![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজন লক্ষ্যহীন পথিক, পথে নেমেই পথকে চিনি - লক্ষ্যকেও।
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর ঐতিহাসিক উপন্যাস 'সেই সময়'-এ সেই আশ্চর্য জাগরণের সময়কে তুলে এনেছেন ২০-২১ শতকের মানুষদের সামনে। ৭০০ পৃষ্ঠার দুইখন্ডের এই সুবিশাল উপন্যাস পড়তে গিয়ে কখনো ক্লান্তি আসবেনা। পড়তে পড়তে আপনার মনে হবে ১৮৪০-১৮৮০ পর্যন্ত চল্লিশ বছরের ঘটনাপ্রবাহ আপনার চোখের সামনেই ঘটছে,নিজেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবেননা সেই সময় থেকে। বেঙ্গল রেঁনেসা বলতে আমরা যা বুঝি তার সূত্র ধরে এগিয়ে চলে উপন্যাস; ডিরোজিওর শিষ্যদের প্রথা ভাঙার যে বিদ্রোহ শুরু করেছিলেন তার জলজ্যান্ত বিবরণ চোখের সামনে দেখতে পাবেন। রাজনীতি, অর্থনীতি, সাহিত্য, সমাজ, ধর্ম, দর্শন, আইন, সংস্কার, সংস্কৃতি এই প্রত্যেকটি বিষয়েই ভারত উপমহাদেশে এই যুগে জাগরণ এসেছিলো। এই সবগুলো বিষয় নিয়ে ভারতবাসী নতুনভাবে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছিলো। এবং যার কেন্দ্র ছিলো বাংলা তথা সম্মিলিত পূর্ব ও পশ্চিম বাংলা। অনেকগুলো সামাজিক,রাজনৈতিক আন্দোলনের একেবারে চিত্ররূপ বর্ণনা পাবেন বইটিতে। সিপাহী বিদ্রোহ, নীল বিদ্রোহ, সূর্যাস্ত আইন, চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত, সতিদাহ প্রথা রোধ, বিধবা বিবাহ আইন পাশ করা এবং বিধবা বিবাহ প্রচলন,বহুবিবাহ রোধ এই সব আন্দোলনকে চোখের সামনে জীবন্ত হয়ে যেতে দেখবেন যদি বইটিতে চোখ বুলিয়ে যান।যে বিষয়গুলো সম্পর্কে শুধু পরীক্ষা পাসের জন্য নিতান্ত বাধ্য হয়ে,বর্ণনাটুকু পড়েছেন;কথা দিচ্ছি সেসব বিষয়ই গল্পের ছলে এই উপন্যাসে যেভাবে আনন্দ নিয়ে আপনি পড়বেন, সেভাবে আর কোনদিন পড়েননি।
এখানে আরো পাবেন ব্রাহ্ম সমাজকে, হিন্দু সমাজ তথা ভারতবর্ষের সামাজিক পরিমন্ডলে যার অবদান অনেক। এখানে পাবেন ব্রাহ্ম সমাজের উৎপত্তি, ঝিমিয়ে পরা এবং পরবর্তীতে দেবেন ঠাকুর কর্তৃক এর ক্রমবিকাশ। সমাজ সংস্কারের জন্যও এই সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ; রামমোহন রায়ের চেষ্টায় সতীদাহ প্রথা রোধ, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রাণান্তকর সমাজ সংস্কারের চেষ্টা, বিধবা বিবাহ প্রচলন, বহুবিবাহ রোধসহ অনেকগুলো ধর্মীয় সংস্কারমূলক কাজ এবং তার ফলে ভারতবর্ষ তথা বাংলায় সামাজিক জাগরণ যদি চোখের সামনে দেখতে চান ,তবে আজই পড়ে ফেলুন সুনীল গাঙ্গুলীর ' সেই সময়' । বাঙলা গদ্যের নতুন যুগের শুরু, কালিপ্রসন্ন সিংহের "হুতুম প্যাঁচার নকশার" পটভূমিতে আপনারও থাকবে নিরব উপস্থিতি। বাংলা সাহিত্যের গদ্যের ক্রমবিকাশের জন্য সম্ভবত এই সময়টিই সবচেয়ে আলোচিত এবং সবচেয়ে সমাদৃত হয়ে থাকবে। বিদ্যাসাগর, মাইকেল মধুসূদন, বঙ্কিমচন্দ্র, প্যাঁরিচাদ মিত্র, কালিপ্রসন্ন সিংহ, দীনবন্ধু মিত্র এই নামগুলোর কাছে বাংলা গদ্যসাহিত্য চিরদিন ঋণী থাকবে। বইটি পড়তে পড়তে আপনার মনে হবে এই মানুষদের একেবারে চোখের সামনেই দেখছেন। মাইকেল মধূসুদনের কলেজজীবন, কাব্যসাধনা, দেশত্যাগ, ছন্নছাড়া জীবনের মধ্য দিয়ে বাংলা সাহিত্যে একজন আধুনিক কবির আবির্ভাব পর্যবেক্ষণ করবেন।
এছাড়াও রবীন্দ্রনাথের আবির্ভাবের প্রস্তুতিপর্ব পাবেন এখানে,যে রবীন্দ্রনাথকে "প্রথম আলো" উপন্যাসটিতে পাবেন জ্বলন্ত রবি হিসেবে।
এককথায় আর কিছু নাও যদি লিখতেন,তবু শুধু অসাধারণ এই উপন্যাসটি লেখার জন্য সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় একইরকম জনপ্রিয় হতে পারতেন।।
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১৮
রেজাউল করিম সাগর বলেছেন: প্রথম আলো , পূর্বপশ্চিমও পড়েছেন নিশ্চয়ই?
২| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:৪৪
অলিভিয়া আভা বলেছেন: খুব অল্প কথায় বইএর মূলকথা তুলে ধরেছেন বলে মনে হচ্ছে। সেই সময় পড়া হয়ে ওঠে নাই। সময় করে পড়ব।
ভুলে যেতে পারি--- তাই প্রিয়তে রাখলাম। ভালো থাকবেন। এরকম আরও বইএর রিভিউ দিবেন আশা করছি।
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৫:৪৯
রেজাউল করিম সাগর বলেছেন: সেই সময়, প্রথম আলো, পূরব-পশ্চিম এই ট্রিলজির প্রথম দুইটা পড়েছি। শেষটা পড়ছি। পড়ে দেখতে পারেন। ভালো লাগবে এই নিশ্চয়তা দিতে পারি। এগুলো মাস্টারপিস।
আপনিও ভালো থাকবেন। শুভকামনা থাকলো।
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৭:৩২
রাজীব নুর বলেছেন: বইটি পড়েছি।