![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪, শনিবার
সুমন দত্ত:Indian Visa May2010
দালাল শব্দটার সাথে কম বেশি সবাই পরিচিত। শব্দটির ভালো ও খারাপ দুটো অর্থই আছে। কিন্তু অনেকের ধারণা দালাল শব্দটি বাজে। তারা মনে করেন এ শব্দ দিয়ে নিন্দা করা হয়। দালালের ইংরেজি শব্দ ব্রোকার। আপনি শেয়ার মার্কেটের লেনদেন করতে চান। নিবন্ধন করতে হবে কোনো ব্রোকার হাউজে। অর্থাৎ দালাল অফিসে। ভারতের মুম্বাইতে একটি রাস্তার নাম দালাল স্ট্রিট। কোনোকিছুর ক্রয় বিক্রয়ে মধ্যস্থতা যারা করেন তারা দালাল হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে অন্ধভাবে কারো পক্ষাবলম্বন কারীকেও দালাল বলা হয়। তবে সেটা নিন্দা অর্থে। কোনো ব্যক্তির পক্ষে বলাকে অনেকে দালালি বলেন। আবার কোনো দলের পক্ষের বলাকেও সে দলের দালালি বলেন অনেকে। তেমনি চোর বাটপারদের পক্ষে বললেও দালালি বলা হয়। অনেকে বলেন দালাল ছাড়া কাজ হয় না। কথাটা সঠিক। সমাজ জীবনে এমন কিছু কাজ আছে যেগুলো দালাল নির্ভর। খারাপ কাজ গুলো প্রকাশ্যে করা যায় না। তখন দালাল ধরতে হয়। যেমন পতিতার দালাল। সমাজে সবচেয়ে নিকৃষ্ট শ্রেণীর দালাল এরা। এদের সহযোগী পুলিশ থেকে শুরু করে করে রাষ্ট্রের যেকোনো ব্যক্তি হতে পারে। হতে পারে কোনো হোটেলের মালিক। শেয়ার ব্যবসাও দালাল ছাড়া হয় না। এদের আবার লাইসেন্স আছে। এরা উৎকৃষ্ট মানের দালাল।
তেমনি আজ এমন এক শ্রেণির দালালদের কথা বলবো যারা ভারতীয় ভিসার দালাল নামে পরিচিত। এদের জন্ম গুলশানস্থ ভারতীয় দূতাবাসের আশে পাশে। জন্মটা সেখানে হলেও এদের নেটওয়ার্ক পুরো দেশব্যাপী। যেহেতু বাংলাদেশের সকল শ্রেণী পেশার মানুষ ভারত যেতে চায়। তাই দেশের সর্বত্র এদের বিস্তার। এই দালালদের সহযোগী হচ্ছে খোদ ভারতীয় দূতাবাসের এক শ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা। যারা দালালদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা পায়। এই টাকার ভাগ যে ভারতের কেন্দ্র সরকার পর্যন্ত যায় না তা হলফ করে কে বলতে পারে। যখন দেখি বিশ্বের ১৫৩ টি দেশের জন্য ভারত সরকার অন্য আর্যাইভেল ভিসার ব্যবস্থা করেছে। অথচ বাংলাদেশের নাম সেখানে নাই। ১৫৩ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের চাইতে কম গুরুত্বপূর্ণ বহু দেশ ভারত সরকারের কাছে যোগ্য বিবেিচত হলো অথচ বাংলাদেশ হলো না।
বাংলাদেশ ভারতের একটি প্রতিবেশী দেশ এবং দেশটির সাথে বর্তমান সরকারের রয়েছে ঐতিহাসিক বন্ধুত্ব। ভিসা সহজীকরণের বিষয়ে কেনও বাংলাদেশের নাম বাদ দিয়ে ভারত সরকার এমন আচরণ করলো? তার কোনো উত্তর পাওয়া গেলো না। কিছুদিন হলো এই উত্তরটা আমি পেলাম। ভারতীয় ভিসার দালালদের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে এ কাজ করেছে ভারতের প্রশাসনের সেই অংশ যাদের পূর্বজরা ব্রিটিশদের দালালি করতো। বাংলাদেশের ভারতীয় ভিসা দালালদের কাছ থেকে ভারতীয় আমলারা মোটা অংকের মাসোয়ারা পান। পরে এই টাকা হণ্ডির মাধ্যমে ভারতীয় কর্তাব্যক্তিদের কাছে পৌছায়। এই টাকার ভাগের লোভই ১৫৩ দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশের নাম বাদ দেওয়া হয়। ভারতীয়রা দালাল ও দালালি বরাবরই ভালোবাসতো। ব্রিটিশদের দালালি করতো বলে জাতিসংঘে সদস্যপদ ভারত বিনা আবেদনে পায়। অন্যদিকে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকে সদস্যপদ পেতে আবেদন করতে হয়। ভারতীয়দের এই দালাল প্রীতি তাদের উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া। এটা ভারতীয় আমলা তন্ত্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিদ্যমান। যে কারণে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বলেন আমলা তন্ত্রের ধীরগতির কারণে অনেক চুক্তির বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। আসলেই তাই। ভারতের দুর্নীতিবাজ আমলারা যে কত বড় শক্তিশালী তা দেবযানী খোবড়া গেরের কাহিনী থেকে জানতে পারি। এই মহিলা ভারতের বিখ্যাত আদ্রাশ কেলেংকারির সাথে জড়িত। ভারতীয় মিশনে কর্মরত এই মহিলার নামে ফ্লাট রয়েছে আদ্রাশে। যার বাজারমূল্য কয়েক কোটি রুপি। যুক্তরাষ্ট্র এক মহিলাকে শোষণের জন্য এই মহিলাকে গ্রেফতার করে জেলে রাখলে ক্ষিপ্ত হয় ভারত সরকারের সাবেক আমলারা। বিনা বেতনে লোক খাটায় যারা তারা কোনো দিন কি ভালো হতে পারে। আর ভারতীয় কনসুল্যার শাখার ওই মহিলা কখনই দায়মুক্তি পান না। এটা সারা বিশ্বের কনসুলার আইনে রয়েছে। অথচ ভারত সরকার আমলাদের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে অন্ধভাবে এই মহিলাকে সমর্থন করে গেছে। ঠিক একই ভাবে আমাদেরে দেশের ভারতীয় দূতাবাসের অসাধু কর্মকর্তাদের সমর্থন করে যাচ্ছে ভারতের মোদী সরকার। যে কারণে আজ ভারতীয় ভিসা নিতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এদেশের নাগরিকদের।
ভারতীয় ভিসাকে যখন প্রথম অনলাইনে নিয়ে আসা হলো তখন এটা সহজ ছিলো। ভিসা আবেদনের অ্যাপয়েন্টমেন্ট ডেট পাওয়া যেতো আবেদন করার সাথে সাথেই। প্রযুক্তির সুবিধা তো এখানেই। এখন একই কাজ করা যাচ্ছে ঠিকই। কিন্তু ভিসা আবেদনের পর অ্যাপয়েন্টমেন্ট ডেট আর পাওয়া যাচ্ছে না। এটাকে আটকে রেখে ভারতীয় দূতাবাসের ওইসব অসৎ ব্যক্তিরা দালালদের দিয়ে ব্যবসা করছে। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তারা দোষ চাপাচ্ছে বাংলাদেশের নাগরিকদের ওপর যারা ভারতীয় ভিসার দালালি করছে। ভারতীয় দূতাবাস নাকি বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এদের গ্রেফতার করতে বলেছেন। হাস্যকর। তাদের এই বয়ান। একটি দৈনিকে এমন খবরই প্রকাশ করছে।
আমি বলতে চাই ভারতীয় ভিসা আবেদনকারীদের ভিসা এপয়েন্টমেন্ট ডেট আটকাচ্ছে কারা? নিশ্চয় সেটা বাংলাদেশি দালালরা না। যে ওয়েব সাইটে এই আবেদন করা হয়। তার নিয়ন্ত্রণ কি বাংলাদেশের দালালরা করে ? যদি না করে তবে এপয়েন্টমেন্ট ডেট পাওয়া যাবে না কেনও। বাংলাদেশ থেকে প্রচুর লোক ভারতে যায়। কিন্তু সব সময় এই যাওয়ার ভিড় থাকে না। কখনও বেশি কখনও কম থাকে। কিন্তু ডিজিটাল আবেদনে দেখা যাচ্ছে সারা বছরই ভিসা প্রার্থীদের ভিড় বেশি। হাস্যকর। যাবার জন্য আবেদন করা হলে ব্যক্তি অবশ্যই একটি তারিখ পাবার কথা। সেটা হতে পারে ১৫ দিন পর হতে পারে ৩০ দিন পর হতে পারে সেটা ৬০ দিন পর। একটা ডেট তো আসবে নিশ্চয়। কিন্তু ডেট পাওয়া যাবে না এটা কোন ধরনের নিয়ম। আবার দালালদের কাছে গেলে তিন দিনেই ডেট পাওয়া যায়। পুরো ভিসা প্রক্রিয়াটা দালালদের কাছে এভাবে বিক্রি করার মানে কি? দেখা যাবে কোনো এক সময় কোনো লাদেন ভক্ত দালালদের মাধ্যমে ভারতে প্রবেশ করেছে। তখন বলা হবে বাংলাদেশ এই কাজ করেছে। তাইতো দেখি নূর হোসেনরা কি সুন্দর খুন করে ভারতে পালিয়ে যায়। এ খবর পায় না প্রশাসন। অন্যদিকে যারা প্রকৃত ভ্রমণকারী তারা ভিসার এপয়েন্টম্যান্ট পায় না। আজ দেশ থেকে বহু মানুষ গুম হয়ে যাচ্ছে। এই গুম হওয়া মানুষরা ভারতে পাচার হয়েছে কিনা কে জানে? কারণ দালালরা ঘোষণা দিচ্ছে ৭০০০ টাকায় ভারতীয় ভিসা কনফার্ম। এখন ব্যক্তিকে গুম করে সহজেই ভারতীয় ভিসা দিয়ে দেশ ত্যাগ করানো যায়। এভাবে দালাল নির্ভর ভারতীয় ভিসা দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করি। তাই এসব সমস্যা সমাধান অতীব জরুরি।
Category: খোলা কলাম, জাতীয়
সুত্র: http://dhakanews24.com/?p=218355
১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:০১
ইভেন বলেছেন: আমি আসলে ই-টোকেন এর দুর্নিতি এর বিষয় জানতাম না। ফরম পুরণ কবে অসংখ্য বার চেষ্টা করতাম কিন্তু ফলাফল শূন্য। তাই গুগোল এ ই-টোকেন লিখে সার্চ দিতে গিয়ে হতবাক!!!!
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:০০
মাহমুদ তূর্য বলেছেন: কিছুদিন আগে এই বিষয়ে একটি পোষ্ট দিয়েছিলাম।
ইন্ডিয়ার ভিসা দূর্নীতির একাল সেকাল