নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি জাহিদ রাজ রনি। অঘ্রান অভ্রু নামটা বোকামি করে দেয়া এবং পরে আর নাম পাল্টানোর অপশন খুঁজে পাইনি। পত্রিকায় লিখি \'জাহিদ রাজ\' নামে। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে আমি: jahidrajrony

অঘ্রান অভ্রু

একদিন কাক হয়ে উড়াল দিবো

অঘ্রান অভ্রু › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভ্রাতা ও ভালোবাসা

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:৫০

প্রতিটা একালায় কিছু স্থানিয় কুকুর থাকে। পাড়ার মানুষ এসব কুকুরদের "ধলা- কানকাটা" টাইপ কিছু নামও দেয়। আদর করে নাম দিলেও সবাই আসা যাওয়ার পথে এসব কুকুরদের লাথি-উষ্টা দেয়। এটা একপ্রকার অঘোষিত বিনোদন। এসব কুকুররা এলাকা ছেড়ে যায়না তবু। থেকে যায়। যাকে বলে "মাটি কামড়ে থাকা"

এলাকার এসব কুকুরের মতো অনেক ফ্যামিলিতোও কিছু মানুষ থাকে। আদর করে তাদের নাম দেওয়া যায়, তবে আদরটা দেওয়া যায় না। পরিবারে থাকতে হলে এদের লাথি উষ্টা খেয়েই থাকতে হয়।

আমার ফ্যামিলিতে আমি ওমন না। আমার ফ্যামিলিতে ওমন কেউ নেইও। তবে আমার পরিচিত বাদশা ভাইয়ের ফ্যামিলিতে এমন একজন আছে। তার নাম বাদশা। ছোট বেলায় বাবা আদর করে নাম রাখে বাদশা। ছেলে বড় হবে। নামের সাথে মিলিয়ে তার কর্ম হবে বাদশার মতো!

বাদশা ভাইয়ের বয়স ত্রিশ এর উপর। লক্ষিপুর আমার গ্রামের উনাদের একান্নবর্তি পরিবার। গতপরশু এয়ারপোর্টের সামনের ওভার ব্রিজের উপর ওনার সাথে আমার দেখা। উনি ব্রিজের উপর বিক্রি করা উলের সুয়েটার দরদাম করছেন। আমি কাছে গিয়ে দাড়াই। প্রায় আট মাস পর আমাকে দেখে উনি প্রথম যে কথা বললেন, তা হলো "দেখতো রনি, এই সুয়েটার এর দাম নাকি ছয়শ! ক্যামনে থাকস এই শহরে? ডাকাইতের এলাকা! বাল-ছালের দামও হাজার টাকা"

জিজ্ঞেস করলাম,
: এখানে কি? ঢাকায় আসলেন কবে?
: বড় মিয়ার শালা বিদাশ যাইবো। হেরে বিদায় দিতে আসছি
: ও। তা আপনার খবর কি? আপনার না যাওয়ার কথা ছিলো?
: ছিলো তো। পাঠায় নাই হেরা।
: বাড়িতে করেন কি?
: এইতো ভাইদের গরু-ছাগল দেখাশুনা করি। বাজার-টাজার করি।
: বিয়া কি করছেন?
: না রে। করলে দওয়াত পাবি (লজ্জা পেয়েছেন)
: তো আর কি অবস্থা?
: ভাই না হইয়া ভাইয়ের শালা হইলে এখন আমি বিমানে থাকতাম রে। রক্তের সম্পর্ক! আমার টাকা নাই বইলা আমারে পাঠায় নাই!

বিদায় দিয়ে আমি বাসার দিকে হাঁটা ধরলাম। কথাটা মাথায় ঘুরছিলো "ভাই না হয়ে ভাইয়ের শালা হলে বিমানে থাকতো!" উফ! মাথা থেকে বাদ দিতে পারছি না! ইচ্ছা হলো একবার বাদশা ভাইকে আমাদের ছোট্ট ফ্লাটে নিয়ে আসি। এনে দেখিয়ে বলি "এখানে আমরা তিন ভাই থাকি। খোদার কসম, বাসাটা ভালো না হলেও এখানে ভালোবাসা আছে!"

ফেসবুকে ‘ছোট ভাই’ নামক আমার একজন ফ্রেন্ড ছিলো। কয়েক দিন আগে ওনার একটা স্টাটাস পড়েছিলাম। স্টাসাসের মূল বিষয় “ছিলো ছোট ভাইরা বড় ভাই দ্বারা অবহেলিত এবং ছোট ভাইদেরকে কেউ বুঝতে চেষ্টা করে না…” এই টাইপের। কথা ৯৯% সত্য। বেশিরভাগ সমস্যার কারন সম্পত্তি এবং স্ত্রী। এ ধরনের গল্প সবার জানা। এবার একটু ভিন্ন গল্প শুনাই।

কয়েকদিন আগে আমার বড় ভাইয়া আমাকে ডেকে বললেন “তুই এখন থেকে আমাকে “তুই” করে বলবি”! আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম কেন? ভাইয়া বললো “তুই” করে বললে সম্পর্কটা ফ্রেন্ডলি হয়। আমরা শুধু ভাই না, এক জন আরেক জনের বন্ধু!

আরেকটি ঘটনা- একদিন কোন কারনে ভাইয়ার কাছে কিছু টাকা চাইলাম। ভাইয়া না দেওয়াতে আমি আমার রুমে মন খারাপ করে বসে আছি। ভাইয়া এসে বললো “তোর আর আমার মাঝে একটা গেম হলো। তুই গেমে হেরে গেছিস!” আমি কিছু না বুঝে বললাম কেমনে? ভাইয়া বললো “তোর কাজ হচ্ছে আমার কাছ থেকে টাকাটা আদায় করে নেওয়া আর আর আমার কাজ হলো তোকে টাকা না দিয়ে সারা। তুই টাকা আদায় করতে পারস নাই, সো তুই হারলি আমি জিতলাম! হা! হা! হা!”

আমার মনে হচ্ছে এ লেখাটা অসমাপ্তই থাকবে, আমি আরো কয়েকপাতা লিখার পরও এটার ফিনিশিং দিতে পারবো না। ভালোবাসার তো সমাপ্তি নেই। এটা বরং অসমাপ্তই থাকুক! এটা সমাপ্ত করার সাধ্য জাহিদ রাজ রনির নেই!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.