নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
অমর একুশে বইমেলার প্রথম সপ্তাহে বাংলা একাডেমি একটা নামকা ওয়াস্তে আন্তর্জাতিক লেখক সম্মেলন করে। সেই লেখক সম্মেলনে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের কবি-লেখকদের আমন্ত্রণ জানানো হয় না। বাংলা একাডেমিতে একটা পুরনো তালিকা আছে। কিছু বিশিষ্ট ব্যতিত সেই তালিকায় সঙ্গীত শিল্পী, নৃত্যশিল্পী, মুখাভিনয় শিল্পীরাও ওই লেখক সম্মেলনে আমন্ত্রণ পান।
কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের কবি-লেখকদের সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয় না। তবে কিছু চাটুকার এরকম অনুষ্ঠানে সবসময় আমন্ত্রিত হয়। এটাই বাংলাদেশের এখন একটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। এ নিয়ে কথা বেশি বলব না। বিদেশি অনেক কবি লেখকদের বাংলা একাডেমি খরচ দিয়ে আনেন। তাঁদের সাথে বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের কবি-লেখকদের ইনট্রোডাকশান করানো থেকে শুরু করে, ইন্টার-অ্যাক্টিভ কোনো অ্যাকশন প্লান আজ পর্যন্ত আমার নজরে পড়েনি। এমনকি বাংলাদেশের প্রকাশক সমাজকে সেই লেখক সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয় না।
বাংলা একাডেমি'র প্রতি অনুরোধ, আগামী অমর একুশে বইমেলার সময় যদি এমন আন্তর্জাতিক লেখক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়, দয়া করে দেশের নতুন প্রজন্মের কবি-লেখকদের সেই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হোক। পত্রপত্রিকায়-মিডিয়ায় বলে বেড়াবেন আন্তর্জাতিক লেখক সম্মেলন, আর দেশের নতুন প্রজন্মের লেখকরা তা টের পাবে না, এটা কী ধরনের তামাশা?
কোনো একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্মের করা লেখক সম্মেলনে গাল ফুলিয়ে বড় বড় অনেক কথাই বলা সম্ভব। কিন্তু একাডেমির উচিত সেই কাজটি এবার নিজেদের দায়িত্ব নিয়েই করে দেখানো। অমর একুশে বইমেলার আয়োজন করার দায়িত্ব জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের নেতৃত্বে প্রকাশকদের। একাডেমি সেটা কেবল সমন্বয় করতে পারে। কিন্তু সেই দায়িত্বটি বাংলা একাডেমি নিজের ঘাড়ে তুলে নিয়ে খবরদারি করার পাশাপাশি, একাডেমির অন্যান্য সকল কাজ দায়সারাভাবে করে, সারা বছর নাকে তেল দিয়ে ঘুমিয়ে কাটাবে, এটা কোনোভাবেই মানা যায় না।
আমরা চাই, বাংলা একাডেমি একটি আন্তর্জাতিক লেখক সম্মেলন আয়োজন করুক। সেখানে দেশের তরুণ প্রজন্মের কবি-লেখক-প্রকাশকদের একটা মিলনমেলা হোক। আর সেজন্য একাডেমিকে অবশ্যই তরুণদের গুরুত্ব দিয়েই আমন্ত্রণ জানাতে হবে। মানদাতা-আমলের তালিকা দিয়ে আর কত দিন চলবে বাংলা একাডেমি? বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার, বঙ্গভবন, গণভবনসহ সরকারি অনেক অফিসে এমন একটা গোজামিলের তালিকা প্রায়ই দেখা যায়। সেই তালিকা নিয়ে বছর যায়, সরকার বদল হয়, কিন্তু সেই তালিকা আর নবায়ন হয় না। এভাবে একটা জাতির সৃজনশীল অগ্রসর কল্পনা করা যায় না।
আমি আশা করব, বাংলা একাডেমি'র শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। আর নতুন প্রজন্মকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে একাডেমি আগামীতে সকল উদ্যোগ গ্রহণ করবে। বাংলা একাডেমি থেকে তরুণ কবি-লেখকদের বই প্রকাশ হবে না কেন? একাডেমিকে তরুণদের বই প্রকাশে বাধ্য করতে প্রয়োজনে আগামীতে আমরা আন্দোলনের ডাক দেব।
বাংলা একাডেমি থেকে কেন প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ লেখকদের উপন্যাস প্রকাশ পাবে না? তরুণ কবি'র কবিতার বই প্রকাশ পাবে না? তরুণ গবেষকের প্রবন্ধের বই প্রকাশ পাবে না? সেজন্য একাডেমিকে একটি নিয়মের মধ্যে অবশ্যই আসতে হবে। প্রতি বছর জুলাই/আগস্টের মধ্যে তরুণ প্রজন্মের কবি-লেখক-গবেষকদের থেকে পাণ্ডুলিপি আহবান করতে হবে একাডেমিকে। সেখান থেকে বাছাই করে অমর একুশে বইমেলায় তরুণদের বই প্রকাশের উদ্যোগ বাংলা একাডেমিকেই নিতে হবে।
সম্ভাবনাময় বইকে প্রয়োজনে ইংরেজিতে অনুবাদ করে প্রকাশের পাশাপাশি, একাডেমিকেই বিদেশে তা প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। শুধুমাত্র কিছু পুরস্কার প্রবর্তন করে, তা বিতরণ করাই বাংলা একাডেমির কাজ নয়। এখন থেকে তরুণ প্রজন্মের কাছে একাডেমিকে জবাবদিহি করতে হবে। জবাবদিহি ছাড়া একটা একাডেমি এভাবে বছরের পর বছর অচল পয়সার মত চলতে পারে না।
বাংলা একাডেমিকে এই কাজগুলো করতে বাধ্য করার জন্য আমি তরুণ প্রজন্মের কবি-লেখক-প্রকাশকদের আহবান জানাই। আমারা যদি না জাগি ভাই কেমনে কী যে হবে!
বিনীত নিবেদক
রেজা ঘটক
কথাসাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা
৩০ নভেম্বর ২০১৭
ঢাকা
২| ২৩ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১:০৬
স্ব বর্ন বলেছেন: সুন্দর আলোচনা ভাল লেগেছে।তবে হ্যাঁ তরুনদের সুযোগ করে দিলে ভাল কিছু অবশ্যই আশা করা যায়।
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:৫২
সকাল রয় বলেছেন: সব তো অগ্রজ কবি/সাহিত্যিক/ প্রকাশক/ সাংবাদিকরাই দখল করে আছে নতুনদের বাংলা একাডেমী খুব একটা পাত্তা দেয় না। তরুণদের জেগে উঠা জরুরী কিন্তু কোন তরুণ জেগে উঠবে...