![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পরিবার পরিজন নিয়ে ঢাকা থেকে দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যায় এমন দুটি চমৎকার স্থান বালিয়াটি জমিদারবাড়ি এবং পাকুটিয়া জমিদারবাড়ি। যারা ইতিহাস ঐতিহ্য ভালোবাসেন বা পুরোন আমলের স্থাপনা পছন্দ করেন তাদের বিশেষ ভালো লাগবে। চলুন এই দুটি স্থাপনার কিছু ইতিহাস জেনে নেই সঙ্গে কিছু ছবি ও দেখবো।
বালিয়াটি জমিদারবাড়ি
বালিয়াটি প্রাসাদ বাংলাদেশের ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত মানিকগঞ্জ জেলার সদর থেকে আনুমানিক আট কিলোমিটার পশ্চিমে এবং ঢাকা জেলাসদর থেকে পয়ত্রিশ কিলোমিটার দূরে সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি গ্রামে অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের ১৯ শতকে নির্মিত অন্যতম প্রাসাদ। একে বালিয়াটি জমিদার বাড়ি বা বালিয়তি জমিদার বাড়ি বলেও ডাকা হয়।
মোট সাতটি স্থাপনা নিয়ে এই জমিদার বাড়িটি অবস্থিত। এই বালিয়াটি জমিদার বাড়ি বা প্রাসাদটির সবগুলো ভবন একসাথে স্থাপিত হয় নি। এই প্রাসাদের অন্তর্গত বিভিন্ন ভবন জমিদার পরিবারের বিভিন্ন উত্তরাধিকার কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে স্থাপিত হয়েছিল। বর্তমানে কেন্দ্রীয় ব্লকটি যাদুঘর। এই প্রাসাদটি বাংলাদেশ প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ কর্তৃক সংরক্ষিত ও পরিচালিত।
“গোবিন্দ রাম সাহা” বালিয়াটি জমিদার পরিবারের গোড়াপত্তন করেন। ১৮ শতকের মাঝামাঝি সময়ে তিনি লবণের বণিক ছিলেন। জমিদার পরিবারের বিভিন্ন উত্তরাধিকারের মধ্যে “কিশোরিলাল রায় চৌধুরী, রায়বাহাদুর হরেন্দ্র কুমার রায় চৌধুরী তৎকালীন শিক্ষাখাতে উন্নয়নের জন্য বিখ্যাত ছিলেন। ঢাকার জগন্নাথ কলেজের (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন কিশোরিলাল রায় চৌধুরীর পিতা এবং যার নামানুসারে উক্ত প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয়।
বালিয়াটি জমিদার বাড়ি নামে পরিচিত, এই প্রাসাদ চত্বরটি প্রায় ১৬,৫৫৪ বর্গমিটার জমির উপর ছড়িয়ে থাকা ৭টি দক্ষিণমুখী দালানের সমাবেশ। এই দালানগুলো খ্রিষ্টীয় মধ্য ঊনবিংশ শতক থেকে বিংশ শতকের প্রথমভাগের বিভিন্ন সময়ে জমিদার পরিবারের কয়েকজন সদস্যের দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। সামনের চারটি প্রসাদ ব্যবহৃত হত ব্যবসায়িক কাজে। এই প্রসাদের পেছনের প্রাসাদকে বলা হয় অন্দর মহল যেখানে বসবাস করত তারা।
বালিয়াটি প্রাসাদ বাংলাদেশের ১৯ শতকে নির্মিত রেনেসা যুগে নির্মিত স্থাপত্যকৌশলের সাহায্যে নির্মিত অন্যতম নিদর্শন। এই বিশাল প্রাসাদটি ২০ একরের চেয়ে বেশি স্থান জুড়ে অবস্থিত। আসলে এই প্রাসাদটি একই রকম দেখতে কিন্তু পাচটি স্বতন্ত্র ব্লকের সমন্বয়ে গঠিত যার সর্ব পূর্বদিকের একটি ব্লক ব্যতিত বাকি চারটি ব্লক এখনো বিদ্যমান। বর্তমানে চারটি ব্লক আছে যার মধ্যে মাঝের দুইটি ব্লক, যার একটি দ্বিতল বিশিষ্ট এবং আরেকটি টানা বারান্দা বিশিষ্ট যা তিনতল বিশিষ্ট।
এই প্রাসাদের চারটি ব্লকের পিছন অংশে চারটি আলাদা আভ্যন্তরিণ ভবন বা অন্দর্মহল আছে। উত্তরদিকে কিছুদূরে অবস্থিত পরিত্যক্ত ভবনটি হল বহির্মহল যা কাঠের কারুকার্য সম্পন্ন। এই ভবনে প্রাসাদের চাকর বাকর, গাড়ি রাখার গ্যারেজ, ঘোড়াশাল ছিল বলে ধারনা করা হয়। এই বিশাল প্রাসাদটির চারপাশ সুউচ্চ দেয়াল দ্বারা পরিবেষ্টিত। এই প্রাসাদের তিনটি প্রবেশপথ আছে। যার প্রত্যেকটিতে অর্ধবৃত্তাকার খিলান আকৃতির সিংহ খোদাই করা তোরণ বিদ্যমান।
(তথ্যসুত্রঃ উইকিপিডিয়া)
পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি
পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি টাঙ্গাইলের নাগরপুরে অবস্থিত কিন্তু মানিকগঞ্জ দিয়েই যাতায়াত সুবিধা। এই জমিদার বাড়ি কমপ্লেক্সে মোট তিনটি অট্টালিকা আছে। এই তিনটির মধ্যে একটি বেশ বড় আর বাকি দুটো অপেক্ষাকৃত ছোট। বৃহৎ ভবনটি বর্তমানে ডিগ্রী কলেজ হিসেবে ব্যাবহৃত হচ্ছে এবং বাকি দুটি ভবন ভাড়া দেয়া আছে।ছোট দুই ভবন সহ এই বৃহৎ অট্টালিকার মালিকানা বর্তমানে কলেজ কতৃপক্ষের হাতে ন্যাস্ত আছে।
উনিশশত শতকের শুরুর দিকে রামকৃষ্ণ সাহা মন্ডলের হাতে এই জমিদারির পত্তন হয়। তার দুই সন্তান- রাঁধা গোবিন্দ এবং বৃন্দাবন চন্দ্র। রাঁধা গোবিন্দে ছিলেন নিঃসন্তান আর বৃন্দাবনের ছিল তিন সন্তান- ব্রজেন্দ্র মোহন, উপেন্দ্র মোহন এবং জোগেন্দ্র মোহন। সন্তানহীন রাঁধা গোবিন্দ ভ্রাতষ্পুত্র উপেন্দ্র মোহনকে দত্তক নেন এবং মৃত্যুকালে তার সমস্ত সম্পত্তি পালক পুত্রকে দান করেন।
এই তিন ভাই আজ থেকে একশত বছর আগে ১৯১৫ সালে এই ভবন তিনটি নির্মান করেন। প্রত্যেকটি অট্টালিকা সুদৃশ্য কারুকার্য শোভিত। ভবনের স্তম্ভ, দরজা, জানালা, ছাদ, সবখানেই চমৎকার নকশার ছোঁয়া পাওয়া যায়। ভবনের সামনের উর্ধ্বাংশ সুন্দর নকশা ও মুর্তিখচিত। এছাড়া ভবনত্রয়ের পিছনদিকে কয়েকটি পুকুর রয়েছে।
জমিদার রামকৃষ্ণ এবং তার বংশধরগন প্রজাদের প্রতি বেশ সদয় এবং বন্ধুবৎসল ছিলেন। তিন পুত্র এই অঞ্চলে শিক্ষা বিস্তারের জন্য ১৯১৬ সনে তাদের বাবা ও চাচার নামে নির্মান করেন বৃন্দাবন চন্দ্র রাঁধা গোবিন্দ স্কুল (সংক্ষেপে বিসিআরসি স্কুল)। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় তারা বাংলাদেশ ত্যাগ করেন এবং তৎকালীন সরকার এই ভবনসমুহের দায়িত্ব গ্রহন করে। পরবর্তীকালে ১৯৬৭ সালে সরকার তাদের স্মরনে উক্ত ভবনে বিসিআরসি ডিগ্রী কলেজ স্থাপন করে। এছাড়া বর্তমানে এই জমিদারবাড়ির চৌহদ্দিতে একটি মন্দির এবং একটি মুক্ত মঞ্চ রয়েছে যেখানে নিয়মিত যাত্রাপালা অনুষ্ঠিত হয়।
কিভাবে যাবেনঃ ঢাকা থেকে গাবতলী হয়ে আরিচাগামী যেকোন বাসে উঠে পড়ুন। ধামরাইয়ের পর কালামপুর বাজারে নেমে যাবেন। রাস্তার ডান দিক দিয়ে যে আরেকটি রাস্তা চলে গেছে সেটিই ২৫ কিলোমিটার এঁকে বেঁকে বালিয়াটি জমিদারবাড়ি চলে গেছে। কালামপুর বাজার থেকে সিনজি পাবেন। বালিয়াটি পার হয়ে আরো প্রায় ১০ কিলোমিটার গেলে পাকুটিয়া জমিদারবাড়ি বা বিসিআরসে ডিগ্রী কলেজ। ঢাকা থেকে দুরত্ব প্রায় ৫৫-৬০ কিলোমিটার।
(তথ্যসুত্রঃ বিভিন্ন ওয়েবসাইট)
২| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৬:১৬
রক্তিম দিগন্ত বলেছেন:
ইতিহাস, ছবি সবমিলিয়ে চমৎকার লাগলো পড়তে। +
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৬
সাদা মনের মানুষ বলেছেন: একবার যাওয়া হয়েছিলো, এমন ইতিহাস ঐতিহ্যের স্থানগুলো সব সময় আমাকে টানে.....পোষ্টে ভালোলাগা