নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রকৃত সত্য-তুমি একা।কেউ তোমার নয়,তুমিও কারও না।সব কিছুই আপেক্ষিক!!\nআমি আছি মিঠু মামা...........০৮০৮০৫

আর এইচ রিমন

আমি একজন অতি ক্ষুদ্র মানুষ । নিজকে লুকাতে পছন্দ করি। আমাকে খুজে নাও। সবার কাছ থেকে সমালোচনা আশা করছি।। আমি ধৈর্যশীলদের কাতারে থাকতে চাই। এটাই আমার ব্রত।

আর এইচ রিমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

"এ্যারেন্জ লাভ ম্যারেজ(পর্ব-২)"

১১ ই অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ২:০৬

লেখক:-RH Rimon
পরের দিন অফিস থেকে একটু আগেই বের হলাম।জীবনের প্রথম ডেট তাও আবার হবু বউয়ের সাথে,লেট করলে কী চলে?যথাসময়ে যথাস্থানে পৌছে গেলাম।যেয়ে দেখি হিনা আগে থেকেই বসে আছে।
আমি->>বেশি কী দেরী করে ফেলেছি?
হিনা->>না,যতোটা ভাবছিলাম ততোটা না।
->>কতোটা ভাবছিলে?
->>সর্বনিম্ন আধাঘন্টা।
->>ওহ!তো এতো জায়গা থাকতে এখানে ডাকলে যে।কোনো রেস্টুরেন্ট বা পার্কেও বসতে পারতাম আমরা!
->>রেস্টুরেন্টের খাবার আমার পছন্দ না।আর পার্ক প্রেমিক-প্রেমিকার জন্য।
->>তাইলে আমরা কী?(দেখলাম হিনার মুখটা লজ্জায় কিছুটা লাল হয়ে উঠেছে।লজ্জায় মেয়েদের এতো ভালো লাগে হিনাকে না দেখলে বুঝতাম না)
->>আমরা বর্তমানে বন্ধু।
->>এ কেমন কথা।কাল আমাদের বিয়ে ঠিক হলো আর তুমি বলছো আমরা বন্ধু!
->>হ্যালো মিস্টার!এখনো বিয়ের দিন ঠিক করা হয়নি।আগে কিছুদিন তোমার সাথে পরিচিত হয়ে নিই,তারপর যদি ভালো লাগে তবে কয়েকমাস প্রেম করে তারপর বিয়ে।
->>এখনও কী তাইলে আমাকে ভালো লাগে নি?
->>ভালো লাগতে শুরু করছে।কিন্তু মানুষকে একদিন দেখলেই তো চেনা যায় না।আর বিয়ে সারা জীবনের ব্যাপার।তারাহুরা করা একদমই ঠিক না।
->>একটা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করি,রাগ করবে না তো?
->>আগে বলো তো শুনি।
->>আমি কী প্রথম নাকি আরও কাউকে এর আগে এভাবে দেখে নিছো।
->>যাক তোমার প্রতি ভালো লাগা আর একধাপ বেড়ে গেলো।
->>কেনো?
->>এই যে স্পষ্ট ভাবে কথা বললা।অনেকেই আমতা আমতা করে,পিঠ পিছে কথা বলে।এসব ভালো লাগে না।এমন কথা যা স্পষ্ট ভাবে বললে হয়তো খারাপ লাগতে পারে কিন্তু সেই কথাই যদি পিঠ পিছে কেউ বলে তাইলে ভাবো আরও কতো খারাপ লাগে।আর সত্যি বলতে তোমার আগেও দুজন বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল।দুই সপ্তাহের মধ্যেই তাদের আসল রুপ ধরা পরেছে তাই আমিই রিজেক্ট করেছি।
->>আমার ক্ষেত্রেও কী সেই সম্ভাবনা আছে?
->>সময়ই বলে দিবে।চলো ফুসকা খেয়ে বাসার দিকে যাই,সন্ধা হয়ে আসছে।
->>চলো।
(ফুচকা অর্ডার দিলাম।আমি এক প্লেটই শেষ করতে পারছি না এ দিকে হিনার তিন প্লেট শেষ।ফুল পাঁচ প্লেট খেয়ে থামলো আর আমি একপ্লেটেই পরে রইলাম।)
আমি->>ফুচকা বুঝি তোমার খুব পছন্দ?
হিনা->>পছন্দ মানে,খাদ্যমন্ত্রী হলে ভাতের বদলে ফুচকাকেই বাঙালির প্রধান খাবার ঘোষণা করে দিতাম।হি হি হি হি।মামা বিল কতো?
->>২৪০টাকা।(ফুচকা ওয়ালা)
(মানিব্যাগ বের করছি টাকা দিবো এমন সময় হিনা আমাকে থামিয়ে দিয়ে নিজেই বিল দিয়ে দিলো।)
আমি->>এটা কী হলো?
হিনা->>আজ আমি তোমাকে ডাকছি।তাই বিল আমিই দিলাম।যেদিন তুমি ডাকবে সেদিন তুমি দিও।চলো এবার বাসার দিকে এগোনো যাক।
->>চলো তোমায় বাসায় নামিয়ে দিয়ে তারপর আমি বাসায় যাবো
->>তার দরকার হবে না।আমি একই যেতে পারবো।
->>তা কী করে হয়?প্রথম ডেট বলা যেতে পারে।তোমাকে একাই ছেড়ে দেওয়াটা অভদ্রতা দেখায় না?
->>বললেই পারো আরও কিছুটা সময় আমার সাথে কাটাতে চাও।চলো রিক্সা ডাকো।
তারপর রিক্সায় করে চললাম হিনাদের বাড়ির উদ্দেশ্য।আমাদের মাঝে যথাযথ গ্যাপ রেখেই বসলাম যেনো হিনার গায়ের সাথে গা না লাগে।বুঝতেই তো পারছেন প্রথম কোনো মেয়ের পাশে বসলাম,নার্ভাস তো লাগবেই।হিনা মনে হয় বুঝতে পারছে কিছুটা।তাইতো আড় চোখে বার বার তাকাচ্ছে আর মিট মিট হাসছে।হালকা কিছু কথাবার্তা বলতে বলতে চলে এলাম হিনাদের বাসার সামনে।ওকে নামিয়ে দিয়ে আমি চলে এলাম আমার বাসায়।ফ্রেশ হয়ে একটু বিশ্রাম নিতেই মায়ের আগমন।
->>কি রে আর কথা হইছে হিনার সাথে?
->>হুমম।এইতো ওর সাথে দেখা করেই আসলাম।
->>ও আচ্ছা।তাইলে এতোদূর জল গড়িয়েছে।কিছুদিন আগেও না বললি বিয়েই করবি না নাকি।আবার এখন এসব চলছে।
->>মা তোমার কথাতেই তো বিয়েতে রাজি হলাম।আর বিয়ে যখন করতেই হচ্ছে যাকে বিয়ে করছি তাকে একটু ভালোভাবে চিনে নিবো না।
->>তো কেমন চিনলি?
->>সবে তো একদিন মাত্র কথাবার্তা হলো,ভালোই তো মনে হলো।বুদ্ধিমতী কিন্তু বর্তমানের আধুনিক মেয়েদের মতো ওভার স্মার্ট না।
->>তাইলে বিয়ের ডেট ফাইনাল করি?
->>এখনি না।আগে নাকি হিনা আমাকে ভালোভাবে চিনবে,তারপর ভালো লাগলে আমার সাথে কয়েকমাস প্রেম করবে তারপর বিয়ে।বিয়ে যেহেতু সারাজীবনের ব্যাপার তাই সব নিখুত ভাবেই ধীরে সুস্থে করতে চায়।
->>বাহ্!বিচক্ষণ মেয়ে।বিচার বুদ্ধি ভালোই তো তাইলে।একদিন বাসায় নিয়ে আসিস।
->>তোমার হবু বউমা।তুমি পছন্দ করছো তুমি আসতে বলবা।এসবের মধ্যে আমি নাই।
->>ঠিক আছে,ঠিক আছে।খেতে আয়।
খাওয়া দাওয়া শেষ করে রুমে শুয়ে বই পড়ছিলাম আর হিনার ফোন।শুরু হলো ফোনালাপ।ফোনে কথা বলতে বলতে অনেক রাত হয়ে গেলো কিন্তু চিন্তা ছিলো না সকালে তারাতারি ওঠার কারণ কাল ছুটির দিন আছে।
অনেক রাত পর্যন্ত কথা বলে ঘুমিয়ে পরলাম।অনেক বেলা হয়েছে তবুও আরও একটু ঘুমাতে ইচ্ছা হচ্ছিল।বিশেষ কোনো কাজ নেই তাই ঘুমিয়েই রইলাম আর হিনাকে নিয়েই স্বপ্ন দেখছিলাম।দু'জনে নদীর পারে বসে ছিলাম হঠাৎ হিনা আমাকে ধাক্কা দিয়ে পানিতে ফেলে দিয়ে হাসতে লাগলো।আর আমি পুরো ভিজে গেলাম।একি ঠান্ডা লাগে কেন।ভিজলাম তো স্বপ্নে।চোখ মেলে দেখি স্বপ্নে নয় বাস্তবেই পুরো ভিজে গেছি।পাশে হিনা মগ হাতে রাগি চোখে তাকিয়ে আছে।
হিনা->>কী নবাব সাহেব,ঘুম ভাঙলো?
আমি->>তুমি এখানে কেমনে,কী করে?
->>কী করে মানে?এটাও তে আমারই বাড়ি।আর আমার বাড়িতে অলস লোকের কোনো জায়গা হবে না।
->>ওহ্ তোমার বাড়ি।তাই বুঝি?
->>বেশি বুঝতে হবে না।এবার উঠে ফ্রেশ হয়ে আসো টেবিলে খাবার দিচ্ছি।
->>তা না হয় ঠিক আছে কিন্তু এটা কী হলো?
->>কী, কী হলো?
->>এই ভাবে সাঝ সকালে আমায় গোসল করানোর মানেটা কী??
->>হা হা হা হা।তো আর কি করতাম?সেই ৫মিনিট হলো ডাকছি।
->>কতো সুন্দর স্বপ্ন দেখছিলাম,দিলা পানি ঢেলে।
->>ওই কী এমন সুন্দর স্বপ্ন শুনি?আর কাকে নিয়ে?
->>অন্য কাউকে নিয়ে তোমায় তা কেনো বলতে যাবো?
->>তাই না?দাড়াও দেখাচ্ছি মজা।
আমি লাফ দিয়ে উঠে ওয়াশরুমে গেলাম।হিনা মনে হয় ডাইনিং রুমে গেলো।ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে নিজের ঘরকে যেন চিনতেই পারছিলাম না।মনেই হচ্ছে না এটা আমার ঘর।ডাইনিং রুমে গেলাম।যেয়ে দেখি সবাই খাওয়া শুরু করছে আমিও বসে পরলাম।হিনাই সবাইকে খাবার পরিবেশন করে দিচ্ছে।
মা->>কি রে খাবার কেমন হইছে?
আমি->>প্রতিদিন তো তুমি বানাও তাইলে প্রতিদিন যেমন হয় তেমনি তো হবে।
->>না রে।আজ সব খাবার হিনা রাঁধছে।
->>তাই তো বলি এমন লাগছে কেন খাবার?
হিনা->>কেনো ভালো হয়নি?(মন খারাপের ভাব)
আমি->>হইছে খাওয়া যাচ্ছে আর কী?
মা->>একদম ফাজলামি করবি না। কতো ভালো হইছে খাবার।নিজের হাতের রন্না খেয়ে খেয়ে একঘেয়ে হয়ে গেছিলাম।নতুন হাতের রান্না খেয়ে অনেক তৃপ্তি পেলাম।
হিনা->>ধন্যবাদ আন্টি।
মা->>আন্টি না রে, মা বলবি।
খাওয়া দাওয়া শেষ করে রুমে এসে লেপটপে কাজ করছিলাম।কিছুক্ষণ পর হিনা এসে পাশে বসলো।
হিনা->>হু হু!
->>কিছু বলবে?
->>হু হু!
->>কী?? (হিনার দিকে তাকিয়ে দেখি ওকে আজ অন্যরকম লাগছে।ফ্যানের হাওয়ায় চুল গুলো বার বার মুখে এসে পরছে।ইচ্ছা করছে আলতো ছুয়ে সরে দেই কিন্তু যদি রাগ করে?এখনও তো বন্ধুত্বই আছে আমাদের মাঝে।)
->>কী দেখছো?
->>কই কিছু না তো।
->>(গাধা একটা আস্তে বলল!)কী করো?
->>এইতো অফিসের একটু কাজ।
->>ওও।খাওয়ার সময় কী বলছিলে খাবার ভালো হয়নি না?কোনো রকম খাওয়া যাচ্ছে তাই না??(রাগি ভাব নিয়ে)
->>ওটা তো এমনি মজা করে বলছি।এখন তার শাস্তিও পেতে হবে।
->>আবার কী শাস্তি?
->>আমাকে নিয়ে এখনি ঘুরতে বেরোতে হবে,আর কাচের চুরী কিনে দিতে হবে।
->>এখনি বের হতে হবে?অফিসের কাজ ছিলো যে একটু।
->>এখনি মানে এখনি।
কি আর করার বাধ্য ছেলের মতো হিনাকে নিয়ে ঘুরতে বের হলাম।নদীর পাশ দিয়ে হাটছি দুজনে।চারপাশ ভীষণ নিরবতা।বাতাস বইছে,আকাশটাও মেঘলা।যেকোনো সময় বৃষ্টি নামতে পারে।খুব ইচ্ছা হচ্ছিল হিনার হাত ধরতে।কিন্তু কিসের যেন সংকোচে ধরতে পারছিলাম না।বেশ কিছুটা সময় একসাথে হেটে নদীর পাশে এসে বসলাম দু'জনে।আমি বললাম,
->>আকাশটা মেঘলা,মনে হয় বৃষ্টি নামবে।
->>নামলে নামুক।ভিজতে সমস্যা?
->>তোমার মতো রুপসী যদি বৃষ্টি মাঝে হাত ধরে হাটে তাবে সমস্যা কিসের??
->>তাই না??
কিছুক্ষণ দু'জনেই চুপ।নিরবতা ভেঙ্গে আমি বললাম,
->>তো এখন কী দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু করা যায়?
->>কিসের দ্বিতীয় অধ্যায়?
->>তুমিই বলছিলে না,প্রথমে পরিচিত হবে,তারপর প্রেম করবে তারপর বিয়ে।তো আমরা কর এখনও বন্ধু আছি নাকি সম্পর্ক কিছুটা এগোলো??
->>ও আচ্ছা।প্রেম করার দেখি খুব সখ??
->>প্রেম কেন আমি তো বিয়েই করতে চাচ্ছি।
->>বিয়ে নাকি তোমার কাছে ঝামেলা?
->>ঝামেলা হবে কেন।বিয়ে মানে দায়িত্ব। আমার,আমার স্ত্রীর,ভবিষ্যৎ প্রজন্মের।
->>এতো ফাস্ট চিন্তা ভাবনা?
->>জীবনের পথে যখন এগোতেই হবে চিন্তা ভাবনা তো রাখতেই হবে।
->>হুমম।চলো এখন উঠি।
->>ফুচকা খাবে না?
->>চলো।
ফুচকা খাওয়া শেষে দুজনে বাড়ির পথে হেটে এগোচ্ছিলাম আর মুসলধারায় বৃষ্টি নামলো।আমি দৌড়ে পাশের এক ছাউনির নিচে দাঁড়ালাম।পিছে ফিরে দেখি হিনা দু'হাত মেলে বৃষ্টির মাঝে ভিজছে।যেন বৃষ্টির প্রতিটি ফোটাকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিতে চাচ্ছে।আমি বললাম,
->>কী করছো?ঠান্ডা লেগে যাবে তো।
->>তুমি না বললে আমার মতো রুপসী তোমার হাত ধরে ভিজলে কোনো সমস্যা নেই।আর এখন আমাকে একাই ফেলে নিজেই ছাউনির নিচে যেয়ে ঢুকলেন?
আর কোনো সন্দেহ নেই।হিনার মনে জায়গা করে নিতে পেরেছি নিশ্চিত হলাম।তারমানে দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু হয়ে গেছে।আমিও নামলাম বৃষ্টিতে ভেজায় হিনার সঙ্গ দিতে।আমি বললাম,
->>চলো বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতেই হেটেই বাড়ি যাই।
->>চলো।
দুজনেই হাটতে লাগলাম পাশাপাশি।হঠাৎ হিনা আমার হাত জড়িয়ে ধরে লজ্জামাখা মুখে মিট মিট হাসছে।দুজনেই নিরবতায় ভিজতে ভিজতে হেটে চললাম।ওকে বাসায় পৌছে দিয়ে আমিও বাসায়য়।রাতে আসলো প্রচন্ড জ্বর।রীতিমতো কাপাকাপি শুরু করে দিছি।হিনার ফোন বেজে উঠলো।কাপাকাপা হাতেই ফোনটা রিসিভ করলাম,
->>হ্যালো,(কন্ঠও যেনো কাপছে আমার।)
->>কী হইছে তোমার?এমন করে কথা বলছো কেনো?
->>তেমন কিছু না।অনেকদিন পর বৃষ্টিতে ভিজলাম তো তাই একটু জ্বর আসছে।
->>কতো?
->>মাপিনি তো।
->>মা কে বলছো।
->>আরে তেমন কিছু না। ঠিক হয়ে যাবে।
(বলতেই ফোন কেটে দিলো।দুই তিনবার চেষ্ঠা করলাম বিজি দেখালো,তাই চোখ বুজে শুয়ে পরলাম।একটু পর মা এসে ডাকছে)
->>কী রে কী হইছে তোর?
->>কই কী?তেমন কিছু না একটু মাথা ব্যাথ্যা করছে।তোমায় কে বললো আমার কিছু হইছে?
->>হিনা ফোন দিছিলো।বললো তোর নাকি জ্বর আসছে।নে মেপে দেখ দেখি কতো?
(জ্বর মেপে দেখি ১০৩ডিগ্রী)
->>১০৩ ডিগ্রী জ্বর আর বলছিস কিছুই না?নে খাবারটুকু খেয়ে এই ওষুধগুলো খেয়ে ঘুমিয়ে পর।
খাবার,ওষুধ খেয়ে আবার শুয়ে পরলাম।আবার হিনার ফোন।রিসিভ করলাম,
->>জ্বর কয় ডিগ্রী?(রাগী ভাব নিয়ে)
->>১০০.
->>১০০ না?মারবো থাপ্পর।আমি কিছু জানবো না তাই ভাবছো।খাবার ওষুধ খাওয়া শেষ?
->>হুমম।
->>এখন ঘুমিয়ে পর।আর কাল অফিস থেকে ছুটি নিয়ে নাও।অসুস্থ শরীর নিয়ে অফিস করতে হবে না।
->>সমস্যা নেই।রাতের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে।
->>আবার বেশী কথা বলে।যা বলছি তাই করতে হবে।(কথা শুনে মনে হলো আগ্নেয়গিরি বিস্ফোরিত হলো)
->>আচ্ছা ঠিক আছে।রাগ করো কেন?
->>গুড বয়।আচ্ছা ঘুমাও তাইলে এখন।
->>আচ্ছা।
হিনার কল কেটে দিয়ে অফিস থেকে ছুটি নিয়ে ঘুমিয়ে পরলাম।এক ঘুমে রাত পার।সকালে ঘুম ভাঙ্গলো কোমল হাতের কারো আলতো ছোয়ায়।চোখ মেলে দেখি হিনা আমার মাথার পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।আমি জেগে উঠছি বুঝতে পেরে হাতটা সরিয়ে নিলো।
হিনা->>সরি!আমি কী তোমার ঘুম ভাঙ্গিয়ে দিলাম?
->>আরে না না!অনেক ঘুমাইছি।রাতে ঘুমাইছি এখন জাগা পাইলাম।তুমি এতো সকাল সকাল?
->>তুমি অসুস্থ,খুব চিন্তা হচ্ছিল তাই সকাল সকালেই চলে আসলাম।তোমার জন্য সুপ নিয়ে আসছি।ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নাও।
->>আচ্ছা যাচ্ছি।(আমি তো মনে মনে বাল্লে বাল্লে করতিছি।এতো কেয়ারিং।তবে এটা ভেবেও ভয় লাগে বিয়ের পরেও এমন কেয়ার থাকবে তো?ভবিষ্যতের কথা ভবিষ্যতে ভাবা যাবে।)
ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে এসে দেখি বাটিতে সুপ নিয়ে হিনা বসে আছে।আমি গিয়ে পাশে বসলাম।ও আমাকে খেয়ে দিচ্ছে।আমি বললাম একাই খেতে পারবো কিন্তু কে শোনে কার কথা।বাচ্চাদের মতো তুলে খাওয়াচ্ছে।ওকেও খেতে বললাম বলল পরে খাবে।খাওয়া শেষে চেক করলো জ্বর আছে কী না?আমি বললাম,
->>জ্বর নেই আর তেমন।
->>হুমম।সেটাই দেখলাম।আগে বললা না কেন বৃষ্টিতে ভিজলে তোমার শরীর খারাপ করে?
->>সাধারণত করে না কিন্তু হয়তো তোমার এই কেয়ারটা পাওয়ার জন্যই কাল শরীরটা খারাপ হয়ে গেছিলো।
->>তাই না?
->>হুমম।
তারপর আরও অনেক কথা হলো।দুপুরে খাওয়া দাওয়া করে ওকে নিয়ে বের হলাম।ঘুরে টুরে ওকে বাসায় পৌছে দিয়ে বাসায় আসলাম।বাসায় ঢুকেই মা বলল হিনার বাবা নাকী ফোন করছিলো।সামনে মাসে বিয়ের দিন ঠিক করা হইছে।
রুমে এসে হিনাকে ফোন দিলাম,
আমি->>হ্যালো,
হিনা->>হুমম বলো।বসায় পৌছাইছো?
->>হুমম।আমার তো বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।সামনে মাসে বিয়ে।তোমাককে আর বিয়ে করা হলো না মনে হয়(মজা করে বললাম)
->>তো কাকে বিয়ে করছো শুনি??
->>তা জানি না মা বলল।অন্য কোনো মেয়ে মনে হয়।
->>ওই কী বললা?চোখ তুলে দিবো আমি ছাড়া অন্য কারো দিকে যদি তাকাও,হাত কেটে দিবো যদি অন্য কারও দিকে হাত বাড়াও,পা ভেঙ্গে দিবো যদি অন্য কারও দিকে এগিয়ে যাও।
->>তাইলে তো আমি সম্পূর্ণ পঙ্গু হয়ে যাবো।
->>তাতে সমস্যা নেই।তোমার মনটা শুধু সুস্থ থাকলেই চলবে।
->>সত্যি কাটাবেতো বাকীটা জীবন আমার সাথে।
->>তা নাহলে বিয়ের দিন ফিক্সড করতে বললাম কেন?
->>ওওও, তুমি বলছো।আমি তো ভাবলাম তোমার বাবাই ডিসিশন নিলেন।
->>আমার বাবার কাছে আমার মতের গুরুত্ব সবার আগে।
->>সেটাই তে দেখছি।
এভাবেই চলতে থাকলো দিনগুলো।হিনাকে নিয়ে ঘোরাঘুরি,বিয়ের শপিং এসব করতে করতেই চলে গেলো বাকী দিনগুলোও।অবশেষে উপস্থিত হলো সেই কাঙ্ক্ষিত এ্যারেন্জ লাভ ম্যারেজের দিন।আমি বর সেজে বসে আছি।পাশের ঘরে হিনাকে কবুল পড়িয়ে কাজী এখন আমার সামনে উপস্থিত।কবুল বলার মাধ্যমে সমাপ্ত হলো এ্যারেন্জ লাভ ম্যারেজ।শুরু হলো এ্যারেন্জ লাভ লাইফ।সবাই দোয়া করবেন।
আরে আরে পাঠক বন্ধুরা,বিয়ের দাওয়াত খেয়েই চলে যাচ্ছেন??এ্যারেন্জ লাভ ম্যারেজের গল্প তো শুনলেন,এ্যারেন্জ লাভ লাইফটা কেমন সেটা শুনবেন না?আসছি আবার এ্যারেন্জ লাভ লাইফ অর্থাৎ এ্যারেন্জ লাভ ম্যারেজ(পর্ব-৩) নিয়ে। সাথেই থাকুন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.