নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
রোববার সকাল পৌনে ৭টার দিকে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে চট্টগ্রাম মহানগরীর জিইসি মোড়ে যাওয়ার সময় খুন হন চট্টগ্রামে জঙ্গি দমনে বেশ কয়েকটি অভিযানে নেতৃত্বদানকারী পুলিশ কর্মকর্তা পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু (৩২)। এসময় মিতু'র সঙ্গে ছিল তার প্রথম শ্রেণি পড়ুয়া ছয় বছর বয়সি ছেলে আক্তার মাহমুদ মাহির। মাহির দৌঁড়ে নিজের জীবন বাঁচাতে সক্ষম হন।
অন্যদিকে একই দিনে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় জেলা নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার এক পল্লীতে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মুদি দোকানী সুনীল গোমেজ (৬০)কে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গলা কেটে হত্যার পাঁচ ঘণ্টা পর দায় স্বীকার করেছে কথিত জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট বা আইএস।
প্রথম ঘটনায় খোদ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিবারের উপর হামলা। দ্বিতীয় ঘটনার শিকাড় সংখ্যালঘু খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীর এক নিরীহ মুদি দোকানী। দুটি হত্যার ধরন অনেকটাই সাম্প্রতিক সময়ে লেখক, প্রকাশক, ব্লগার, ইতালীয় নাগরিক, ধর্মযাজক, পুরোহীত, অধ্যাপক, নাট্যকর্মী ও বাংলাদেশে হিজড়া ও সমকামীদের অধিকার বিষয়ক ম্যাগাজিন 'রূপবান' এর সম্পাদক জুলহাস মান্নান হত্যার সঙ্গে মিল রয়েছে। আর প্রায় প্রতিটি ঘটনায় জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেট বা আইএস অথবা আনসারুল বাংলা হত্যার দায় স্বীকার করেছে।
জঙ্গি দমন অভিযানে সাহসিকতার জন্য পুলিশ কর্মকর্তা স্বামী প্রশংসা পেলেও সাম্প্রতিক সময়ে নানাভাবে হুমকি আসায় পরিবার নিয়ে উদ্বেগে ছিলেন এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু। শেষপর্যন্ত মিতু'র আশংকাই সত্য হলো। এতদিন অন্য ঘটনাগুলোতে ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাতের বর্ম হিসাবে হত্যার কারণ দেখানো হলেও মিতু হত্যার পেছনে পুলিশ কর্মকর্তা স্বামী'র জঙ্গী দমনে দুঃসাহসিক নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে অত্যন্ত পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এবারও কী মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই হত্যাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলবেন? এবার তো স্বয়ং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিবারেই আঘাত। অথচ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের দিকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, সবগুলো হত্যাকাণ্ডই অত্যন্ত সুপরিকল্পিত এবং হত্যাকাণ্ডে প্রায় একই ধরনের অস্ত্রের ব্যবহার করা হয়েছে। আজ পর্যন্ত কোনো একটি হত্যাকাণ্ডের বিচার বা পুরোপুরি তদন্ত হয়নি।
পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার ও মাহমুদা আক্তার মিতু'র দুই সন্তান। ৬ বছরের ছেলে আক্তার মাহমুদ মাহির ও সাড়ে চার বছরের কন্যা তাবাস্মুম তাজনীম তাপু। এই বয়সে মা হারানোর বেদনা যে কত দুঃসহ তা ভাষায় বোঝানো সম্ভব নয়। ছোট্ট মাহিরের সামনে দুর্বৃত্তরা যেভাবে মাকে হত্যা করেছে, সেই ট্রমা মাহির সারাজীবন বয়ে বেড়াবে। তবে এবার হয়তো আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর জঙ্গীদের বিরুদ্ধে জোড়ালো অবস্থানে যাবার মোক্ষম সময়।
এতদিন লেখক, প্রকাশক, ব্লগার, বিদেশী নাগরিক, ধর্মযাজক, পুরোহীত, অধ্যাপক, নাট্যকর্মী, সমাজকর্মী হত্যার ঘটনায় পুলিশের এক ধরনের গড় বক্তব্য আমারা দেখেছি। কোনো হত্যার ঘটনায় পুলিশ কোনো কিনারা করতে পারেনি। মিতু হত্যার পর পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে প্রথম ছবিতে অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তাগণ যেভাবে আগলে ধরেছেন, এই ছবিটি হয়তো জঙ্গী দমনে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে নতুন করে সাহস যোগাবে। এই ছবিটির ভেতরে আমি একটি নতুন প্রতিশ্রুতি বা আশার আলো দেখতে পাই।
সাম্প্রতিক সময়ে লেখক-প্রকাশক হত্যা থেকে শুরু করে জঙ্গীদের হাতে প্রতিটি হত্যাকাণ্ডকেই সমান দৃষ্টিতে দেখতে হবে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী'র এতদিন দায় এড়ানো বা অসহায়ত্বকে যদি আরো দীর্ঘতর হবার সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে সারা দেশে এধরনের হত্যাকাণ্ড আরো বাড়বে। দেশের মানুষ যে নিরাপত্তাহীনতার ভেতরে আছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সেটি স্বীকার করেই জঙ্গী দমনে আরো তৎপর হবে বলেই আমরা প্রত্যাশা করি। এই ঘটনায় যত সময়ক্ষেপন করা হবে ততই জঙ্গীরা নতুন নতুন হত্যাকে বাস্তবায়ন করার সুযোগ পাবে। আর তা শক্তহাতে মোকাবেলা করার দায় স্বয়ং রাষ্ট্রের ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর। আগের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার হলে এভাবে ধারাবাহিক খুনের ঘটনা ঘটতো না। তাই আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এই দায়কে মোটেও এড়াতে পারে না।
.....................................
৬ জুন ২০১৬
২| ০৬ ই জুন, ২০১৬ সকাল ১০:৫২
কাগজের নাও বলেছেন: মর্মান্তিক! জঙ্গী সংগঠন দ্বারা এ ঘটনাটি ঘটার সম্ভাবনা যেমন উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছেনা, ঠিক তেমনি পারিবারিক দ্বন্দ্ব/ কলহ/ আর্থিক/ পরকীয়ার বিষয়গুলোও তদন্তে ঘেটে দেখা প্রয়োজন। ঘটনার তদন্ত শুধুমাত্র 'জঙ্গী' ট্যাগ না করে ভিকটিমের স্বামী ও পরিবারবর্গকেও তদন্তের স্বার্থে ভালোভাবে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন আছে।
৩| ০৭ ই জুন, ২০১৬ রাত ৮:৪৬
বিজন রয় বলেছেন: আজকে আরেকজন............!!!!!
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই জুন, ২০১৬ ভোর ৬:৩৪
হুমম্ বলেছেন: দুঃখজনক