নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি রেবেকা সুলতাহা। কাজ করছি কনটেন্ট নিয়ে। কনটেন্ট সম্পর্কে আরো জানতে এবং শিখতে চাই।

রেবেকা সুলতাহা

আমি রেবেকা সুলতাহা। কাজ করছি কনটেন্ট নিয়ে। কনটেন্ট সম্পর্কে আরো অনেক কিছু জানতে এবং শিখতে চাই।

রেবেকা সুলতাহা › বিস্তারিত পোস্টঃ

" স্বপ্নকে পরিপক্ক করতে চারাগাছে রূপান্তরিত হও "

০৪ ঠা আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১:৫০




“Life is unfair” উক্তিটি আমরা সবাই জানি তাই না? হ্যাঁ, Life is very much unfair. ছোট বেলায় সবাই পড়েছি “Life is not a bed of roses”. ঠিক তাই। জীবন আপনাকে কখনোই আপনার মনের মত করে কিছুই দিবে না কিংবা জীবনের কোনো উদ্দেশ্য অথবা স্বপ্ন নিজে থেকে পূরণ হবে না।

জীবনের উদ্দেশ্য কিংবা স্বপ্ন তারই পূরণ হয় যে কিনা তার জীবনের শত শত কষ্টকে পজিটিভ ওয়েতে গ্রহণ করে নিজেকে পুড়িয়ে ডে-বাই-ডে নতুন করে তৈরি করে। অনেকের কাছে প্রশ্ন হতে পারে, কষ্টগুলো আবার পজিটিভ ওয়েতে গ্রহণ করে কিভাবে? কষ্ট তো কষ্টই।

চলুন তাহলে, একটা গল্প শুনি।

বহুকাল আগে, একবার এক লোক দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বসে আছে। তার ব্যবসায় লস! ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে হতাশ এবং তার স্বপ্ন গুলো পূরণ না হওয়ায় মনের দিক থেকে বারবার ভেঙ্গে পরছে! সে কিছুতেই বুঝতে পারছে না এমতাবস্থায় তার কি করা উচিত কিংবা এই পরিস্থিতিকে সে কিভাবে মেনে নিবে।

জীবন যখন বারবার তার সাথে unfair করে যাচ্ছে ততই লোকটা যেন তার সেলফ কনফিডেন্ট হারিয়ে ফেলছে এবং কোনো ভাবে তিনি সেটা হ্যান্ডেল করতে পারছে না। এমন পরিস্থিতিতে লোকটা যখন দিশেহারা ঠিক তখন লোকটা তার একজন শুভাকাঙ্ক্ষীর কাছে গিয়ে তার সকল সমস্যা ও কষ্ট গুলো বললো এবং কি করবে, সমাধান কি জানতে চাইলো।

শুভাকাঙ্ক্ষী লোকটার সকল সমস্যা ও কষ্ট গুলো শুনে তাকে এক গ্লাস পানি দিলো। লোকটি খুব অবাক এবং বিরক্ত নিয়ে প্রশ্ন করলো, “পানি দিয়ে কি করবো? আমি আপনার কাছে পানি চাইনি বরং সমাধান চেয়েছি। কিভাবে আমি আমার কষ্ট গুলো থেকে বের হবো, সেটার সমাধান চেয়েছি।”

শুভাকাঙ্ক্ষী মুচকি হেসে বললো, “শান্ত হোন এবং এই এক গ্লাস পানিতে আপনি ৩ চামচ লবণ মেশান।”

লোকটি আরো বেশি অবাক হলো। অবাক হলেও লোকটি তার শুভাকাঙ্ক্ষীর কথা মতই ৩ চামচ লবণ মেশালো পানিতে। এবার শুভাকাঙ্ক্ষী, লোকটিকে লবণ মিশ্রিত পানি পান করার জন্য বললো। লোকটি পরক্ষণেই বিস্মিত হলো এবং এক পর্যায়ে তিনি সেই লবণ মিশ্রিত গ্লাসের পানি পান করলো। গ্লাসের অর্ধেক পানি পান করার পর লোকটি সেই পানি আর পান করতে পারলো না। কারণ লবণের বিস্বাদে তার মুখের স্বাদ তেতো হয়ে গিয়েছে!

এটি দেখার পর শুভাকাঙ্ক্ষী লোকটিকে জিজ্ঞেস করলো, “পানির স্বাদ কেমন লাগলো?”

উত্তরে লোকটি জানালো, “বিশ্রী এবং খুবই বিস্বাদ!”

এবার শুভাকাঙ্ক্ষী কোনো রকম কথা না বলে লোকটিকে নিয়ে তার বাড়ির পাশেই একটি দিঘীর কাছে নিয়ে গেলো। দিঘীর কাছে যেতেই, শুভাকাঙ্ক্ষী লবণের কৌটা বের করে লোকটির হাতে দিয়ে বললো, “এই দিঘীতে ৩ চামচ লবণ মেশান।”

লোকটি শুভাকাঙ্ক্ষীর কথা মত, ৩ চামচ লবণ মেশালো দিঘীর পানিতে।

এবার শুভাকাঙ্ক্ষী বললো, “এই দিঘী থেকে এবার পানি পান করুন।”

লোকটি উনার কথা মত, দিঘী থেকে পানি নিয়ে পান করলো।

এবার শুভাকাঙ্ক্ষী মৃদু হেসে লোকটিকে আবার জিজ্ঞেস করলো, “এবার পানির স্বাদ কেমন?”

উত্তরে লোকটি বলে উঠলো, “চমৎকার!”

শুভাকাঙ্ক্ষী এবার জিজ্ঞেস করলো, “আপনি কি এই পানিতে লবণের বিস্বাদ বা তেতো স্বাদ পাচ্ছেন?”

লোকটি উত্তর দিল, “ না, পাচ্ছি না।”

এবার শুভাকাঙ্ক্ষী লোকটির উদ্দেশ্যে বললো, “শুনুন, জীবনে অনেক কষ্ট, হতাশা এবং সমস্যা থাকবে। এটা চিরন্তন সত্যের মত একটি সত্য যা চাইলেই আপনি এড়িয়ে যেতে পারবেন না। পরিবর্তন করতে পারবেন না। অথবা পাশ কাটিয়ে চলতেও পারবেন না।

জীবনে কোনো কিছুই খুব সহজ ভাবে ধরা দিবে না আপনার কাছে। জীবনে শত শত নয় বরং হাজার হাজার দুঃখ, কষ্ট থাকবে। এই দুঃখ, কষ্ট গুলো আমাদের কে হতাশা কিংবা স্ট্রেসে ফেলে দেয় বহুসময়, ঠিক যেন ঐ এক গ্লাস লবণ মিশ্রিত পানির মত। জীবন একসময় বিস্বাদ লাগে।

কিন্তু একটু খেয়াল করে দেখুন, লবণ মিশ্রিত পানি ঠিক তখনই বিস্বাদ লেগেছে যখন আপনি সেই গ্লাস থেকে পানি পান করেছিলেন। পরক্ষণেই আবার দেখুন, ঠিক সমপরিমাণ লবণ যখন আবার একটা দিঘীর পানিতে মিশিয়ে পানি পান করলেন তখন কিন্তু পানিটা আর বিস্বাদ বা তেতো লাগেনি।

ঠিক এমনই আপনি যদি আপনার জীবনের কষ্টগুলোকে এই ছোট্ট গ্লাসের পানির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেন তবে জীবন হয়ে উঠবে বিস্বাদ বা তেতোময়। অর্থাৎ, কষ্টের অভিজ্ঞতা গুলো নির্ভরই করে আপনি ঠিক কতবড় পাত্রের মধ্যে কিংবা কতটুকু সীমাবদ্ধের মধ্যে আপনি আপনার কষ্ট গুলো রাখছেন।

আপনি যেমন, দিঘীর পানিতে লবণ মেশানোর ফলে পানির স্বাদ পরিবর্তন হয়নি ঠিক তেমনি নিজেকে সেই দিঘীর মত করে গড়ে তুলুন। নিজের সীমাবদ্ধটাকে আরো বেশি প্রশস্ত করুন। ছোট ছোট দুঃখ, কষ্ট গুলোকে শিক্ষণীয় হিসেবে গ্রহণ করুন। নিজের মানুষিক দক্ষতাকে আরো বেশি পজিটিভ এবং সহনীয় করে গড়ে তুলুন।

পজিটিভ বিষয় গুলো বেশি লক্ষ করুন, ভাবুন। আপনার চারপাশে যারা পজিটিভ চিন্তা ভাবনা করে তাদের সাথে বেশি বেশি মিশুন। যারা আপনার জীবনে ভ্যেলু এড করে তাদের সাথে সময় কাটান। নিজের কষ্ট থেকে অন্যের কষ্ট গুলো কে বেশি প্রাধান্য দিন। অন্যকে সাহায্য করার আকাঙ্ক্ষা বাড়ান এবং নিজের মোটিভ গুলো আরো বেশি স্পষ্ট করুন।

দেখবেন, এই ছোট ছোট দুঃখ, কষ্ট গুলো জীবনে খুব একটা প্রভাব ফেলবে না। নিজেকে সেই ছোট্ট গ্লাসে পরিণত না করে বরং সেই দিঘীর আকারে তৈরি করুন।

কথায় আছে, একটি চারাগাছ পরিপক্ব তখনই হয় যখন সেই চারাগাছটি রোদ, বৃষ্টি, ঝড় পেড়িয়ে টিকে থাকে এবং ধীরে ধীরে পরিপক্ব হওয়ার রাস্তায় এগিয়ে চলে।”

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:১১

"আহসান" বলেছেন: সুন্দর লিখছেন।

০৬ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ৮:৫৭

রেবেকা সুলতাহা বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.