![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশের আবকাঠামো উন্নয়নে একটা মাস্টার প্লান এই পর্যন্ত কোনো সরকারের কাছে দেখতে পাই নি। যদি একটা মাস্টার প্লান থাকতো তাহলে আমাদের বড় বড় নির্মাণ প্রকল্প গুলো খুব সহজে আর সস্তায় করা যেতো। কিন্তু আফসোস এই যে, সরকার গুলোর কর্মকাণ্ড দেখলে মনে হয় এদেশের কারো মেধা নেই। যা হোক আমি বড় বড় নির্মাণ প্রকল্পের বিষয়ে একটা উদাহরন দিচ্ছি। সেক্ষেত্রে পদ্মা সেতু কেই আইডল ধরে নিয়ে একটা উদাহরন দাড় করাচ্ছি। আমাদের প্রস্তাবিত পদ্মা সেতুর খরচ ধরা হয়েছে ২২/২৩ হাজার কোটি টাকা। এর বেশির ভাগ (প্রায় ৮০% থেকে ৮৫% ) খরচ-ই হবে বৈদেশিক মুদ্রায়। কেউ কি জানেন কেনো এই খরচ গুলো বৈদেশিক মুদ্রায় হবে? এক্ষেত্রে কি কাচামাল বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে? আসলে কাচামাল সরা সরি বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে না। কিন্তু বেসরকারি ভাবে কাঁচামাল উতপাদন কারীরা বিদেশ থেকে কাঁচামাল আমদানি করলেও সেটা কোনো ভাবেই পন্য মুল্যের ৪০% বেশি না। আর এই প্রকল্পের আমদানি নির্ভর কাঁচামাল হলো রড আর সিমেন্ট। যা কোনো ভাবেই প্রকল্পের মোট খরচের ২৫% এর বেশি না। অর্থাৎ এই প্রকল্পের কাঁচামাল বাবদ বৈদেশিক মুদ্রায় ব্যয় সরবচ্চো ১০% (২৫% এর ৪০%)। বৈদেশিক মুদ্রায় ব্যায়ের আরেকটা খাত হলো প্রকৌশলী ও পরামর্শ ব্যয় যা মোট প্রকল্প ব্যায়ের ১০% বেশি না। বৈদেশিক মুদ্রায় ব্যায়ের আরেকটা বড় (সবচেয়ে) খাত হলো প্রকল্পের হেভি ইক্যুইপমেন্ট খাত। যা মোট প্রকল্প ব্যায়ের ৪০% এর কাছাকাছি। একটা বড় প্রকল্প করতে অনেক হেভি ইক্যুইপমেন্ট যেমন গভীর নদিতে খনন যন্ত্র বা অধিক ক্ষমতা সম্পন্ন রিগ, ড্রেজিং মেশিন, ক্রেইন, স্কাভেটর, এলিভেটর, লিভার ইত্যাদি ইতাদি আর আমাদের দেশের এই সক্ষতা নেই বা এই যন্ত্রপাতি গুলো নেই। আসলে একটা প্রকল্পে ব্যবহৃত হেভি ইক্যুইপমেন্ট এর দাম প্রকল্প খরচের চেয়েও বেশি। তাই মুলত হেভি ইক্যুইপমেন্ট এর বেশির ভাগ-ই আমাদের বিদেশ থেকে ভাড়া আনতে হবে এবং এই ভাড়া পরিশোধ করতে আর এগুলো আনা নেয়া করতে-ই মোট প্রকল্প ব্যায়ের প্রায় ৪০% ব্যয় হয়ে যাবে যা পুরোটাই বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধ করতে হবে। আমার প্রশ্ন হলো এই হেভি ইক্যুইপমেন্ট কি খুব-ই জটিল কিছু? যে ৪১ বছরেও আমরা এর সক্ষমতা অর্জন করতে পারি নাই? আমাদের বুয়েট চুয়েট আর অনেক গুলো পলিটেকনিক্যাল মিলিয়েও কি কোনো মেধা-ই নেই যারা এগুলো ব্যাবহারে সক্ষম নয়? আমাদের লক্ষ লক্ষ প্রবাসি ও প্রবাস ফেরত নির্মাণ শ্রমিকরা কি এই সব ব্যাবহার করে নাই? প্রশ্ন উঠবে এই গুলোনের দাম-এর সক্ষমতা নিয়ে। আমার প্রশ্ন আমরা কি অনেক গুলো বড় বড় প্রজেক্ট সম্পন্ন করি নাই যেখানে এই রকম যন্ত্রপাতির ব্যবহার হয়েছে? এবং পদ্মা সেতু-ই কি আমাদের সর্বশেষ বৃহৎ প্রকল্প? আমরা প্রথম থেকে-ই পরিকল্পনা করে অল্প অল্প করে এই যন্ত্রপাতির সক্ষমতা অর্জন করতে পারতাম। যা হোক যেহেতু এই প্রকল্পের পরেও আমাদের আরো অনেক প্রকল্প করতে হবে তাই আমদের উচিত হবে প্রথমত হেভি ইক্যুইপমেন্ট এর সক্ষমতা অরজনে চেস্টা করা। সেক্ষেত্রে আমাদের শেয়ার মার্কেট ও বিশ্ব ব্যাংকের হেভি ইক্যুইপমেন্ট লোন একটা ভালো সমাধান হতে পারে। কেনোনা যদি এই হেভি ইক্যুইপমেন্ট এর সক্ষমতা আমাদের থাকতো তাহলে আমরা যখন তখন যেকোনো প্রকল্পের কথা ভাবতে পারতাম, বৈদেশিক ঋণ নিরভরতা কমে যেত, দেশের অলস মুদ্রার ব্যাপক ব্যাবহার হতো, মোদ্দা কথা দেশের অর্থনীতিতে একটা ব্যাপক গতিশীলতা তৈরি হতো যার ফলে ব্যাপক কর্মসংস্থান ও উন্নয়ন হতো। জাপান কোরিয়ার পরে মালোয়শিয়া এবং হাল আমলে থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়া ঠিক এই ফর্মুলাতেই সাধারন অরথনিতির দেশ থেকে অর্থনৈতিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়েছে।
©somewhere in net ltd.