নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

উপকূলের দিকে এগোচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’: সবাই সতর্ক থাকুন।।

১১ ই মে, ২০১৩ রাত ৮:১১

৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত:

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’ উপকূলের দিকে আরো এগিয়ে আসায় দেশের সমুদ্র বন্দরগুলোকে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়, সোমবার বেলা ১২টায় ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২২০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।



বাংলাদেশের উপকূল জুড়ে উত্কণ্ঠা:

ঘূর্ণিঝড় মহাসেন ধেয়ে আসার খবরে দেশের উপকূলীয় এলাকায় উত্কণ্ঠা সৃষ্টি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় ইতিমধ্যে চট্টগ্রামে একটি সমন্বিত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কক্সবাজারে সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। তবে ঘূর্ণিঝড়টির তীব্রতা কেমন হতে পারে বা কবে কখন এটি বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে সে সম্পর্কে আবহাওয়া বিভাগ গতকাল পর্যন্ত কিছু জানাতে পারেনি। গত রাতে আবহাওয়া বিভাগের সর্বশেষ বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তত্সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় মহাসেন উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১৪১০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরো ঘনীভূত হয়ে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। মহাসেন ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ৬২ কিলোমিটার। যা দমকা অথবা ঝড়োহাওয়া আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকট সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্যের কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তত্সংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং বন্দরসমূহের ওপর দিয়ে ঝড়োহাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মংলা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার সকল নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সমুদ্রে চলাচল না করতে বলা হয়েছে।



ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় চট্টগ্রামে সমন্বিত কমিটি:

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় 'মহাসেন'-এর ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় একটি বিশেষ কমিটি গঠন করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক। একই সঙ্গে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এসএম আবদুল কাদেরকে এ বিশেষ কমিটির প্রধান করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কমিটিতে সেনাবাহিনী, সিটি কর্পোরেশন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের প্রতিনিধিদের সদস্য করা হয়েছে। গতকাল রবিবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আবদুল মান্নান বলেন, 'বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় 'মহাসেন' বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই জীবনরক্ষায় ও ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।



উপকূল জুড়ে অজানা আতংক:

ঘূর্ণিঝড়টি বঙ্গোপসাগর এলাকায় প্রবেশের খবরে দেশের সমুদ্র উপকূলীয় এলাকা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ভোলা, কুয়াকাটা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী এলাকায় আতংক দেখা দিয়েছে। এ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে রবিবার কক্সবাজারে তীব্র গরম অনুভূত হয়েছে। বাতাস চলাচলও একেবারেই কম। আবহাওয়া গুমোট হয়ে পড়েছে। সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলা পর্যায়ের সকল সরকারি কর্মকর্তার ছুটি বাতিল করা হয়েছে। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিন জানান, সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রশাসন প্রস্তুতি নিচ্ছে। রবিবার বিকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার থেকে কক্সবাজারের নিচু এলাকায় মাইকিং করা হবে। এছাড়া জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ১১৩টি জরুরি মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানান সিভিল সার্জন ডা. কাজল কান্তি বড়ুয়া।

এদিকে উপকূলের দিকে ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আসার খবরে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে লাল পতাকা পুঁতে দেয়া হয়েছে। তবে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত সমুদ্র শান্ত দেখা গেছে। সমুদ্রে মাছ ধরারত ট্রলারসমূহ গভীর সাগর থেকে উপকূলের কাছাকাছি চলে এসেছে।



ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’:

দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তত্সংলগ্ন এলাকায় সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি এখন ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে।

এসকাপ (ইএসসিএপি) প্যানেল এ ঘূর্ণিঝড়ের নাম দিয়েছে ‘মহাসেন’। এটি শ্রীলঙ্কান শব্দ। তৃতীয় শতকে শ্রীলংকা শাসন করা রাজা মহাসেনের নাম অনুসারে এ ঘূর্ণিঝড়টির নামকরণ করা হয়েছে 'মহাসেন'। তথ্য সংরক্ষণ ও বোঝানোর সুবিধার জন্যে ঞড়গুলোর নাম আগেই ঠিক করে রাখা হয়। ৪ মে ২০১৩ সালে এটি বঙ্গোপসাগরের নিকোবর দীপপুঞ্জের অদূরে নিম্নচাপ আকারে ঘনীভূত হতে শুরু করে। ৮ মে ২০১৩ থেকে এটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়। ঘূর্ণিঝড়টির উৎপত্তিস্থলের অবস্থান ৮ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ ও ৮৯.৫ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশে। ঘূর্ণিঝড়টি আজ (শনিবার) সকাল নয়টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৬১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম ও মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৭০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।



ঘূর্ণিঝড়-কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৭৫ কিলোমিটার। যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৯৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়-কেন্দ্রের কাছে সাগর খুব উত্তাল রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ৯৯৬ কিলোমিটার। জয়েন্ট তাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার (জেটিডব্লিউসি) -এর মতে ঘূর্ণঝড়টি বর্তমানে ২.৫ টি মাত্রার তাইফুন আকার ধারণ করেছে। ঘূর্ণিঝড়টি পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা বা ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে শক্তিশালী হারিকেন আকার ধারণ করার সম্ভাবনা রয়েছে।



ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর-পশ্চিমে অগ্রসর হয়ে ১৩ মে বিকাল নাগাদ মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে এবং ১৬ মে সকালে বাংলাদেশের তৎসংলগ্ন উপকূলে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে। ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি বর্তমানে 'ইয়োলো সিগন্যালের' তাইফুন আকারে রয়েছে। তবে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব অগ্রসর হতে হতে ঘূর্ণিঝড়টি 'রেড সিগন্যালের' শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। বঙ্গোপসাগরের সকল সমুদ্রবন্দরকে আইএমডি বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছে। এছাড়া বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা সকল ট্রলার ও নৌকাকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলে নিরাপদ স্থানে থাকার অনুরোধ করেছে।



কিন্তু ঢাকার আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে সাগরে মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। এছাড়া সাগর মাঝারি ধরনের উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মংলা সমুদ্র বন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী সাইক্লোনের আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছে, তা আগামী মঙ্গলবার মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশ এবং এর সংলগ্ন বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি বয়ে যেতে পারে। এই সময় বাতাসের বেগ ঘণ্টায় ১৬৬ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠতে পারে বলে যুক্তরাষ্ট্রের নৌ ও বিমান বাহিনীর যৌথ টাইফুন সতর্কতা কেন্দ্রের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।



'ঘূর্ণিঝড় মহাসেন' যেনো আমাদের মহা বিপদে না ফেলতে পারে সেজন্য আগাম সতর্ক হওয়া খুব জরুরী। যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও মায়ানমারের আবজহাওয়া অধিদপ্তরগুলো বারবার সবাইকে সতর্ক বার্তা পাঠাচ্ছে। অথচ বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর 'ঘূর্ণিঝড় মহাসেন'কে এখনো তেমন আমলে নিচ্ছে না। ভয়টা সেখানে। অন্যরা সবাই বলছে সমুদ্রবন্দর বন্ধ করে দিতে এবং উপকূলের মানুষজন নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে। আর আমরা বলছি, সাবধানে উপকূলের কাছাকাছি থেকে চলাচল করতে। আর আমাদের তিনটি সমুদ্রবন্দরকে তিন নাম্বার স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছ।



বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’ ধীরে ধীরে উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। দেশের সমুদ্র বন্দরগুলোর জন্য তিন নম্বর সতর্ক সঙ্কেত বহাল রাখা হয়েছে। প্রতি ঘণ্টায় ঘূর্ণিঝড়টি গড়ে ১০ কিলোমিটার করে সামনে অগ্রসর হচ্ছে। উপকূলের কাছাকাছি এসে এটি ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটার করে বা তার বেশি গতিতে অগ্রসর হতে পারে।



ঢাকা আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়, রোববার সন্ধ্যা ৬টায় ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৪১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৩৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৩৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিলো।




নিজ বাড়ি থেকে সাইক্লোন সেন্টার বা আশ্রয় কেন্দ্রে যাবার আগে যা যা জরুরী:

১. সাথে নেবার জন্য একটি জরুরী কিট প্রস্তুত রাখুন। জরুরী কিটে রাখুন পোর্টেবল ব্যাটারি, ছোট রেডিও, টর্চলাইট, অতিরিক্ত ব্যাটারি; ম্যাচ বাক্স/ম্যাচলাইট, মোমবাতি, জলরোধী ব্যাগ, প্রয়োজনীয় হাল্কা বিছানাপত্র, পাস্পিং বালিশ, হালকা কম্বল ইত্যাদি।

২. সাথে নেবার জন্য একটি জরুরী ফার্স্ট এইড বক্স। জরুরী ওষুধ বক্সে রাখনু প্রয়োজনীয় খাবার স্যালাইন, প‌্যারাসিটামল, ফ্লাজিল, এন্টাসিড, গ্লুকোজ, এবং আপনার বর্তমানে প্রয়োজনীয় ওষুধ সামগ্রী।

৩. সাথে নেবার জন্য একটি জরুরী খাবার বক্স । জরুরী খাবার বক্সে রাখুন পানির বোতলে খাবার পানি, শুকনো খাবার বা টিনজাত খাবার, যেমন চিড়া-মুড়ি, গুড়, নাড়ু ইত্যাদি।

৪. যদি সম্ভব হয় সাথে রাখুন তাহলে জ্বালানী ল্যাম্প, পোর্টেবল চুলা, রান্নার হাড়ি, কিছু চাল, ডিম, গোলআলু ইত্যাদি।

৫. যদি আপনার কোনো পোষা প্রাণী থাকে তাহলে সঙ্গে নেওয়া সম্ভব হলে নিতে পারেন নতুবা তাকে ছেড়ে দিন। কোনো অবস্থায় ছেড়ে যাবার আগে এদের বেধে রাখবেন না। বেধে রাখলে এরা নিশ্চিতমৃত্যুর সন্মুখীন হতে পারে।

৬. বসবাসের ঘরে আপনার জরুরী বা মুল্যবান দ্রব্যসামগ্রী অখবা ভারী বস্তুগুল একত্রে বড় একটি শক্তিশালী আলমারিতে রাখতে পারেন। নতুবা যদি সম্ভব হয় পলিথিন মুড়িয়ে ঘরের মেঝেতে মাটিতে গর্ত করে রেখে দিন। ফিরে এসে আবার তুলে নিতে পারবেন।

৭. বাড়ি ছাড়ার আগে ঘরের সব বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির সংযোগ অবশ্যই বিচ্ছিন্ন করুন।

৮. সাইক্লোন সেন্টার বা আশ্রয় কেন্দ্রে যাবার আগে বাড়ির ও আশে পাশের শিশু বৃদ্ধ ও গর্ভবতী মায়ের খোঁজ নিন। সম্ভব হলে তাঁদেরকে আপনার সাথে যাবার জন্যে সাহায্য করুন।

৯. সাইক্লোন সেন্টার বা আশ্রয় কেন্দ্রে মহিলা ও শিশুদের একত্রে থাকার সুযোগ করে দিন।

১০. যতোটা সম্ভব আপনার পরিবারের কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করুন।

১১. নিয়মতি আবহাওয়ার পূর্বাভাষ শুনুন এবং জরুরী উদ্ধারকাজে নিয়োজিত টিমের সঙ্গে বা ভলান্টিয়ারদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখুন।

১২. সাইক্লোন সেন্টার বা আশ্রয় কেন্দ্রে যাবার সুযোগ না পেলে কাছাকাছি বড় রাস্তা, ভেড়ি বাঁধ, এবং উঁচু সড়কে আশ্রয়গ্রহন করুন।



আমাদের আক্কেল!!

আমাদের কখন আক্কেল হবে? যখন আর সময় থাকবে না, নিরাপদ স্থানে চলে যাবার মত সুযোগ থাকবে না, তখন রাতারাতি ১০ নাম্বার মহাবিপদ সংকেত দেখালে কিন্তু ক্ষয়ক্ষতি ও ধ্বংসের পরিমাণ কমানো যাবে না। আমাদের আবহাওয়া অধিদপ্তরে যারা চাকরি করেন, তাদেরকে আরো সুদূরপ্রসারী চিন্তা ও আগাম সঠিক পরামর্শ দেবার জন্যে অনুরোধ রইল। নইলে সময় মত আপনাদের সিগন্যাল যথাযথ না হলে সেই মাশুল সাধারণ জনগণের উপর দিয়ে খুব তীব্র আকারে বয়ে যাবে।

সবাইকে ঘূর্ণিঝড় মহাসেন থেকে নিরাপদ স্থানে নিরাপদে থাকার জন্যে আকুল আবেদন করছি। মঙ্গলবার কিন্তু খুব বেশি দূরে নয়। অতএব সাধু সাবধান। ঘূর্ণিঝড় মহাসেন থেকে সাবধান।



উপকূলীয় অন্যান্য জেলা কি করছে?

নোয়াখালী, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠী, বরিশাল, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষিরা জেলার আগাম প্রস্তুতি সম্পর্কে মিডিয়ায় কোনো খবর নেই। কেবল চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলা বিশেষ টিম গঠন করেছে। ওইসব জেলার ডিসি সাহেবরা কি নাকে তেল দিয়ে ঘুমোচ্ছেন? যাতে মহাসেন আসলে পরে ত্রাণ লুটতে সুবিধা হবে? আপনাদের কাণ্ডজ্ঞান কবে হবে? আপনাদের একটিভিটি দেখতে পাচ্ছি না কেন? ওই সব জেলায় কি সরকারের কোন মন্ত্রী বা স্থানীয় সংসদ সদস্য নেই। থাকলে তাদের এখনো কোনো একটিভিটি নেই কেন?

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার নির্দেশের অপেক্ষায় মহাসেন অপেক্ষা করবে না। কিন্তু আপনার মন্ত্রী সাংসদরা, আপনার ডিসি এসপিরা আপনার মহানির্দেশের অপেক্ষায় আছেন। আপনি মহাসেন নিয়ে জরুরী নির্দেশ পাঠাতে দেরি করবেন না।

ঘূর্ণিঝড় মহাসেন যদি সিডর বা আয়ালাকেও হার মানায়, তখন আমাদের বাঁচার আর পথ থাকবে না। তাই সময় ক্ষেপণ না করে দয়া করে এখনই করনীয় ঠিক করুন। সবাই সতর্ক থাকুন।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই মে, ২০১৩ রাত ৮:৩৫

রাজ হাসান বলেছেন: এই মহাসেন পতিত হওয়া দরকার ঐ সমস্ত অহংকারী,দুর্নীতিবাজ,প্রতারক,জালেম রাজনীতিবিদ/জীবি ও সরকারী বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মুনাফেক,ঠগবাজদের উপর যাদের দ্বারা দেশের সমস্ত নিরপরাধ সাধারণ জনগন নিপীড়িত,নির্যাতিত,শোষিত হয়ে আসছে।

২| ১১ ই মে, ২০১৩ রাত ১০:৩৪

নাইট রিডার বলেছেন: রাজ হাসান বলেছেন: এই মহাসেন পতিত হওয়া দরকার ঐ সমস্ত অহংকারী,দুর্নীতিবাজ,প্রতারক,জালেম রাজনীতিবিদ/জীবি ও সরকারী বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মুনাফেক,ঠগবাজদের উপর যাদের দ্বারা দেশের সমস্ত নিরপরাধ সাধারণ জনগন নিপীড়িত,নির্যাতিত,শোষিত হয়ে আসছে।

এরকম হলে খুব ভাল হত, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ঘূর্নিঝড়, জলোচ্ছ্বাস বা ভুমিকম্প কোনো বাছ বিচার করে আক্রমন করে না। তাই এই দোয়া না করে দোয়া করেন যেন ঘূর্নিঝড়টা বাংলাদেশের আশে পাশেও না আসে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.