নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রি হোসাইন

কবিতা তার অগ্রজ কবিতার অনুকরন করে কথা বলা মাত্র ...... যারা নতুন কিছু বলে তারা কবি না যতক্ষন পর্যন্ত সেই নতুন কথার অনুকরন না করা হয়।

রি হোসাইন › বিস্তারিত পোস্টঃ

গৌতম বুদ্ধ

২৩ শে মে, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৭

সিদ্ধার্থ গৌতম (Sanskrit: सिद्धार्थ गौतम; Pali: Siddhattha Gotama, সিদ্ধাত্থ গোতম) ছিলেন প্রাচীন ভারতের এক ধর্মগুরু এবং বৌদ্ধধর্মের প্রতিষ্ঠাতা। অধিকাংশ বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মতে, তিনিই আমাদের যুগের সর্বোচ্চ বুদ্ধ (পালি: সম্মাসম্বুদ্ধ, সংস্কৃত: সম্যকসম্বুদ্ধ)। বুদ্ধ শব্দের অর্থ আলোকপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা দিব্যজ্ঞানপ্রাপ্ত ব্যক্তি। তাঁর জন্মের ও মৃত্যুর সঠিক সময়কাল অজ্ঞাত। প্রাক-বিংশ শতাব্দী ঐতিহাসিকেরা তাঁর জীবৎকালকে সীমাবদ্ধ করেছেন ৫৬৩ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ থেকে ৪৩৮ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের মধ্যে। তবে কোনো কোনো আধুনিক ঐতিহাসিকের মতে, গৌতম বুদ্ধের মৃত্যু ঘটে ৪৮৬ থেকে ৪৮৩ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের মধ্যবর্তী কোনো এক সময়ে; আবার কোনো কোনো মতে, ৪১১ থেকে ৪০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের মধ্যে।



গৌতম বুদ্ধের অপর নাম "শাক্যমুনি"। তিনি বৌদ্ধধর্মের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব। অনুমিত হয়, তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর অনুগামীরা তাঁর জীবনকথা, শিক্ষা ও বৌদ্ধ সংঘের সন্ন্যাস-বিধি লিপিবদ্ধ করেন। তাঁর শিক্ষাগুলি প্রথম দিকে মুখে মুখে প্রচলিত ছিল। বুদ্ধের মৃত্যুর প্রায় চারশো বছর পর এগুলি লিপিবদ্ধ করা হয়।



বৌদ্ধধর্মের পাশাপাশি হিন্দুধর্ম, আহমদিয়া মুসলিম সম্প্রদায় ও বাহাই ধর্মমতের মতো বিশ্বধর্মেও তাঁকে দেবতা বা মহামানব বলে উল্লেখ করা হয়েছে।



সিদ্ধার্থের পিতা ছিলেন শাক্য বংশীয় রাজা শুদ্ধোধন,মাতা মায়াদেবী। মায়াদেবী কপিলাবস্তু থেকে পিতার রাজ্যে যাবার পথে লুম্বিনি গ্রামে (অধুনা নেপালের অন্তর্গত) সিদ্ধার্থের জন্ম দেন। তাঁর জন্মের সপ্তম দিনে মায়াদেবীর জীবনাবসান হয়। পরে তিনি বিমাতা গৌতমী কতৃক লালিত হন। ধারণা করা হয় তাঁর নামের "গৌতম" অংশটি বিমাতার নাম থেকেই এসেছে। আবার কারও কারও মতে এটি তাঁর পারিবারিক নাম। জন্মের পঞ্চম দিনে রাজা ৮ জন জ্ঞানী ব্যক্তিকে সদ্যোজাত শিশুর নামকরণ ও ভবিষ্যৎ বলার জন্য ডাকেন। তাঁর নাম দেওয়া হয় সিদ্ধার্থ - "যে সিদ্ধিলাভ করেছে, বা যার উদ্দেশ্য সফল হয়েছে"। তাঁদের মধ্যে একজন বলেন, রাজকুমার একদিন সত্যের সন্ধানে বেরিয়ে যাবেন এবং বোধিপ্রাপ্ত হবেন। একজন রাজপুত্র হিসেবে সিদ্ধার্থ বিভিন্ন শাখায় শিক্ষা লাভ করেন।



সিদ্ধার্থ গৌতমের বিবাহ সম্বন্ধে দুধরনের মত আছে। প্রথম মত অনুসারে ১৬ বছর বয়সে তিনি একটি প্রতিযোগিতায় তাঁর স্ত্রীকে লাভ করেন। অতঃপর পুত্র রাহুল জন্মগ্রহণ করে। আর একটি মত অনুসারে ২৮ বছর বয়সে তাঁকে সংসারের প্রতি মনোযোগী করার জন্য তাঁর পিতামাতা তাঁকে রাজকন্যা যশোধরার সাথে বিবাহ দেন। পরবর্তী বছরে জন্ম নেয় পুত্র রাহুল।



কথিত আছে, একদিন রাজকুমার সিদ্ধার্থ বেড়াতে বের হলে ৪ জন ব্যক্তির সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। প্রথমে তিনি একজন বৃদ্ধ মানুষ, অতঃপর একজন অসুস্থ মানুষ এবং শেষে একজন মৃত মানুষকে দেখতে পান। তিনি তাঁর সহিস ছন্দককে এ প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলে, ছন্দক তাঁকে বুঝিয়ে বলেন যে এটিই সকল মানুষের নিয়তি। আবার একদিন (কারও কারও মতে সেদিনই) তিনি ছন্দককে নিয়ে বের হলেন। এবারে তিনি দেখা পেলেন একজন সাধুর, যিনি মুণ্ডিতমস্তক এবং পীতবর্ণের জীর্ণ বাস পরিহিত। ছন্দককে এঁর সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলে, তিনি বলেন উনি একজন সন্ন্যাসী, যিনি নিজ জীবন ত্যাগ করেছেন মানুষের দুঃখের জন্য। রাজকুমার সিদ্ধার্থ সেই রাত্রেই ঘুমন্ত স্ত্রী, পুত্র, পরিবারকে নিঃশব্দ বিদায় জানিয়ে তিনি প্রাসাদ ত্যাগ করেন। সাথে নিলেন ছন্দক এবং তার প্রিয় অশ্ব কন্টককে। প্রাসাদ থেকে বেরিয়ে বনের শেষ প্রান্তে পৌঁছিয়ে তিনি থামলেন। তলোয়ার দিয়ে লম্বা চুল কাটার পর তিনি ভবিষ্যতবাণী করলেন যে আমি যদি সিদ্ধিলাভ করতে পারি তাহলে এই চুল আকাশে উড়িয়ে দেওয়ার পর ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উড়ে যাবে।এরপর তিনি কর্তিত চুল আকাশের দিকে উড়িয়ে দিলেন এবং সত্যি সত্যি তা উপরের দিকে উঠে যায় । তাবতিংস স্বর্গের দেবরাজ ইন্দ্র সে চুল নিয়ে যান এবং চুলামনি নামক চৈত্য নিমার্ণ করেন যা প্রতিনিয়ত দেব ব্রক্ষ্মা দ্বারা পূজিত হচ্ছে ।বিদায় জানানোর পালা এসে গেল ।সারথি ছন্দককে বললেন যে অশ্ব কন্টককে সাথে করে রাজপ্রাসাদে ফিরে যেতে।কিন্তু কুমার সিদ্ধার্থকে ছেড়ে অশ্ব কন্টক যেতে চাইছিল না এবং সিদ্ধার্থ সেখান থেকে চল যাওয়ার পর অশ্ব কন্টক সেখানেই প্রাণত্যাগ করল । শুণ্য বুকে সারথি ছন্দক রাজপ্রাসাদে ফিরে গেল । তখন সিদ্ধার্থের বয়স ছিল মাত্র ২৯ বছর। সিদ্ধার্থের এই যাত্রাকেই বলা হয় মহানিষ্ক্রমণ।



দুঃখ ও দুঃখের কারণ সম্বন্ধে জানতে সিদ্ধার্থ যাত্রা অব্যাহত রাখেন। প্রথমে তিনি আলারা নামক একজন সন্ন্যাসীর কাছে যান। তাঁর উত্তরে সন্তুষ্ট হতে না পেরে তিনি যান উদ্দক নামক আর একজনের কাছে। কিন্তু এখানেও কোনও ফল পেলেন না। এভাবে কিছু দিন যাবার পর তিনি মগধের উরুবিল্ব নামক স্থানে গমন করেন। সেখানে প্রথমে একটি উত্তর-পূর্বমুখি শিলাখণ্ডের উপর বোধিসত্ত্ব জানু পেতে বসে আপন মনেই বলেছিলেন যে, "যদি আমাকে বুদ্ধত্বলাভ করতে হয় তা হলে বুদ্ধের একটি প্রতিচ্ছায়া আমার সম্মুখে দৃশ্যমান হোক।" এই কথা উচ্চারিত হবার সঙ্গে সঙ্গে শিলাখণ্ডের গায়ে তিন ফিট উঁচু একটি বুদ্ধের প্রতিচ্ছায়া প্রতিফলিত হল। বোধিসত্ত্ব তপস্যায় বসার পূর্বে দৈববাণী হয় যে, "বুদ্ধত্ব লাভ করতে গেলে এখানে বসলে চলবে না; এখান থেকে অর্ধযোজন দূরে পত্রবৃক্ষতলে তপস্যায় বসতে হবে।" এরপর দেবগণ বোধিসত্ত্বকে সঙ্গে করে এগিয়ে নিয়ে যান। মধ্যপথে একজন দেবতা ভূমি থেকে একগাছা কুশ ছিঁড়ে নিয়ে বোধিসত্ত্বকে দিয়ে বলেন যে, এই কুশই সফলতার নিদর্শন স্বরূপ। বোধিসত্ত্ব কুশগ্রহণের পর প্রায় পাঁচ শত হাত অগ্রসর হন এবং পত্রবৃক্ষতলে ভূমিতে কুশগাছটি রেখে পূর্বমুখি হয়ে তপস্যায় বসেন। কঠোর সাধনার ফলে তাঁর শরীর ক্ষয়ে যায়। কিন্তু এ তপস্যায় তিনি ভয়, লোভ ও লালসাকে অতিক্রম করে নিজের মনের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ লাভ করতে সক্ষম হলেন। সহসা তিনি বুঝতে পারলেন এভাবে বোধিলাভ হবে না। তিনি তাই আবার খাদ্য গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলেন। সুজাতা নাম্নী এক নারীর কাছ থেকে তিনি এক পাত্র পরমান্ন আহার করলেন। অতঃপর তিনি নদীতে স্নান করে পুনরায় ধ্যানরত হন। অবশেষে কঠোর তপস্যার পর তিনি বুদ্ধত্বপ্রাপ্ত হলেন। শাক্যমুনি বোধিলাভের পর সাতদিন ধরে বোধিবৃক্ষের দিকে তাকিয়ে থেকে বিমুক্তিলাভের আনন্দ উপভোগ করেন। তিনি দুঃখ, দুঃখের কারণ, প্রতিকার প্রভৃতি সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করলেন। এ ঘটনাটিই বোধিলাভ নামে পরিচিত।



বুদ্ধত্ব লাভের পর তিনি কয়েক সপ্তাহ বোধিবৃক্ষের আশেপাশে কাটিয়ে দেন।এরপর ধর্মপ্রচারে নেমে যান।প্রথমে তিনি তার দিব্যচক্ষু দিয়ে ঋষিদের খোঁজ করেন এবং দেখতে পেলেন যে সে দুই ঋষি অনেক আগেই মারা গেছেন।এরপর দিব্যচক্ষুতে দেখলেন যে তার সেই পাঁচজন শিষ্য কৌন্ডণ্য,বপ্প,ভদ্দিয় মহানাম ও অশ্বজিত কোথায় আছে।শিষ্যরা যেখানে আছেন সেখানে উপস্থিত হন এবং প্রথম ধর্মদেশনা করেন।এরাই হলেন বুদ্ধের পঞ্চবর্গীয় শিষ্য।এরপর অনেকেই বুদ্ধের শরণ গ্রহণ করে।এরপর গৌতম বুদ্ধ তার শিষ্যদেরকে ধর্মপ্রচারের জন্য বিভিন্ন জায়গায় পাঠান এবং নিজেও ধর্মপ্রচারের জন্য বেরিয়ে পড়েন।



সমস্ত জীবন ধরে তাঁর দর্শন এবং বাণী প্রচার করে অবশেষে আনুমানিক ৫৪৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ৮০ বছর বয়সে বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে কুশীনগরে ভগবান তথাগত মহাপরিনির্বাণলাভ করেন।



সুত্রঃ Click This Link





মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে মে, ২০১৩ দুপুর ২:৫৪

কিরিটি বলেছেন: একটা প্রশ্ন ঃ অন্যান্য ধর্ম সম্পর্কে বৌদ্ধ ধর্ম বেশ উদার। বৌদ্ধ ধর্মে এমনকি ভিন্ন মতাবলম্বী বিয়ের ক্ষেত্রেও ধরাবাধা কোনো নিয়ম নেই।
যদি কেউ বৌদ্ধ ধর্ম হতে অন্য কোন ধর্ম পালন করতে চায় সেক্ষেত্রে কি ধরণের স্পিরিচুয়াল সমস্যা হতে পারে? এ ব্যাপারে ধর্ম কি বলে?
কোন ধর্মীয় রেফারেন্স দিতে পারেন কি?

২৪ শে মে, ২০১৩ রাত ১:০৩

রি হোসাইন বলেছেন: ধন্যবাদ। বৌদ্ধ ধর্ম সম্পর্কে আমার অভিমত একটু সহজ ও নিজের ভাষায় বলি, মুলত বৌদ্ধ ধর্মে ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমানিত নয়। কিন্তু গৌতম বুদ্ধ ধারনা করতেন একজন স্রষ্টা বা ইশ্বর অবশ্যই আছেন .।.।। আর তাই তিনি ঈশ্বরের সন্ধানে বের হন । এক পর্যায়ে তিনি বুঝতে পারলেন যে এক মাত্র জ্ঞান চর্চার মাধমেই ইশ্বরের অনুসন্ধান সম্ভব। তিনি তার ইশ্বর অনুসন্ধানের মাধ্যমে বিভিন্ন দর্শনের জ্ঞান লাভ করেন। মুলত তার প্রধান বিষয় ছিলো দুঃখ। দুঃখ কে কি করে জয় করা যায় ? এর থেকে-ই তিনি মানুষের জীবন যাপনের একটা দিক নির্দেশনা তৈরি করলেন।

তিনি ইশ্বর কে খুজে পাননি.।।। তাই আস্তিক নাস্তিক উভয়-ই বৌদ্ধ ধর্ম পালন করতে পারে। তবে ঈশ্বরের অনুসন্ধানে বের হয়ে তিনি উপদেশ করেছেন। আর যারা ঈশ্বরের অনুসন্ধানে বের হবেন তারাই হবেন ভিক্ষু।

মুলত সে জন্যেই এই ধর্মে সাধারন মানুষের জীবন যাপনের দিকনির্দেশনা এক রকম আর ভিক্ষুদের জন্যে জীবন যাপনের দিকনির্দেশনা আরেক রকম।

(উপরোক্ত বক্তব্য একান্তই আমার নিজস্ব আনুমান.।।। এর কোনো প্রমান বা রেফারেন্স আমার কাছে নেই। তাই আপনি গ্রহন না করলেও অখুশি হবো না)

২| ২৩ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৬

আজ আমি কোথাও যাবো না বলেছেন: হুম আগেই পড়েছিলাম উনার সম্পর্কে।
পোস্ট ভাল লাগলো খুব। আজকে তো আবার বৌদ্ধ পূর্ণিমা!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.