নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

সবার প্রতি ছোট্ট একটি অনুরোধ ।। রেজা ঘটক

২৫ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:৩৬

গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল ২০১৩) সকাল ৯টায় সাভার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন রানা প্লাজা ধসে পড়ে। লাশ হস্তান্তরের দায়িত্বে থাকা সাভার থানার এসআই সাইফুল ইসলাম সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত ২৩১ টি লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। আর জীবিত মানুষ উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় ১১০০। এর মধ্যে আত্মীয়-স্বজনদের কাছে ১৭০ জনের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। ভবনটিতে এখনো অনেকে আটকা পড়ে আছেন। রেসকিউ টিমের প্রধান সেনাবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল চৌধুরী হাসান সোহরাওয়ার্দী বলেছেন, ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত এরকম দুর্ঘটনায় মানুষ বেঁচে থাকতে পারেন। ইতোমধ্যে দুর্ঘটনার ৩৬ ঘণ্টা অতিবাহিত হয়েছে।

সাভার দুর্ঘটনা স্থলে আগত সকল স্বজন, শুভান্যুদ্দায়ী, উদ্ধারকর্মী এবং সর্বস্তরের সকল মানুষের কাছে আমার বিনীত নিবেদন, আপনারা গোটা দুর্ঘটনা এলাকাটি দায়িত্ব শুধুমাত্র সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষিত টিমের উপর ছেড়ে দিন। এরকম দুর্ঘটনায় উদ্ধার কাজে অতি উৎসাহী দর্শক এবং অপ্রশিক্ষিত মানুষের অতিরিক্ত আবেগ আর দরদ বরং উদ্ধার কাজকে বিলম্বিত করছে। যা এখনো ভিতরে আটকা পড়া জীবিত মানুষের জন্য হুমকি হয়ে যাচ্ছে। এরকম দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি দরকারী খোলা জায়গা। যাতে প্রশিক্ষিত রেসকিউ টিমের সদস্যরা যে কোন পথে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে উদ্ধার অভিযান চালাতে পারে।

দুর্ঘটনা স্থলে মন্ত্রী, এমপি, ভিআইপি, সিআইপি, নেতা, ফেতার কোনো দরকার নেই। এরা শুধু অকারণে উদ্ধার অভিযানে সময় ক্ষেপনে ভূমিকা রাখতে পারে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় কারো প্রশিক্ষণ না থাকলে তাদের ওই স্থানে যাওয়া শুধু সমস্যা বাড়াবেই না, বরং জীবিত মানুষের উদ্ধার হওয়ার ক্ষেত্রে তারা সাক্ষাত যমের ভূমিকা পালন করবে। অতি উৎসাহী দর্শকরা আর আত্মীয়-স্বজনরা যতো বেশি দুর্ঘটনা স্থলে ভিড় করবেন, আপনাদের অজান্তে আপনারা ততো বেশি জীবিত মানুষের আয়ু শেষ করায় ভূমিকা রাখবেন। দয়া করে দুর্ঘটনা স্থলটি সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষিত টিমের হাতে ছেড়ে দিন।

আত্মীয়-স্বজন এবং উৎসাহী দর্শক এবং ভলান্টিয়ারগণ বরং হাসপাতাল, ক্লিনিক, স্কুল মাঠ এসব জায়গায় অকস্থান নিতে পারেন। নইলে এখনো যারা বেঁচে আছেন তাদের আর জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হবে না। কথাটি শুনতে যতোই রূঢ় শোনাক না কেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় অতি উৎসাহীদের কারণে দুর্যোগ আরো তরান্বিত হয়। যা খালি চোখে বোঝার উপায় থাকে না।

বাংলাদেশের মতো একটি প্রকৃতিক দুর্যোগ অধ্যুষিত রাষ্ট্রে সবচেয়ে শক্তিশালী মন্ত্রণালয় হওয়া উচিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়। যার দায়িত্বে থাকবে সরাসরি প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনী এবং প্রশিক্ষিত ভলান্টিয়ার। অথচ দুঃখের বিষয় বাংলাদেশে সবচেয়ে অসহায় মন্ত্রণালয়ের নাম দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়। এই মন্ত্রণালয়ের কোনো মন্ত্রী'র নাম আমার জানা নেই। সংবাদ মাধ্যমে শুনেছি ওই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী সাহেব নাকী দিনাজপুরে রাজনৈতিক সফরে রয়েছেন। ওই কুলাঙ্গার নাকী বলেছে সাভারের ভবন ধসের ঘটনার চেয়ে রাজনৈতিক সফর হের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি যাদেরকে মন্ত্রী বানিয়েছেন, তাদের সম্পর্কে একটু খোঁজখবরও মাঝে মধ্যে নিতে ভুলেন না। এরাই আপনার সদিচ্ছায় অর্জিত সকল ফসলে দুষ্ট কীটের মতো কেটে দিতে ভারী পারদর্শী।

গতকাল মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দুর্ঘটনা স্থল পরিদর্শন করে সংবাদ মাধ্যমে যা বলেছেন, সেজন্য প্রকাশ্যে দুঃখপ্রকাশ করা উচিত। এসব প্রলাপ উদ্ধারাভিযানে কোনো উপকারে আসে না। বরং এতো কষ্টের মধ্যে মানুষের দুঃখানুভূতিতে ভয়াবহ বমির উদ্রেগ করে। আজ মাননীয় বিরোধীদলীয় নেত্রী'র সাভার দুর্ঘটনা স্থলে পরিদর্শনও সেই একই অহমিকায় ভরপুর। মাননীয় বিরোধীদলীয় নেত্রী, আপনি দুর্ঘটনা স্থলে যাওয়ায় পরোক্ষভাবে উদ্ধারাভিযানে কিছুটা সময় ক্ষেপন করিয়েছেন। আপনাদের মতো কেউ দুর্ঘটনা স্থলে যাওয়া মানে অহেতুক উদ্ধার কাজে একটা বিরতি বা বিলম্ব হবার উপদ্রুপ।

বাংলাদেশের সর্বস্তরেরর সকল মানুষের কাছে আমার সবিনয় নিবেদন, দয়া করে এখন থেকে গোটা দুর্ঘটনা স্থলটি প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনীর টিমের কাছে ছেড়ে দিন। সেনাবাহিনীর প্রায় ১১০০ প্রশিক্ষিত সদস্য দুর্ঘটনা স্থলে রেসকিউ কাজে অভিযান পরিচালনা করছেন। তারা যাকে প্রয়োজন মনে করবেন, তাদের রেখে বাকীদের দুর্ঘটনা স্থল ত্যাগ করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। নইলে এখনো যে প্রায় সহস্রাধিক মানুষ জীবিত অবস্থায় ভবনের ভেতরে আটকা পড়ে আছেন, তাদের আর কোনো ভাবেই বাঁচানো সম্ভব হবে না।

দয়া করে আমাদের প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনীর সদস্যদের উপর আস্থা রাখুন। একমাত্র সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষিত রেসকিউ টিম-ই পারে অবশিষ্ট জীবিত মানুষদের জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করতে। নইলে আর মাত্র ৩০/৪০ ঘণ্টা পরে সেই সুযোগটিও আর থাকবে না।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:৩৮

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: সাভার রানা প্লাজা থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২০০ টি লাছ উদ্ধার
এখন ও বহু জীবিত মানুষ বিভিন্ন ভাঙ্গা দেয়াল , কুস্তুরি , ও ভগ্নাংশের নানা জায়গায় আটক ।
প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও দক্ষ উদ্ধার কর্মীদের অভাবে
আরও মৃত্যুর আশংকা
সরকার এবং উদ্ধার কর্মে সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ
গ্রহন জরুরী ।
রক্ত ও অক্সিজেন দরকার
প্রয়োজনীয় সহায়ক কমিটি দরকার
এ বিষয়ে পোষ্ট আশা রাখি

২| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:৪৭

রানার ব্লগ বলেছেন: আমি গতকাল ভবন ধসের পর মেয়ের সাথে কথা বলেছি। ও
বলেছে “বাবা আমি জীবিত।
কিছুই দেখতে পাচ্ছি না।
আমরা সাত বান্ধবী চার তলায় একটি পিলারের
নিচে আটকে আছি। একজনের বুকের উপর দেয়ালের
একটি খণ্ড পড়ে ও খুব অসুস্থ।
মারা যেতে পারে। একটু আগেও মেয়ের সাথে কথা বলেছি। ও
বলেছে, “বাবা, আমরা মরে যাচ্ছি।
আমাদের বাঁচাও।” কথাগুলো বলছিলেন রংপুর
থেকে ছুটে আসা রানা প্লাজার গার্মেন্টস কর্মী ফাতেমার
বাবা মোজাম্মেল হোসেন। চারতালায় এই সাত জন
মেয়ে এখনও জীবিত আছে,..!!
দয়া করে পোস্ট টা ছড়িয়ে দিন যাতে উদ্ধার
কর্মীরা যেভাবেই হোক সহায়তা করতে পারে,
যাতে সাভার পর্যন্ত খবর পৌছায়,

৩| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:৪৮

মোঃ মাহমুদুর রহমান বলেছেন: ঠিক বলেছেন ভাই

৪| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:৪৯

ভালো পোলা বলেছেন: বাঙ্গালি আবেগ দিয়ে জগত জয় করতে চায় কিন্তু বাস্তবতা ঠিক তার বিপরীত । একদম ঠিক কথাটি লিখেছেন । সেনাবাহিনীকে নামান হয়েছে তারপর ও মানুষের ভিড়ের মাত্রা কমার কুনো লক্ষন নাই । এইসব কারনেই উদ্ধার কাজ প্রলম্বিত হচ্ছে ।

৫| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১২:১৩

ইসপাত কঠিন বলেছেন: খুবই দায়িত্বশীল আহবান। ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.