নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

চাটার দল থেকে সাবধান!!!

১৫ ই আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:৪০

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারের হত্যা করার পর গোটা রাষ্ট্রের সকল পর্যায় থেকে এক আশ্চার্য নিরবতা পালন করা হয়েছিল। এই নিরবতার সোজাসাফটা জবাব হলো ওই খুনের বিরুদ্ধে সবাই কোনো প্রতিবাদ না করে সেদিন নিরবে সমর্থন করেছিল।

দেশের তিন বাহিনী সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর তিনপ্রধান ও পুলিশপ্রধান সেদিন (১৫ আগস্ট ১৯৭৫) সকালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার কয়েক ঘণ্টা পরেই খন্দকার মোশতাক সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছিলেন। তাদের সেদিনের সেই বক্তব্যগুলো ছিল এরকম-

১. সেনাপ্রধান জেনারেল কে এম শফিউল্লাহ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার কয়েক ঘণ্টা পরেই খন্দকার মোশতাক সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছিলেন। সেদিন (১৫ আগস্ট ১৯৭৫) সকালে বেতার ভাষণে জেনারেল শফিউল্লাহ বলেছিলেন, '' দেশের নতুন সরকারের প্রতি আমরা আমাদের অবিচল আস্থা ও অানুগত্য জ্ঞাপন করছি। আমাদের সকল পর্যায়ের অফিসার এবং জোয়ানদের মহামান্য রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমেদের নেতৃত্বে শৃংখলাভাবে নিজ নিজ কমান্ডারদের নির্দেশ অনুযায়ী স্ব স্ব দায়িত্বে নিযুক্ত থাকার জন্য নির্দেশ দিচ্ছি।''

২. বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রধান কমোডোর মোশারফ হোসেন খান বঙ্গবন্ধুকে হত্যার কয়েক ঘণ্টা পরেই খন্দকার মোশতাক সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছিলেন। সেদিন (১৫ আগস্ট ১৯৭৫) সকালে বেতার ভাষণে কমোডোর মোশারফ বলেছিলেন, ''দেশের নতুন সরকারের প্রতি আমরা আমাদের অবিচল আস্থা ও আনুগত্য জ্ঞাপন করছি। আমাদের নৌবাহিনীর অফিসার, চিফ পেটি অফিসার, পেটি অফিসার ও নাবিকদের মহামান্য রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমেদের নেতৃত্বে সুশৃংখলাভাবে নিজ নিজ কমান্ডারদের নির্দেশ অনুযায়ী স্ব স্ব দায়িত্বে নিযুক্ত থাকার জন্য নির্দেশ দিচ্ছি।''

৩. বাংলাদেশ বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল এ কে খন্দকার বঙ্গবন্ধুকে হত্যার কয়েক ঘণ্টা পরেই খন্দকার মোশতাক সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছিলেন। সেদিন (১৫ আগস্ট ১৯৭৫) সকালে বেতার ভাষণে এয়ার ভাইস মার্শাল এ কে খন্দকার বলেছিলেন, ''দেশের নতুন সরকারের প্রতি আমরা আমাদের অবিচল আস্থা ও আনুগত্য জ্ঞাপন করছি। আমাদের বিমানবাহিনীর সকল পর্যায়ের অফিসার এবং বিমান সেনাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমেদের নেতৃত্বে সুশৃংখলাভাবে নিজ নিজ কমান্ডারদের নির্দেশ অনুযায়ী স্ব স্ব দায়িত্বে নিযুক্ত থাকার জন্য নির্দেশ দিচ্ছি।''

৪. ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ পুলিশপ্রধান ছিলেন আইজিপি এএইচএম নুরুল ইসলাম। পুলিশপ্রধান আইজিপি নুরুল ইসলাম বঙ্গবন্ধুকে হত্যার কয়েক ঘণ্টা পরেই খন্দকার মোশতাক সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছিলেন। সেদিন (১৫ আগস্ট ১৯৭৫) সকালে বেতার ভাষণে পুলিশপ্রধান আইজিপি নুরুল ইসলাম বলেছিলেন, ''দেশের নতুন সরকারের প্রতি আমরা আমাদের অবিচল আস্থা ও আনুগত্য জ্ঞাপন করছি। আমাদের পুলিশ বাহিনীর সকল সদস্যকে মহামান্য রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমেদের নেতৃত্বে সুশৃংখলাভাবে নিজ নিজ অফিসারদের নির্দেশ অনুযায়ী স্ব স্ব দায়িত্বে নিযুক্ত থাকার জন্য নির্দেশ দিচ্ছি।''

৫. দেশের রাষ্ট্রপতিকে সপরিবারে হত্যা করার পর সেদিন (১৫ আগস্ট ১৯৭৫) সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী ও পুলিশ থেকে সেদিন কোনো তদন্তকমিটি গঠন করা হয়নি। কিন্তু সকল বাহিনী সেদিন খুনী খন্দকার মোশতাক সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছিল।

৬. বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর দেশের বিচারবিভাগ থেকে কোনো বিচারপতি সেদিন পদত্যাগ করেননি। এমনকি নিজউদ্যোগে কোনো বিচারপতি সেদিন বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার জন্য কোনো তদন্তকমিটি গঠন করেননি। ১৯৭৫ সালে দেশের প্রধানবিচারপতি ছিলেন আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম। যিনি সেদিন পদত্যাগ না করে বরং খন্দকার মোশতাককে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ পাঠ করিয়েছিলেন।

৭. বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বা শিক্ষক সেদিন প্রতিবাদস্বরূপ পদত্যাগ করেননি। এমনকি বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার পর কেউ কোথাও কোনো কলাম লেখেননি। সেদিন সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুকে সংবর্ধনা দেওয়ার কথা ছিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. আব্দুল মতিন চৌধুরী কোনো দুঃখপ্রকাশ পর্যন্ত করেননি। অথচ কয়েক ঘণ্টা পরেই রাষ্ট্রপতিকে তার সংবর্ধণা দেবার কথা ছিল।

৮. বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর দেশের সচিবালয়ের কোনো সচিব বা অধঃস্তনের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রতিবাদস্বরূপ পদত্যাগ করেননি। অথচ এখন দেশের প্রায় সকল অফিসে বঙ্গবন্ধু'র নামে ব্যাপক শোডাউন করে এসব কুলাঙ্গাররা।

৯. বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর দেশের বাইরে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনগুলোতে কেউ পদত্যাগ করেননি। আর এখন সেসব মিশনে বঙ্গবন্ধু'র নামে কত টাইপের দরুদ পড়ার আয়োজন!

১০. বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর দেশের কোনো টেলিভিশন বা বেতারের কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী পদত্যাগ করেননি। আর এখন সেসব চাটার দল নানান কিসিমের দরদ নিয়ে বঙ্গবন্ধু'র নামে ওয়াজ করে।

এখন ১৫ আগস্ট আসলেই সারা দেশে এসব চামচাদের দাপট ও বঙ্গবন্ধু'র নামে জয়গানের যে রেওয়াজ চালু হয়েছে, এটাও স্রেফ লোক দেখানো এবং ধান্দাবাজির কৌশল। এরা কেউ সত্যিকারভাবে বঙ্গবন্ধু'র ভক্ত নয়। নিজেদের স্বার্থে এরা লোক দেখানো এসব আচার-আচরণ করে যাচ্ছে।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর দেশের গোটা বাংলাদেশের কোথাও একটা মিছিল বের হয়নি! ভাবা যায় কতোটা অকৃতজ্ঞ জাতি হলে তাদের শ্রেষ্ঠ নেতাকে সপরিবারে হত্যা করার পরেও সেই অকৃজ্ঞ জাতি এমন নিরব থাকতে পারে। আজ যারা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অধিকমাত্রায় নাচানাচি করছেন, এরা সবাই ধান্দাবাজ। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় এরা সেদিন কেউ প্রতিবাদ করেনি। অতএব এসব চাটার দল থেকে সাধু সাবধান!!
-----------------------
১৫ আগস্ট ২০১৭
ঢাকা



মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৯

রায়হানুল এফ রাজ বলেছেন: পা চাটা কুত্তার দল।

২| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনি এখন চাটাদের দলে, নাকি অচাটাদের দলে?

৩| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৪

লেখা পাগলা বলেছেন: আমরাইতো সে অকৃতজ্ঞ পাচাটা বাঙালজাত =p~

৪| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৬

চিটাগং এক্সপ্রেস বলেছেন: বঙ্গবন্ধু হত্যার পর কোথাও যে একদম প্রতিবাদ হয় নি, সেটা মিথ্যা । প্রতিবাদ সর্বব্যাপী হয় নি, সেটা সত্য।

৫| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৯

মোঃ মঈনুদ্দিন বলেছেন: আপনি যে তথ্য দিয়েছেন এসব তথ্যের বিপরীত স্রোতের লোকের সংখ্যাই বেশী অর্থাৎ চাটারের। সুতরাং এসব পোস্ট থেকে আরাম পাবে এ আশা বৃথা। বঙ্গবন্ধু হত্যার ৪২ বছর পরও মূল হোতাদের খুঁজে বের করে আনা যায়নি। দাবার ঘুটিগুলো কয়েকটা কেবল বেরিয়েছে কিন্তু মোড়লগুলো আঁধারেই রয়েছে। তাই, সাধু সাবধান।

৬| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১০:৪৪

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো লিখেছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.