিভিন্ন সেক্টর অধিনায়কের কাছ থেকে অভিযোগ আসতে শুরু করে যে তাদের সেক্টরে কিছু সশস্ত্র তরুণ নেতা এসেছে, যারা নিজেদের মুজিব বাহিনীর সদস্য হিসেবে পরিচয় দিচ্ছে এবং তারা সেক্টরের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত গেরিলাদের নিজেদের দলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তারা প্রচার করছে যে সেক্টর অধিনায়কেরা কেউ না, তারাই সব। সেক্টর এলাকায় মুজিব বাহিনী সদস্যদের বিতর্কিত কার্যক্রম নিয়ে তাদের সঙ্গে সেক্টর অধিনায়কদের সংঘাত বা বিরোধ সৃষ্টি হয়। এসব বিরোধ ও দ্বন্দ্ব মাঝেমধ্যে রক্তাক্ত সংঘর্ষের রূপ নেয়। মুজিব বাহিনী সম্পর্কে সেক্টর অধিনায়ক ছাড়াও সাব-সেক্টর অধিনায়ক, এমনকি সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকেও অভিযোগ আসতে শুরু করে। দুই বাহিনীর মধ্যে বিভেদের কারণে আমাদের সেক্টর অধিনায়ক ও অন্যদের মধ্যে যে ক্ষোভের জন্ম নেয় তা ছিল যুদ্ধের শেষ অবধি। তারা অভিযোগ করত যে মুজিব বাহিনীর অনেক সদস্যই তাদের (মুজিব বাহিনীর) হয়ে কাজ করার জন্য সেক্টরের গেরিলাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করত। মুজিব বাহিনীর সদস্যরা জোর করে সেক্টরের গেরিলাদের অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে, কোনো কোনো জায়গায় তারা সফলও হয়। মুজিব বাহিনীর বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ পাওয়া যায় যে আমাদের গেরিলাযোদ্ধাদের যে লক্ষ্যবস্তুতে পাঠানো হতো মুজিব বাহিনীর সদস্যরা সেই লক্ষ্য থেকে তাদের বিচ্যুত করে অন্য লক্ষ্যে নিয়ে যেত। মুক্তিযোদ্ধা ও মুজিব বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে এ ধরনের বৈরী সম্পর্ক সৃষ্টি হওয়ার ফলে উভয় বাহিনীর মধ্যে কোথাও কোথাও গোলাগুলিও হয়েছে। এ ধরনের মারামারি, দ্বন্দ্ব মুক্তিযুদ্ধে বিভাজনের সৃষ্টি করে। সেই সময় মুজিব বাহিনী প্রচার চালাচ্ছিল যে তারাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মনোনীত আসল মুক্তিযোদ্ধা। তাজউদ্দীন আহমদ চক্রান্ত করে ক্ষমতা দখল করেছেন। বঙ্গবন্ধুকে যাতে দেশদ্রোহের অভিযোগে পাকিস্তানিরা মৃত্যুদ- দেয়, সেই জন্যই তাজউদ্দীন সরকার গঠনের ব্যবস্থা করেছেন।

সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের এসব নালিশের বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম। এরকম প্রথম নালিশ আসে আগস্ট মাসের দিকে। এ সময় মুজিব বাহিনী নিয়ে নানা মহল থেকে আরও জোরেশোরে কথা উঠতে শুরু করে। সেক্টর অধিনায়কেরা এদের সম্পর্কে সরকারের কাছে প্রশ্ন করে। তারা অভিযোগ করে যে এমন অবস্থা চললে যুদ্ধ চালানো মুশকিল হয়ে পড়বে। কর্নেল ওসমানীর কাছে বিভিন্ন সেক্টর থেকে এমন অভিযোগ একের পর এক আসতে থাকে। জাতির একটি ক্রান্তিকালে তাদের এই ধরনের আচরণ দেখে আমার খুব খারাপ লেগেছিল। সব অভিযোগই যে লিখিত আকারে আসত তা নয়, মৌখিকভাবেও জানানো হতো। ওই সময় আমাদের সব রকমের দাপ্তরিক সুবিধা ছিল না। যুদ্ধক্ষেত্রে প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে তোলা এবং সেই কাঠামো সচল রাখার জন্য যে লোকবল ও অন্যান্য সহযোগিতার প্রয়োজন, সব ক্ষেত্রে তা পাওয়াও সম্ভব ছিল না। তাই এ ধরনের সব ঘটনা যে সেক্টর এলাকা, সীমান্ত, এমনকি দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন স্থানে ঘটেছিল, তার বিবরণ আমাদের কাছে পৌঁছাত না। এর অংশবিশেষ আমরা বিভিন্ন মাধ্যম নিয়ে পরে জানতে পারি। পাঠকের অবগতির জন্য বইয়ের শেষে পরিশিষ্ট ৩ ও ৪-এ এ ধরনের ঘটনা নিযে দুটি চিঠি যুক্ত করা হলো।

এই সব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কর্নেল ওসমানী এই বাহিনীর ওপর ক্রমশ অত্যন্ত ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তিনি বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীনের গোচরীভূত করেন এবং মন্ত্রিপরিষদে বিষয়টি উত্থাপন করেন। মন্ত্রিপরিষদ সভাতেও বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয় এবং সে আলোচনা ছিল বেশ উত্তপ্ত। মন্ত্রিসভার সব সদস্য এ বাহিনীর কর্মকা- ও দায়িত্ব নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেননি। আমি যতটুকু জানি, এ বিষয়ে মন্ত্রিসভার পক্ষ থেকে ভারতীয় সরকারকে অবহিত করার সিদ্ধান্ত হয়। এই বাহিনীর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়েও মন্ত্রিসভা ভারত সরকারের কাছে ব্যাখ্যা চায়। প্রশ্ন করা হয় যে বাংলাদেশ সরকারকে না জানিয়ে কেনই বা এমন একটা বাহিনী গড়ে তোলা হলো। মন্ত্রিসভায় যদিও আলোচনা হয়েছিল যে মুজিব বাহিনীর বাংলাদেশ সরকারের আওতায় এবং কেন্দ্রীয় ও একক নেতৃত্বের অধীনে থাকা উচিত, কিন্তু আমার মনে হয়নি মন্ত্রিসভার সব সদস্য এ বিষয়ে অন্তরে একমত পোষণ করেছেন। আমার মনে হয়েছিল যে তাদের মধ্যে কোথায় যেন একটা দ্বিধাদ্বন্দ্ব আছে। আমার এ কথাও মনে হয়েছিল যে মন্ত্রিসভার কেউ কেউ মুজিব বাহিনীর বিষয়ে আগে থেকেই জানতেন। এ সম্পর্কে কোনো প্রমাণ নেই, কিন্তু সে সময় তাদের কথাবার্তায় এমনই মনে হয়েছিল।

কর্নেল ওসমানী বলেছিলেন, মুজিব বাহিনীর এই সব কর্মকা- গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি বারবার প্রশ্ন করেছিলেন যে সমস্ত বাহিনী, অর্থাৎ নিয়মিত বাহিনীসহ গেরিলাসহ গেরিলা ও মুজিব বাহিনী কেন কেন্দ্রীয় সামরিক নেতৃত্বের আওতায় বা নিয়ন্ত্রণে থাকবে না? তিনি চেয়েছিলেন, সব বাহিনী বাংলাদেশ বাহিনীর একক নিয়ন্ত্রণে থাকবে। মন্ত্রিসভায় বিষয়টি আলোচনার পর বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল, যেখানে উল্লেখ ছিল যে সব গেরিলাবাহিনী ও অন্যান্য বাহিনী বাংলাদেশ বাহিনীর অধীন থাকবে। কিন্তু প্রকৃত অর্থে এর কোনো প্রভাব যুদ্ধক্ষেত্রে পড়েনি এবং সত্যিকারভাবে মুজিব বাহিনী কখনোই বাংলাদেশ বাহিনীর অধীনে আসেনি।

সেক্টর অধিনায়ক এবং অন্যান্য উৎস থেকে পাওয়া তথ্য দেখে মনে হয়েছে মুজিব বাহিনী চলমান মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে যতটা না আগ্রহী, তার চেয়ে অনেক বেশি আগ্রহী বা তৎপর দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাদের করণীয় বা ভূমিকা নিয়ে। স্বাধীনতা-উত্তর দেশে তাদের যে একটা সামরিক ও রাজনৈতিক ভূমিকা থাকবে, সে বিষয়টি আমার কাছে বেশ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সেই লক্ষ্য বা ভূমিকা সম্পর্কে তখন স্পষ্ট করে কিছু জানতে পারিনি। আমার ধারণা, মুজিব বাহিনীর রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সম্পর্কে বাহিনীর নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তিরাই শুধু জানতেন, নিচের দিকের সদস্যরা এই বাহিনীর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানত না।

মুজিব বাহিনী সম্পর্কে ভারত সরকারের মনোভাব অনেকটা ধোয়াটে ছিল। তাদের মনোভাব আমরা পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারিনি। মুজিব বাহিনীর বিভিন্ন কর্মকা- ও এদের কারণে সৃষ্টি অসুবিধা সম্পর্কে ভারত সরকারকে অবহিত করা হলেও তারা এমন কিছু করেনি যাতে এই বিশেষ বাহিনীর কর্মকা- হ্রাস পায় বা যাতে এ বাহিনী নিয়ন্ত্রণে আসে। যুদ্ধের ময়দানে মুজিব বাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর দ্বন্দ্বের সংবাদে তাজউদ্দীন সাহেব সতর্ক হন। মুজিব বাহিনী সম্পর্কে কথা বলার জন্য তিনি দিল্লিতে শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তাজউদ্দীন সাহেব তাকে বলেন যে মুক্তিযুদ্ধে একটি বাহিনী হবে। যদি দুটি বাহিনী থাকে এবং তাদের যদি দুটি উদ্দেশ্য থাকে, তাহলে যুদ্ধ বাধাগ্রস্ত হবে। তিনি ইন্দিরা গান্ধীকে মুজিব বাহিনীর কার্যকলাপ বন্ধ করার জন্য দৃঢ়ভাবে অনুরোধ করেন।

আমার ধারণা, মুজিব বাহিনী গঠন বিষয়ে শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী ভালোভাবেই অবহিত ছিলেন এবং নিশ্চিতভাবেই তার সম্মতিতেই বাহিনীটি গঠিত হয়েছে। তার মতামতের বাইরে এই বাহিনী গঠন অসম্ভব ছিল। মুজিব বাহিনীর প্রধান জেনারেল উবান তো ভারত সরকারের বাইরের কেউ ছিলেন না। আমি শুনেছি, শ্রীমতী গান্ধী তাজউদ্দীন সাহেবকে জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি দেখবেন। আমি যত দূর জানতে পেরেছি, আশ্বাস দেওয়া ছাড়া ভারত সরকার এ বিষয়ে তেমন কিছু আর করেনি। আমার মনে হয়েছে, তারাও চেয়েছে যে মুজিব বাহিনী সক্রিয় থাকুক এবং তাদের ওপর ন্যস্ত কাজ চালিয়ে যাক। আমার আরও মনে হয়েছে, সেই সময় ভারতে যে নকশাল আন্দোলন চলছিল তা ক্রমশ বেশ জোরদার হয়ে উঠছিল। ফলে গেরিলা ও মুক্তিযোদ্ধাদের একাংশ যদি বামপন্থী হয়ে যায় বা নকশাল আন্দোলনের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে পড়ে, তাহলে ভারত সরকার মুজিব বাহিনীকে নকশালপন্থীদের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করবে। তাছাড়া বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধও যদি বামপন্থীদের হাতে চলে যাওয়ার পর্যায়ে পৌঁছায়, তাহলে এই বাহিনীকে ব্যবহার করা হবে। যে কারণে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এমন কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি, যাতে মুজিব বাহিনীকে দিয়ে সৃষ্ট সমস্যার একটি সন্তোষজনক সমাধানে আসা যায়। আরও একটি কারণ মুজিব বাহিনী গঠনে ভারত সরকারকে উদ্বুদ্ধ করে থাকতে পারে, তা হচ্ছে তাজউদ্দীন আহমদের ওপর ভারতীয়দের একটি সার্বক্ষণিক চাপ বজায় রাখা। মুজিব বাহিনীর নেতৃত্ব পুরোপুরিভাবে তাজউদ্দীন-বিরোধী ছিল। তারা কখনোই তাজউদ্দীন সাহেবকে অস্থায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে পারেনি। তাই ভারতীয়রা মুজিব বাহিনীকে তাজউদ্দীন সাহেবের বিকল্প বা সমান্তরাল হিসেবে সৃষ্টি করে থাকতে পারে। আসলে মুজিব বাহিনী বাংলাদেশ সরকার বা বাংলাদেশ বাহিনীর আওতায় আসুক, এটা কৌশলগত কারণেই ভারত সরকার চায়নি।

মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) ও কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যরা মুক্তিবাহিনীতে যোগ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মী ও সমর্থক ছাড়া আর কাউকে যুদ্ধে নেওয়া হবে না। এই প্রতিবন্ধকতার জন্য ন্যাপ ও কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যরা প্রাথমিকভাবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পারেনি। আগস্ট মাসে ভারত ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে মৈত্রী চুক্তি সম্পাদনের পর ডি পি ধর আমার সঙ্গে কমিউনিস্ট পার্টি ও ন্যাপ-কর্মীদের সশস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। এর পর মুক্তিবাহিনীতে তাদের নেওয়া শুরু হয়। ছাত্র ইউনিয়ন, ন্যাপ ও কমিউনিস্ট পার্টির কিছু নেতা-কর্মী প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধে যোগ দেয়, কিন্তু তাদের কোনো একক কমান্ড ছিল না। এতে তাদের মধ্যে একটা হতাশার সৃষ্টি হয়। তখন আমি নিজে একটা পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করি যাতে মুজিব বাহিনী, ছাত্র ইউনিয়ন এবং অন্য গেরিলারা ঐক্যবদ্ধভাবে অপারেশন করতে পারে। এর জন্য আমি মুজিব বাহিনীর তোফায়েল আহমেদ এবং ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নুরুল ইসলামের সঙ্গে কয়েকটা বৈঠক করেছি। তোফায়েল আহমেদ মুখে মুখে সম্মতি জানালেও কার্যক্ষেত্রে তার এই উত্তরের প্রতিফলন খুব একটা দেখতাম না। তবে নুরুল ইসলামের উৎসাহ ছিল। আমি কয়েকটা বৈঠক করার পর উপলব্ধি করি যে এখানে জোর খাটিয়ে কিছু করবার উপায় নেই। শেষ পর্যন্ত আমার চেষ্টায় কোনো ফল হয়নি। অক্টোবরের দিকে ডি পি ধর মুজিব বাহিনী এবং অন্য সব গেরিলার মধ্যে সমন্বয়ের চেষ্টা করেন, কিন্তু তিনিও ব্যর্থ হন। জেনারেল বি এন সরকারও এ বিষয়ে চেষ্টা করেন, কিন্তু তার প্রচেষ্টা সফল হয়েছে বলে মনে হয় না। কারণ যুদ্ধের শেষ পর্যন্ত মুজিব বাহিনী পৃথকভাবেই তৎপর ছিল।

ভারত সরকারের জ্ঞাতসারে মুজিব বাহিনী গঠিত হয়েছিল। সাধারণ মুক্তিযোদ্ধারা ভারতে আসার আগেই তারা (মুজিব বাহিনী) ভারতে ঢোকে এবং প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করে। তা না হলে ভারতে এসে তাদের যে অবস্থায় দেখেছি, সেই অবস্থায় থাকা তাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না। এ থেকে বোঝা যায়, মুজিব বাহিনীর নেতৃত্ব বেশ আগেই ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ সম্পন্ন করেছিল এবং হানাদার বাহিনীর আক্রমণের সঙ্গে সঙ্গেই তারা সীমান্ত পেরিয়ে পূর্বনির্ধারিত ব্যক্তির কাছে বা স্থানে পৌঁছে যায়। ভারতও তাদের জন্য দ্রুত প্রশিক্ষণ ও আধুনিক অস্ত্রের বন্দোবস্ত করে। মুজিব বাহিনী মুক্তিযুদ্ধকালে যেসব কর্মকা- করেছিল তা মুক্তিযুদ্ধকে কোনো গরিমা এনে দেয়নি বরং কলুষিত করেছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই মুজিব বাহিনীর কিছু সদস্য লুটপাটে নেতৃত্ব দিয়েছিল। তারা বঙ্গবন্ধু সরকারকে সহযোগিতা করাতো দূরের কথা বরং তাদের কর্মকা- সরকারকে ধীরে ধীরে জনবিচ্ছিন্ন করে দেয়। মুজিব বাহিনী সৃষ্টির যে মূল লক্ষ্য ছিল, অর্থাৎ নতুন সরকারকে শক্তিশালী করা, তা মাঠে মারা যায়। তারা ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের দৈত্যের রূপ নেয়। কিছুদিন পর তো তারা সরাসরি অবস্থান নেয় সরকার তথা বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধেই।'

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০১

হরিণা-১৯৭১ বলেছেন: মুজিব বাহিনী বলতে কিছু ছিল না, ছিল বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স( বিএলএফ) এরা যুদ্ধ করেনি; দেশ স্বাধীন হওয়ার পর, ২৪ শে জানুয়ারী থেকে এরা দেশ ফিরেছে ভারত থেকে।

খন্দকার মুক্তিযোদ্ধা, উনি যা লিখেছেন সেটাই সঠিক।

উনার লেখায় শেখ সাহেবের অবদান কমেনি; শেখ সাহেব যা পেরেছিলেন তাই করেছেন; মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীন করেছেন। শেখ সাহেব স্বাধীনতাকে নিয়ে কোন মিথ্যাচার করেননি, উনার হয়ে মিথ্যাচার করছে কয়েক লাখ চোর-ডাকাত।

খন্দকার মুক্তিযোদ্ধা, উনি যা লিখেছেন সেটাই সঠিক।

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩১

মোঃ রেজাউল ইসলাম বলেছেন: মুক্তিবাহিনীর বেশ কয়েকটি ভাগ ছিলো। প্রথমত, একটি ভাগ ছিলো নিয়মিত সেনাসদস্যদের সংগঠিত করে তৈরি করা অংশ, যাদের "মুক্তিযোদ্ধা" বলা হয়ে থাকে। অপর একটি ভাগ ছিলো বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্সেস (Bangladesh Liberation Forces - BLF) (বাংলা:বাংলাদেশ স্বাধীনতা বাহিনী) নামে, যারা ছিলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আওয়ামী লীগের চার যুবনেতার দ্বারা সংগঠিত ছিলো। এর চলতি নাম ছিল মুজিব বাহিনী............

Source: Click This Link

২| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩১

াহো বলেছেন:



বই / ভিডিও প্রয়োজন নেই .বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক কে, প্রথম রাষ্ট্রপতি কে এসবই বলা আছে .
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র
মুজিবনগর, বাংলাদেশ ১০ এপ্রিল ১৯৭১
(কার্যকর ১৯৭১ সনের ২৬শে মার্চ থেকে ১৯৭২ ডিসেম্বর ১৬ তারিখে যখন দেশের নতুন সংবিধান)

১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুজিব নগর থেকে স্বাধীনতার ঘোষনাপত্র জারি করা হয় এবং এর মাধ্যমে গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠন করা হয়। শপথ গ্রহণ করেন ১৭ এপ্রিল।
স্বাধীনতার ঘোষনাপত্র ১৯৭১ সনের ২৬শে মার্চ থেকে কার্যকর । যতদিন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলেছে ততদিন মুজিবনগর সরকার পরিচালনার অন্তর্বর্তীকালীন সংবিধান হিসেবে এই ঘোষণাপত্র কার্যকর ছিল। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পরও এই ঘোষণাপত্র সংবিধান হিসেবে কার্যকর ছিল। ১৯৭২ সালের ডিসেম্বর ১৬ তারিখে যখন দেশের নতুন সংবিধান প্রণীত হয় তখন সংবিধান হিসেবে এর কার্যকারিতার সমাপ্তি ঘটে।

সেদিন মুজিবনগরে শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপ-রাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দীন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী করে গঠিত হয় বাংলাদেশের প্রথম সরকার। তবে পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামকে করা হয় অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি।

এপ্রিল ১৭ তারিখে গণপরিষদের সদস্য এম ইউসুফ আলী আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন.


========================

২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষনার বিষয়ে ১৯৭১ সালের অনেক আন্তর্জাতিক নিউজ-মিডিয়া, আমেরিকান বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের নানা রিপোর্ট রয়েছে। যা রিপোর্ট করা হয়েছিল সেটা অবিকৃতভাবে দেয়া হলো
এখানে ।

লিস্টের কয়েকটি নাম উল্লেখ করা হল রিপোর্টিং ডেইটসহ:

১. আমেরিকান ডিফেন্স ইনটেলিজেন্স এজেন্সী (২৬শে মার্চ, ১৯৭১)

২. আমেরিকান ডিপার্টমেন্ট অব স্টেইট টেলিগ্রাম (৩১শে মার্চ, ১৯৭১)

৩. আমেরিকান সিনেট রিপোর্ট (জুলাই ২৭, ১৯৭১)

৪. নিউ ইয়র্ক টাইমস ,The Times UK(২৭শে মার্চ, ১৯৭১)

৫. ওয়াল স্ট্রীট জার্নাল (২৯শে মার্চ, ১৯৭১)

৬. টাইম, নিউজউইক (৫ই এপ্রিল, ১৯৭১)

৭. বাল্টিমোর সান (৪ই এপ্রিল, ১৯৭১)

৮. আমেরিকান ডিপার্টমেন্ট অব স্টেইট- রিসার্চ স্টাডি (ফেব্রুয়ারী ২,১৯৭২)
9-Times of India 27 March 1971


===========================

শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ ঢাকায় যথাযথভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন,


যেহেতু উল্লিখিত বিশ্বাসঘাতকতামূলক কাজের জন্য উদ্ভূত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমান জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার অর্জনের আইনানুগ অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ ঢাকায় যথাযথভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন, এবং বাংলাদেশের অখণ্ডতা ও মর্যাদা রক্ষার জন্য বাংলাদেশের জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান; এবং
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র
মুজিবনগর, বাংলাদেশ
তারিখ: ১০ এপ্রিল ১৯৭১




=======================



তাজউদ্দীনের ভাষণ ও তার মেয়ের লেখায় গড়মিল

২৫শে মার্চ মাঝরাতে ইয়াহিয়া খান তার রক্তলোলুপ সাঁজোয়া বাহিনীকে বাংলাদেশের নিরস্থ মানুষের ওপর লেলিয়ে দিয়ে যে নরহত্যাযজ্ঞের শুরু করেন তা প্রতিরোধ করবার আহ্বান জানিয়ে আমাদের প্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।
প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীনের যুদ্ধকালীন প্রথম ভাষণ
জিয়া সহ পাঁচ সেনা কর্মকর্তার নাম উল্লেখ তাদের যুদ্ধের জন্য
তাজউদ্দীনের ভাষণ link---http://www.samakal.net/2013/07/23/7512
Click This Link
তাজউদ্দীনের ভাষণ ও তার মেয়ের লেখায় গড়মিল




=========================
স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র
(কার্যকর ১৯৭১ সনের ২৬শে মার্চ থেকে ১৯৭২ ডিসেম্বর ১৬ তারিখে যখন দেশের নতুন সংবিধান)


(১০ এপ্রিল, ১৯৭১)

যেহেতু ১৯৭০ সালের ০৭ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালের ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত একটি শাসনতন্ত্র রচনার অভিপ্রায়ে প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশে অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল

এবং

যেহেতু এই নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ তাদের ১৬৯ জন প্রতিনিধির মধ্যে ১৬৭ জনই আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত করেছিলেন

এবং

যেহেতু জেনারেল ইয়াহিয়া খান একটি শাসনতন্ত্র রচনার জন্য ১৯৭১ সালের ০৩ মার্চ জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অধিবেশন আহ্বান করেন

এবং

যেহেতু আহূত এ পরিষদ স্বেচ্ছাচার ও বেআইনিভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করা হয়

এবং

যেহেতু পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী তাদের প্রতিশ্রুতি পালনের পরিবর্তে বাংলাদেশের গণপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলাকালে একটি অন্যায় ও বিশ্বাসঘাতকতামূলক যুদ্ধ ঘোষণা করে

এবং

যেহেতু উল্লেখিত বিশ্বাসঘাতকতামূলক কাজের জন্যে উদ্ভূত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার অর্জনের আইনানুগ অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ ঢাকায় যথাযথভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং বাংলাদেশের অখণ্ডতা ও মর্যাদা রক্ষার জন্যে বাংলাদেশের জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান

এবং

যেহেতু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী একটি বর্বর ও নৃশংস যুদ্ধ পরিচালনাকালে বাংলাদেশের অসামরিক ও নিরস্ত্র জনসাধারণের বিরুদ্ধে অগুনতি গণহত্যা ও নজিরবিহীন নির্যাতন চালিয়েছে এবং এখনো চালাচ্ছে

এবং

যেহেতু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী অন্যায় যুদ্ধ, গণহত্যা ও নানাবিধ নৃশংস অত্যাচার চালিয়ে বাংলাদেশের জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের একত্র হয়ে একটি শাসনতন্ত্র প্রণয়ন করতে ও নিজেদের সরকার গঠন করতে সুযোগ করে দিয়েছে

এবং

যেহেতু বাংলাদেশের জনগণ তাদের বীরত্ব, সাহসিকতা ও বিপ্লবী কার্যক্রমের দ্বারা বাংলাদেশের ভূ-খণ্ডের উপর তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে

সেহেতু

সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী বাংলাদেশের জনগণ নির্বাচিত প্রতিনিধিদের পক্ষে যে রায় দিয়েছে, সে মোতাবেক আমরা, নির্বাচিত প্রতিনিধিরা আমাদের সমবায়ে গণপরিষদ গঠন করে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের জন্যে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা আমাদের পবিত্র কর্তব্য বিবেচনা করে আমরা বাংলাদেশকে সার্বভৌম গণপ্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করছি এবং এতদ্বারা পূর্বাহ্নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণা অনুমোদন করছি

এবং

এতদ্বারা আমরা আরও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করছি যে, শাসনতন্ত্র প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপ্রধান ও সৈয়দ নজরুল ইসলাম উপ-রাষ্ট্রপ্রধান পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন

এবং

রাষ্ট্রপ্রধান প্রজাতন্ত্রের সশস্ত্র বাহিনীসমূহের সর্বাধিনায়ক হবেন,

রাষ্ট্রপ্রধানই ক্ষমা প্রদর্শনসহ সর্বপ্রকার প্রশাসনিক ও আইন প্রণয়নের ক্ষমতার অধিকারী হবেন,

তিনি একজন প্রধানমন্ত্রী ও প্রয়োজনবোধে মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্য নিয়োগ করতে পারবেন,

রাষ্ট্রপ্রধানের কর ধার্য ও অর্থব্যয়ের এবং গণপরিষদের অধিবেশন আহ্বান ও মুলতবির ক্ষমতা থাকবে এবং বাংলাদেশের জনগণের জন্যে আইনানুগ ও নিয়মতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য অন্যান্য সকল ক্ষমতারও তিনি অধিকারী হবেন।

বাংলাদেশের জনগণের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে আমরা আরও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করছি, যে কোনো কারণে যদি রাষ্ট্রপ্রধান না থাকেন অথবা কাজে যোগদান করতে না পারেন অথবা তাঁর দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে যদি অক্ষম হন, তবে রাষ্ট্রপ্রধানকে প্রদত্ত সকল ক্ষমতা ও দায়িত্ব উপ-রাষ্ট্রপ্রধান পালন করবেন।

আমরা আরও ঘোষণা করছি যে, বিশ্বের একটি জাতি হিসেবে এবং জাতিসংঘের সনদ মোতাবেক আমাদের উপর যে দায়িত্ব ও কর্তব্য আরোপিত হয়েছে তা আমরা যথাযথভাবে পালন করব।

আমরা আরও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছি যে, আমাদের স্বাধীনতার এ ঘোষণা ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে কার্যকরী বলে গণ্য হবে।

আমরা আরও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করছি যে, আমাদের এই সিদ্ধান্ত কার্যকরী করার জন্যে আমরা অধ্যাপক ইউসুফ আলীকে ক্ষমতা দিলাম এবং রাষ্ট্রপ্রধান ও উপ-রাষ্ট্রপ্রধানের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করলাম।

==================================


নিউ ইয়র্ক টাইমস
(২৭শে মার্চ, ১৯৭১)
Click this link for online archive of
নিউ ইয়র্ক টাইমস

Click This Link



LEADER OF REBELS IN EAST PAKISTAN REPORTED SEIZED; Sheik Mijib Arrested After a Broadcast Proclaiming Region's Independence DACCA CURFEW EASED Troops Said to Be Gaining in Fighting in Cities -Heavy Losses Seen

The Pakistan radio announced today that Sheik Mujibur Rahman, the nationalist leader of East Pakistan, had been arrested only hours after he had proclaimed his region independent and after open rebellion was reported in several cities in the East.
New York Times - Mar 27, 197


---------------------====================================================================================================================

1971/1972 সংবাদপত্রে
বিএনপি নেতার নাম খুঁজে পাচ্ছি না.
নিউ ইয়র্ক টাইমস
নিউজউইক
টাইম ম্যাগাজিন ইউএসএ
টাইমস সংবাদপত্র ইউকে

===================

বিশ্ব বিখ্যাত টাইম ম্যাগাজিন ইউএসএ

1) পাকিস্তান এখন শেষ --শেখ মুজিব---15 মার্চ 1971

2)শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন --Apr. 05, 1971
--The World: Pakistan: Toppling Over the Brink

3)গত মার্চে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর পর বিশ্বব্যাংকের পরিদর্শকদের একটি বিশেষ টিম কিছু শহর প্রদক্ষিণ করে বলেছিলেন, ওগুলোকে দেখতে ভুতুড়ে নগরী মনে হয়। এরপর থেকে যুদ্ধ শেষ হওয়া পর্যন্ত এহেন ধ্বংসলীলার ক্ষান্তি নেই। ৬০ লাখ ঘরবাড়ি মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং ২৪ লাখ কৃষক পরিবারের কাছে জমি চাষের মতো গরু বা উপকরণও নেই। পরিবহনব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, পুল-কালভার্টের চিহ্নও নেই এবং অভ্যন্তরীণ নৌ-যোগাযোগেও অনেক বাধাবিঘ্ন। ---শেখ মুজিবুর রহমান : বন্দি থেকে বাদশা / টাইম সাময়িকী ১৭ জানুয়ারি ১৯৭২

4)Bangladesh have suffered three consecutive years of natural or man-made disasters—a calamitous cyclone in 1970, the civil war in 1971, and a crop-crippling drought this year. Jan. 01, 1973

5)শেখ মুজিবের সময়কালে ৬০০০ হাজারের ও বেশী মানুষ সহিংসতা নিহত (মুজিব।। স্থপতির মৃত্যু Time Magazine USA আগষ্ট ২৫,১৯৭৫).

6)বাংলাদেশ. "বাস্কেট কেস", নয়, Jan. 01, 1973






লন্ডনের টাইমস পত্রিকায় ২৭শে মার্চ, ১৯৭১
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষনার খবর




নিউ ইয়র্ক টাইমস
(২৭শে মার্চ, ১৯৭১)
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষনার খবর





-Times of India 27 March 1971
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষনার খবর






এটা 75 এর 07 November পত্রিকা.Where it said Zia announce 27 March 1971


এটা 75 এর 07 November পত্রিকা.Where it said Zia announce 27 March 1971






একে খন্দকার স্বীকার করছেন তিনি সঠিক তথ্য ব্যবহার করেননি।

দ্বিতীয় সংস্করণে নিজেই স্বীকার করছেন যে, প্রথম সংস্করণে তিনি সঠিক তথ্য ব্যবহার করেননি।
৩২ পৃষ্ঠার দ্বিতীয় স্তবকে আমি লিখেছিলাম– এই ভাষণের শেষ শব্দ ছিল ‘জয় পাকিস্তান’। আসলে তা হবে ‘এই ভাষণের শেষ শব্দ ছিল ‘জয় বাংলা, জয় পাকিস্তান’।’’

যিনি জাতিকে ইতিহাসের বয়ান দেবেন তিনি ইতিহাসের ওই সময়টাতে ‘এমএলএ’ ছিল, নাকি এমপিএ ছিল সেটা জানবেন না, তা কী করে হয়? যদি না-ই জানেন, তাহলে তো স্পষ্টত বোঝা যায় তিনি রাজনীতির খবরাদি রাখতেন না, সেই সময়ের সরকারের অনুগত হিসেবে বিমানবাহিনীর চাকরিটিই ঠিকমতো করে গেছেন। তো, যিনি ইতিহাসের মাহেন্দ্রক্ষণের রাজনীতির গতিধারা সম্পর্কে খোঁজখবর রাখতেন না, তিনি জাতিকে ইতিহাসের বয়ান দিতে আসেন কীভাবে? Click This Link




আব্দুল করিম খন্দকার
২৫ মার্চ ১৯৭১, রাতে পাকিস্তানি বাহিনীর পক্ষে তাদের ঢাকা বেইসের সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলেন।
১২ মে ১৯৭১ সালে তিনি পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যু্দ্ধে যোগ দেন। মুজিবনগর সরকার গঠিত হয় ১০ এপ্রিল ১৯৭১।

মুজিবনগর সরকার যে সরকারের প্রধান ছিলেন শেখ মুজিব, তাদের কাছ থেকেই মাসে মাসে মাইনে নিয়েছে জনাব আব্দুল করিম খন্দকার। কেন, কী কারণে আব্দুল করিমের ৪৭ দিন সময় লেগেছিলো পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করতে সে কারণটি অজানাই রয়ে গিয়েছে। পাকিস্তানের পক্ষে ছোট একটি পদে থেকে মার্চ-এপ্রিল, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে কী ঘটেছে তা অনুমান করা নিঃসন্দেহে দূরহ কাজ এবং সেখানে সেই পাকিস্তানি দৃষ্টিভঙ্গি ধারণ করে অবশ্যই বঙ্গবন্ধুকে মূল্যায়ন করা অসম্ভব।

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৭

মোঃ রেজাউল ইসলাম বলেছেন: It is a very informative reply......... thanks.

By the way, here the topic is মুজিব বাহিনী and controversy regarding them...........

If u have rich and reliable sources on the activities of মুজিব বাহিনী, don't hesitate to share them......

NB- writing English for I am @ my office room !!!

৩| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: সেই সময় মুজিব বাহিনী প্রচার চালাচ্ছিল যে তারাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মনোনীত আসল মুক্তিযোদ্ধা। তাজউদ্দীন আহমদ চক্রান্ত করে ক্ষমতা দখল করেছেন। বঙ্গবন্ধুকে যাতে দেশদ্রোহের অভিযোগে পাকিস্তানিরা মৃত্যুদ- দেয়, সেই জন্যই তাজউদ্দীন সরকার গঠনের ব্যবস্থা করেছেন।

তার মানে তাদের চেতনার খেলঅ আজকে থেকে না!!

সেই শুরু থেকেই সন্দেহ অবিশ্বাস আর সব কিছু শুধূই নিজের করে দেখার প্রবণতা সেই নার্সারী থেকে শুরু!!!!!

সত্য বললে আতে ঘা- শাস্ত্রের কথাটা অক্ষরে অক্ষরে মিলে যাচ্ছে ;)

৪| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:১২

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
মুজিব বাহিনীর অপারেসন ছিল মুলত ঢাকা ভিত্তিক। বেশিরভাগ ছাত্রলীগের তরুন সদস্য।

১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের পর এরা কোন সমস্যা করে নি, কারন এদের প্রায় সবাইকে নবগঠিত রক্ষীবাহিনীতে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল অফিসার পদে, কাদের বাহিনী থেকেও প্রায় সবাইকে রক্ষীবাহিনী সৈনিক হিসেবে নেয়া হয়েছিল।

৭৫এর পট পরিবর্তনের পর রক্ষীবাহিনীকে বিলুপ্ত করা হয়। এবং রক্ষীবাহিনীর সকল সদস্যকে একধাপ প্রমশন দিয়ে সেনাবাহিনীতে যুক্ত করা হয়। রক্ষীবাহিনী থেকে সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত শতাধিক অফিসার কর্নেল, জেনারেল পর্যন্ত চাকরি করে মেয়াদ শেষকরে অবসরে যায়। দুজন সেনা প্রধান পর্যন্ত হয়েছিলেন।

বিস্তারিত জানতে -
Click This Link

৫| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৩০

াহো বলেছেন:

যেভাবে ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণটি বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় এসেছে



Click This Link


৬| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৩৬

াহো বলেছেন:

মুজিব বাহিনী

নিয়মিত বাহিনীর পাশাপাশি গণবাহিনীর যোদ্ধারা যখন কাধে কাধ মিলিয়ে লড়ছে, তখন আচমকা এমন একটা বাহিনী কি কারণে কিভাবে জন্ম নিলো তা ছিল রহস্য। এরা মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারের নেতৃত্বাধীন ছিল না। এমএজি ওসমানী কিংবা পূর্বাঞ্চলে ভারতীয় বাহিনীর অধিনায়ক জেনারেল অরোরাও এদের নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা পাননি। মূলত মার্চের আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া ছাত্রলীগের তিন জঙ্গী ছাত্রনেতা আবদুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদ, সিরাজুল আলম খান এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে যুবলীগ নেতা শেখ ফজলুল হক মণি ছিলেন এই বাহিনীর নেতৃত্বে। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র’য়ের বিশেষ তত্বাবধানে ও বিখ্যাত সামরিক কর্মকর্তা মেজর জেনারেল সুজন সিং উবানের ট্রেনিংয়ে ১০ হাজার সদস্যের এই এলিট বাহিনী . মুজিব বাহিনী সম্পর্কে জানতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে হাসানুল হক ইনুর মতো অনেক সিলমারা বামপন্থী ছিলেন মুজিব বাহিনীর রাজনৈতিক ইনস্ট্রাকটর ও মোটিভেটর।



Click This Link

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.