নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের জাতীয় পতাকার ইতিহাস বিভ্রান্তি দূর করার আহবান!!

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:১২

স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকার পরিকল্পনাকারীদের অনেকে এখনো জীবিত আছেন। তাঁদের প্রত্যেকের ইন্টারভিউ নিলেই ইতিহাসের সেই স্বর্ণালী অধ্যায়ের পুরো ইতিহাস এখনো উদ্ধার করা সম্ভব। ৭ জুন ১৯৭০ থেকে ১২ জানুয়ারি ১৯৭২ পর্যন্ত, এমনকি গোটা মুক্তিযুদ্ধের সময়ে যে পতাকা ব্যবহার করা হয়েছিল, সেই পতাকার ডিজাইন করেছিলেন শিবনারায়ণ দাশ। ১৯৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় ছাত্রনেতা আসম আবদুর রব প্রথম যে পতাকা উত্তোলোন করেছিলেন, সেটিও ছিল শিবনারায়ণ দাশের ডিজাইন করা পতাকা। পরবর্তী সময়ে ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ 'পাকিস্তান দিবস'-এ সারা বাংলায় পাকিস্তানের পতাকার পরিবর্তে শিবনারায়ণ দাশের ডিজাইন করা পতাকা উত্তেলোন করা হয়েছিল। পুরো মুক্তিযুদ্ধের সময়ে যে পতাকা ব্যবহার করা হয়েছে, সেটি ছিল শিবনারায়ণ দাশের ডিজাইন করা পতাকা।

১৯৭২ সালের ১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সরকার শিবনারায়ণ দাশের ডিজাইনকৃত পতাকার মাঝে মানচিত্রটি বাদ দিয়ে পতাকার মাপ, রঙ ও তার ব্যাখ্যা সম্বলিত একটি প্রতিবেদন দিতে বলে পটূয়া কামরুল হাসানকে। ১৭ জানুয়ারি ১৯৭২ তারিখে শিবনারায়ণ দাশের ডিজাইন করা জাতীয় পতাকাটি কামরুল হাসান দ্বারা পরিমার্জিত রূপে সরকারের কাছে জমা হয়। এটিই বর্তমানে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। অর্থ্যাৎ ১৯৭২ সালে তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে শিবনারায়ণ দাশ কর্তৃক ডিজাইনকৃত জাতীয় পতাকার বর্তমান রূপ দেন পটুয়া কামরুল হাসান।

ইতিহাসে আমাদের জাতীয় পতাকার এই গুরুত্বপূর্ণ অংশটি এখনো চূড়ান্তভাবে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে সংরক্ষণ করা হয়নি। বইপত্রে কেবল জাতীয় পতাকার ডিজাইনার হিসেবে পটুয়া কামরুল হাসানের নাম দেওয়া হয়েছে। অথচ জাতীয় পতাকার ডিজাইন ও পরিকল্পনার সঙ্গে অনেকগুলো নাম জড়িত। ইতিহাসের সোনালী অধ্যায়ের সেই অংশটির বিস্তারিত আসা উচিত। তাহলে মানুষ আসল ইতিহাস জানার সুযোগ পাবে।

জাতীয় পতাকার পরিকল্পনার সঙ্গে যাঁরা জড়িত ছিলেন তাঁরা হলেন ছাত্রলীগ নেতা আসম আবদুর রব, শাহজাহান সিরাজ, কাজী আরেফ আহমদ, মনিরুল ইসলাম ওরফে মার্শাল মনি, স্বপন কুমার চৌধুরী, নজরুল ইসলাম (জগন্নাথ কলেজ), শিবনারায়ণ দাশ (কুমিল্লা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতা), হাসানুল হক ইনু ও ইউসুফ সালাউদ্দিন আহমেদ (প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়)।

১৯৭০ সালের ৬ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের (তৎকালীন ইকবাল হল) ১১৬ নং কক্ষে (আসম আবদুর রবের কক্ষ) জাতীয় পতাকা নিয়ে সেই সভা হয়। ওই সভায় কাজী আরেফের প্রাথমিক প্রস্তাবনার উপর ভিত্তি করে সবার আলোচনার শেষে সবুজ জমিনের উপর লাল সূর্যের মাঝে হলুদ রঙের বাংলার মানচিত্র খচিত পতাকা তৈরি করার সিদ্ধান্ত হয়।

এরপর প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলের ৪০১ নং কক্ষে (উত্তর) রাত এগারটার পর শিবনারায়ণ দাশ পুরো পতাকা ডিজাইন সম্পন্ন করেন। তার আগে ইউসুফ সালাউদ্দিন আহমেদ ও হাসানুল হক ইনু প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কায়েদে আজম হল (বর্তমানে তিতুমীর হল)-এর ৩১২ নং কক্ষের এনামুল হকের কাছ থেকে মানচিত্রের বই নিয়ে ট্রেসিং পেপারে আঁকেন পূর্ব পাকিস্তানের মানচিত্র। ছাত্রনেতা শিবনারায়ণ দাশ পরিশেষে তাঁর নিপুন হাতে মানচিত্রটি লাল বৃত্তের মাঝে আঁকেন।

(প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, এখানে আমার কাছে বিভ্রান্ত যেটি লেগেছে সেটি হলো শিবনারায়ণ দাশ ডিজাইন করলেন কোন হলে বসে? বুয়েটের শেরে বাংলা হলে না তিতুমীর হলে? আরেকটি বিভ্রান্ত হলো, অনেকে বলেন সেই রাতে (৬ জুন ১৯৭০) সভা বসেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের (তৎকালীন ইকবাল হল) ১১৮ নং কক্ষে ( শাহজাহান সিরাজের কক্ষ)! অনেকে বলেন ১১৬ নং কক্ষে (আসম আবদুর রবের কক্ষে)। আসলে কোন কক্ষে? ১১৬ না ১১৮? আমার ধারণা আসম আবদুর রবের কক্ষে, আর সেটি ১১৬।)

সেই রাতেই নিউমার্কেট এলাকার বলাকা বিল্ডিংয়ের ৩ তলার ছাত্রলীগ অফিসের পাশে 'নিউ পাক ফ্যাশন টেইলার্স'-এর টেইলার্স মাস্টার খালেক মোহাম্মদী পতাকার নকশা বুঝে কাজ শুরু করেন। ভোরের মধ্যেই তাঁরা কয়েকটি পতাকা তৈরি করে দেন। কামরুল আলম খান (খসরু) গিয়েছিলেন টেইলার্স খালেক মোহাম্মদীর কাছে। প্রথম জাতীয় পতাকার জন্য কাপড় দিয়েছিলেন কে?

বর্তমান মন্ত্রীসভায় হাসানুল হক ইনু আছেন। শিবনারায়ণ দাস এখনো জীবিত। আসম আবদুর রব এখনো জীবিত। কাজী আরেফ আহমদ, শাহজাহান সিরাজ ও স্বপন কুমার চৌধুরী মারা গেছেন। অন্যদের খবর আমি জানি না। যাঁরা এখনো জীবিত আছেন, তাঁদের কাছ থেকে জাতীয় পতাকার সেই সোনালী অধ্যায়ের ইতিহাস উদ্ধার করা কোনো কঠিন কাজ নয়।

আমাদের উচিত এঁদের প্রত্যেকের সাথে কথা বলে জাতীয় পতাকার সেই ইতিহাস খুঁড়ে আনা। আশা করি, একটু উদ্যোগ নিলেই আমাদের জাতীয় পতাকার সেই ইতিহাস আমরা এখনো সঠিকভাবে উদ্ধার করতে পারবো। এই বিষয়ে আপনাদের আর কী কী জানা আছে তথ্য দিয়ে সহায়তা করলে খুব উপকার হয়।

বিনীত নিবেদক
রেজা ঘটক
২১ ডিসেম্বর ২০১৬

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:২৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


"জাতীয় পতাকার পরিকল্পনার সঙ্গে যাঁরা জড়িত ছিলেন তাঁরা হলেন ছাত্রলীগ নেতা আসম আবদুর রব, শাহজাহান সিরাজ, কাজী আরেফ আহমদ, মনিরুল ইসলাম ওরফে মার্শাল মনি, স্বপন কুমার চৌধুরী, নজরুল ইসলাম (জগন্নাথ কলেজ), শিবনারায়ণ দাশ (কুমিল্লা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতা), হাসানুল হক ইনু ও ইউসুফ সালাউদ্দিন আহমেদ (প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়)। "

-প্রথমত: ১৯৭০ সালে পতাকার কোন দরকার ছিলো না; দ্বিতীয়ত: পরে এদের সবার ভুমিকা ছিল খারাপ; যা আছে তা ভালো আছে। চোর-ডাকাতদের নিয়ে মাথা ঘামাবার সময় নেই।

২| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:১২

মোঃ সায়হান আলী বলেছেন: বর্তমান মন্ত্রীসভায় হাসানুল হক ইনু আছেন। শিবনারায়ণ দাস এখনো জীবিত। আসম আবদুর রব এখনো জীবিত। কাজী আরেফ আহমদ, শাহজাহান সিরাজ ও স্বপন কুমার চৌধুরী মারা গেছেন। যাঁরা এখনো জীবিত আছেন, তাঁদের কাছ থেকে জাতীয় পতাকার সেই সোনালী অধ্যায়ের ইতিহাস উদ্ধার করা কোনো কঠিন কাজ নয়। আমাদের উচিত এঁদের প্রত্যেকের সাথে কথা বলে জাতীয় পতাকার সেই ইতিহাস খুঁড়ে আনা। আশা করি, একটু উদ্যোগ নিলেই আমাদের জাতীয় পতাকার সেই ইতিহাস আমরা সঠিকভাবে উদ্ধার করতে পারবো।

৩| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৬

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন: ব্লগার এএন অনুর একটি পোস্ট পেয়েছিলাম এ নিয়ে কয়েকদিন আগে।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসই বিকৃত হয়ে যাচ্ছে দিন দিন। সেখানে মানচিত্র ঠিক থাকে কিভাবে।
তারপরেও আশাকরি , টিকে থাকুক বাংলার ইতিহাস টিকে থাকুক বাঙ্গালী!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.