নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটিশদের কাছ থেকে ভারতের স্বাধীনতার প্রশ্নে ব্রিটিশরা ভারতীয় উপমহাদেশে এক স্থায়ী কলহ ও অশান্তির বীজ বপন করে গেছে। সেই পরিকল্পনার সুদূরপ্রসারী দুর্ভোগের ফলাফল এখনো এই উপমহাদেশের মানুষকে ভোগ করতে হচ্ছে। 'অহিংসা পরম ধর্ম' এই ব্রত নিয়ে মহাত্মা গান্ধী ব্রিটিশদের সেই কূটনৈতিক কৌশলকে অনেকটা বসে আনতে পেরেছিলেন বলেই তিনি ভারত জাতির পিতা, বাপুজি।
ইতিহাসের সুদীর্ঘ কাঠগড়ায় বরং স্বয়ং গান্ধীজীসহ জওহরলাল নেহেরু, মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীরা ব্রিটিশদের সেই ষড়যন্ত্রের অংশিদার হিসেবেই একদিন প্রমাণিত হবে। আমি মনে করি, সেই তুলনায় বরং সুভাষ চন্দ্র বসু হলেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রধান প্রবক্তা। স্বয়ং গান্ধীজী সেখানে ব্রিটিশদের কূটনৈতিক স্বার্থের কাছে বলির পাঁঠা। সেটা অবশ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি আলোচনা হতে পারে।
আজ বরং কথা বলি গান্ধীজীকে নিয়ে। ইউনিভার্সেল থিয়েটার আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী ইতিহাসভিত্তিক নাট্যোৎসব- 'ইতিহাসের মহানায়কেরা'-তে আজ ছিল ইউনিভার্সেল থিয়েটারের নাটক 'মহাত্মা'। তাই আজ কেবল এই নাটক কেন্ত্রীক কয়েকটি কথা বলব। আজকের নাটকে আমি হলভর্তি দর্শক না দেখে বড়ই হতাশ হয়েছি।
আয়োজকরা এই জায়গাটিতে শতভাগ ফেল করেছেন। বিশেষ করে বাংলাদেশের বর্তমান সামাজিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই উৎসবের নাটকগুলো অত্যন্ত সমসাময়িক ঘটনার সঙ্গে রিলিভেন্ট। সেখানে হলে দর্শক নাই। এটা খুব হতাশার। এর বাইরে ইউনিভার্সেল থিয়েটারের আজকের নাটক খুব ভালো লেগেছে। বিশেষ করে গান্ধীজী'র চরিত্রে আবুল কালাম আজাদ ও গোলাম সরোয়ার হোসাইনী'র চরিত্রে আবুল হোসেন খোকন দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন।
খেলারাম পাণ্ডে ও এডওয়ার্ড প্রিন্স চরিত্রে মাজহারুল হক পিন্টু ও শওকত আলী মনসুর ভালো অভিনয় করেছেন। সেই তুলনায় সুকুমার ও সাধনা চরিত্রে দর্শকের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। কিন্তু সবমিলিয়ে সাদামাটা পরিছন্ন পারফর্মিং। বিশেষ করে গান্ধীজী'র মঞ্চে আগমন ও বিদায় দৃশ্য মনে রাখার মত। বিশেষ করে এই দৃশ্যে লাইটের ব্যবহার ভালো লেগেছে। তবে মঞ্চে গান্ধীজীকে একা একা আরো কয়েকটি সিকোয়েন্সে দেখার আমার ব্যক্তিগত প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। গোটা ভারতের সর্বত্র এমন মানুষসৃষ্ট দুর্যোগের সময় একা গান্ধীজী কেমন আচরণ করতে পারেন, দর্শকের সেই চাহিদা আজকের নাটকে অনুপস্থিত ছিল। নির্দেশক এই জায়গাটিতে আরো ভাবতে পারেন।
বাদল শহীদের সেট ভালো লেগেছে। কিন্তু আবহ সংগীতের একটি জায়গায় গান্ধীজী যখন কথা বলছেন তখন ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড এত লাউড ছিল যে, গান্ধীজীর ব্ক্তব্যকে ছাড়িয়ে দর্শককে গান শোনানোর প্রচেষ্টা ভালো লাগেনি। কারন ওই মুহূর্তে দর্শকের আকর্ষণের চূড়ান্তে স্বয়ং গান্ধীজী। তিনি কী বলছেন তা শুনতে চায় দর্শক। টোটাল সাউন্ড প্রজেকশানে আরো উন্নতি করার সুযোগ আছে।
ইউনিভার্সেল থিয়েটারের প্রযোজনা 'মহাত্মা'র রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন মাজহারুল হক পিন্টু। সেট ও মিউজিক নির্দেশনা দিয়েছেন বাদল শহীদ। শিল্প নির্দেশনা দিয়েছেন আবুল হোসেন খোকন। কস্টিউম পরিকল্পনা করেছেন বুনো, সুতোয় বোনা কাব্য। মেকআপে ছিলেন শুভাশীষ দত্ত তন্ময়। আলোক পরিকল্পনায় শামীমুর রহমান। মঞ্চ ব্যবস্থাপনায় দীন ইসলাম শ্যামল। নাটকের সমন্বয়কারী ছিলেন আজিজুল পারভেজ।
মহাত্মা নাটকে রূপক আকারে যে মূলবার্তাটি দেওয়া হয়েছে, তা সমকালীন বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে এখনো খুবই প্রয়োজনীয়। বিশেষ করে এখনো গান্ধীজীর অহিংসা পরম ধর্মের প্রয়োজনীয়তা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত শীক্ষণীয় একটি পূর্বশর্ত হওয়ার মত বিষয়। গান্ধীজী তাঁর এই ঐতিহাসিক বাণী কেবল ভারতবাসীর জন্য নয়, গোটা মানবজাতির জন্যই চরম সত্যরূপে প্রচার করেছেন, যার লক্ষ্য পূরণের জন্য এখনো গোটা মানবসমাজ অনেক পিছিয়ে রয়েছে। হিংসাই মানব জাতির ধ্বংসের প্রধান কারণ। তাই অহিংসা হতে পারে এই ধ্বংসরোধের প্রধান হাতিয়ার। জয়তু ইউনিভার্সেল থিয়েটার। জয়তু ইতিহাসের মহানায়কেরা নাট্যোৎসব।
----------------------------------
৮ নভেম্বর ২০১৭
২| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:২০
অনন্য দায়িত্বশীল আমি বলেছেন: সুন্দর হয়েছে।
৩| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:১০
রাজীব নুর বলেছেন: হরিবল কবে দেখতে পাবো?
৪| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৯
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: স্টিকি পোস্টের ৯৭ নম্বর মন্তব্যের প্রতি আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
©somewhere in net ltd.
১| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১:০৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
"দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটিশদের কাছ থেকে ভারতের স্বাধীনতার প্রশ্নে ব্রিটিশরা ভারতীয় উপমহাদেশে এক স্থায়ী কলহ ও অশান্তির বীজ বপন করে গেছে। "
-কিছু একটা বলতে হয় বলেন আর কি! বৃটিশ এই খারাপ করেছে, পাকিস্তান ঐ খারাপ করছে, ভারত ওটা করতে দিচ্ছে না; এগুলো ম্যাঁও ম্যাঁ প্যাঁও প্যাঁও