নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ক্রিটিক্যাল থিঙ্কিং এবাউট ওয়ার্ল্ড পলিটিক্স্,স্পেশালি মিনা রিজিয়ন। মেইনস্ট্রিম মিডিয়ার কিছুই বিশ্বাস করি না।

মোহাম্মদ মোস্তফা রিপন

দুনিয়ার খবর রেখে শান্তি পাই।

মোহাম্মদ মোস্তফা রিপন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালোবাসা কাকে বলে??

২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৮:২৭

আকর্ষণ বিকর্ষণ – প্রেম এবং ভালবাসা।(প্রথম পর্ব)
আকর্ষণ এবং বিকর্ষণের মুলে রয়েছে প্রয়োজন এবং সাহায্য করার মধ্যে।কিন্তু প্রেম এবং ভালবাসার মধ্যে সেটা কেমন?প্রেম এবং ভালোবাসার মধ্যেও স্বার্থ জড়িত থাকে।আসুন দেখি সেটা কিভাবে,তার আগে জেনে নেওয়া যাক প্রেম এবং ভালবাসা কি?আমরা সাধারন ভাবেই এই দুইটি অভিধাকে সমার্থক হিসেবে ব্যাবহার করি,আমরা কখনো এই দুইটা অভিধার পার্থক্য খুঁজতে যাইনি কিংবা চেষ্টাও করিনি যদিও হরহামেশাই এটার নেতিবাচক প্রভাব মানুষের মধ্যে প্রতক্ষ করছি।প্রেমের যত সংজ্ঞা এই পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে আল্লামা জালালুদ্দিন রুমির সংজ্ঞাটাকে সেরা ধরা হয়। তার সংজ্ঞাটা হল – “প্রেম মানুষকে নিয়েও নয়,মানুষের জন্যও নয়,তোমরা প্রেমকে ভালবাসতে শিখ তাহলে চিত্তের উৎকর্ষ সাধিত হবে আলোকে দীপ্যমান যে সত্তা তিনি অবিনশ্বর,প্রেমকে ভালোবেসে তাকে পেতে হবে’’
আমরা জানি প্রেম হল অবিনশ্বর একটা সম্পর্ক,এটার মধ্যে কোন বিরহ থাকে না এবং কখনো ভেঙ্গে যাই না।কিন্তু অতি সাধারন চোখে আমরা যে সম্পর্কটাকে প্রেম বলে অভিহিত করি তাকে আবার ভেঙ্গে যেতেও দেখি এবং এর পরেও বলি সেটা অবিনশ্বর,এর কারন হল প্রেমের আসল অর্থ বুজতেই ভুল করে বসে আছি।প্রেম হল স্রষ্টার সাথে তার সৃষ্টির,সৃষ্টিতে সৃষ্টিতে প্রেমের কোন সম্পর্ক নেই এবং সেই ক্ষেত্রে এটা অবিনশ্বর।একটা উদাহরন দেয়া যাক –একজন মানুষ অনেক দ্বীন ধরে স্রষ্টার কাছে কোন একটা বিশেষ উদ্দেশে প্রার্থনা করতেছে কিন্তু এর পরেও তার সেই উদ্দেশ্য সফল হল না। এই সফল না হবার কারনে কিন্তু তার সাথে স্রষ্টার সম্পর্ক ভেঙ্গে যাইনি কিম্বা স্রষ্টার প্রতি তার রাগের ও জন্ম হয়নি।এটাই হচ্ছে প্রেমের সম্পর্ক।
ভালোবাসার একটা সুফল হচ্ছে এই যে,ভালবাসা মানুষকে শক্তি যোগায়,ভালবাসা হচ্ছে গৌরবের শক্তি।তা একজন ভিতু মানুষকে করে তোলে সাহসী।একটা মুরগী যতক্ষণ একা থাকে তখন সে তার পাখাকে গুটিয়ে রাখে।সে শান্তভাবে বৃথা গর্বে বা আত্মগরিমায় গট গট করে হাঁটবে,ছোট ছোট পোকা মাকড় তালাশ করে উদর পূর্ণ করবে।সামান্য কোন নড়াচড়া বা সারাশব্দ পেলে দৌড়ে পালাবে।এমনকি একটা দুর্বল শিশুর সামনে দাঁড়িয়েআর সৃষ্টিতে সৃষ্টিতে যে সম্পর্ক সেটাকে আমরা ভালবাসা বলতে পারি যেটা কখনো অবিনশ্বর নয়।আর এই ভালবাসাটা হল মানুষের প্রতি মানুষের আকর্ষণ যা প্রয়োজনের নিমিত্তে অস্তিত্বশীল হয়।কখনো কখনো দুইজন লোকের মধ্যে পরস্পরের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন বা সাথি হিসেবে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষায় একে অপরের প্রতি আকর্ষণ বোধ করে এবং তাদের এই আকর্ষণ তাদের আবেগতারিত করে সামনে নিয়ে যায় এবং ভালোবাসার জন্ম দেয়।এটা বুজার জন্য একটা উদাহরন ধার করলাম রুমির মসনবি থেকে –“একজন জ্ঞানী লোক দেখতে পেলেন যে একটা কাক এবং ফড়িং এর সঙ্গে মধ্যে বন্ধুত্ব স্থাপন করেচে।তারা উভয়ে একত্রে বসত এবং উড়ত।দুটি কিন্তু ভিন্ন প্রজাতির এবং খাদ্য চক্রে কাক খাদক।তিনি অবাক হলেন,তিনি তাদের ঘনিষ্ঠ নিকতে চলে গেলেন এবং দেখলেন দুইজনই পক্ষগাতগ্রস্থ।দুইজনই পক্ষাগাতগ্রস্থ হওয়ার কারনে ভিন্ন প্রজাতির হওয়া সত্তেও তারা একত্রে চলাফেরা করছে।এইভাবে মানব জাতিও কোন সাধারন কারন না থাকলে একে অন্যের প্রতি আকৃষ্ট হয় না।মানব জাতির ক্ষেত্রে যেটা অভাবটা বোধ হয় সেটা হল তারা মানসিকভাবে পক্ষাগাতগ্রস্থ তার ভিন্ন লিঙ্গ বিহনে।আর এই অভাব বধতাই তার মধ্যে ভালোবাসার জন্ম দেয়।পারস্য কবিরা ভালবাসাকে বলত ইলিক্সির।আর কেমিস্টরা বিশ্বাস করত যে,পৃথিবীতে এমন একটা বস্তু রয়েছে যা এক ধাতুকে অন্য ধাতুতে রুপান্তর করতে পারে।তারা এই বস্তুর নাম দিলেন ইলিক্সির।কবিরা এই পরিভাষাটিকে ব্যাবহার শুরু করে বললেন যে,রুপান্তরের ক্ষমতা রয়েছে এমন প্রকৃত ইলিক্সির হল ভালবাসা। থাকার সাহস তার হবে না।তাকে দেখে সে পালাবে।কিন্তু যখন এই মুরগির বাচ্চা থাকবে,তখন এই মুরগির দেহ ভরে যাবে ভালোবাসার শক্তিতে।তখন পূর্বাহ্ণে ভিতু মুরগির পুরু চরিত্রই পাল্টে যাবে।এখন সে তার বাচ্চাদের সুরক্ষার জন্য পাখাকে নিচের দিকে ছড়িয়ে দিবে।মুরগিটি এখন আগ্রাসনকারির রুপ ধারন করবে।আগে সে ভয়ের সম্ভাবনাই দৌড়ে পালাত,আর এখন সে যেখান থেকে ভয়ের সম্ভাবনা তাকেই আক্রমন করে বসবে।তার এই আক্রমন হবে খুবই সাহসিকতাপূর্ণ।ভালোবাসার কারনেই একটা ভীতসন্ত্রস্ত একটি মুরগী একটি নির্ভীক ও সাহসী প্রানিতে রুপান্তরিত হল।
“তুমি কি ধারনা কর মজনু নিজে নিজেই পাগল হয়ে গেছে?
লায়লার রুপ দর্শনই তাকে তারকাই রুপান্তরিত করেছে।
ভালবাসা গুমন্ত শক্তিকে জাগ্রত করে।শৃঙ্খলিত ও বন্ধি প্রাপ্ত শক্তিকে করে যেমন করে অনু একে অন্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয় এবং আনবিক শক্তি নিজেকে স্বাধীন করে নেয়।ভালবাসা আত্মার পূর্ণতা দান করে।কল্পনার দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখলে দেখা যাবে ভালবাসা মানুষকে দেয় প্রেরনা আর আবেগের দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখলে দেখা যাবে ভালবাসা মানুষকে দেয় বাসনা না আখাংকার শক্তি বা দৃঢ়তা।অন্য কথাই ভালবাসা হচ্ছে শরীর থেকে দুষিত ও নাপাক পদার্থ বের করে দেওয়া নলের মত।এটা মানুষের মধ্যে আমিত্ব অথবা শৈত্য এবং উষ্ণতার অভাবহেতু যেসব বদগুণের জন্ম হয় –যেমন হিংসা,অর্থলোভ,কাপুরুষতা,অলসতা,প্রবঞ্চনা দুরিভুত করে।ইহা মানুষ থেকে প্রতিহিংসা পরশ্রীকাতরতা দূর করে।
ভালোবাসার ফল বা পরিনতি হচ্ছে উন্নতি ও প্রাচুর্য।শরিরের ক্ষেত্রে তা রুপ নেয় গলিয়ে যাওয়া আর দলিত মথিত হওয়ায়।শরীরের ক্ষেত্রে ভালোবাসার ফল বা পরিনত যা হয়,আত্মার ক্ষেত্রে তা হয় ঠিক উল্টো।শরীরের ক্ষেত্রে ভালোবাসা হচ্ছে ক্ষয়ের কারন।ভালোবাসার কারনে শরীর শীর্ণ হয়ে যায় এবং ক্ষয় হয়ে কৃশ হয়ে যায়।কিন্তু আত্মার ক্ষেত্রে তা ঠিক সেরুপ নয় অবশ্য তা নির্ভর করে ভালোবাসার মানুষের উপর তার প্রেমিক কিরুপ সাড়া দান করে তার উপর।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.