নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ক্রিটিক্যাল থিঙ্কিং এবাউট ওয়ার্ল্ড পলিটিক্স্,স্পেশালি মিনা রিজিয়ন। মেইনস্ট্রিম মিডিয়ার কিছুই বিশ্বাস করি না।

মোহাম্মদ মোস্তফা রিপন

দুনিয়ার খবর রেখে শান্তি পাই।

মোহাম্মদ মোস্তফা রিপন › বিস্তারিত পোস্টঃ

পশ্চিমের গনতন্ত্র মডেল নাকি ইলিউশান।

২৮ শে জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৪২

"ওয়াশিংটনের কাছে গণতন্ত্র এবং আইনের শাসন গ্রহণযোগ্য যদি এবং শুধুমাত্র যদি তা মার্কিন কৌশলগত এবং অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য পূরন করে।"- নোয়াম চমস্কি
http://www.youtube.com/watch?v=QVAPfYaD_yA
অস্তিত্বশীল ঔপনিবেশিক সময়ে ঔপনিবেশিক শক্তি, যেমন ব্রিটেন এবং ফ্রান্স, নিশ্চিত করত যে উপনিবেশের সাধারণ মানুষ তাদের নিজেদের দেশ চালানোর ব্যাপারে তেমন কিছু বলতে পারবে না। ব্রিটেন এবং ফ্রান্স ঔপনিবেশিক শক্তির স্বার্থে তাদের দেশ চালানোর জন্য স্থানীয় অভিজাতদের তাদের পক্ষে কাজে লাগাতো। সাথে কাজ করে, এবং অভিজাতরা নিজেরা তাদের স্বার্থে কাজ করতো।
ঔপনিবেশিক শক্তিগুলো চিন্তিত ছিল যে উপনিবেশগুলো তাদের স্বাধীনতা চাইতে পারে, যেমনটা ১৭৭৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র চেয়েছিল।ফরাসি এবং ব্রিটেনের সাম্রাজ্যের পতনের সাথে সাথে মার্কিন সাম্রাজ্য শক্তিশালী হয়ে উঠে।অপর দুই সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সাথে মার্কিন সাম্রাজ্যের তফাৎ হচ্ছে মার্কিন সাম্রাজ্য নিজে সশরীরে উপস্থিত না থেকে শাসন করা।সাম্প্রতিক কালে আমেরিকা বিশ্বের প্রভাবশালী শক্তিতে পরিণত হয়েছে। আমেরিকা গত ৭৫ বছর ধরে চেষ্টা করে আসছে যে দেশগুলো যেন তাদের নিজস্ব স্বাধীন উন্নয়ন কৌশল অবলম্বন করতে না পারে।এই জন্য সে অনেকগুলু প্রাতিষ্ঠানিক টুলস ব্যাবহার করে।এর দুইটা উদাহরন হল বিশ্ব ব্যাংক এবং আইএমএফ।আরেকটা উপায় হচ্ছে ঐসব দেশের নেতাদের সাথে কাজ করা, যারা তাদের জনগনের দ্বারা নির্বাচিত হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। মার্কিন এবং ব্রিটিশ রাজনীতিবিদরা নিয়ন্ত্রনের এই টুলসের নাম দিয়েছে লিবারেল সমাজ ব্যাবস্থা। যাইহোক, এটা প্রচারণার একটি চমৎকার উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্রিটেন এবং আমেরিকার রাজনীতির মত, তারা যা পছন্দ করে তা প্রকৃত গণতন্ত্র নয়, এটা গনতন্ত্রের একটা বিভ্রম। গবেষণায় দেখা গেছে যে যুক্তরাষ্ট্র ১৯৫০ সাল থেকে ৮১টি দেশের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছে তাদের পছন্দের প্রার্থীদের ক্ষমতায় আনার জন্য।
Martin Williams, ‘America’s long history or meddling in other countries’ elections’, 23 Nov 2017, Channel4 Factcheck, at Click This Link
Discussed by Julian Assange, ‘Full interview: Assange on Trump, DNC Emails, Russia, the CIA, Vault 7 & More’, 12 Apr 2017, at https://www.youtube.com/watch?v=SpXbgx4hnlc

যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটিশ নেতারা গণতন্ত্রের এই বিভ্রমকে উৎসাহিত করেন যাতে দরিদ্র জনগণ তাদের কণ্ঠস্বর শোনানোর(দাবি) জন্য সহিংসতার আশ্রয় নিতে বাধ্য না হয়। রাজনৈতিক অগ্রগতির আবির্ভাব প্রকৃত অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য একটি সস্তা বিকল্প। ভোটাররা বিশ্বাস করে যে ভবিষ্যতে তাদের জীবন ভালো হবে। এই দেশগুলোর নেতৃত্বের সাথে মার্কিন সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের সম্পর্ক রয়েছে, এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ অংশের উপর এদের কোন নিয়ন্ত্রন নেই। সম্পদ এবং অর্থনীতির নিয়ন্ত্রন করে বহুজাতিক কোম্পানিগুলু। এই ব্যবস্থার অন্যতম বিশেষজ্ঞ ম্যাট কেনার্ড এটিকে "ট্যাম্পার-প্রুফ গণতন্ত্র" হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
4) Matt Kennard, The Racket: A Rogue Reporter vs The Masters of The Universe, 2015, p.316
দরিদ্র দেশগুলোতে গণতন্ত্রকে ব্যবহার করা ধনী দেশগুলোতে ব্যবহার করার চেয়েও সহজ। ভোটাররা তাদের শোনা প্রার্থীদের ভোট দেবেন। যদি ধনী প্রার্থীরা বিপুল পরিমাণ প্রচারণামূলক বিজ্ঞাপনের জন্য অর্থ ব্যায় করতে পারেন, তাহলে তাদের একটি বড় সুবিধা আছে। যদি এই একই ব্যক্তিরা বেশীরভাগ প্রচার মাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করে তাহলে তারা নিশ্চিত যে তাদের নিজস্ব কাভারেজ ইতিবাচক প্রভাব পড়বে পক্ষান্তরে অন্যদিকে তাদের বিরোধীদের বারবার সমালোচনা করা হবে যদিও তারা সঠিক।
যুক্তরাষ্ট্রপন্থী এবং কর্পোরেট পন্থী বেছে নিতে ভোটারদের ম্যানিফুলেট করার জন্য তারা বিভিন্ন উপায়ে অন্যান্য দেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করে।যারা তাদের মনোনীত প্রার্থীকে সমর্থন করে এবং অন্যদের বিরুদ্ধে কথা বলে তাদেরকে অর্থ সহায়তা দিয়ে থাকে।এটা বিভিন্ন প্রকল্পের নাম করে দেয়া হয়।তারা সাংবাদিকদের তহবিল প্রদান করে যারা কিছু প্রার্থীর সমর্থনে প্রবন্ধ লিখবে এবং তাদের নীতিকে সমর্থন করবে। তারা বেসরকারী সংস্থা (এনজিও), ছাত্র, প্রকাশক,বুদ্ধিবৃত্তিক পতিতা, এবং ইউনিয়ন নেতাদের প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ, শিক্ষামূলক উপাদান সরবরাহ,তথাকথিত বিভিন্ন সম্মেলনে উপস্থিতি এবং বিদেশ ভ্রমনে অর্থ সরবরাহ করে থাকে।
Martin Pastor, ‘National Endowment for Destabilization? CIA funds for Latin America in 2018’, 4 April 2019, at Click This Link
এছাড়াও অর্থনৈতিক হুমকি, তহবিল বা সাহায্য প্রত্যাহার, অথবা বাণিজ্য সুযোগে প্রবেশাধিকার বন্ধ করার জন্য ঐসব দেশে তার পেইড এজেন্টদের ব্যবহার করে। যদি ভোটাররা তাদের ভাষায় 'ভুল' প্রার্থী বেছে নেয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র প্রায়ই শান্তিপূর্ণ বা সহিংসভাবে ফলাফল পরিবর্তনের চেষ্টা করে।
ন্যাশনাল এনডাওমেন্ট ফর (আন্ডারমিনিং) ডেমোক্রেসি
ন্যাশনাল এনডাওমেন্ট ফর ডেমোক্রেসি (নেড) একটি মার্কিন সংস্থা যারা বিভিন্ন দেশের নির্বাচনে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীর সমর্থন করে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে। এটি গণতন্ত্রকেশক্তিশালী করনে সাহায্য করার সংগঠন হিসেবে নিজেদের উপস্থাপন করে। বাস্তবে এটি মার্কিন ক্লায়েন্টদের সাহায্য করার জন্য গঠিত।অনেকেই হয়তো শুনবেন জর্জিয়ার রোজ রেভ্যুলুশান(২০০৩), ইউক্রেনের অরেঞ্জ রেভুলুশান(২০০৫) এবং কিরগিজস্তানের টিউলিপ রেভ্যুলুশানের কথা।এর সবগুলুই করা হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে।
মুল্ধারার প্রচার যন্ত্রগুলু এসব বিষয়ে আমাদের যা বলে সেটা হল গনতন্ত্রের পথে উত্তরনে তারা রেজিমকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে।কিন্তু যেটা বলেনা সেটা হল ক্ষমতাচ্যুত শাসক শ্রেনিও গনতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত ছিলেন।এরা মার্কিন ইন্টারেস্টের পক্ষে নয় বলে তারা অগণতান্ত্রিক হয়ে গেছে।ন্যাশনাল এনডাওমেন্ট ফর ডেমোক্রেসির মাধ্যমে তারা সফলভাবে নিকারাগুয়া (১৯৯০), মঙ্গোলিয়া (১৯৯৬) এবং স্লোভাকিয়ার (২০০২) নির্বাচনকে ম্যানিফুলেট করতে পেরেছে।একইভাবে, বুলগেরিয়া (১৯৯১) এবং আলবেনিয়ার (১৯৯২) নির্বাচনে মার্কিন নেতারা খুশি ছিলেন না কারন সেসব নির্বাচনে মার্কিন বিরুধী নেতারা নির্বাচনে জিতেছিলেন।তাই ন্যাশনাল এনডাওমেন্ট ফর ডেমোক্রেসির অর্থায়নের মাধ্যমে প্রতিবাদ সমাবেশ উস্কে দিয়ে নির্বাচিত নেতাদের পদত্যাগে বাধ্য করা হয়।
বিভিন্ন দেশের সরকার পরিবর্তনে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) জড়িত থাকার তথ্য ফাঁস হবার পর ১৯৮৩ সালে নেড গঠিত হয়। ১৯৯১ সালে নেডের প্রেসিডেন্ট স্বীকার করেন যে "আজ আমরা যা করি তা অনেকটাই গোপনে ২৫ বছর আগে সিআইএ করতো।
Allen Weinstein, cited in James Bovard, ‘The National Endowment for Democracy’s Forgotten Sordid History’, 15 Oct 2009, at Click This Link
একজন ক্রিটিক্যাল মার্কিন রাজনীতিবিদ প্রশ্ন তুলেছিলেন "আমেরিকা বা ব্রিটেনের মানুষ কেমন অনুভব করবে যদি চীনারা, চীনের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ প্রার্থীদের সমর্থন করতে লক্ষ লক্ষ ডলার খরচ করে? এবং উত্তর হল ‘’এটা অবশ্যই অনুপযুক্ত বলে বিবেচনা করা হবে’’
Ron Paul, US Senator, ‘National Endowment For Democracy: Paying To Make Enemies of America’, Oct 11, 2003, at http://www.antiwar.com/paul/?articleid=1526
কিন্তু যখন নেড বিদেশের রাজনীতিকে কাজে লাগায়, তখন যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটিশ প্রচার মাধ্যম সামান্য সমালোচনা করে। সিআইএ-এর চেয়ে বেশি ট্রান্সপারেন্ট দাবি করা সত্ত্বেও, নেড’র প্রাথমিক কার্যক্রম গোপন রাখা হয়। এমনকি এটি ফ্রান্সের ঘটনাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছে।
যদি সব চেষ্টা ব্যর্থ হয় তখন সহিংসতার আশ্রয় নেওয়া হয়।
নীচে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত কিছু নেতার উদাহরণ দেওয়া হল যারা তাদের নিজস্ব নীতি অনুসরণ করার চেষ্টা করেছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে, আমেরিকা তাদের উৎখাত করে এবং তাদের স্থলাভিষিক্ত করে একজন ব্রুটাল ডিক্টেটরকে।
William Blum, Rogue State, 2000
ইরানে (১৯৫৩) নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোসাদ্দেক কে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে ক্ষমতায় বসানো হয় শাহকে (১৯৫৩-১৯৭৯)। তিনি কুখ্যাত সাভাক বাহিনী গঠন হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেন।
গুয়াতেমালায় জ্যাকবো আরবেনজকে সরিয়ে (১৯৫৪) ক্যাস্টিলো আরমাসকে ক্ষমতায় বসানো হয় (১৯৫৪-৫৭) যিনি হাজার হাজার মানুষকে গ্রেফতার এবং হত্যা করেন।
ইন্দোনেশিয়ায় সুকার্নোকে (১৯৬৫) ক্ষমতা থেকে সরিয়ে ক্ষমতায় বসানো হয় সুহার্তোকে। (১৯৬৭-১৯৯৮) যিনি দুইবার গণহত্যা করেছিলেন! তিনি ষাটের দশকে অন্তত অর্ধ মিলিয়ন মানুষ হত্যা করেন।
কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে প্যাট্রিস লুমুম্বাকে (১৯৬১) সরিয়ে বসানো মোবুতু সেসে সেকুকে (১৯৬৫-১৯৯৭)যিনি ব্যাপক নির্যাতন এবং গণ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেন।
চিলিতে সালভাদর আলেন্দেকে (১৯৭৩) সরিয়ে বসানো হয় অগাস্টো পিনোচেটের (১৯৭৩-১৯৯০)যিনি ব্যাপক হত্যা ও নির্যাতন এমনকি গনহত্যার জন্য অভিযুক্ত।
সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্র ২০০৪ সালে হাইতির গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতাকে উৎখাত করেছে। ভেনেজুয়েলার জনগণ বারবার হুগো শাভেজকে নির্বাচিত করেছে, যিনি মার্কিন কর্পোরেশন এবং স্থানীয় অভিজাতদের ভেনেজুয়েলা শোষণের ব্যাপারে আপত্তি জানান, তাই স্থানীয় অভিজাতরা মার্কিন সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের সাথে কাজ করে এবং তাকে উৎখাতের চেষ্টা করে।
তারা মিশরের নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে একজন স্বৈরশাসককে ক্ষমতায় বসিয়েছে।যে হাজারো মানুষকে প্রহসনের বিচারের মাধ্যমে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে।তিউনিসিয়া থেকে গনতন্ত্রকে বিদায় দেওয়ার চেষ্টা করছে।গনতন্ত্রের নামে সুদানের দেশপ্রেমি বাসারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে আরেক সেনা শাসককে ক্ষমতায় বসিয়েছে।যাদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই ম্যাসাকারের অভিযোগ উঠেছে।
10) John Pilger, ‘The War On Democracy’, 2007, at Click This Link
তারা এখনো তার উত্তরসূরি নিকোলাস মাদুরোকে উৎখাত করার চেষ্টা করছে।
অতিমূল্যায়িত পশ্চিমা গণতন্ত্রঃ
মার্কিন এবং ব্রিটিশ রাজনীতিবিদরা বারবার অন্য কিছু দেশে গণতন্ত্রের অভাব নিয়ে অভিযোগ করছেন।ল্যাটিন আমেরিকা দিকে তাকালে দেখা যায় বিশেষ করে কিউবা সম্পর্কে তারা অভিযোগ করে। যাইহোক, তারা খুব কমই উল্লেখ করে যে দক্ষিণ আমেরিকার অন্যান্য অনেক দেশ যারা গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে হিসেবে স্বীকৃত, সেখানে দরিদ্রতম মানুষের জীবনযাত্রার মান অনেক খারাপ।
Jonathan Glennie, ‘Cuba: A development model that proved the doubters wrong’, Guardian Poverty Matters Blog, 5 Aug 2011, at Click This Link
বিগত ৫ দশকে ব্যাপক মাত্রার অবরোধের মধ্য থেকেও কিউবা তার সকল নাগরিককে মান সম্পন্ন শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে, তারা যতই দরিদ্র হোক না কেন।বিশেষ করে তাদের স্বাস্থ্য শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য সেবা খাত বিশ্বের যে কোন উন্নত দেশের থেকেও মান সম্পন্ন।কভিড অবস্থায় কিউবান স্বাস্থ্য কর্মীরা বিভিন্ন দেশে স্বাস্থ্য সেবা দিয়েছে।
গত ৭৫ বছরে, ল্যাটিন আমেরিকার তথাকথিত গণতান্ত্রিক দেশগুলু বিপুল সংখ্যক নাগরিককে হত্যা এবং নির্যাতন করেছে। তাদের তুলনায়, কিউবার মানবাধিকার রেকর্ড অনেক ভালো। যদি কিউবা মার্কিন চাপিয়ে দেওয়া গনতন্ত্রের পথে যাত্রা করে যেখানে অভিজাত শ্রেনি মার্কিন আধিপত্যবাদের পেইড এজেন্ট হবে তাহলে কিউবার দরিদ্র মানুষদের অবস্থা ল্যাটিনের অন্যান্য তথাকথিত গণতান্ত্রিক দেশের মত হত।মার্কিন সংবাদমাধ্যম বরাবর তার পাঠকদের বলছে যে কিউবা একটি ভয়াবহ জায়গা, কিন্তু কিউবার আসল অপরাধ হচ্ছে মার্কিন কর্পোরেশন গুলুর কাছ থেকে কিউবার নিয়ন্ত্রন নিজেরা নিয়ে নিয়েছে এবং তাদের দ্বারা কিউবা শোষণের স্বীকার হচ্ছে না। কিউবা সফররত পশ্চিমা পর্যবেক্ষকরা ব্যাখ্যা করেছেন যে কিউবার জনগণ যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনের দরিদ্র মানুষের চেয়ে তাদের দেশ কিভাবে পরিচালিত হয় সে বিষয়ে অনেক বেশি কথা বলে, কারণ তৃণমূল পর্যায়ে নীতি নিয়ে অনেক জটিল আলোচনার হয়।
Helen Yaffe, ‘We Are Cuba: How a Revolutionary People Have Survived in a Post-Soviet World’, 2020
মূলধারার প্রচার মাধ্যম খুব কমই উল্লেখ করে যে ১৯৪৫ সাল থেকে সবচেয়ে দর্শনীয়ভাবে বিকশিত দেশগুলো গণতান্ত্রিক নয়।দক্ষিণ কোরিয়া এবং তাইওয়ান ১৯৮০-এর দশকের শেষ পর্যন্ত একদলীয় রাষ্ট্র এবং সামরিক একনায়কতন্ত্রের মিশ্রণ ছিল।
Robert H. Wade, ‘Escaping the periphery: The East-Asian ‘mystery’ solved’, UNU-WIDER working paper 2018/101, Sep 2018
যদি আমরা চীন এবং ভারতের সাথে তুলনা করি, চীনের টেকসই অগ্রগতি ইতিহাসের অন্য যে কোন জাতির চেয়ে দ্রুত হয়েছে এবং মানব ইতিহাসের মিরাকল।এটি পশ্চিমা ধাঁচের কোন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নয়। ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ কিন্তু এটি তার দরিদ্রতম মানুষদের,দারিদ্র্যতা থেকে বের করতে ব্যর্থ হয়েছে। এটা আসলে ঘটনা হতে পারে যে মার্কিন ধাঁচের গণতন্ত্র দরিদ্র দেশগুলোতে দ্রুত উন্নয়নের জন্য সরকারের সেরা রূপ নয়। এটি একটি দৃষ্টিভঙ্গি যা ব্রিটেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভদ্র বৃত্তে প্রায় অনস্বীকার্য।এর মানে এই নয় যে,এখানে গণতান্ত্রিক ব্যাবস্থার বিরুধিতা করা হচ্ছে।যেটা বলার চেষ্টা করতেছি সেটা হল গনতন্ত্র হতে হবে মুক্ত।যেখানে সাম্রাজ্যবাদীদের কতৃত্ব থাকবে।রাষ্ট্র অন্যের স্বার্থে কাজ না করে নিজের স্বার্থে কাজ করবে।
মূলধারার মিডিয়ার দ্বৈত নীতিঃ
২০১৬ সাল থেকে নির্বাচনে বিদেশী হস্তক্ষেপের ক্ষেত্রে মূলধারার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটিশ মিডিয়ার দ্বৈত মান বিশেষভাবে স্পষ্ট। তারা বারবার অভিযোগ করেছে যে ২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়া হস্তক্ষেপ করেছে।যেটা রাশিয়াগেট নামে পরিচিত। এরজন্য তারা মিলিয়ন ডলার খরচ করে লম্বা সময় ধরে তদন্ত করেও কোন প্রমান হাজির করতে পারেনি।এমনকি ২০১৯ সালে একজন মার্কিন বিচারক রায় দেন যে হস্তক্ষেপের কোন প্রমাণ নেই।
Craig Murray, ‘In the world of truth and fact, Russiagate is dead. In the World of the political establishment, it is still the new 42’, 4 Aug 2019
এর পরেও তারা বিষয়টা এমন ভাবে প্রচার করছে যেন তাদের অভিযোগ সত্য।অথচ বছরের পর বছর অন্য দেশের নির্বাচনে মার্কিন পররাষ্ট্র নীতি, সিআইএ এবং নেডের মাধ্যমে হস্তক্ষেপের ব্যাপারে তারা সব সময় নিশ্চুপ থাকে।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২১

চাঁদগাজী বলেছেন:


কোন দেশের গণতন্ত্র আপনার জন্য মডেল?

২৮ শে জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২৮

মোহাম্মদ মোস্তফা রিপন বলেছেন: সত্যিকার গনতন্ত্র মডেল হতে পারে।

২| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:১৩

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: পশচিমা গনতন্ত্র অভিজাতদের গনতন্ত্র।আমাদের দরকার জনগনতন্ত্র বা জনগনের গনতন্ত্র।বর্তমান গনতন্ত্রে চোর এবং ডাকাতের মধ্যে যে কোন একজনকে বেছে নিতে বলা হয় জনগনকে।জনগন একবার নেয় চোর কে একবার নেয় ডাকাত কে।
শেখ মুজিবের মৃত্যু নিয়ে কিছু লিখলেন না।কারা মারলেন কেন মারলেন।

২৮ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:২৪

মোহাম্মদ মোস্তফা রিপন বলেছেন: আমার লেখায় কি বাংলাদেশের বিষয়ে কিছু বলা হয়েছে? আমি সচেতনভাবে এই বিষয়টা এড়িয়ে চলি।

৩| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:৩৩

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: গণতন্ত্রের পরের ব্যবস্থার নাম কি? বাংলাদেশের সেই ব্যবস্থার জন্য প্রস্তুতি নেয়া দরকার।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:১৪

মোহাম্মদ মোস্তফা রিপন বলেছেন: আপাতত গনতন্ত্রই মুল ভরসা তবে সেটা সত্যিকার গনতন্ত্র হতে হবে।পশ্চিমের স্বার্থের পক্ষে প্রোপ্যাগান্ডা নির্ভর অভিজততন্ত্র নয়।

৪| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:০৯

চাঁদগাজী বলেছেন:



আমার প্রশ্ন ছিলো, "কোন দেশের গণতন্ত্র আপনার জন্য মডেল? "
লেখকের উত্তর, "সত্যিকার গনতন্ত্র মডেল হতে পারে।

-আপনি কি প্রশ্নও বুঝেন না এখনো? আমি জানতে চাই বর্তমান বিশ্বের "কোন দেশের গণতন্ত্র"? কি লেখেন পড়েও দেখেন না?

২৯ শে জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:১২

মোহাম্মদ মোস্তফা রিপন বলেছেন: আমি কি লিখেছি সেটাও আপনি পড়ে দেখেননি।কোন দেশের গনতন্ত্রই আমাদের জন্য মডেল না।পশ্চিম লিবারেল চিন্তার নামে যে গনতন্ত্রের ফেরি দুনিয়া ব্যাপি করে সেটা হল প্রোপাগান্ডা/প্রচার নির্ভর অভিজাততন্ত্র।সত্যিকার অর্থে গনতন্ত্র চর্চা হলে সেটা আমাদের জন্যও মডেল হতে পারে।

৫| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:১৩

রাজীব নুর বলেছেন: একেক দেশের একেক নিয়ম।
দুটা মিলাতে গেলে সমস্যা।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:১৪

মোহাম্মদ মোস্তফা রিপন বলেছেন: এক্সাটলি।

৬| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:৫৪

সাসুম বলেছেন: আমাদের দেশের জন্য দরকার কিউবা স্টাইলে সামরিক এর কাভারে সমাজতন্ত্র। শেখ সাহেব সেটা বুঝেছিলেন ৭১ এই।

আমাদের দেশ সমাজতান্ত্রিক ব্লক এর স্বপ্ন দেখেই স্বাধীন হয়েছে, গনতান্ত্রিক মডেল হবার জন্য না।

শেখ সাহেব পারেন নাই, সামরিক দখলদার জিয়া আর বেহায়া এরশাদ পারেন নাই, জিয়ার বউ পারেন নাই, শেখ সাবের মেয়ে ও পারেন নাই আমাদের কে একটা স্টেবল ইকোনমি প্লাস একটা স্টেবল পলিটিকাল সিটুয়েশান এ আনতে। আমরা ৭১ এর আগে শোষিত ছিলাম পাইক্কা দের দ্বারা , ৭১ পরবর্তী শোষিত হচ্ছি বুর্জোয়া আর পুঁজিবাদী দের দ্বারা আর ২০১৪ পরবর্তী শাসিত হচ্ছি পচন ধরা আওয়ামী লীগ দ্বারা।

৩০ শে জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:২৮

মোহাম্মদ মোস্তফা রিপন বলেছেন: সমাজতন্ত্র দিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন অসম্ভব।দরকার হল জনগনের গনতন্ত্র।

৭| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:৪৪

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: পশ্চিমা বিশ্বে যতটুকু গণতন্ত্র আছে তার চাইতে আরেকটু ভালো গণতন্ত্র অথবা জনগণের অধিকার কোন দেশে আছে বলে আপনার মনে হয় ?

৩০ শে জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:০৪

মোহাম্মদ মোস্তফা রিপন বলেছেন: এই প্রশ্নের উত্তর লেখাতে দেওয়া আছে।ভালো গনতন্ত্র পশ্চিম দুনিয়ার কোন দেশে সহ্য করে না।কারন ভালো গনতন্ত্র হল সেই দেশের মানুষের ইচ্ছা বা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন যেটা পশ্চিমের স্বার্থের বাইরে।

৮| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:৫৫

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
খাঁটি ইসলাম কি গণতন্ত্র সমর্থন করে?

৩০ শে জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:৫৯

মোহাম্মদ মোস্তফা রিপন বলেছেন: এই লেখার সাব্জেক্টতো সেটা নয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.