নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যা-ই লিখি, কাঠবিড়ালীর মত এখানে জমিয়ে রাখি। https://rimsabrina.blogspot.com/
সারাদিন পাথরের গায়ে অনর্থক আঁকাবুকি করি। খিদে পেলে পোষা নেকড়ে কুকুরটাকে নিয়ে বনমোরগ ধরতে চলে যাই আমরা ক’জন। ভাগ্য ভাল হলে এক আধটা হরিণও জুটে যেতে পারে। আমাদের মাঝের শক্ত সমর্থ মানুষটার কাঁধে সেটাকে তুলে দিয়ে ফেরার পথ ধরি। শিশু আর বৃদ্ধরা মিলে কাঠকুটো জড়ো করে রাখে। সেখানে আগুন ধরিয়ে শিকার ঝলসে খাওয়া হয়। তৃপ্তির ঢেকুর তুলে কেউ কেউ গাছের ছায়ায় ঘুমিয়ে পড়ি। সন্ধ্যা হলে বসবে উদ্দাম ঢাকঢোল আর ক্ষ্যাপাটে নাচের আসর। ছেলেবুড়ো সবাই নাচব। আমদের চোখেমুখে ঠিকরে পড়বে নিষ্ঠুর প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকার স্বর্গীয় আনন্দ।
রাত বাড়ার সাথে সাথে চাঁদের ঝকঝকে আলোয় ছেয়ে যায় চারপাশ। কোনো এক এলোমেলো চুলের আদিম যুবক গান ধরে। হারিয়ে যাওয়া প্রিয় মানুষের জন্যে ভালবাসার গান। বিষন্ন সুরে বুকের ভেতরটা মুচড়ে যায় পাথুরে গুহার সামনে বসে থাকা হাসিখুশি মেয়েটার। অনেক যত্ন করে সে একমনে মনে হরিণের চামড়া সেলাই করছে। জামাটা তৈরি হলে এক পড়ন্ত বিকেলে এই ভাবুক যুবককে উপহার দেবে। বিস্মিত যুবকের প্রতিক্রিয়া মনের পর্দায় দেখে মনের ভুলে মেয়েটা হেসে ওঠে। ছেলেটা অপ্রস্তুত হয়ে গান থামিয়ে দেয়। বুড়ো মোড়লের ইশারায় আবার শুরু হয় গান। এবার সে শিকারের গান ধরে। পাকা শিকারীর বর্শার এক ঘায়ে নধর বনমহিষের ছানা কিভাবে কাবু হয়ে গেল তার পৌরুষদীপ্ত সুরেল বর্ণনা। সবাই মুগ্ধ হয়ে শুনতে থাকে।
দূরে কোথাও থেকে জান্তব শব্দ ভেসে আসে। আমাদের স্নায়ু সতর্ক হয়ে যায়। বল্লম, বর্শা আর এঁটেল মাটি দিয়ে বানানো ঢ্যালাগুলো নিয়ে পাথরের চাঁইয়ের আড়ালে আশ্রয় নেই নারীপুরুষ সবাই। শিশুদের নিরাপদ দূরত্বে নিয়ে যায় কয়েকজন বৃদ্ধ। হরিণের চামড়াটা এক বৃদ্ধের হাতে ধরিয়ে দিয়ে সেই মেয়েটা তীর-ধনুক নিয়ে এসে দাঁড়িয়েছে গান গাওয়া ছেলেটার পাশে। পলকের চোখাচোখিতে ছেলেটার মুখে আত্মবিশ্বাসের ছাপ আরো গাঢ় হল কি? হাতের বল্লম সে আরো শক্ত করে উঁচিয়ে ধরে অজানা শত্রুকে লক্ষ্য করে।
পাশবিক শব্দটা ক্রমশ কাছে চলে আসছে। বুড়ো মোড়লের তীক্ষ্ণ শীষ কানে আসামাত্র আমরা, আদিম মানুষেরা এক ধরনের বন্য আদিমতায় ভর দিয়ে ছুটে যেতে থাকি অন্ধকারের দিকে। আমাদের কাছে রাত মানেই যুদ্ধ। আজকে রাতে আমরা সংখ্যায় এক দুই জন কমে যাব। কিন্তু কালকে ঠিকই জন্ম নেবে আরো কয়েকটি শিশু। তাদের মাঝে আমরা বেঁচে থাকব হাজার হাজার বছর ধরে। তাই আমরা ভয় পাই না। কাল রাতেও চাঁদ উঠবে। আমরা হারিয়ে যাওয়া মানুষগুলোর জন্যে বিষন্ন সুরে গান গাইব। বেঁচে থাকা চলবেই।
-ড. রিম সাবরিনা জাহান সরকার: মিউনিখ, জার্মানি।
১৩ ই জুন, ২০১৮ রাত ১০:৪৮
রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
২| ১৩ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:০৩
ভুয়া মফিজ বলেছেন: আপনার লেখা পড়ে নিজেকে একজন আদিম মানব মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে ঝলসানো হরিণের মাংস খেয়ে সারারাত উদ্দাম নাচানাচি করি। কি করবো, আমাদের সবার শরীরেই আদিম পূর্বপুরুষের রক্ত বইছে যে!
১৩ ই জুন, ২০১৮ রাত ১০:৫১
রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: গুহামানবদের মেন্যু তাহলে একদম খারাপ ছিল না।
৩| ১৩ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৪
রাজীব নুর বলেছেন: লেখাটা পড়ে কিছু বুঝলাম না।
১৩ ই জুন, ২০১৮ রাত ১০:৫৩
রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: আমিও লেখার সময়ে এত ভেবে লিখি নি। এটি একটি উড়াধুড়া লেখা।
৪| ১৪ ই জুন, ২০১৮ সকাল ১০:২৩
রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: আমিও লেখার সময়ে এত ভেবে লিখি নি। এটি একটি উড়াধুড়া লেখা।
তাহলে একটা উড়াধুরা মন্তব্য করি-
আমি আর্জেন্টিনা দলের সাপোর্টার,কিন্তু ব্রাজিল সমর্থকদের ও পছন্দ করি। কিচ্ছু করার নাই।
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:০১
কাইকর বলেছেন: বাহ.....সুন্দর লিখেছেন