নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রকৃত সত্য-তুমি একা।কেউ তোমার নয়,তুমিও কারও না।সব কিছুই আপেক্ষিক!!\nআমি আছি মিঠু মামা...........০৮০৮০৫

আর এইচ রিমন

আমি একজন অতি ক্ষুদ্র মানুষ । নিজকে লুকাতে পছন্দ করি। আমাকে খুজে নাও। সবার কাছ থেকে সমালোচনা আশা করছি।। আমি ধৈর্যশীলদের কাতারে থাকতে চাই। এটাই আমার ব্রত।

আর এইচ রিমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

"এ্যারেন্জ লাভ ম্যারেজ(পর্ব-৩)"

১৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ২:২৯


লেখক:RH Rimon{আবেগী মন}
এ্যারেন্জ লাভ ম্যারেজটা তো কমপ্লিট করলাম।এখন এ্যারেন্জ লাভ লাইফে টিকে থাকাটাই আসল কাজ।গুণীদের বাণী-"রাজ্য স্বাধীন করার থেকে স্বাধীনতা রক্ষা করাই কঠিন"।
বিয়ে সম্পন্ন হলো।সকল রীতি রেওয়াজ শেষ করে কান্নাকাটি করে কণেকে বিদায় দেওয়া হলো।আমি আর হিনা একাই এক গাড়িতে।বাকীরা অন্য গাড়ীতে করে বাড়ির পথে রওনা দিলাম।মা আরও বাড়ির অনেকেই অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য।আমাদের জন্য বলতে গেলে ভূল হবে নতুন বউয়ের জন্য।হিনার এখনও মন খারাপ।এখনও মনে হয় একটু একটু কাঁদছে।রুমালটা বাড়িয়ে দিয়ে বললাম,
->>এখন যেখানে যাচ্ছো সেটাও আজ থেকে তো তোমারই বাড়ি।বাড়ির সব মানুষই তো এখন থেকে আপন জন।মন খারাপ করছো কেন?আগে একটা মা-বাবা ছিলো এখন দুইটা পাইলা।এতে খুশী হওয়া বাদে কেউ কাঁদে?
‎->>হুমম।
কাজ হলো না।তবুও মন খারাপ করে বসে আছে।আমি আর বেশী ঘাটালাম না।প্রথম প্রথম খারাপ লাগাটাই স্বাভাবিক।
বাড়ি চলে আসলাম।সবাই খুব হৈ চৈ করে নতুন বউকে ঘরে তুললো।মামী,চাচীরা অনেক ঠাট্টা মশকরা করতে লাগলো।এবাড়িতেও কি কি যেন রীতি রেওয়াজ শেষ করে হিনাকে আমার ও সরি এখন আমাদের ঘরে নিয়ে গেলো।আর এইদিকে কাজিনরা আমাকে নিয়ে বাড়ির পাশে ফাঁকা জায়গায় চলে এলো।সবাই মিলে আড্ডা দিচ্ছি আমাকে নিয়ে ওরা হাসি মশকরা করছে।হিনা ঘরে একা।চলেও আসতে পারছিলাম না লজ্জায়।ঘন্টা দুয়েক আড্ডা চললো।আড্ডাও শেষ হয় না এদের।হঠাৎ দেখি মা আমায় ডাকতে ডাকতে এদিকেই আসছে।
মা->> কী রে তোকে সারাবাড়ি খুজছি আর তুই এখানে?
->>এইতো একটু আড্ড দিচ্ছিলাম।
>এখনি যা।মেয়েটা অনেকক্ষণ একা একা বসে আছে।
->>এইতো মা। চলো।
অবশেষে প্রবেশ করলাম এ্যারেন্জ লাভ ম্যারেজের বাসর ঘরে।একি আমার বউ কই?পালালো না তো?
কাছে যেয়ে দেখি অপেক্ষা করতে করতে হিনা ঘুমিয়ে পরছে।কী মায়াবী মুখটা।কি সুন্দর টানা টানা দু'চোখ।আবার প্রেমে পরে গেলাম মেয়েটার।আস্তে করে হিনার দিক ফিরে আমিও শুয়ে পরলাম।শুয়ে শুয়ে ওকে দেখতে দেখতে কখন ঘুমিয়ে পরলাম খেয়াল নেই।সকালে ঘুম ভাঙলো হালকা মৃদু চিৎকারে।চিৎকারটা আর কারও না হিনারই ছিল।
হিনা->>আআআআআ।
আমি->>কি হলো?(লাফ দিয়ে উঠে)
->>তুমি এখানে কেন?আমার পাশে,আমার বিছনায়,তাও আবার বিয়ের আগেই?
-‎>(মেয়ে বলে কী?স্মৃতি হারিয়ে ফেললো নাতো এক রাতেই)আরে বিয়ের আগে মানে,কাল আমাদের বিয়ে হয়ে গেলো মনে নেই?
(নিজের দিকে তাকিয়ে দেখলো হিনা।এখনও বউ সেজেই আছে।)
-‎>>ওহ্,সরি।মনেই ছিলো না।এতোদিন একাই থেকে অভ্যাস তো তাই তোমাকে আমার পাশে দেখে ঘাবরে গেছিলাম।
-‎>>হুমম।এখন একটু ঘুমাতে দাও।
-‎>>ঘুমাবা মানে,কোনো ঘুম নাই।কাল রাতে দেরী করে আসার এটাই তোমার শাস্তি।
-‎>>মানে কী?কাজিনরা আসতে দিচ্ছিলো না।
-‎>>আমি অতো শতো জানি না।শাস্তি মানে শাস্তি।
দেখি মাও এসে ডাকছে।হিনা গিয়ে দরজা খুললো।
মা->>কী মা ঘুম হইছে তো ঠিক মতো?
->>হ্যা মা।
-‎>>তোমরা ফ্রেশ হয়ে ডাইনিংয়ে আসো আমি খাবারের ব্যবস্থা করছি।
-‎>>এ কেমন কথা মা?আমি থাকতে আপনি কেন খাবারের ব্যবস্থা করতে যাবেন?আমি চেন্জ করে এখনি আসছি।
-‎>>আরে পাগলী এখন থেকে তো তোকেই সব সামলাতে হবে।আজ দিনটা থাক।তুই আজই নতুন বউ হয়ে আসলি আর তোকে চুলো ঠেলতে দিয়ে পাঠাবো?
-‎>>নতুন বউ হয়ে আসছি কিন্তু আজই তো প্রথম আসলাম না।আপনি যান আমি আসছি।মা মেয়ে এখন থেকে একসাথে সংসার সামলাবো।আপনি পথ দেখাবেন আমি আপনাকে অনুসরণ করবো।
-‎>>বেঁচে থাক মা।অনেক সুখী হ।আয় তোরা আমি আসছি।
-‎>>ঠিক আছে মা। আমি চেন্জ করেই আসছি।
হিনা ওয়াশরুমে গেল ফ্রেশ হতে আর আমি আবার ঘুম।ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে এসে আবার আমায় ডাকতে লাগলো।
হিনা->>এই ওঠো।ফ্রেশ হয়ে আসো।
->>ঘুমাতে দাও না আর একটু।
-‎>>নো ঘুম ওঠো।যাও ফ্রেশ হয়ে আসো।
-‎>>হুমম যাচ্ছি।
আমি ওয়াশরুমে চলে গেলাম আর হিনা রান্না ঘরের দিকে।বিয়ের পর আর কোনো শান্তি থাকুক না থাকুক ঘুমের শান্তি থাকেনা ১০০% গ্যারান্টি।বউরা যে কেন স্বামীদের ঘুম দেখতে পারে না কে জানে?
ফ্রেশ হয়ে ডাইনিং রুমে যেয়ে দেখি খাবার সব তৈরী হয়ে গেছে।সবাই মিলে বসে পরলাম খেতে।মাকে বসিয়ে দিয়ে হিনাই খাবার পরিবেশন করে দিচ্ছে।খাবার শেষে রুমে চলে আসলাম।অফিস থেকে ছুটি নিয়ে নিছি তাই কোনো কাজও নেই অফিসের।হিনাও এ দিকে আসছে না।একা একা যেন ভালোই লাগছিলো না।এই আমিই যে এই রুমেই এতোটা বছর একা থেকেই কাটিয়ে দিলাম কখনও একা মনে হয়নি সেই ঘরেই এক দিনের ব্যবধানে আজ একা লাগছে।একেই বলে মায়া।কী করা যায় কী করা যায় ভেবে হিনাকে ডাক দিলাম।
->>হিনা, হিনা।
->>কি বলো?(রুমে এসে।)
-‎>>এক গ্লাস পানি দাও তো।
-‎>>বসো আনছি।
-‎>>এই নাও পানি(পানি এনে দিয়েই চলে গেলো।)
কিছুক্ষণ পর আবার ডাক দিলাম।
->>হিনা, হিনা।
->>এক কাপ চা হবে।
-‎>>বানানো নেই মনে হয়।বসো বানিয়ে আনছি।
-‎>>এই নাও চা।(চা দিয়েই আবার চলে গেলো,মেয়েটা এমন কেন?)
-‎>>হিনা,হিনা।(আবার ডাকলাম)
-‎>>আবার কী হলো?
-‎>>চায়ে চিনিই তো দাওনি।
-‎>>কি বলো?২চামচ চিনি দিছি আর বলছো চিনি দেইনি।
-‎>>তুমি টেস্ট করে দেখো।
->>ঠিকই তো আছে।(চায়ে চুমুক দেওয়ার পর)
-‎>>কই দেখি?হ্যা এখন ঠিক আছে।তোমার ঠোটের স্পর্শ পেয়েছে তো।
-‎->>ওরে পাঁজি।মনে মনে এতো শয়তানি?
-‎>>বসো না একটু আমার পাশে।একা একা লাগছে।
-‎>>আগে লাগেনি?
-‎>>আগে একাই ছিলাম তাই একাবোধ হয়নি।কিন্তু এখন তুমি তো আছো আমার সঙ্গী।
-‎>>সরি সাহেব এখন হাতে সময় নেই।দুপুরে বাবা-মা আরও লোক আসবে ওই বাড়ি থেকে।অনেক কাজ মা একাই পারবে না।তাকে সাহায্য করতে হবে।এখন একাই থাকো পরে এসে তোমার পাশে বসে থাকবো।
-‎>>ঠিক আছে।তাইলে একটা দিয়ে যাও।
-‎>>কি দিবো??
-‎>>মিষ্টি!
-‎>>ওরে পাজি,তুমি তো আগে এমন ছিলে না?
-‎>>তখন তো তুমি আমার বউ ছিলে না।
-‎>>এখন চায়ের মিষ্টি খাও অন্য মিষ্টি পরে ভাবা যাবে।আমি গেলাম।
বলেই চলে গেলো আবার।কী আর করার দুধের স্বাদ ঘোলেই মিটাতে হবে আরে মানে হলো মিষ্টির স্বাদ চায়েই মিটাতে হলো।দুপুরে শশুড় বাড়ির লোকজন এলো।তাদের অতিথি আপ্যায়ন করা হলো।সবাই মিলে গল্প গুজব হাসি ঠাট্টায় বিকাল পেরিয়ে গেলো।সন্ধার দিকে তারা বাড়ি ফিরে গেলো।এখনও হিনা ব্যস্ত।কিসের যে এতো কাজ।আমি ছাদে চলে আসলা।ইলেক্ট্রিসিটিও চলে গেছে।ছাদে এসে অন্ধকারাচ্ছন্ন শহরটাকে উপভোগ করতে লাগলাম।সম্পূর্ণ অন্ধকারাচ্ছন্ন না।মেঘের আড়াল থেকে চাঁদ মাঝে মাঝে এসে উকি দিয়ে যাচ্ছে শহরটাকে।হঠাৎ কার যেন পায়ের নুপুরের শব্দ পেলাম।অতোটা গুরুত্ব দিলাম না।একটু পর কে যেন এসে পিছ থেকে জড়িয়ে ধরলো।আমি চিল্লাতে লাগলাম,
->>ভূত!ভূত!
একটা হাত আমার মুখ চেপে ধরলো।তখন চাঁদ মেঘের আড়াল সরিয়ে দেখিয়ে দিলো এ কোনো ভূত নয়,এ যেন এক পরী,জোৎস্না পরী।যার রুপে চাঁদও ঈর্ষান্বিত হয়ে আবার লুকিয়ে পরলো মেঘের আড়ালে।
হিনা->>ওই আমি ভূত??
->>না তুমি তো পেন্তী!
-‎>>কী বললা?
-‎>>কিছু না।এখানে কেন আসছো?কতো কাজ বাকী তোমার যাও সেগুলোন করো গিয়ে,যাও।(বলেই একটু সরে আসছিলাম হিনা হাত টেনে ধরলো।)
-‎>>রাগ করছে আমার জামাইটা?
-‎>>তাতে কার কী যায় আসে?
-‎>>তাই?ঠিক আছে।আমি তো ভাবছিলাম তখনকার মিষ্টিটা এখন সুদে আসলে পুষিয়ে দিবো।কিন্তু কেউ যদি না চায় তাইলে আমার কী?(বলেই চলে যাচ্ছিলো,আমি হাট টেনে আমার কাছে নিয়ে আসলাম।)
-‎>>মিষ্টি যখন আনছোই ঘুরিয়ে নিয়ে যাওয়া দরকার কী?দিয়েই দাও।
-‎>>এই নেও মিষ্টি!(চায়ে চুমুক দিয়ে আমার দিকে কাপ এগিয়ে দিলো)
-‎>>এই মিষ্টি কেন?
-‎>>এটা আসলটা।
-‎>>সুদেরটা কই?
-‎>>সুদ খাওয়া হারাম জানো না।
-‎>>তাইলে এটারও প্রয়োজন নেই।
-‎>>আহা,এতো রাগ করো কেন। দিবো বলছি তো।আমি আসলাম তোমার পাশে বসে এক কাপেই দুজন চা খাবো আর চাঁদ দেখবো বলে, আর তুমি এমন করছো?
-‎>>আচ্ছা সরি।কিন্তু এক চাঁদনীর কী অন্য চাঁদনীকে দেখার কোনো প্রয়েজন আছে?
->>ওই চাঁদনী আবার কে?
->>আরে তোমার কথা বলছি।
-‎>>থাক আর তারিফ করতে হবে না।চুপচাপ চা খাও আর চাঁদ দেখো।
-‎->>আমি তো দুইটা চাঁদ দেখছি।একটা আকাশে আর একটা আমার পাশে।
-‎->>চুপ করে চাঁদ দেখতে বললাম না?
-‎>>আচ্ছা চুপ।
দুজনেই নিরব হয়ে গেলাম।অন্ধকার শহর,চাঁদ মাঝে মাঝে উকি দিচ্ছে,সাথে হালকা বাতাস বয়ে যাচ্ছে।হিনাকে আরও কাছে টেনে নিলাম।এতো কাছে যে আমরা একে অন্যর উষ্ণ নিশ্বাস অনুভব করতে পারছি,একে অন্যের হৃদস্পন্দন শুনতে পাচ্ছি।বাতাসে চুলগুলো বার বার হিনার মুখে এসে পরছে।আলতো ছুয়ে চুলগুলো সরিয়ে দিলাম।আলিঙ্গন করে উষ্ণ পরশ ছুয়ে দিলাম হিনার কপালে।লজ্জায় চাঁদটাও লুকিয়ে পরছে মেঘের আড়ালে।আর আমার চাঁদ সেও লজ্জায় মুখ লুকিয়ে নিলো আমার বুকে।কতোক্ষণ এভাবে ছিলাম মনে নেই তবে ভালোই লাগছিলো।হঠাৎ কি যেন ভেবে একটু ধাক্কা দিয়ে দূরে সরে দাড়ালো হিনা।
আমি->>কী হলো?
হিনা-‎>>লজ্জা লাগে।
-‎>>এতো লজ্জা?
-‎>>হুমম।
-‎>>আচ্ছা চলো এবার নিচে যাওয়া যাক।
-‎>>আমাকে কোলে করে নিয়ে যেতে হবে।
-‎>>আটার বস্তাকে ঘারে নেয় শুনছি,কোলে নিতে তো শুনি নি।
-‎>>কী বললা?
-‎>>হা হা!না কিছু না।চলো কিন্তু বাড়ির লোকজন দেখলে কী বলবে?
-‎>>সবাই ঘুম।
-‎>>আগে বলবে তো।
তারপর হিনাকে কোলে নিয়ে ঘরে গেলাম।আরে আপনারাও আসবেন নাকি।আপনারা বাহিরেরই থাকুন।।
সকাল হলো আর শুরু হলো ঘুম নির্যাতন।
হিনা->>এই তোমার চা।
আমি->>রেখে যাও পরে নিচ্ছি।
উঠছি না দেখে হিনা আমার হাতের একটা আঙ্গুল গরম চায়ে ডুবে ধরলো।জোরে হাত ঝাঁকি দিতেই হাতটা হিনার গালে যেয়ে লাগলো।বেচারি পুরাই ভেবাচেকা সাথে আমিও। এ কী হয়ে গেলো??কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই হিনা রুম থেকে চলে গেলো।আমিও উঠে ফ্রেশ হয়ে রুমের বাহিরে বের হলাম।দেখি হিনার মুখটা গোমরা।তবুও সবার সাথে হাসি খুশী ভাবেই ব্যবহার করছে।অনেক বার কাছে ডাকার চেষ্ঠা করলাম চা,পানির বাহানায় কিন্তু কোনো কথা না বলে এসেই চা,পানি দিয়ে চলে গেলো।অনেক অভিমান করছে মেয়েটা।
আমার বাহিরে একটু কাজ ছিলো।বাহিরে চলে আসলাম।কাজ শেষ করে ভাবলাম হিনার জন্য কিছু নিয়ে যাওয়া যায়।যেই ভাবা সেই কাজ।ফুচকা ওর খুব পছন্দ।একটু বেশী করেই বাড়ির সবার জন্যই ফুচকা নিয়ে গেলাম আর হিনার জন্য একগুচ্ছ লাল তাজা গোলাপ।বাড়িতে এসে কলিং বেল চাপলাম,মা দরজা খুললো।
->>এই নাও মা,সবার জন্য ফুচকা আনলাম।হিনা কই?
-‎>>ও তো রুমেই।মন খারাপ মনে হয়।কিছু হইছে?
-‎>>কই কিছু না তো।আমি দেখছি।
রুমে এসে দেখি রুমে নেই বারান্দায় দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।পিছন থেকে যেয়ে জড়িয়ে ধরলাম।ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দিলো।বুঝলাম রাগ এতো সহজে ভাঙ্গবে না।গোলাপফুল গুলো হাতে নিয়ে হাটু গেড়ে বসে পরলাম।
অজান্তে আমি করছি ভূল,,
দিও করে ক্ষমা আমায়,,
ভালোবেসে এনেছি ফুল,,
দিও করে ক্ষমা আমার ভূল,,
থেকো না আর অভিমানে,,
এবার তো একটু হাসো,,
দেখি তোমায় প্রাণ ভরে!!
হিনাও এসে জড়িয়ে ধরলো আমায়।মেয়েটা ফুপিয়ে কাঁদছে।
আমি->>সরি!আসলে হাত ঝাকি দিতে গিয়ে ভূল করে লেগে গেছো নাইলে আমি কী কখনও আমার লক্ষ্মী বউকে কষ্ট দিতে পারি?
->>আমিও সরি!ওভাবে তোমার হাতটাও চায়ে ডুবানো ঠিক হয়নি।
-‎>>আরে ওটাই তো ভালোবাসা।তুমি না করলে কে করবে।
-‎>>হুমম।
-‎>>ফুলগুলো?
-‎>>দাও।ভালোই তো কবিতা বলতে পারো।আগে তো কখনও শুনাওনি?
-‎>>আমি তো নিজেও জানতাম না।তোমাকে দেখেই নতুন নতুন প্রতিভার উদ্ভাবন হচ্ছে।
-‎>>তাই বুঝি?আর কী কী প্রতিভা আছে শুনি?
-‎>>বাবা হবার!
-‎>>আবার ফাজলামি?
-‎>>হা হা হা!আচ্ছা চলো তোমার জন্য ফুচকা নিয়ে আসছি।
-‎>>আগে বলবা না,তারাতারি চলো।
এভাবেই মান অভিমান ভালোবাসায় চলে যাচ্ছে দিনগুলো।কয়েক মাস পর হঠাৎ আজ সকালে অফিসের জন্য তৈরী হচ্ছিলাম হিনা এসে শার্টের বোতাম লাগিয়ে দিতে লাগলো,টাই পড়িয়ে দিতে লাগলো।
->>কী ব্যাপার?আজ এতো ভালোবাসা?
-‎>>কেনো অন্যদিন বুঝি ভালোবাসি না?
-‎>>তা তো বাসোই।আজ মনে হচ্ছে ভালোবাসা আগের থেকে আরও বেড়ে যাচ্ছে।
-‎>>এখন ভালোবাসা বাড়বে না কমবে।আর একজন ভাগিদার আসছে।
-‎>>ভাগিদার আসছে মানে??
-‎>>হুমম।নতুন কেউ আসছে,যে তোমার আমার দুজনার ভালোবাসারই ভাগিদার।
-‎->>ঠিক বুঝলাম না।পরিষ্কার ভাবে বলো তো।
-‎>>আরে বুদ্দু লজ্জা লাগে।
-‎>>কে এমন আসছে যার কথা বলতে এতো লজ্জা?
-‎>>এ কোন বুদ্দুকে বিয়ে করলাম,কিছুই বোঝে না।মা দাদী হতে চলছে।
-‎>>কী?(হিনাকে কোলে তুলে নিয়ে ঘুরাতে লাগলাম)আমি বাবা হবো!মা দাদী হবে!
-‎>>হুমম।
-‎>>এতো ভালো খবর দিতে কেউ এতো দেরি করে।বাড়ির সবাইকে বলছো?
-‎>>লজ্জা লাগে।তুমি বলো মাকে।
-‎>>আরে লজ্জার কী আছে।মা শুনলে অনেক খুশী হবে।মা মা!!
মা-‎>>কী হলো চিল্লাছিস কেন?
->>শোনো তোমার বউমা কী বলে?
-‎>>কী হইছে রে হিনা ওই চিল্লাছে কেন?
-‎>>আমার লজ্জা লাগে মা।ওই বলুক।
-‎>>আরে তুমি দাদী হতে চলছো মা দাদী!
-‎>>কী,আমি দাদী হবো!আলহামদুলিল্লাহ! খুব ভালো একটা সংবাদ শুনালী মা।তুই আর তোর সন্তান দুজনেই অনেক অনেক ভালো থাক এই দোয়াই করি।বাড়ির বাকীদেরও খবরটা দিয়ে আসি দাঁড়া!
মা চলে যেতেই আবার হিনাকে জড়িয়ে ধরলাম,
->>এখন থেকে শুধু রেস্ট নিবে।যা প্রয়োজন আমায় বলবে আমি করে দিবো।তোমায় কিচ্ছু করতে হবে না।এখন তুমি শুধু নিজের আর যে আসছে তার খেয়াল রাখবে।
-‎>>আচ্ছা ঠিক আছে।এখন অফিসে যাও দেরী হয়ে যাচ্ছে।
হিনার কপালে আলতো করে চুমু এঁকে দিয়ে অফিসে চলে আসলাম।অফিসে এসেও কোন কাজে মন বসাতে পাচ্ছিলাম না।প্রতি ঘন্টায় ফোন দিয়ে খোঁজ নিচ্ছি,কী করছে,কী খাইছে।বাড়ির সবাইও ওর প্রতি অনেক যত্নবান।অনেক খেয়াল রাখে সবাই ওর।
এভাবেই দেখতে দেখতে ডেলিভারির দিন চলো আসলো।হিনা খুব ভয় পাচ্ছে।আমি ওর পাশে ওর হাত ধরে ওকে সাহস দিয়ে যাচ্ছি।হাসপাতালে হিনার আর আমার পরিবারের সবাই উপস্থি।সবাই সব দিকে খেয়াল রাখছে যেন কোনো সমস্যা না হয়।হিনাকে ওপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হলো।বেশ কিছুক্ষণ পর নবজাতকের কান্না কানে আসলো সবার।সবাই দোয়া পরছে,আলহামদুলিল্লাহ বলছে।আমার শুধু একটাই চিন্তা হিনা আর বাচ্চা দু'জনেই যেন সুস্থ থাকে।কিছুক্ষণ পর ডাক্তার এসে জানালো সুন্দর ফুটফুটে একটা কন্যা সন্তান হইছে।আর মা মেয়ে দু'জনেই সুস্থ আছে,একটু পর তাদের রুমে দেওয়া হবে।
বাবুটাকে মার কোলে দিলেন ডাক্তার।মা বাবুকে আমার কোলে দিনেল।বাবুটা দেখতে একদম হিনার মতোই হইছে।প্রথম বাবা হওয়ার অনুভূতি,নিজের সন্তানকে কোলে নেওয়ার সে অনুভূতি কোনো ভাসাতেই প্রকাশ করা সম্ভব না।ছোট বাবুদের কোলে নেওয়ার তেমন কোন অভিজ্ঞতা আমার পূর্ব তেমন ছিলো না।যদি বাবুকে ভূলে ব্যাথা দিয়ে ফেলি সেই ভয়ে আবার মার কোলেই দিলাম।একটু পর হিনাকেও কেবিনে শিফট করা হলো।মা হিনার পাশে বাবুটাকে শুইয়ে রাখলেন।আমিও ওদের দুজনার পাশে হিনার হাত ধরে বসে রইলাম।এই মুহূর্তের অনুভূতিটাই অন্য রকম।মেয়ে হয়েছে বলে কারো মন খারপ না বরং সবাই অনেক অনেক খুশি।ছেলে বা মেয়ে কোনটাতেই তারতম্য নেই।আমাদের পরিবারে সবাই সমান।
কিছুদিন পর বাবুকে আর হিনাকে বাসায় আনা হলো।সবাই ওদের খেয়াল রাখছে,যখন যা লাগছে সাথে সাথে হাজির।আমিও অফিসে থেকে ঘন ঘন ফোনে খোজ খবর নেই।সবার কেয়ারিং-এই বাবুটা বড় হতে থাকলো।নামকরণ করা হলো রুসা।হিনা রুসা আর পরিবারের সবাইকে নিয়ে দিন গুলো ভালো ভাবেই কেটে যাচ্ছে।সবার আদরে বড় হয়ে উঠছে রুসা।
বছর চার পর,
আবার আমাদের ঘরে আরও একটা সন্তান আসলো।এবারের টা ছেলে,ওর নাম রাখা হয়েছিলো রমিন।সবাইকে নিয়ে সুখেই সময় গুলো খুব দ্রুত কেটে যাচ্ছে।সবার ভালোবাসা আদরে রুসা আর রমিন বড় হয়ে উঠছে।বছরের পর বছর পেরিয়ে যাচ্ছে।রুসা,রমিন স্কুল থেকে হাইস্কুলে,হাইস্কুল থেকে কলেজে।রুসা এবার ভার্সিটিতে আর রমিন এইচ.এস.সি দিবে।
অনেক গুলো বছর পেরিয়ে গেলো।বলবো না সব সময় সুখেই গেছে।এক এক করে আমার আর হিনার মা-বাবা সবাই চলে গেলেন।সেই সময় গুলোতে আমরাই একে অন্যকে শান্তনা দিয়েছি,সাহস জুটিয়েছি।তাই অসময় গুলোও দুজনেই সামলিয়ে উঠতে পেরেছিলাম।হিনা এখন বাড়ির গিন্নি।একা হাতেই সব সামলাচ্ছে।
আরও কয়েক বছর পর,
আজ রুসার বিয়ে।ওর বিয়েও এ্যারেন্জ লাভ ম্যারেজ ভাবেই হলো।জানি বুদ্ধিটা সম্পূর্ণ হিনার থেকেই পেয়েছে।তবে খারাপ না,বরং এটাই ভালো।আমরাও তো টিকে আছি এ্যারেন্জ লাভ ম্যারেজ করেই।পাত্রও ভালোই।আচার ব্যবহারেও ভালো প্রতিষ্ঠিত, পরিবারও ভালো।সুখেই থাকবে আমাদের রুসা।
দেখতে দেখতে কয়েক বছর পর পড়াশুনা শেষে ভালো একটা চাকুরী পওয়ার পর রমিনেরও বিয়ে হয়ে গেলো,এ্যারেন্জ লাভ ম্যারেজ।ওরাও ভালোই আছে।বউমাও অনেক লক্ষ্মী ওর নাম আরহি।এখন আরহি আর হিনা দু'জনে মিলেই সংসার সামলাচ্ছে।ঠিক মা আর হিনা যেমন সামলাতো।ওদের ঘর আলো করেও ফুটফুটে সন্তান আসলো।ধীরে ধীরে ওরাও বড় হয়ে উঠছে,আমাদের চুলেও পাক ধরছে।নাতি,নাতনী নিয়ে ভালোই কাটছে দিনকাল।ছোট ছোট বাবু গুলো সারাদিন আশেপাশে দৌড়ে দৌড়ে বেড়ায়।ওদের দেখে নিজের ছেলেবেলা মনে পড়ে যা।
দেখতে দেখতে এ্যারেন্জ ম্যারেজ লাইফেরও চল্লিশ বছর পেরিয়ে গেলো।চাকুরী থেকেও অবসর নিয়ে এখন নাতি নাতনী দের নিয়েই ব্যস্ত থাকি।বয়সের ছাপ আমার আর হিনার দুজনার মধ্যেই প্রকাশ পাচ্ছে।ইদানিং হিনার শরীর একটু বেশী খারাপ হচ্ছে।তেমন কোনো রোগ না তবুও বয়সের ভারে ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে।আমি তো সবসময় ওর পাশে আছি নানি নাতনী গুলোও সব সময় ওকে মাতিয়ে রাখতেই চেষ্ঠা করছে।
আজ রাতের অকাশটা বেশ পরিষ্কার।পূর্ণিমারাত, সারা আকাশে তারা ঝিকমিক করছে।আমি আর হিনা আমাদের রুমেই বসে ছিলাম।হিনা বলল,
->>দেখো আজ চাঁদ কি সুন্দর জোৎস্নার আলো ছড়াচ্ছে।
->>আমার চাঁদতো আজও তুমি।
-‎>>এখন আর চাঁদ কই,এখন চাঁদের বুড়ি হয়ে গেছি।
-‎>>হাহাহা।তা যা বলেছো।
-‎>>চলো না একটু ছাদে যেয়ে তোমার বুকে মাথা রেখে চাঁদ দেখবো।
-‎>>তোমার শরীর যদি আরও খারাপ করে?
-‎>>তুমি তো আছো,কিছু হবে না আমার।চলো না।
-‎>>ঠিক আাছে চলো।(হিনাকে কোলে তুলে নিলাম।)
-‎>>এই কী করছো?ঘরে ছেলে বউমা,নাতি নাতনী আছে দেখলে কী বলবে।
-‎>>কে কী বলবে?ওরাও দেখবে ওদের দাদু ওদের দীদা কে এখনও কতো ভালোবাসে।
-‎>>বুড়া বয়সে কী ভিমরতী ধরলো তোমার?
-‎>>কী বুড়া বুড়া করছো?চলোনা বাকী দিনগুলো আবার বিয়ের পরের দিনগুলোর মতো করে কাটাই।
-‎>>খারাপ বলোনি।হাতে সময়ই বা বাকী আছে আর ক'দিন।
-‎>>যে ক'দিনই থাক,বাকী দিনগুলো ভালোভাবে কাটিয়ে যেনো একই সাথে দুজনে চলে যেতে পারি।এখন এসব কথা বাদ দিয়ে চলো ছাদে যাই।
-‎>>আমায় কোলে নিয়ে যেতে পারবে?
-‎>>কি মনে হচ্ছে।বুড়ো হয়েছি কিন্তু তোমাকে ঠিকই কোলে তুলতে পারবো।
আমি হিনাকে কোলে নিয়ে ছাদে আসলাম।ওআমার গলা শক্ত করে ধরে আছে।ছাদের এক কোণে দোলনায় গিয়ে দুজনে বসলাম।হিনা আমার বুকে মাথা রেখে আকাশের চাঁদ দেখছে।আমি বললাম,
তারা ভরা জোৎস্না রাতে,,
তুমি আমি বসে একলা ছাদের কোণে,,
শীতল হাওয়া যাচ্ছে বয়ে,,
প্রেমের দোলা লাগলো মনে,,
চাঁদের আলোয় তোমায় দেখে,,
পরলাম প্রেমে নতুন করে।।
তাই তো তোমায় জড়িয়ে ধরে,,
নিলাম তোমায় আরও কাছেতে,,
আছো তুমি চুপটি করে,,
আমার বুকে মাথাটি রেখে,,
হাতে রেখে হাত,কাটাব এ রাত,,
তারা ভরা আকাশের নিচে,,
বাকী জীবনের কাটাবো সব রাত,,
এভাবেই তোমায় পাশে নিয়ে।
->>বাহ!এতো ভালোবাসা?
-‎>>সব তোমায় ঘিরেই।
-‎>>কখনো ছেড়ে যাবে না তো একা করে।
-‎>>তোমায় ছাড়া তো যেতে চাইই না।কিন্তু কার মৃত্যু কখন তা তো বলা যায় না।
-‎>>হুমম।আমি যেন শেষ নিশ্বাস তোমার বুকেই ত্যাগ করতে পারি।
-‎>>এসব কী আজেবাজে কথা বলছো।চাঁদ দেখতে আসলাম না আমরা।কখন কী হয় সেটা তখন দেখা যাবে।
তারপর দুজনেই একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে বসে রইলাম।মাঝে মাঝেই হিনাকে নিয়ে ছাদে আসতাম চাঁদ দেখতে।চেষ্ঠা করতাম আবার বিয়ের পরের সময়গুলোর স্মৃতি বাস্তবে আবার ফুটিয়ে তুলতে।
কয়েকমাস পর হিনা খুব অসুস্থ হয়ে পড়লো।হাসপাতালে নেওয়া হলো।শরীর দূর্বল তাই সেলাইন দিয়ে রাখা হইছে।আমি ওর পাশে হাত ধরে বসে আছি।
হিনা->>টুলে কেন,বেডে এসে আমার মাথার পাশে বসো।
->>ডাক্তার নিষেধ করে গেলো যে?
-‎>>যে যা বলে বলুক।আমার পাশে বসো,আমি তোমার বুকে মাথা রেখে শুয়ে থাকি।
-‎>>আচ্ছা নাও।(ওর পাশে বসলাম ও আমার বুকে মাথা রেখে শুয়ে পরল।)
-‎>>সরি!তোমায় একা রেখে চলে যাচ্ছি।আমাকে ক্ষমা করে দিও।
-‎>>কী বলছো এসব।চুপচাপ ঘুমিয়ে থাকো।
-‎>>তুমি মাথায় হাত বুলিয়ে দাও।
-‎>>ঠিক আছে।
আমি হিনার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি আর ও ঘুমিয়ে পরলো।সে ঘুম আর ভাঙ্গেনি।বুঝতেই পারলাম না ও এভাবে আমায় ফাঁকি দিয়ে ঘুমিয়ে পরলো চিরতরের জন্য।আর জাগিয়ে তুলতে পারিনি ওকে।রমিন,রুসা ওদের ছেলে মেয়ে অনেক কাঁদছে।দীদা দীদা করে ডাকছে কিন্তু হিনা কারও ডাকে আর সাড়া দিচ্ছে না।বুকের বা পাশটা যেন ফাঁকা ফাঁকা লাগছে।মনে হচ্ছে নিজের অর্ধেক অস্তিত্বই হারিয়ে ফেললাম।
দাফন কার্য শেষ করে রেখে আসলাম হিনাকে একা ওই মাটির ঘরে।জানি না একা কী ভাবে থাকবে ও ওখানে।আমিও বা একা কী করে থাকবো এ পৃথিবীতে ওকে ছাড়া।সমাপ্ত হলো এখানেই আমাদের এ্যারেন্জ লাভ লাইফের।হাসি-কান্না,সুখ-দুঃখ,মান-অভিমান সবই ছিলো আমাদের এই জীবনে।সব থেকে বেশি ছিলো একে অন্যকে বোঝার ক্ষমতা।তাইতো পার করতে পেরেছি দীর্ঘ এতোগুলো বছর এ্যারেন্জ লাভ লাইফ।হয়তো আমিও আর কিছু দিন পর চলে যাবো ওরই পাশের কবরে,আবার ওর পাশে।এখন সেই অপেক্ষায় বসে আছি,আবার কবে ওর পাশে আমার অবস্থান হবে।মৃত আবস্থাতেই হোক তবুও তো ওর পাশে থাকতে পারবো।
-----------------------------♥সমাপ্ত♥------------------------

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.