![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দুনিয়ার খবর রেখে শান্তি পাই।
মধ্যপ্রাচ্যের রাজারা কি দাহিস এবং আল-গাবরা যুদ্ধের যোগে ফেরত গেলো??
৫ই জুন,২০১৭।আরব ইসরায়েল যুদ্ধের ৫০তম বার্ষিকীতে সৌদি আরব ঘোষণা করেছিল যে এটি কাতারের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করছে। কয়েক মিনিট পরে সংযুক্ত আরব আমিরাত, তার পরে বাহরাইন এবং সর্বশেষ মিশর। এই চারটি দেশ কাতারের বিরুদ্ধে বয়কট এবং অবরোধের ঘোষণা দিয়েছিল এই বলে যে কাতার তাদের উপসাগরীয় প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
সেই সময় এই চার দেশের পরিকল্পনা ছিল কাতারে সামরিক হামলা করে রাজা তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল-থানিকে গ্রেফতার করে তার চাচাত ভাই শেখ ফাহাদ বিন আবদুল্লাহকে (যিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের আশ্রয়প্রাপ্ত) ক্ষমতায় বসানো।তুরস্ক ঐ সময় কাতারের রাজাকে রক্ষা করতে দ্রুত কাতারে সৈন্য মোতায়েন করে।বলা যায় তুরস্কের ভুমিকার কারনে মধ্যপ্রাচ্য একটা ভয়াবহ অবস্থা থেকে বেঁচে যায়।সেই সময় তুর্কিস প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন তিনি মিশরে তার বন্ধু মুরসিকে হারিয়েছেন এবং তিনি কাতারে তার বন্ধুকে হারাতে চান না।
সেই যাত্রায় তুরস্কের কারনে অভ্যুত্থান প্রচেস্টা ব্যার্থ হলেও বয়কট এবং অবরোধটি এখনো চলমান।এই চারটি দেশের মিডিয়া কাতার এবং এর শাসকের বিরুদ্ধে ভয়ানক ও অবমাননাকর প্রচার চালিয়েছে। অনলাইন ভিত্তিক "ইলেক্ট্রনিক ব্রিগেডের" প্রচারনা এই বয়কটকে আরও শক্তিশালী করতে সহায়তা করেছিল।সেই থেকে উপসাগরীয় সংকট আরো জটিল হয়ে উঠছে।এবং সর্বশেষ আমিরাত/সৌদির নেতৃত্বে যায়োনিস্টদের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা তারই উদাহরণ।উপসাগরীয় দেশগুলুর মধ্যে সহযোগিতা এবং সমস্যা সমাধানের নিমিত্তে গড়ে উঠা আরব লীগ এতদিন ঘুমিয়েই ছিল।তারা কাতারের উপর আরোপিত অবরোধে বাধা হয়ে উঠতে পারেনি কারন এর নিয়ন্ত্রন মুলত সৌদিআরবের হাতে।বরঞ্চ এই দ্বন্দ্বকে বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করেছিল।পরিবর্তিত মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের শেষ সময়ে এসে কুয়েতের মধ্যস্থতায় যখন তারা সমসযোতার কাছাকাছি তখন আরব লীগের নিদ্রা ভংগ হয়েছে।এখন আরব লীগ মহাসচিব আহমেদ আবুল সংকট সমাধানের জন্য প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
এটা মুসলিম জাতির জন্য খুবই দুর্ভাগ্য জনক যে তাদের মুল যুদ্ধটি ছিল জায়নিস্ট শত্রুর বিরুদ্ধে।এখন তার পরিবর্তে তারা অজ্ঞতার(জাহেলিয়া) সময়ে ফিরে গেছে।মনে হচ্ছে তারা দাহিস এবং আল গাব্রা যুদ্ধের আগের দিনগুলুতে ফিরে গেছে।
এটা বিশ্বাস না করার কোন কারন নেই যে,ওয়াশিংটনের সাথে পরামর্শ না করে সৌদি-আমিরাত তাদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।বিশেষ করে ট্র্যাম্পের সৌদি সফরের এক মাসের মাথায় তারা বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয়।মুল সমস্যার শুরু ছিল ট্র্যাম্পের সৌদি সফরের সময় সৌদির সাথে ৪৫০ বিলিয়ন ডলারের অস্র চুক্তি করে।তখন সৌদির অর্থনৈতিক সমস্যা খুব প্রকট।তারা বিশাল পরিমান বাজেট ঘাটতির মুখোমুখি।তাই সালমান ৪৫০ বিলিয়ন ডলারের বিশাল অংকের যোগানের জন্য কাতারের আমিরকে অনুরোধ করেছিল কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন এবং এখান থেকেই দুই তরুণ শাসকের মধ্যে সমস্যা শুরু হয়েছিল।
অবশ্যই আমিরাতের ক্রাউন প্রিন্স বিন জায়েদ সালমানের পক্ষে ছিলেন।যাকে মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে নটরিয়াস ম্যান হিসেবে ধরা হয়।তিনিই সালমানকে ট্র্যাম্প প্রশাসনের সামনে তুলে ধরেছিলেন এই উদ্ধেশ্য সালমানের মত আনকোরা কেউ সৌদির দায়ীত্ব নিলে সৌদিকে নিয়ন্ত্রন করা তার জন্য সহজ হবে এবং হয়েছেও তাই।জায়েদের উচ্ছাকাংখা সীমাহীন।৫০ বছরের কম বয়সী দেশের ক্রাউন প্রিন্স হয়েও সে মধ্যপ্রাচ্য থেকে শুরু করে উত্তর আফ্রিকার পুর্ব পর্যন্ত দেশগুলকে নিয়ন্ত্রন করতে চাই কারন তার পিছনের শক্তি হল যায়নিস্ট রেজিম।
ট্র্যাম্প মার্কিন অর্থনীতিকে উভয় পক্ষের হয়ে ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার কোষাগারে জমা করেছিলেন।শুরুতে তিনি সৌদি অবস্থান সমর্থন করে এবং কাতারের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলির সমর্থন করার অভিযোগ এনে এই সংঘাতকে আরও উস্কে দিয়েছিলেন। এরপরে তিনি ওয়াশিংটনে কাতারের আমিরকে ডেকে নিয়ে এবং সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় তার কৃতিত্বের প্রশংসা করেছিলেন।
এই দ্বন্দ্বের ফলস্বরূপ আইনজীবী এবং পিআর সংস্থাগুলি বিকাশ লাভ করেছিল। সংযুক্ত আরব আমিরাত সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে তা প্রমাণ করার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সৌদি আরবের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। অন্যদিকে কাতারও একই পথে হেঁটেছে।তদুপরি, সংযুক্ত আরব আমিরাত বিশ্বের সামনে নিজের ইমেজ সাদা করতে চায়, এবং এই কাজটির দায়ীত্ব দেয়া হয়েছিল পিআর সংস্থাগুলির হাতে এবং কাতারও তাই করেছে। তাই তারা নিরর্থক লড়াইয়ে কয়েক বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে যা আরব শক্তি ও সম্পদ নষ্ট করার পরে কিছুই অর্জন করতে পারেনি।
কোন সন্দেহ নেই যে দৃশ্যপটে জো বাইডেনের আগমন গ্যাং অব ফোর এর জন্য বিরক্তির কারন।বিশেষ করে সৌদি আরবের জন্য।কারন ৬ বছর ধরে ইয়েমেনে নিরীহ মানুষ হত্যার জন্য তাকে চাপে পরতে হতে পারে।যার কারনে সে এই যুদ্ধ থেকে এস্কেপ করতে চাই এবং তার জন্য নতুন এলাই দরকার।ঠিক এই কারনেই সে তুর্কির সাথে সম্পর্কোন্নয়ন করতে চাই।কিছু রাজা সালমানের সাথে এরদোয়ানের ফোনালাপ তারই ইঙ্গিত বহন করে।
কাতারের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেস্টা শুধুমাত্র সৌদি এবং কাতারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।কারন সালমান বাইডেন প্রশাসনের সাথে কনফ্লিক্টগুলু কমাতে চায়।এদিকে, সংযুক্ত আরব আমিরাত ইস্রায়েলের সাথে তার সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে ব্যস্ত, এটি এই অঞ্চলে ইজরায়েলের বিশ্বস্ত এজেন্ট। এটি এখন সবচেয়ে শক্তিশালী এবং গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসাবে কাতারের সাথে পুনর্মিলনের বিষয়ে উদ্বিগ্ন নয়। বাহরাইন একই অবস্থানে রয়েছে এবং এই দুই দেশ ইজরায়েলের সাথে সম্পর্ক নিয়ে মাতাল হয়েছে।
মিশরের ক্ষেত্রে বিষয়টা একটু ভিন্ন।সে এমন একটি সমস্যাতে জড়িত হয়েছে যেখানে তার কোন আগ্রহ ছিল না।কাতারের সাথে তার সমস্যা ছিল কাতার ব্রাদারহুড সদস্যদের আশ্রয় দেয় এবং তাদের মিডিয়া কাভারেজ দেয়।কিন্তু তারপরেও সে সৌদি-আমিরাতের পিছু নেয় কারন সিসিকে ক্ষমতায় আনতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করেছিল এই দুই দেশ এবং মিশরের ক্যু পরবর্তি অর্থনৈতিক দুরবস্থার সময় এরাই সিসিকে বাঁচিয়ে রেখেছিল।এখন মনে হয়না সৌদি কাতারের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করলেও মিশর সৌদির পথে হাঁটবে না।কারন এটা করলে তার মুখ রক্ষা হবে না।
সর্বোপরি এখন দেখার বিষয় বাইডেন প্রশাসনের এপ্রোচ কি হয় যদিও বাইডেন ইতিমধ্যে চরম যুদ্ধবাজ এবং সমরাস্র নির্মাতা রেথনের উপদেস্টাকে তার প্রতিরক্ষার দায়িত্ব দিয়েছে।আর এই রেথনের অস্রের মুল বাজার হল মধ্যপারচ্যের রাজারা।
২| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৫:৫৪
শাকিল ওসমান বলেছেন: মুসলিম সমাজের বাস্তবচিত্র ফুটে উঠেছে। আল্লাহ্ আপনার লেখনিতে বারাকাহ দান করুন।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ৯:৫৭
মোহাম্মদ মোস্তফা রিপন বলেছেন: আমিন।
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ২:১১
রাজীব নুর বলেছেন: লেখাটা খুব মন দিয়ে পড়লাম। আরেকবার পড়তে হবে।