নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাড্ডি খিজিরের মত ঠোঁটকাটা হইতে চাই শেষমেশ ওসমান অরফে রঞ্জু হয়াই দিন কাটে। রোগা শালিকের বিবর্ণ ইচ্ছা কী আছিলো সেইটা অনুভব করার খুব শখ আছিলো, জীবনদা তো আর নাই। তার কথা মনে হইলেই শোভনার ব্যর্থ প্রেমিক, লাবণ্যের ব্যার্থ স্বামী মনে হয়।

রেজাউল করিম সাগর

একজন লক্ষ্যহীন পথিক, পথে নেমেই পথকে চিনি - লক্ষ্যকেও।

রেজাউল করিম সাগর › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন বর্গাচাষী যিনি কবিতা লেখেন

১৭ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ১১:৫৮



রক্ত পানি করে শস্যের সোনাবীজ তুলে দেই অন্যের নায়ে, রবিঠাকুর তাকে সোনার তরী আর সোনার ধান বলতে পারেন, বলেন। চারিদিকে বাঁকা জলের কল্প-সম্মোহনে মহাকাল সৃজন করতেই পারেন, তিনি বড় কবি। ওসব মহত্ত্ব আর বড়ত্বে বড় বড় কবিদের মানায় বেশ! আমার সোনার ধান নিতে এলে তারে দস্যু-তরী কিংবা কালো তরী বলেই মনে হবে। ন্যায্যমূল্য আকাশের চাঁদ আর ওই বান যে এলো, যাতে কার জানি সোনার নাকি কালো অন্ধকার তরী ভাইস্যা আইলো তারে আনলো কে? কে আনলো? নদীর গায়ে বাধ দিয়া আপনেরা জলকেলি করবেন, তা করেন, আমারে বিপদে ফালায়া আমার ধান নিয়া যাওনের মহত্ত্ব দেখাইতে আইসেন না কইলাম খবরদার! নিজের শস্যের মায়ায় আমার ঘুম আসে, জাইগাও থাকি তার অভাবে, পেটের মইধ্যে খিদার জ্বালা আইসা ডিগবাজি মারে আর আমি মগজ-ঘরে থাকা অতি আপন বউ, ছেলেপুলেরে মারি ! মহৎ লোকের পেটে খিদার নাচন না থাকলে মাথায় মহত্ত্বের শয়তান চাইপা বসাটা খুব স্বাভাবিক!

আমার কবিতার জমিখান সামান্যই, বৈশাখে ধান আসে তো পরের বছরটা খরায় নষ্ট হইয়া যায়, আইলসামী করে শুয়ে বসে কাটাই বছরের বাকিটা, আধপেটা কবিতার জাবর কাটি, কবিতা না খেয়ে খেয়ে রোজা রাখি কবিতার রমজান মাসে। সেই এক মাসের রোজায় কি হয়! আমাদের তো বছর জুড়েই রোজা!

কবিতার জমিদারেরা আমার মত বর্গাচাষীর জন্য ফাকা রাখেনা এক টুকরো জমি , কোনবার অন্যের জমিতে মজুর খাটা চলে। আর জমি পেলে বর্গাচাষ। সাধ ছিলো টাকা জমিয়ে একদিন কবিতার একটুকরো স্বতন্ত্র স্বাধীন ভূমির পত্তন নিবো; টাকা দূরে থাক দুইবেলা খাওয়াই জুটেনা! আমি কবিতার বিস্তীর্ন জমিনে এক বর্গাচাষী, অথবা দিনমজুর অথবা অর্বাচীন! নতুন আর অনাবিষ্কৃত কোন কবিতার বীজ বুনতে চাই স্বাধীন মগজের জমিনে। অথচ সে জমি জমিদার মহাজনের কাছে বাঁধা! নজরুল আমার প্রথম জমিদার, তারপর রবি ঠাকুরের ঋণের দায়ে আটকা পরি। উনারা মহীরুহ ঋণের দায়ে বাঁধেন তবে মারেন না। জীবনবাবু নামে কবিতার এক নতুন বাবু আসলেন এরপর আমার মগজের কবিতানগরে, যেই লোক এতই সেয়ানা যে ঋণের দায়ে আমার ফাঁসিটাসি হইতেও বাকি নাই কোন!

এই লোকের পাল্লায় পরে বন্ধকী বর্গাজমি নিয়ে কবিতার মহাকালীন দরোজায় কড়া নাড়ার কোন সুযোগ আমার অদুর ভবিষ্যতে হচ্ছেনা বলেই বোধ করি। এই লোক মানে আমার এই নতুন জমিদার মশায়টি শুনেছি রবিবাবু আর নুরু সাহেবের দেনার দায়ে জেল খেটে ‘ঝরা পালকের’ মত ঝরে যেতে বসেছিলেন। আর তার পরে আরো অনেক কবিতাচাষীইতো বাগিয়ে নিয়েছেন নিজেদের জমিটুকু। কারো এক বিঘা, কারো আট-দশ বিঘা। আমি নিতান্ত তুচ্ছ এই 'চিরায়ত চাষী ঐতিহ্যের' কাছে, তবে তুচ্ছ হই আর যাই হই, তৃপ্তির কথা হচ্ছে আমিও এদেরই মতন একজন চাষী।

মহাকাল আমাকেও না নিয়ে পারবে কেন? আকালের মধ্যে বসেও তাই আকড়ে থাকি আমার এইটুকু মাত্র আশাবাদ !
...

রেজাউল করিম
০৯-০৩-২০২১

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.