![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি রেবেকা সুলতাহা। কাজ করছি কনটেন্ট নিয়ে। কনটেন্ট সম্পর্কে আরো অনেক কিছু জানতে এবং শিখতে চাই।
ঘটনা (১)
সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই কেমন মেজাজ খারাপ লাগছে প্রচন্ড! রাতের বেলা ঘুম খুব একটা ভালো হয়নি। কারণ গতপরশু অফিস মিটিংয়ে এক কলিগের সাথে কাজের বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয় ভীষণ। ফলাফল, বাসায় গিয়ে প্রচন্ড মেজাজ খারাপ, রাগ, ক্ষোভ, বিরক্ত এবং রাতের ঘুম হারাম! পর দিন সকালে উঠে আবার সেই মেজাজ খারাপ! একটা বিরক্ত নিয়ে দিন শুরু!
ঘটনা (২)
সকাল ১১ টায় ক্লায়েন্টের সাথে মিটিং। তড়িঘড়ি করে রেডি হয়ে হলাম। রাস্তায় বের হতেই রিকশা পাচ্ছিলাম না। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর একটা রিকশা পেলাম কিন্তু রিকশাটি মাঝরাস্তায় এসে নষ্ট হয়ে গেলো। কিঞ্চিত বিরক্ত হলাম এবং রিকশা বদল করে রওনা দিলাম। বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে আরেক হ্যাপা! বাস পাচ্ছি না। মিনিট ১৫ অপেক্ষা করে বাস পেলাম কিন্তু বসার জন্য সিট পেলাম না। বাসও যেনো আজকে হেলেদুলে যাচ্ছে। এদিকে মিটিংয়ের সময় ঘনিয়ে আসছে। মিটিংয়ে প্রেজেন্টেশন দিতে হবে যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মিটিংয়ের জন্য না জানি লেট হয়ে পরি, বাস দ্রুত যাচ্ছে না কেন, রাস্তায় তো জ্যাম! এমন সব নানান চিন্তা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। এটাকে বলে “মাইন্ড চ্যাটার।” কিছুসময় অতিবাহিত হওয়ার পর টের পেলাম আমি কেমন ঘেমে যাচ্ছি এবং আমার হার্টবিট বেড়ে যাচ্ছে। আমি স্বস্তি পাচ্ছি না!
এই যে উপরের দুটি ঘটনা, পরিচিত মনে হচ্ছে তাই না? আমাদের সাথে প্রায়ই এমন ঘটে। এই ঘটনা দুটোকে কেন্দ্র করে যে ফিলিংস নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি এটাকে কি বলে জানেন? স্ট্রেস!! আমরা বেশির ভাগ মানুষই নিত্যদিন কোনো না কোনো স্ট্রেসের মধ্য দিয়ে যাই। স্ট্রেস ছাড়া যেন লাইফ ইম্পসিবল হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এটা কি আদৌ কোনো পজিটিভ কিছু বয়ে আনছে আমাদের লাইফে?
বরং দিনের পর দিন যেনো মানুষিকভাবে অবনতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে আমাদেরকে। এবং আমরা কি জানি, ৮/১০জন সাধারণ workers এর চেয়ে খুব বেশি স্ট্রেসে থাকে উদ্যোক্তারা? Gallup Wellbeing Index অনুসারে, অন্যান্য workers এর সাথে যদি উদ্যোক্তাদের স্ট্রেসের পার্সেন্টেজ তুলনা করা হয় তবে অন্যান্য workers এর থেকে উদ্যোক্তারা স্ট্রেসে থাকে ৪৫% যেখানে সাধারণ workers এর পার্সেন্টেজ ৪২% (https://rb.gy/gevuws)
স্ট্রেস আসলে কি?
স্ট্রেস হলো, “Emotional, Physical, Mental & Behavioral reaction to a perceived Demand or Threat.” অর্থাৎ, পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে আপনি আসলে ইমোশনালি, ফিজিক্যালি, মেন্টালি এবং আপনার বিহ্যাভের মাধ্যমে সেই পরিস্থিতিতে আপনি কিভাবে রিএক্ট করছেন।
একজন উদ্যোক্তা হিসেবে যদি বলি, আমাদের লাইফে এমন কিছু পরিস্থিতি আসে যেটার জন্য আমরা হয়তো প্রস্তুত থাকি না, কিংবা প্রস্তুত থাকলে সেটা ইফেক্টিভ্লি ম্যানেজ করতে পারি না আর ঠিক তখনই আমরা স্ট্রেস ফীল করি। বিষয়টা এমন হয়ে যায় যে, পরিস্থিতি আমাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করে যা মোটেই একজন উদ্যোক্তা হিসেবে কাম্য নয়। স্ট্রেস লাইফে থাকবেই কিন্তু সেটা মোকাবেলা করার জন্যও নিজেদেরকে প্রস্তুত করতে হবে।
স্ট্রেসের মূলত ব্যাসিক ৪ টি সোর্স থাকে। যে ৪ টি সোর্সের জন্য আমরা স্ট্রেস ফীল করি। কি সেই ৪ টি সোর্স? আসুন জানি,
(০১) থ্রেট
(০২) ফ্রাস্ট্রেশন
(০৩) প্রেসার এবং
(০৪) কনফ্লিক্ট
এবার বিস্তারিত বলছি। প্রথমেই আসি,
>> থ্রেটঃ আমরা যখন কোনো কিছু হারানোর ভয়ে থাকি, বিজনেসে লস করার ভয় থাকে, কম্পিটিশন বেড়ে যায়, বিজনেসের কোনো গ্রোথ থাকে না এবং অনেক পরিস্থিতিতে আমরা আমাদের টেম্পার ধরে রাখতে ব্যর্থ হই ঠিক তখনই আমরা স্ট্রেসড হয়ে পরি। ফলাফল শূন্য!
>> ফ্রাস্ট্রেশনঃ অনেক সময়ই আমরা আমাদের আশেপাশের পরিস্থিতি, কাজ, ব্যক্তি, নেগেটিভিটি, ফেইলরস প্রভৃতি বিষয় উদ্যোক্তাদেরকে ফ্রাস্ট্রেশনের যাঁতাকলে ফেলে দেয়। এই ফ্রাস্ট্রেশন সব চেয়ে বেশি কাজ করে এসএমই উদ্যোক্তাদের মধ্যে।
>> প্রেসারঃ আমরা যখন কোনো কাজের ক্ষেত্রে প্রেসারে থাকি বা ফীল করি তখন অটোমেটিক আমাদের মধ্যে স্ট্রেস ব্যাপারটা চলে আসে। প্রেসার বিভিন্ন রকমের হতে পারে। যেমন, সেলস টার্গেট, বিজনেসের প্রফিট বাড়ানো, বিজনেসের গ্রোথ, পারফর্মেন্স ইত্যাদি। এ বিষয় গুলো একটা স্ট্রাকচারে না নিয়ে আসলে উদ্যোক্তাদের পরতে হয় ভয়াবহ পরিস্থিতিতে।
>> কনফ্লিক্টঃ কনফ্লিক্ট এমন একটা বিষয় যে বিষয়টি ইফেক্টিভলি ম্যানেজ না করলে উদ্যোক্তাদের জন্য রেডি থাকে নানা রকম স্ট্রেস। একজন উদ্যোক্তা হিসেবে সবচেয়ে বেশি স্ট্রেস ফীল করে এই কনফ্লিক্ট সোর্সে এসে। কারণ, এখানে থাকে ভিন্ন জনের ভিন্ন মতামত, ভিন্ন চিন্তা, ভিন্ন ব্যবহার এবং ভিন্ন রিএকশন এবং এটার সূত্র ধরেই স্ট্রেসের পরিমাণ আরো বেশি বেড়ে যায়।
©somewhere in net ltd.