নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যা-ই লিখি, কাঠবিড়ালীর মত এখানে জমিয়ে রাখি। https://rimsabrina.blogspot.com/
চারিদিক রুক্ষ। মরুভূমি মরুভূমি চেহারা। ক্যাকটাস গাছগুলো দেখিয়ে আদিবা বলেই ফেলল, ‘মনে হচ্ছে যেন সৌদি আরব চলে এসেছি’। শুনে খিক্ করে হেসে ফেললাম। টাইলসের দোকান, বিউটি পার্লার আর ইংরেজি শেখার কোচিং সেন্টারগুলোর গা ঘেঁষে প্যাঁচ খেয়ে ঝুলে থাকা বিদ্যুতের তার দেখিয়ে বললাম, ‘আমার তো মনে হচ্ছে পুরাই ঢাকা। ফিলিং হোমলি‘। বাকিরাও স্বীকার করে নিল, কথা মিছে নয়।
বাকিরা বলতে আদিবার মেয়ের বাপ আকরাম আর আমার ছেলের বাবা রুমি। যাদের গাঁটের পয়সার বদৌলতে এই নতুন দেশে ঘুরতে আসা। এরা এবার বেশ ঝামেলা দিচ্ছে। তাদের দাবি, আদিবা আর আমি দুইজনই যেহেতু টুকটাক চাকরি করি, তাই আমাদেরকেও এ যাত্রায় হাত খুলে খরচ করতে হবে। আমরা অবশ্য উল্টো বুঝিয়ে দিয়েছি যে বিবি-বাচ্চা নিয়ে দেশ দেশান্তরে ঘুরতে যাওয়া পরহেজগার মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব। তাতে পয়সাপাতি নামক তেজপাতা যত বেরিয়ে যাবে, ঈমান তত পোক্ত হবে। কড়া এক ডোজ সবক্ দেবার পর থেকে বাবারা কেমন ঝিম মেরে চুপ হয়ে গেছে। তবে ঝিম ধরার আগে ছানা দুটোর কাঁধে তাদের মায়েদের জ্বালানোর দায়িত্ব সুচারুভাবে বুঝিয়ে দিয়েছে। বিচ্ছুগুলোর কেউ ছুটে চলা মাইক্রোবাসটার জানালা খুলে বেরিয়ে যাবার ফন্দি আঁটছে। কেউ বা মিহি সুরে খুনখুন করে এই ভ্রমনের আগাম মুন্ডুপাত করছে।
এদিকে ধুলাবালির বহর দেখে আমরা কিছুটা হতাশ। এই কিনা অনিন্দ্যসুন্দর দ্বীপদেশ মাল্টা! দেশটা প্রায় দেড়শ বছর ব্রিটিশ কলোনিও ছিল। অতদিনের ভাঙ্গা কোমর সোজা করে দাঁড়ানো কি সোজা কথা। এই ভেবে যখন স্বান্তনা খুঁজছি, তখন নীল রঙের কিসের এক ঝলক চোখে ঝাপটা মেরে গেল। গাড়িটা পাহাড়ি রাস্তায় বাক নিতেই ভুমধ্যসাগর নামের নীল ময়ূর পেখম মেলে দেখা দিল। চোখ ঝলসে গেলেও ঠোঁটের কোনে তৃপ্তির হাসি ফুটে উঠল। তবে বাবাদের হাসিটা অন্য রকম। ইসকো ক্যাহেতে হ্যায় ‘প্যায়সা উসুল’ মুসকান। তাদের পয়সাটা ঠিকঠাক জলে গিয়েছি। এক্কেবারে সাগর জলে। স্রষ্টা নিজের হাতে এই দেশের চারপাশে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন বালতি দিয়ে এমন মহার্ঘ্য ঢেলে দিয়েছেন যে হাজার লুটেরা মিলে লুটে নিলেও ফুরাবে না।
মিউনিখ থেকে মাল্টা মাত্র দুই ঘন্টার আকাশপথ। কিন্তু তাতেই ঘরের দরজা থেকে হোটেলের দরজা অবধি আসতে ঘড়ির কাটা সকাল আটটা থেকে ঘুরে বিকাল চারটায় এসে থেমেছে। হোটেল বললে ভুল হবে, রিসোর্ট আর কি। লবিতে দাঁড়িয়ে ঝিঁ ঝিঁ ধরে যাওয়া পা টান করছি। হঠাৎ পড়ন্ত বিকালের এক ফালি কমলা রোদ আমাদেরকে চটজলদি অভ্যর্থনা জানিয়ে কই যেন ফুরুৎ করে পালিয়ে গেল। আমরাও, ‘বাচ্চাদের খিদে পেয়েছে’- এই অজুহাতে চেক-ইনের লাইনে দাঁড়ানো তাদের বাবাদের হাতে পাসপোর্ট গুঁজে দিয়ে ছানা বগলে নিয়ে ভেতরের রেস্তোরা বরাবর পালিয়ে বাঁচলাম।
ধাতস্থ হয়ে একটু ঘুরে দেখলাম চারপাশটা। রেস্তোরাই তো দেখি সাত-আটটা। বুঝে নিলাম, সাগর পাড় ঘেষে শহর থেকে অনেক দূরে এই অট্টালিকা বানানোর উদ্দেশ্যটা ভীষন দুষ্টূ। লোকে বেড়াতে এসে যেন এখানেই আটকে পড়ে থাকে। সে জন্যে জায়গায় জায়গায় টোপ ফেলা আছে। সার্ফিং থেকে শুরু করে প্যারা সেইলিংয়ের সমস্ত সরঞ্জাম সাগর তীর ঘেঁষে সাজিয়ে রাখা আছে। এতো গেল রোমাঞ্চপ্রিয় লোকজনকে আটকানোর ব্যবস্থা। অ্যাডভেঞ্চার-রোমাঞ্চের নিকুচি করা লোকদের জন্যে আরেক আয়োজন। সামান্য তফাতেই সারি সারি রোদ চেয়ার। এই অলস, কুমির প্রকৃতির লোকেরা যেন তাতে গা ডুবিয়ে শুয়ে বসে মোহিতো কি মার্গারিটা টেনে আর ভাব দেখিয়ে হারুকি মুরাকামি কি পাওলো কোয়েলহো উল্টে বেলার পর বেলা কাটিয়ে দেয়। বোঝা গেল এই প্রমোদ ভবন আসলে একটা হোটেল ক্যালিফর্নিয়া। একবার ঢুকেছো তো মরেছো। ‘You can check out any time you like, But you can never leave!' ভাবতেই এখান থেকে যেকোনো প্রকারে বেরিয়ে যাবার জন্য মন আইঢাই করছে।
কিন্তু সে রাতে আর বেরোনো গেল কই। গলা পর্যন্ত বুফে ডিনারের ব্যাপক সৎকার করে একে একে সবাই পেতে রাখা রোদ চেয়ারগুলোতে গা এলিয়ে দিলাম। রোদের বদলে কৃষ্ণপক্ষের ক্ষয়িষ্ণু চাঁদের আলো গায়ে এসে পড়ছে। পাশেই কতগুলো বিড়াল সাবধানে এসে ঘাটি গেড়েছে। তাদের কানে ছোট-বড় ফুটো। ফুটোগুলো নম্বরের কাজ করে। তার মানে এগুলো হোটেলের পোষা বিড়াল। আপাতত এদের সাথে আমাদের কোন পার্থক্য নেই। দুই সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রজাতির সকল সদস্য একই রকম ভঙ্গিতে পেট ভাসিয়ে শুয়ে আছি। বিড়াল জীবনই সত্য জীবন।
পিট পিট করে চোখ মেলতেই দেখি পাম গাছটা মাথা নুইয়ে বারান্দা ডিঙ্গিয়ে ঘরে ঢুকে পড়েছে। কাছেই ঢেউয়ের শব্দ। মাল্টায় বালির সৈকত তেমন চোখে পড়ে নি। সাগরের কোল ঘেঁষে পাথুরে খাড়া পাড়। একটু এগোতেই সে চেহারা বদলে রুপ নেয় খাড়া পাহাড়ে। অদ্ভূত রুক্ষ, রুদ্র সৌন্দর্য। আছড়ে পড়া ঢেউগুলো তাতে শুধু প্রশ্রয়ই পায়, আশ্রয় আর জোটে না।
আজকের ঘোরাঘুরির ফন্দি গত রাতে আঁটা হয়ে গেছে। আজকে হবে জার্নি বাই বাস। বাস এসে রিসোর্ট থেকে তুলে নিয়ে যাবে। এগুলোকে বলে হপ অন-হপ অফ বাস। এই নাম বার কয়েক আমাদের মুখে মুখে ঘুরে শেষমেষ হিপহপে এসে ঠেকলো। সময়মত মধ্যবিত্ত চেহারার এক দোতালা বাস চলে এল। তার এখানে ওখানে রঙ চটে চটক উবে গেছে। কিন্তু আমাদের উৎসাহে ভাটা পড়ল না। হই হই করে আমরা হিপহপ বাসে চেপে বসলাম। আদিবা-আকরামরা ছোট্ট আমালিয়াকে নিয়ে নিচে বসলো। আর আমাদের তাফসু মিয়ার বাস মাথায় তোলা চিল চিৎকারের দাপটে ছাদ খোলা দোতালায় কড়া রোদের মাঝে আচারের বয়াম হয়ে বসলাম।
মজার ব্যাপার, প্রায় আধা দিন হয়ে গেলো, কিন্তু কোনো মাল্টিজ লোকের দেখা পেলাম না। একে ওকে জিজ্ঞেস করে দেখা গেল, সে এসেছে ভারত, ইন্দোনেশিয়া, নেপালের মত দেশ থেকে অথবা ইউরোপের অন্য দেশ থেকে। গত রাতে তো এক বাংলা বলা আসামের লোকও পেয়েছি। হোটেলের বাবুর্চি। খুব যত্ন করে মেক্সিকান টাকো বানিয়ে দিল। আর চমৎকার উচ্চারনে বলল, ‘আরেকটা বানিয়ে দেই?’। হেসে আপত্তি জানিয়ে জানতে চাইলাম, “মাল্টার লোকজন সব গেলো কই?’। সে উত্তর না দিয়ে রহস্য করে বলল, ‘সবাই ইম্পোর্টেড’। পরে অবশ্য আরেকজনকে একই কথা পাড়তে জবাব দিল, ‘আছে তো মাল্টার লোক। ইয়া মোটা আর এই বেঁটে দেখতে। তবে ইউরোপিয়ান্দের মত সাদা। দেখবে তুমি? কালকে আমার এক মাল্টিজ কলিগ আছে। নিয়ে আসবো নে সকালে তোমার নাস্তার টেবিলে‘। সকালে অতি দ্রুততার সাথে নাস্তা করে পালিয়েছি। নইলে খাস মাল্টিজ এনে আমাকে বলা হত, ‘কি বলেছিলাম না ফর্সা, মোটা আর বাঁটকু? এবার তোমার সাধ মিটেছে?’। সেই মাল্টিজের চেহারাই বা কি হত তখন, আমিই বা কই লুকাতাম?
বাস ঢিমে তালে না চলে শাঁ শাঁ করে বাতাস কেটে চলছে। একটা বিশ্ববিদ্যালয় আর তার পাশে ছাত্রদের হোস্টেল চোখে পড়ল। লাল ইটের দেখে মনে হচ্ছে যেন কার্জন হলের ফজলুল হক হল। তারপর তাজ্জব বনে গিয়ে দেখলাম, লুঙ্গির মত কি একটা ঘাড়ে ফেলে কোমরে তোয়ালে পেঁচানো কেউ একজন পাট করে চুল আঁচড়াতে আঁচড়াতে ব্যাপক উৎসাহে হাত নাড়ছে। পর্যটন দেশ মাল্টার পর্যটন শিল্পের সেও এক অংশীদার। হাত নেড়ে অতিথি বরন তার কর্তব্যের ভেতর পড়ে। হোক না সেটা গোসল শেষের আদুল গায়ে।
নানান জায়গায় বাস থামতে শুরু করেছে। সাথের ছোট শিশুদের কারনে দৌড়ঝাপ করে সবকিছু এক বসায় দেখে ফেলা অসম্ভব। ঠিক হল, স্লিমা (Sliema) যাব। নামটা আরবি ‘সালাম’ থেকে এসেছে। শেখান থেকে হবে জার্নি বাই বোট। ঘন্টা খানেকের নৌবিহার। এও মন্দ কি? আসন থেকে উঠে এসে চালক বাস চাপড়ে কড়া ব্রিটিশ উচ্চারনে হাঁক ছাড়ল, ‘স্লিমা এসে গেছি। কে নামবে নামো।‘ এই লোকের চোস্ত ইংরেজির অত্যাচারে কানের বারোটা বেজেছে এতক্ষন। বেচারা যেচে পড়ে শহরের বিবরণ দিচ্ছিল। এর বদলে সে ক্রিকেটের ধারাভাষ্য দিলে চোখ বুজে জিওফ্রে বয়কটদের ভাত মেরে দিতো। যাহোক, নেমে পড়ে বাঁচলাম।
(চলবে)
২০ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১২:০৬
রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: ধন্যবাদ জানবেন। পরের পর্বের জন্যে যাপিত জীবন থেকে সময় চুরির তাল করছি। ফাঁক পেলেই লিখে ফেলবো।
২| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ ভোর ৬:৩১
ইসিয়াক বলেছেন: খুব ভালো লাগছে .....কিছুটা পড়লাম । বিস্তারিত পড়ে মম্তব্যে আসবো ।
শুভকামনা রইলো।
সুপ্রভাত ।
২০ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১২:০৭
রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: কৃতজ্ঞতা আপনার সময়ের জন্যে।
৩| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ৭:৫৭
সাদা মনের মানুষ বলেছেন: ছবি তো অবশ্যই মন কেড়েছে, তবে আপনার লেখনির চমৎকারিত্বেই মুগ্ধতা বেশী.........শুভ কামনা সব সময়।
তবে আর কিছু ছবি দিলে পোষ্ট আরো পরিপূর্ণতা পেত.....গেয়ানী লোকের ইমো হবে
২০ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১২:০৮
রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: কিছু ছবি যোগ করে দেবো হয়তো। পড়েছেন জেনে ভালা লাগা কাজ করছে। ধন্যবাদ।
৪| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ৮:১৫
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বাপ্রে!
এক লেখায় কত্ত কিছু!
ভ্রমন সাথে প্রখর রসবোধ আর দারুন সব উপমায় মাইরি.. এক্কবারে ঝাক্কাস
ব্লগ পড়ছি মনেই হলৌনা ! যেন মাল্টার পথে পথে ঘূরে এরাম
++++
২০ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১২:০৯
রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: আপনার কারুকাজ করা মন্তব্যও আমাদের খুব প্রিয়।
৫| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ৯:৩৩
মা.হাসান বলেছেন: মাল্টা খুব এক্সপেন্সিভ জায়গা, কর্তাদের অর্থনৈতিক ভাবে শেয়ার করতে বলাটা খুব অন্যায় ছিল না। পরেরবার রাজি হয়ে যেয়েন, কিন্তু বেবি সিটিং এর জন্য পয়সার অর্ধেক চেয়ে নিয়েন - সব মিলিয়ে আপনার কিছু প্রাপ্তিযোগই হবে - আমার কমিশন দেয়া না দেয়া আপনার ইচ্ছার ব্যাপার, জোরাজুরি নেই ।
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
২০ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১২:১১
রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: যতটা ভাবছেন, ততটা চড়া দামের জায়গা নয়। আর যোগ/বিয়োগের হিসেবে দুর্বল বলে সেদিকে আরে এগোই না। হাহা...
৬| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১২:২৮
রাজীব নুর বলেছেন: মাল্টা?? নামটা বেশ। এই নামে তো একটা ফল আছে।
সুন্দর লিখেছেন। সহজ সরল ভাষা।
অবশ্যই চলুক।
২০ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১২:১২
রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব ভাই। জী, ফলও আছে। খাওয়া যায়, আবার প্লেনে চেপে সেখানে যাওয়াও যায়। কি মজা!
৭| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১২:৫৫
সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: মাল্টা আর গোজো! মাঝখানের সাগর মাত্র দুমাইল। ফেরিবোট ডলফিন। খুদে দ্বীপ কোমিনো।
দিলেন তো নস্টালজিক করে। সেই কবে পড়া অগ্নিপুরুষ! এ জে কুইনেলের অরিজিন্যাল কাহিনী 'ম্যান অন ফায়ার' পড়ার সুযোগ হয়নি কিন্তু কাজী আনোয়ার হোসেনের গতিময় কলমের আঁচড় এদেশের তরুণদের হৃদয়ে সেই যে লেগেছিল আজও কি তা ভোলা সম্ভব? সেই কিশোরী লুবনা! অভিমান আর ভালবাসার এক আশ্চর্যরকম উপাখ্যান! মাফিয়া কর্তৃক ছোট্ট ফুলের কুঁড়িটাকে নির্মমভাবে নিষ্পেষণ আর রানার অভাবনীয় ও দুর্দমনীয় প্রতিশোধ! কি দুর্দান্ত কাহিনীটাই না মগজে গেঁথে দিয়েছিলেন লেখকদ্বয়! মাল্টা আর গোজোর সাথে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে সেইসব স্মৃতি! আপনার লেখা মাল্টা ভ্রমণের কাহিনী পুরনো স্মৃতিটাকে জাগিয়ে দিল ভীষণভাবে। এখনও মনে পড়ে সেই লাইনগুলো-
এ দেশের মিষ্টি এক মেয়ে একটা গান উপহার দিয়েছিল বাংলাদেশের দুঃসাহসী এক যুবককে। বলেছিল- 'একদিন ছাড়াছাড়ি হবে, তখন যেন আমার কথা ভুলে যেয়ো না। একসময় থেমে যাবে সমস্ত কোলাহল, ঘুমিয়ে পড়বে ধরণী। আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারাটা মিটমিট করলে বুঝবে আমি তোমায় ডাকছি। সে রাতে তুমি জেগে থেকো বন্ধু, ঘুমিয়ে পড়ো না। আর হ্যাঁ, ফুলের গন্ধ পেলে বুঝে নিয়ো আমি আসছি। আর যদি কোকিল ডাকে, ভেবো আমি আর বেশি দূরে নেই। তারপর হঠাৎ ফুরফুরে বাতাস এসে তোমার গায়ে লুটিয়ে পড়লে বুঝবে আমি এসেছি। সে রাতে তুমি জেগে থেকো বন্ধু ঘুমিয়ে পড়ো না।'
পরের পর্ব তাড়াতাড়ি দিন। শুভেচ্ছা রইল!
২০ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১২:১৫
রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: এত দারুন করে বললে এ পক্ষ থেকে বলবার আর কিছু থাকে না। ভীষন ভাল লাগলো।
৮| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৫:৩৩
ইসিয়াক বলেছেন: অনেক সুন্দর এবং সাবলীল লেখা।
ভ্রমণ কাহিনী নয় যেন নিজেই বণর্নায় ঢুকে গেছি।
দারুণ মুগ্ধতা। আপনার লেখা এর আগেও পড়েছি। হয়তো মন্তব্য করা হয়নি।
সুন্দর লেখনী ।
শুভকামনা রইলো।
২০ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১২:১৬
রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: সময় নিয়ে পড়ে আবার মন্তব্য করার জন্যে থেমেছেনও। বিরাট খুশি হলাম।
৯| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:২০
শুভ্রনীল শুভ্রা বলেছেন: '' বিবি -বাচ্চা নিয়ে দেশ -দেশান্তরে ঘুরতে যাওয়া পরহেজগার মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব'' লাইনটা পড়ে হাসতে হাসতে শেষ ! খুব সুন্দর হয়েছে। আপকামিং পর্বগুলো পড়ার প্রতীক্ষায় থাকলাম।
২০ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১২:১৯
রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: হাহা, দায়িত্বই তো, নয় কি? পরের পর্ব গুছিয়ে নিচ্ছি মাথার ভেতর। কিন্তু শুক্কুরবার রাত ছাড়া এই চাকরি, সংসার আমাকে ছুটি দেয় না। ট্রেনে করে অফিস যেতে যেতে ছোট্ট নোটবইটায় বাজারের ফর্দের মত করে গল্প সাজাই। সপ্তাহান্তে তার উপর ভরসা করে লেখার চেষ্টা করি। বিচিত্র কারবার।
১০| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১:৪৭
শাহিন-৯৯ বলেছেন:
পরের পর্বের অপেক্ষায়।
প্রথম মন্তব্যকারীর মত করে বলব-সত্যিই আপনার রসবোধ চমৎকার। প্রশসংনীয়। আপনার লেখার হাত খুবই সাবলীল, মাঝে মাঝে আমার মনে হয় সৈয়দ মুজতবা আলীর লেখা পড়ছি না তো!
একজন বিজ্ঞানী যে ভাল লেখকও হতে পারে সেটা অবশ্য হুমায়ুন আহমেদ প্রমাণ করে গেছেন।
২১ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১২:৩৮
রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: খুব বাড়িয়ে বললেন কিন্তু। একেবারেই নিজের মনের আনন্দের জন্যে লিখি।
বিজ্ঞানের লাইনে আছি বটে, তবে তাবড় গোছের কেউ নই। ওটা বরং ঘরের বাইরে বেরোনোর একটা অজুহাত। আসল চাকরি হল গিয়ে শিশুপালন। হাহাহা...
১১| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ২:৩৬
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
সাবলিল বর্ননা ভাল লাগলো। তবে
একটা ব্যাস্ত রাস্তার ছবি দেয়া দরকার ছিল।
একটা রাস্তার লোকজন দেখলে বোঝা যায় দেশটিতে আফ্রীকান কালচার প্রভাব কতটুকু ইউরোপের কতটা ..
২১ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১২:৪০
রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: ভাল বলেছে। দেখবো তেমন ছবি আছে কিনা। আর আমি তো বলবো ইউরোপের প্রভাব ষোলো আনা। আর এখন পর্যটনের ব্যবসার মূল খদ্দের তো ইউরোপীয়রাই।
১২| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৯ ভোর ৫:৩১
আনমোনা বলেছেন: মাল্টার মতই সুস্বাদু লেখা।
২২ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১২:৫২
রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: মন্তব্যটাও বেশ মিষ্টি!
১৩| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১:৫১
শাহিন-৯৯ বলেছেন:
একটি ব্যাক্তিগত দুইটি প্রশ্ন করি মনে কিছু নিবেন না,
১) আজ প্রথম আলোয় দেখলাম আপনার এই লেখাটি প্রকাশ হয়েছে আপনি কি নিজে ওদের কাছে পাঠিয়েছেন নাকি তাঁরা ব্লগ থেকে নিয়েছে?
২) আপনি স্ব-উদ্যেগে পাঠিয়েছিলেন নাকি তাঁরা ব্লগে দেখার পর যোগাযোগ করেছে?
অনুমতি ছাড়া ব্যাক্তিগত প্রশ্ন করা ঠিক না তবুও জানার আগ্রহ থেকে বললাম। বেশি রাগ হলে ডিলেট করে দিবেন।
২৪ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৩:০৩
রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: ধন্যবাদ জানবেন আপনার প্রশ্নের জন্যে। যেচে এসে লোকে লেখা নিয়ে যাবে এমন নবাব তো নই আমি। তাই নিজেই টুকটাক লেখা পাঠাই এদিক সেদিক। যেমন প্রথম আলোতে পাঠাই মাঝে সাঝে। এই লেখাটাও তেমন। স্ব-উদ্যোগেই পাঠিয়েছি। তবে সব ছাপা হয় এমন নয়।
অবশ্য ছাপা হলে দেখতে বেশ লাগে। হোক না অনলাইনের ডিজিটাল হরফে। আর এ যুগে নাকি লোকে নিজের বই নিজেই পয়সা দিয়ে ছাপায়। এই সমান আয়-ব্যায়ের প্রবাসে দুই হাতে খেটে, দেশে টাকা পাঠিয়ে বই ছাপানোর মত বিলাসিতা পোষাবে না। অগত্যা, গরীব লেখক গোয়িং ডিজিটাল। হাহাহা...
১৪| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৩:২২
কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
মাল্টার প্রকাশ কমলায়! চমৎকার রসবোধ আছে বিজ্ঞানীর। ++++++++
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১:২২
রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: প্রানবন্ত মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ কাওসার ভাই। ভাল থাকুন। আপনার কলমও চলুক।
১৫| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:২২
আহমেদ জী এস বলেছেন: রিম সাবরিনা জাহান সরকার,
মাল্টার মতোই রসালো লেখা। জীববিজ্ঞানীর জীবনবোধও মনে হয় ভুমধ্যসাগরের নীলের মতো সাতরঙা। মাল্টায় বালিয়ারীর সমুদ্র সৈকত নেই বটে তবে কমলা রঙের এই লেখার সৈকতে হাস্যকাকলীতে মাখা জলতরঙ্গ আছড়ে পড়ার শব্দ আছে।
অঃটঃ
সহব্লগার ল এর পোস্ট "একজন আহমেদ জী এসে'র শায়েরী" তে আপনার করা মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সবিনয়ে বলি,
এই ব্লগে কবিতা ছাড়াও কমলা রঙের না হোক ধুসর রঙের আমার কিছু লেখা আছে। তা থেকে তিন ধরনের লেখার কয়েকটা দিলুম যদি মাল্টার মতো তাদের পাথুরে খাড়া পাড় ধরে ঘুরে আসেন --
ঘাসফুল
ঠিক দুক্কুর বেলা ভুতে মারে ঢিল....
নিলীমা বোঝেনা, বুকের মাঝপুকুরে ঘাঁই মারে পোনামাছ .....
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ২:৫৮
রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: অবশ্য অবশ্যই পড়ে নেবো। অজস্র ধন্যবাদ এমন চমৎকার কথাগুলোত জন্যে। যদিও এর যোগ্য নই। শুভ কামনা রইল অবিরাম।
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ ভোর ৫:৩২
স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: আপনার রসবোধ প্রখর, লেখায় অনেক সাবলীলতা আছে | মাল্টার বর্ণনায় মোহিত হয়ে গেলাম | এর পরের পর্ব কখন আসছে ?