নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ক্রিটিক্যাল থিঙ্কিং এবাউট ওয়ার্ল্ড পলিটিক্স্,স্পেশালি মিনা রিজিয়ন। মেইনস্ট্রিম মিডিয়ার কিছুই বিশ্বাস করি না।

মোহাম্মদ মোস্তফা রিপন

দুনিয়ার খবর রেখে শান্তি পাই।

মোহাম্মদ মোস্তফা রিপন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইরান লড়াইয়ে হেরে যাবে, কিন্তু যুদ্ধে জয়ী হবে

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৫:০০

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির পিছনের স্থপতি মোহসেন ফাকরিজাদেহ-মাহাবাদির হত্যাকাণ্ড ছিল এ যাবত কালে ইরান এবং মার্কিনীদের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংগাত।ইজরায়েল ট্রাম্পকে ইরানের সাথে যুদ্ধের উস্কানি দিলেও কিছু মার্কিন জেনারেলের কারনে সেটা সম্ভব হয়নি।ইতিমধ্যেই জো বাইডেন ক্ষমতাসীন হয়েছেন।বাইডেনের আমলে যত দ্রুত ওয়াশিংটন জেসিপিওতে ফিরে যাবে বলে অনেকেই ধারনা করেছিল,বাস্তবে সেটা হচ্ছে না।কারন বাইডেন ইরানের সাথে চুক্তিটি পুনরায় আলোচনা করতে চান এবং সেই আলোচনায় ইরানের প্রতিরক্ষার সবচেয়ে বড় উপাদান ব্যালিস্টিক ক্ষেপনাস্র প্রযুক্তিকে ইনভল্ভ করতে চাচ্ছেন।যেটা এর আগেও ফ্রান্স,জার্মানি এবং ইউকে বলে আসছিলেন।কিন্তু ইরান কোন কিছুর বিনিময়ে তার ব্যালাস্টিক মিসাইল প্রযুক্তিকে কম্প্রোমাইজ করবে না,এটা নিশ্চিত করে বলা যায়।এর বাইরে ইরান আভ্যন্তরীণভাবে অর্থনৈতিক দিক থেকে প্রচণ্ড চাপের মুখে আছে।এরপর কয়েকমাসের মাথায় জাতীয় নির্বাচনে একজন কক্টরপন্থী প্রেসিডেন্ট ক্ষমতায় আসবেন বলে ধারনা করা হচ্ছে।সেটা হলে ওয়াশিংটন ইরানের সাথে আলোচনার সব সুযোগ হারাবে।অর্থনৈতিকভাবে ইরান যথেষ্ট দুর্বল হয়ে পড়েছে।এরপর এই অঞ্চলের কিছু দেশ ইজরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিকের কারনে কিছুটা চাপের মুখে সে পড়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি দেখে সন্দেহে পড়ে যেতে হয় একারনে যে এসব নীতি কি মার্কিন নাকি ইজরায়েলি স্বার্থে।এক দশক আগেও মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি আবর্তিত হত ইজরায়েলকে ঘিরে কিন্তু এখন সেটা ইজরায়েলের সাথে সাথে মার্কিন আধিপত্য ধরে রাখার যুদ্ধে রুপ নিয়েছে।এখন প্রশ্ন হল মধ্যপ্রাচ্যে ওয়াশিংটন কি অর্জন করতে চায়।
প্রথমত তারা চায় ইজরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।দ্বিতীয়ত তারা চায় তাদের হেজিমনি বজায় রাখতে।তৃতীয়ত মধ্যপ্রাচ্যে এমন কোন শক্তির উত্থান তারা দেখতে চাইনা যারা তাদের বাইরে গিয়ে চিন্তা করতে পারে।এজন্য মার্কিনীরা পুরু দুনিয়াতে লিবারেল হেজমনের প্রচার করলেও মধ্যপ্রাচ্যে একনায়কতান্ত্রিক শাসন ব্যাবস্থা বজায় রাখতে সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে।চতুর্থত মধ্যপ্রাচ্যে হাইড্রোকার্বনের উপর দখল দারিত্ব বজায় রাখা।পঞ্চমত এসব কিছু করতে গিয়ে যে দ্বন্ধের উদ্ভব হবে সেই দ্বন্ধকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের যুদ্ধাস্র শিল্পের উৎপাদন বজায় রেখে অর্থনীতিকে সচল রাখা।এর বিনিময়ে তারা পুরু মধ্যপ্রাচ্য এবং মিনা এরিয়াতে সৌদি এবং আমিরাতি ধরনের সরকার ব্যাবস্থা বজায় রাখতে চাই।
দ্বন্দ্ব এবং অস্থিরতাঃ
এরই ধারাবাহিকতায় ইরানের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোসাদ্দেককে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে শাহকে ক্ষমতায় বসানো হয়।কিন্তু ১৯৭৯ সালে ইসলামী বিপ্লবের ফলে খোমেনির ক্ষমতারোহনের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি চিরদিনের জন্য পরিবর্তন হয়ে যায়।বিপ্লবের প্রথম দীন থেকেই দুই পক্ষই নিজেদের শত্রু হিসেবে উপস্থাপন করে এবং আমেরিকা,ইরানের উপর নিষেদাজ্ঞা আরোপ করে যা আজো চলমান।ইরান বুঝতে পেরেছিল যে,তাদেরকে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সাথে যুদ্ধ করেই টিকে থাকতে হবে।এই জন্য তারা তাদের পলিসিকে তিনভাগে বিভক্ত করে।১) রাজনৈতিক ২) অর্থনৈতিক ৩) সামরিক।
রাজনৈতিকঃ ইরান পুরু মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে কিছু আদর্শিক প্রক্সি গ্রুপ তৈরি করতে পেরেছে।এর কারন হল ইরান বিরুধি মার্কিন এলায়েন্সের গুরুত্বপুর্ন শক্তিশালী হল মধ্যপ্রাচ্যের রাজারা।অয়াশিংটন যদি ইরান আক্রমণ করতে চাই তাহলে তার দরকার পড়বে মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলুর সহযোগিতা।যেখান থেকে সহযোগিতা সেখানে আঘাত করার জন্য ইরান এসব প্রক্সি গ্রুপ তৈরি করেছে।এসব গ্রুপেকে অস্র সরবরাহ এবং প্রশিক্ষনের মাধ্যমে সামরিক বাহিনীর প্যারালাল একটা বাহিনী রুপে গড়ে তুলেছে।লেবাননের হিজবুল্লাহ,ইয়েমেনে আনসারুল্লাহ,ইরাকে পপুলার মোবিলাইজেশন আর্মি,সিরিয়াতেও পপুলার মোবিলাইজেশন আর্মি,বাহরাইনে সরকার বিরুধি গোষ্ঠী ইত্যাদি।এরবাইরে পুরু দুনিয়া জুড়ে সে বিশাল এক জনগোষ্ঠী গড়ে তুলেছে যারা তাদের প্রতি সহানুভতিশিল।এর বাইরে বিনা শর্তে হামাসকে সব ধরনের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।
অর্থনৈতিকঃ
বিল্পবের পর অবরোধের ফলে ইরান ধরেই যে তাদের একা পথা চলতে হবে।সে কারনেই তারা অবরোধের মধ্যেও বেঁচে থাকার মত অবস্থায় তৈরি করতে পেরেছে।এক দশক আগেও তারা একাই পথ চলেছে।কিন্তু গত দশকে বিশ্ব রাজনীতির পরিবর্তনের ফলে এখন সে পাশে পাচ্ছে চীন এবং রাশিয়ার মত শক্তিকে।ট্র্যাম্পের ম্যাক্সিমাম প্রেশারের সময়ে চীনের সাথে প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি থেকে বিষয়টা পরিষ্কার।এর বাইরে ইরানের বিশাল হাইড্রোকার্বন শিল্পের বিশাল লাভ থেনে বঞ্চিত ইউরোপীয় দেশগুলু ইরানের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চাই।
সামরিকঃ
বিল্পবের পর যে জায়গাটাতে সবচেয়ে বেশি নজর দেয় সেটা হল বিজ্ঞান এবং সামরিক খাত।যার কারনে অবরোধের মধ্যে থেকে এই দুই খাতেই ইরান ব্যাপক উন্নতি সাধন করতে পেরেছে।সামরিক খাতে তার বড় সাফল্য হল ব্যালাস্টিক মিসাইলের প্রযুক্তি হস্তগত করন।এই মিসাইলের কারনে ইরানের শত্রুরা তার হামলা করতে ভয় পাই।মধ্যপ্রাচ্য এবং মিনা অঞ্চলের পুরু এলাকায় এখন ইরানের মিসাইলের রেঞ্জের আওতাধীন।এরপর যেটা নিয়ে তারা গর্ববোধ করতে পারে সেটা হল তারা পরমানু প্রযুক্তি অর্জন।যেটা হয়ে গেছে তার কাছে তুরুপের তাস।এই প্রযুক্তির কারনে মার্কিন নেতৃত্বাধীন লিবারেল হেজিমনি তার সাথে আলোচনায় বসতে বাধ্য হয়।এবং সেই আলোচনায় সে শান্তিপুর্ন উপায়ে এই প্রযুক্তি ব্যাবহারের হিস্যা আদায় করে নেয়।এছাড়াও ড্রোন টেকনোলজি,এসল্ট শিপ,ট্যাঙ্ক,রাডার ইত্যাদি বিষয়েও সে প্রভুত উন্নয়ন সাধন করেছে।যার কারনে তার উপর হামলার চিন্তা এখন আর কেউ করেনা।
এই তিনটি উপায় ব্যাবহার করে সে হিজবুল্লাহ এবং হামাসকে দিয়ে ইজরায়েলকে চ্যালেঞ্জ করেছে।সিরিয়াতে মার্কিন এবং মধ্যপ্রাচ্যের অন্যসব রাজাদের চ্যালেঞ্জ করেছে,ইয়েমেন আনসারুল্লাহকে দিয়ে সৌদি-আমিরাত-মিশরকে চ্যালেঞ্জ করেছে।ইরাকে পপুলার মোবিলাইজেশন আর্মিকে দিয়ে মার্কিন শক্তিকে চ্যালেঞ্জ করেছে।
এখন প্রশ্ন হল ইরান কি চাই।ইরানের মুল উদ্ধেশ্য হল মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের নিজেকে শক্তিশালী হিসেবে স্বীকার করে নেয়া।সাথে সাথে এই অঞ্চল থেকে মার্কিন আধিপত্যবাদকে কমিয়ে আনা।একটা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের জন্ম দেয়া।মধ্যপ্রাচ্যের রাজতান্ত্রিক শাসনের অবসান ঘটানো।
কিন্তু বাস্তবতা হল আপাতদৃষ্টিতে এর বেশিরভাব ইরান অর্জন করতে পারবে না।কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের অপ্রতিদ্বন্দ্বী শক্তি হিসেবে সে ইতিমধ্যেই স্বীকৃত।
তাহলে প্রশ্ন থেকে ওয়াশিংটন কি অর্জন করতে চাইঃ
ওয়াশিংটনের মুল উদ্ধেশ্য হল ইজরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি তার হেজিমনিক অবস্থা বজায় রাখা।তার এই উদ্ধেশ্যের পথে প্রধান অন্তরায় হল ইরান।যার কারনে ইরানকে প্রতিহত করাই হল তাদের উদ্ধেশ্য।এরজন্য তারা কাজে লাগাচ্ছে সৌদি-আমিরাতি রাজাদের।
বাইডেন কি করতে পারবেনঃ
বাইডেন ইরানকে নিয়ে খুব বেশি কিছু করতে পারবে না।তার প্রশাসনে ইহুদি লবির অব্যাহত চাপের মুখে সে ইরানের প্রতি কোন ইতিবাচক ভুমিকা দেখাতে পারবে না।ইহুদি লবি এবং মধ্যপ্রাচ্যের রাজাদের লবির চাপের কারনে বাইডেন খুব সহসা জেসিপিওতে ফিরে যেতে পারবে না।তারা চেষ্টা করবে ব্যালাস্টিক মিসাইলকে চুক্তির আওতায় নিয়ে আসতে।কিন্তু তারা এটা পারবে না।ইরান তার মিসাইল প্রযুক্তিকে সেক্রিফাইস করার চেয়ে অবরোধের মধ্যে থাকাকেই শ্রেয় মনে করবে।অন্যদিকে ইউরোপের দেশগুলু চাই ইরানের উপর থেকে নিষেদাজ্ঞা উঠে যাক।বিশেষ করে ফ্রান্স। কারন ইরানে ফ্রান্সের কোম্পানিগুলুর বিশেষ স্বার্থ রয়েছে।হাইড্রোকার্বন এবং বিমান শিল্পের জন্য ইরান মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় বাজার।যে কারন ম্যাক্রন ইতিমধ্যেই দুই দেশের মধ্যে দুতিয়ালির আগ্রহ প্রকাশ করেছে।মার্কিন নেতৃত্বাধীন আরেকটি দাবি হল ইরানের প্রক্সিদের নিয়ন্ত্রন করা।যেটা ইরান মেনে নিবে না।কারন এটার উপরেই পুরু মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে ইরানের আধিপত্য এবং নিরাপত্তা নির্ভর করে।
এখন দেখার বিষয় হল বাইডেন প্রশাসন কি আদায় করতে পারে এবং ইরান কি উপায়ে তাদের হ্যান্ডেল করতে পারে।



মন্তব্য ১১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২৮

চাঁদগাজী বলেছেন:


ছুটিতে আছেন?

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:০৫

মোহাম্মদ মোস্তফা রিপন বলেছেন: ঝেড়ে কাশুন।

২| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৩৭

মাসুদুর রহমান (শাওন) বলেছেন: ইরান সম্পর্কে আমার বাড়তি একটা আগ্রহ আছে, দেখা যাক কী হয়...

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:০৫

মোহাম্মদ মোস্তফা রিপন বলেছেন: খুব বেশি পরিবর্তন হবে না এটা নিশ্চিত।

৩| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫৫

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: আভ্যন্তরীণ ইসলামী শাসন বাদ দিলে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ইরান ঠিক আছে।মার্কিন আধিপত্য কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না।মার্কিনিরা রাজাদের টিকিয়ে রেখেছে কেবল মাত্র তাদের সোষণে জন্য।ইরানকে দেখিয়ে ১০ টাকার জিনিস ২০ টাকায় বিক্রি করছে।এইসব রাজারা আমেরিকার ফাটা বাশে আটকে আছে।

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:০৬

মোহাম্মদ মোস্তফা রিপন বলেছেন: রাজারা তাদের ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য নিজের বউ দিতেও রাজি।

৪| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:২৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


লেখক বলেছেন, " ঝেড়ে কাশুন। "

-শিয়া মিলিশিয়া বাহিনী গঠনের কার্যক্রম আয়ত্ব করছেন নাকি?

৫| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:৩২

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনি ভয়ংকর ক্রিটিক্যাল থিংকিং নিয়ে ব্যস্ত আছেন; ইরানীদের আয়ে ইরানীরা চলতে পারে না, হেজবুল্লাহ ও হামাসেরা ভালো আছে।

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:৫০

মোহাম্মদ মোস্তফা রিপন বলেছেন: কোন পয়েন্টে দ্বিমত থাকলে বা আরো কোন উত্তম ব্যাখ্যা থাকলে সেটা আমাদের জানান।না হয় এরকম মন্তব্য মিনিংলেস।

৬| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:১৬

নেওয়াজ আলি বলেছেন: মধ্যপাচ্য অবস্থার কোন উন্নতি হবে বলে মনে হয় না। সবাই নিজের সম্পদ ও লোক হারাবে

৭| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১:৪৭

রাজীব নুর বলেছেন: মধ্যপ্রাচ্যের দেশ গুলো ভালো নেই। দুবাই আর কাতার ছাড়া।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.