নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
১৯৮৬ সালের মার্চ মাসে আমরা যখন এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিলাম, তখন স্বৈরাচার এরাশাদ বিরোধী আন্দোলনে আমাদের শিক্ষকরাও জড়িয়ে গেলেন। ফলে আমাদের পরীক্ষার হল সামলাতেন ম্যাজিসট্রেট, থানার ওসি, পুলিশ অফিসারগণ আর প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকগণ। আমাদের নাজিরপুর থানার ওসি তখন বারেক মিঞা। পোলাপাইনের পরীক্ষার হলে তখন ওসি বারেক মিঞারে দেখলেই হাঁটু কাঁপতো। কারো কারো বিচি খিচে যেতো। বিশেষ করে যারা পকেটে নকল রাখতো তাদের। ওসি বারেক মিঞা নকল ধরা মানে মাস্ট এক্সপেলড। আমাদের টিপু দুদু বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষার শেষ ঘণ্টায় লাল সালু'র মজিদের ছোট স্ত্রী জামিলার চরিত্র নিয়ে কিছু একটা লিখছিল। শেষ লাইনও লেখা শেষ। টিপু দুদু পরীক্ষার খাতায় শেষ লাইন লিখেছিল- তোর লেখা শেষ হইলে এই কাগজ হান্নান মৌলভীরে দিস। হান্নান মৌলভীও আমাদের সঙ্গে সেবার পঞ্চমবারের মতো এসএসসি পরীক্ষায় বসেছিলেন।
ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস! টিপু দুদু লেখা শেষ করে হান্নান মৌলভীকে দেওয়ার জন্য পরীক্ষার হলে এদিক সেদিক একটু চোখ ঘুরিয়ে দেখে নিতে গেল। তখনই ওসি বারেক মিঞা টিপু দুদুকে চিন্থিত করলেন। সঙ্গে সঙ্গে চেক করলেন টিপু দুদুকে। টিপু দুদু মুখে কিছুই বললেন না। খাতায় সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেল- তোর লেখা শেষ হইলে এই কাগজ হান্নান মৌলভীরে দিস। টিপু দুদু ওসি বারেক মিঞা'র জিজ্ঞাসাবাদে কিছুতেই হান্নান মৌলভী'র নাম বলে নাই। ফলাফল, টিপু দুদু মার্চের ৫ তারিখ ঠা ঠা চৈতের দুপুর শেষ না হতেই ওসি বারেক মিঞার হাতে এক্সপেলড!
সন্ধ্যায় আমরা টিপু দুদু'র পরীক্ষা কালিন ভাড়া বাসায় সৌজন্য দেখা করতে গেলাম। গিয়ে শুনি, টিপু দুদু পলাতক। সেখানে হান্নান মৌলভীকে পেলাম। তিনি জানালেন, তাঁর পরীক্ষা ইনসা আল্লাহ ভালো হয়েছে...
ঠিক পরের বছর টিপু দুদু আর হান্নান মৌলভী আবারো এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। তবে সেবার আমাদের পরামর্শে টিপু দুদু আর নকলের পথে হাঁটে নাই। দ্বিতীয় শ্রেণীতে পাস করে মুন্সী বাড়ির ইজ্জত রক্ষা করেছিল। কিন্তু ধর্ম পরীক্ষার দিন হান্নান মৌলভী সেই ওসি বারেক মিঞার কোপানলে পরেছিলেন বটে। বাকী জীবনে হান্নান মৌলভী'র আর এসএসসি পরীক্ষায় বসা হয় নাই। আফসোস...
২| ২৮ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:৫৪
অন্ধ আগন্তুক বলেছেন: আমাদের ভার্সিটি এডমিশনের আগে এইরকম কাহিনীর মধ্যে পড়ছিলাম !
প্লাস , পোস্টে।
৩| ২৯ শে মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৯
বোকামানুষ বলেছেন: দেখার সুযোগ এসএসসি তে যদিও হয়নি তবে পড়তে ভাল লাগলো
আমাদের সময় নৈর্বক্তিক দেয়ার সময় একটু ডাকাডাকি করত পোলাপান তাও বেশি সুযোগ পাওয়া যায় নাই কঠিন গার্ড দিতো
+++
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:২৭
বালক বন্ধু বলেছেন: আমি মাদ্রাসা থেকে দাখিল পরীক্ষা দিয়েছিলাম। সে ছিল মজার অভিজ্ঞতা। নিজের মাদ্রাসার পাশে অন্য মাদ্রাসার ছেলেরাও ছিল। আমি আবার বলে দেওয়ার ব্যাপারে উদার গা বলে আমাকে সবাই পছন্দ করত। হলেও তাই সবাইকে দেখাতে হয়েছে।
আমি সবাইকেই দেখাতাম। এমনকি আমরা লুজ শীট বিনিময় করতাম। তারটা আমি দেখতাম আর আমারটা সে। দুইজনকে আমি খাতায় লিখেও দিয়েছি।
একবার শেষ সময়ে আমার আর আশরাফ নামক আরেক ছেলের লুজ দুইজনেরটা দুইজনের কাছে। আমি শেষ বেঞ্চে আর সে প্রথম বেঞ্চে। মাঝ খানে আরো চার বেঞ্চ। এমন সময় এক মামা আসলো খাতা সেলাই করতে। বুকের ভেতরে তখন ৯ মাত্রার ভূমিকম্প চলছে। শেষ মেস বেঁচে গিয়েছিলাম। মনে পড়লে এখনো হাসি আসে।
ছোটবেলার স্মৃতিগুলো আসলেই বেশ মজার।