নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবাই মিলে দেশেকে গড়ে তুলি

ঘুমাতে ভালবাসি

রেজা আকাশ

সবই সম্ভব এ জগতে

রেজা আকাশ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মা-বোনের যুদ্ধাপরাধী রাজাকারদের ফাঁসি দাবি করলো

০৮ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:০২

’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের ন্যায় যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে গর্জে উঠেছে নারী সমাজ। স্বাধীনতা যুদ্ধে নারী-পুরুষ ভেদাভেদ ভুলে হানাদার বাহিনীদের বিরুদ্ধে নারীরা যেমন মুক্তির সংগ্রামে যোগ দিয়েছিলন তেমনি সেই যুদ্ধের বিরোধী শক্তি রাজাকারের ফাঁসির দাবিতে তরুণ প্রজন্মের আন্দোলনের সাথে তারাও একাত্ম হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে নারী দিবস উপলক্ষে শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি ও নারীদের সমঅধিকার নিশ্চিত এবং নির্যাতন বন্ধের দাবিতে নানা শ্রেণী-পেশা হাজার হাজার নারী যোগ দেন জাগরণী সমাবেশে। মা-বোনেরা সমস্বরে দাবি জানালেন যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবি।



সমাবেশে মুক্তিযুদ্ধে বিরোধীতাকারী যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি ও জামাত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি সমাজের সকল ক্ষেত্রে নারীদের সমঅধিকার নিশ্চিত ও হয়রানি বন্ধের দাবি জানান তারা। এসময় গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার দেশব্যাপী চলা জামাত-শিবিরের তা-বের প্রতিবাদে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মসূচি দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।



কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আগামি ১০ মার্চ বিকেল ৩টায় রাজধানীর উত্তরায় , ১৩ মার্চ সকাল ১১টায় চট্টগ্রামি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে, একই দিন বিকেল তিনটায় ঐতিহাসিক লালদিঘী ময়দানে ,১৫ মার্চ বিকেল ৩টায় আশুলিয়ায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া ১৬ মার্চ সকাল ১১ টায় জামাত-শিবিরের সাম্প্রদায়িক নৃশংসতার প্রতিবাদে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।



কর্মসূচি ঘোষণা করে নারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ডা. ইমরান বলেন, আজকের নারী জাগরণ সমাবেশ দীর্ঘ এক মাস ধরে চলা এই গণ আন্দোলনকে এক নতুন মাত্রায় উদ্ভাসিত করেছে। বাংলার সকল নারীদের প্রতি গণজাগরণমঞ্চের পক্ষ থেকে রইলো সংগ্রামী অভিভাদন। নারীর প্রতি সমাজের বৈষম্যের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের উত্থাপিত ছয়দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। সে সঙ্গে আমরা সচেতন হবে নারীর প্রতি সকল বৈষম্য দূরীকরণে।



তিনি বলেন, দালাল আইনের ১০নং ধারায় ধর্ষণকে ভয়ঙ্কর রকমের নারী অবমাননাকারী অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। একাত্তরে জামাত-শিবির দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রম নষ্ট করেছিল। তাই ৪২ বছর পার হয়ে গেলেও তাদের বিচার আদায় করতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।’ এরপর তিনি সকল নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে পূর্বের ন্যায় হাত উচিয়ে শপথ বাক্য পাঠ করান।



সমাবেশে এভারেস্ট বিজয়ী নারী ওসফিয়া নাজরীন বলেন, আমি কোন রাজনৈতিক দলের হয়ে না আমি এসেছি একজন নারী হয়ে এসেছি আপনাদের সঙ্গে সংহতি জানান। যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি হোক, এরসঙ্গে জড়িত সকলের শাস্তি দিতে হবে। এছাড়া দুর্নীতি মুক্ত দেশ গড়ে তুলতে হবে আমাদের। বক্তব্য শেষে এভারেষ্ট বিজয়ী এই নারী গণজাগরণ মঞ্চের অগ্নিকন্যা লাকীকে মানচিত্র খচিত পতাকা উপহার দেন।

অগ্নি কণ্যা লাকি আক্তার বলেন, প্রতিবছর হাজার হাজার ধর্ষিত হচ্ছে। কেন এ ধর্ষকরা পার পেয়ে যাচ্ছে? কারণ যুদ্ধাপরাধীরা ৪২ বছর আগে একইভাবে ধর্ষণ করে পার পেয়ে আসছে। আমরা আর কাউকে পার পেতে দিব না।

৪২ বছর ধরে যারার নারীদের নির্যাতন করছে সে জামাত-শিবিরের বিচার কি হবেনা ? অবশ্যই হতে হবে। ৭১এর অমীমাংসিত বিষয় আপনারা এবার মীমাংসা করুন।



বিরোধীদলীয় নেত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এ আন্দোলনের মঞ্চ কোন দলীয় মঞ্চ নয় এটা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবিতে গড়ে ওঠা মঞ্চ। আপনে যদি সত্যিই মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী হয়ে থাকুন তবে মুক্তিযুদ্ধের শক্তির পক্ষে আসুন। রাজাকারদের ত্যাগ করুন।



ছাত্র ফেডারেশন ঢাবি শাখার সভাপতি সামিয়া রহমান বলেন, একাত্তরের দুই লক্ষ নারীর সম্ভ্রমের বিনিময়ে স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। আজও সে শরীরের দিকে র্টাগেট করেছে স্বাধীনতা বিরোধীরা। নি¤œ-বিত্ত, মধ্য-বিত্ত শিশু পুরুষ সকলকে যৌন নিপিরণের শিকার হতে হচ্ছে। নারী সহিংসতার বিরুদ্ধে আমাদের এখন তাই গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকল স্তরের মানুষের জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে একাত্তরের ঘাতক-ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।

জাসদ ছাত্রলীগ নেত্রী শ্রাবন্তী আক্তার বর্ষা বলেন, সারা বিশ্বে নারী-পুরুষ সমতার যে লড়াই তা এখনো চলছে। মুক্তিযুদ্ধে প্রায় চারলক্ষ নারী তাদের সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। জামাত-শিবির কর্মীরা দেশব্যাপী ধ্বংসাতœক তা-ব চালিয়েছে আমরা তাদের বলতে চাই গণজাগরণ মঞ্চের ভাইদের সঙ্গে সঙ্গে কাধে কাধ মিলিয়ে লড়াই চালিয়ে যাবে।



বিরোধীদলীয় নেত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনি একজন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী হিসেবে কিভাবে রাজাকারদের সঙ্গে রাজনীতি করছেন। কিভাবে তাদের ডাকা হরতালকে সমর্থন করছেন।’

স্লোগান’৭১এ সাধারণ সম্পাদক কানিজ ফাতেমা যুথি বলেন, ‘নারী জাতি তার সন্তানদের কখনোই পাকিস্তানের পতাকা তলে বেড়ে উঠতে দেবেনা বলে একাত্তরে যুদ্ধ করেছিল। সে দিন যারা আমাদের সম্ভ্রম নিয়েছিল সে সকল কুলাঙ্গার রাজাকারদের সর্বোচ্চ শাস্তির জন্য এবারো আমরা রাজপথে যুদ্ধ ঘোষণা করেছি।’

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী বুল বুল মহালানবীশ সংহতি জানিয়ে বলেন, আমরা নারীরা মায়ের জাতি। আমাদের ছেলে-মেয়েরা যত দিন এ আন্দোলন চালিয়ে যাবে ততদিন আমরা তাদের পাশে থাকব। তিনি বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের মত এ আন্দোলনেও বিজয় হব। আন্দোলনের সময় গণজাগরণ মঞ্চের নিকট যে ককটেল বিষ্ফোরণ হয়েছে তার তীব্র প্রতিবাদ জানান এই শিল্পী।

এর আগে দুপুরের পর থেকেই বিভিন্ন শ্রেণী পেশার নারীরা দলবেধে মিছিল নিয়ে এসে জড়ো হতে থাকে শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরে। সময় যত গড়াতে থাকে ততই বাড়তে থাকে নারীদের উপস্থিতি । একসময় তা গোটা প্রজন্ম চত্বরকে ছাড়িয়ে যায়। শাহবাগ থেকে কাটাবন, রুপসী বাংলা ,ঢাকা ক্লাব ও টিএসসি গামি পুরো রাস্তাটাই নারীদের পদচারনায় মুখর হয়ে ওঠে। সেসময় স্লোগান স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে গোটা রাজপথ। বিকেল ৪টা ২৬ মিনিটে সমাবেশ জাতীয় সংগীতের মধ্যদিয়ে শুরু হয়। এরপর ‘জাগো নারী জাগো বন্দী শিখা’ গানটি মঞ্চে পরিবেশিত হয়।এরপর শরু হয় বক্তব্য। এরফাকে সমস্বরে চলে প্রতিবাদি স্লোগান। সমাবেশ সঞ্চলনা করেন আন্দোলনের অন্যতম নারী সংগঠক কানিজ আকলিমা চিনু। সমাবেশে বিভিন্ন প্রগতিশীল শ্রেনী পেশা সংগঠনের নারী নেত্রীরা বক্তব্য রাখেন।





মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.